সবুজ পাতার নাম ধরে ডাকতেই
একটা ঘন অরণ্য চুপচাপ সামনে এসে দাঁড়ালো,
তার কাছেই চেয়ে নিয়েছি আকন্দের বীজ
শিকড় কুড়িয়ে নেয়ার সময়
করতলে উঠে এসেছিলো বিষাদের মতিচূর
তখনও আমার নয়ের ঘরের নামতা পাঠের কৈশোর
জেনেছিলাম, এ ঘন অরণ্য আমার মা হারানো দুধভাই
এ অরণ্য বিষাদের ডাকনাম
এই যে ঝাপুরঝুপুর গহন অরণ্য
চাঁদের আলোয় অমরাবতী এক রাত্রিপুর,
এখানে দলবেধে শেয়ালের ডাক
এখানে হাওয়ায় হাততালি
কেউ একজন জানতো, বলেনি। কয়েকজন খুঁড়ে তুলছিল একটা পোকায় খাওয়া বিপ্লব। আর তাদের ঘাম ঝরে ঝরে পড়ছিল বৃষ্টির মত। ওদের ঘাম শুকোবার আগেই মজুরী চুকিয়ে দিতে পাশেই দাঁড়িয়েছিল টুপি পরা একজন লোক, আতরের গন্ধে সে ভারি করে তুলছিল আশপাশের বাতাস। অক্ষরের পর অক্ষর বসে যাচ্ছিল নিজের নিজের মত। আকাশ থেকে কিছু নামার কথা ছিল। এমন একটা দিন আসবে বলেছিল ওরা যে দিনটায় অন্যদিন গুলোর মত ধুলোবালি থাকবেনা। আর সত্যি সত্যি আকাশ থে
আবার যেদিন দেখা হবে
আমি কিন্তু হাত বাড়াবো,
আজকে যেমন ফিরিয়ে দিলে
সেদিন আমি তোমার হবো।
পথের পাশে লজ্জা ঘেঁষে
কৃষ্ণচূড়া লালের মতো
রোদ বিছিয়ে বসবো দু'জন
হিজল তমাল গাছের ছায়ায়
পাখির প্রতি পাখির কাব্য
পরান খুলে শুনতে শুনতে
হঠাৎ দেখায় প্রেমে পড়ার
মুহূর্ত এক বুনতে বুনতে
বয়েসটাকে কমিয়ে এনে
ষোলোর পরে সতেরো করে
খুনসুটি আর বাদাম ভেঙে
একটা দুপুর গড়িয়ে দেবো।
[ সাড়ে চার দশক আগে, এই বাংলাদশটা ধুম করে আকাশ থেকে পড়েনি। ওসব পৌরাণিক কাহিনীতেই হয়। বাস্তবে মুক্তির মন্দির সোপানতলে কত প্রান যে বলিদান দিতে হয়, তার কোনও হিসাব নেই। স্বাধীনতা কেবলই মুক্তির সূচনা মাত্র। মুক্তি যেহেতু আসেনি বলিদান আজো অব্যাহত আছে। সেই বলিদান যেন আমরা বৃথা না করে দেই। অনেক দাম দিয়ে কেনা এই দুঃখিনী বাংলা। ]
(অভিজিৎ রায় স্মরণে)
আমার কিছু মনে পড়ে না-
মায়ের মুখ, বাবার হাত ধরে
ইশকুলে যাওয়া- ভাসা ভাসা কিছুই
চোখে ভাসে না!
প্রেমিকাকে প্রথম চুমু খাবার স্মৃতি
আমি ভুলে গেছি, আসলে শরীরের কোথায়
ঠোঁট থাকে তা যদি জিজ্ঞেসা করো
খোদার কসম, আমাকে হাতড়াতে হবে!
আমার মেয়ে যখন ছোট্ট আঙুলে এসে
হাত ধরে টানে- বাবা?
আমি অবাক হয়ে ভাবি, কোথাও
কোন ভুল হচ্ছে নাতো!
এমন নয় যে,
সকালে একদিন
ঘুম থেকে উঠে দেখলে
তোমার ভেতর
ফুল ফল সমেত একটি গাছ !
বহুদিন ধরেই কিছু একটা হচ্ছিল,
ভেতর থেকে হাত পা ছড়িয়ে উঠে আসছিল কেউ,
আর তুমি ভেবেছিলে দুটো প্যারাসিট্যামল
বা অ্যান্টাসিড খেলেই
সব ঠিকঠাক হয়ে যাবে!
কিন্তু হয়নি,
দিনের পর দিন ধরে
গাছটি বেড়ে উঠেছে- তোমার
নখ থেকে চুল, নিঃশ্বাস থেকে
কল্পনা পর্যন্ত তার আঁকাবাকা গভির শেকড়
তুমি এখন পরিপূর্ণ টের পাও-
একটুখানি সময় আমায় কেউ কি দেবেন ধার?
বেশি কিছু না--দু'তিন দিনের ছুটির দরকার
দু'তিন দিনের ছুটি পেলে যাব মেঘের বাড়ি
দু'তিন দিনের ছুটি পেলে ফেবুর সঙ্গে আড়ি
আসব না আর এই পাড়াতে
দেব সবার হাড় জুড়াতে
কোন নেটওয়ার্ক পারবে না আর আমায় ছুঁতে ভাই
এমন কোন জায়গায় আমি ছুটি নিতে চাই।
যেদিক পানে তাকাই দেখি ক্লান্ত শ্রান্ত মুখ
আলো ঝলমল এই নগরের কোথাও নেইকো সুখ
হাত বাড়ালেই মানুষ কেবল
চোখের কোটরে জমেছিল কিছু জল,
একটা সকাল কেঁদে কাটিয়েছি
কিছুটা সময় কান্নার ঘোরে পেরেছি বুঝতে
নানান নামের অনেক দামের
জল থাকে চোখে,
চাইলেই তারা নামে না যে-কোন
আনন্দ-শোকে।
চোখের কোটরে জমেছিল কিছু জল,
সারাটা সকাল সেসব জলের
নাম দিই একে একে।
১২.১.১৬ (১০.০০)
এই লেখাটা মাশীদ আপুর জন্যে। পৃথিবীজুড়ে চলতে থাকা অশান্তি ও অস্থিরতার পাশাপাশি নিজের ব্যক্তিগত আবেগ, দুঃখ আর সীমাবদ্ধতা যখন চারপাশটা ভীষণ অন্ধকারে ঢেকে দিয়ে গেছে, সেই সময়ে তিনি দিনের পর দিন উৎসাহ দিয়ে গেছেন মরা কলমে কালির প্রাণ দিতে। এক প্লেট ফুচকা কিন্তু পাওনা থাকলো...
বহুপথ ঘুরে এসে তোমার কথা মনে পড়ে ফের
ওখানে কি বৃষ্টি হয়? তুষার পড়ে?
আমার বন্ধ জানালার পাশে এক গভীর ব্যপ্তিহীন বৃষ্টিপাত।
আমাদের কোথাও যাওয়ার কথা ছিল!
গল্পগুলি রাগে-অভিমানে আমরা পুড়িয়ে এসে বসেছি এইখানে।
গল্পগুলো বলা হয়নি কোথাও, গল্পগুলি ছাই হয়ে উড়তে-উড়তে
আজ বন্ধ জানালার পাশে।
আমি কি তাকে ভেতরে আসতে দেবো?
নাকি, না-ঘুমানো রাত্রির মতো সমুদ্রের ওপার থেকে