পোষ মানা কিছু কথা আছে
যাদের ডানা নেই
যারা ঘরেই থাকে সারাদিন
আর হাততালি দেয়
যখন যেভাবে মন চায়
পিছু ছাড়ে না কিছুতেই
যখন বাইরে যাই
কথারা কীভাবে যেন
কানের কাছে কারো
শেখানো বুলি আউড়ায়-
নামীদামি কথানাশক দিয়ে বহুবার চেষ্টা করে দেখেছি
কাজ হয়নি, নিরুদ্দেশে গেলেও
দুঁদে গোয়েন্দার মতো মুহূর্তেই
তারা হাজির হয়েছে অজ্ঞাতবাসে-
অতঃপর ঘরের তালাও বদলেছি ইচ্ছামতো
তবু তারা ঘরে ঢোকে, ধূলো ...
কবিতা তো রাহেলা
সে পাখি, ফুল, নদী, বৃক্ষ, সবুজ যার যা খুশি
তার হাতের ছোঁয়ায় ভোরে জেগেওঠা।
সে যদি বলে, তবেই না ভোর হতে পারে
সে যদি চায়, তখনই সন্ধে নামে।
এখনও বষ্টি নামে রাহেলার চোখ ছুঁতে,
পাখিরা বাসা ছাড়ে রাহেলার বিশ্বাসে।
রাহেলার জানালায় ছিলো বাতাসের হাহামাগুড়ি-
রাহেলার শিউলি তলায় ছিলো-
শাদা জোছনার জড়োয়া আঁচল।
কবিতা তো রাহেলা!
এই যে নদীরা শুকিয়ে গেল-
রাহেলাকে ভালো না বাসার ...
আমার সর্বশেষ শব্দগুলো হাতে নাও ধরে দেখো
প্রাসাদ ছাড়িয়ে দূরে এই পুরাতন মৃত বৃক্ষ
এর নীচে ছিলাম, পরিত্যক্ত প্রাচীর ডিঙিয়ে
চলে যাও এক্ষুণি দূরে, তবু ধরে রাখো কিছুকাল
প্রাথমিক সৈকত তোমার, আর প্রতিটি বালির পৃথক অস্তিত্ব
ডানাভাঙ্গা গাংচিল চিৎকার, সামুদ্রিক ঝড়
এদিকে তাকাও, এই আমি নিবিড় ছিলাম
এই পথে একেবারে চলে যাও, শুধু ধরে রাখ আরো কিছুক্ষণ
আমি বৃষ্টি হয়ে ঝরে যাই, শুয়ে পড়ি মাইলের পর ...
শেষ বার কবে যেন দেখেছি
মনে আমার নাইবা এলো।
আধো আধো মনে আছে
তোমার বসে থাকাটা,
ঢাকাই রিক্সায় ঋজু শালবন বসে থাকাটা।
কপালে ঘাম-বিন্দু-রেখা
না হয় বাদ দেয়া গেলো ।
তাই বলে তোমার শুকিয়ে যাওয়া কীর্তিনাশা হাসিখানি
চরে ঝাঁক ঝাঁক কাশবন হাসিটুকু,
নাচুরে ফিঙ্গের চটুল চোখের মণিদুটো
কি আমার কখনো চোখ এড়িয়ে গেছে?
তোমার ঠোঁটে কালো তিল আর চড়াই উৎরাই
না হয় কালিদাস অথবা তোমার বরের জন্য রেখে দ ...
যুদ্ধ কি শুধু বন্দুক হাতে, যুদ্ধ কি শুধু ফ্রন্টে?
যুদ্ধ হয়েছে দেশ থেকে দূরে, গানে-গর্জনে কণ্ঠে
যুদ্ধ হয়েছে যুদ্ধশেষের সেই মাহেন্দ্র ক্ষণ চেয়ে
সেই যুদ্ধকে শুনি, দেখি ম্যাডিসন গার্ডেনে মঞ্চে
লক্ষ মানুষ হারিয়েছে প্রাণ, কোটি লোক শরণার্থী
হ্যারিসন হাতে তুলেছে গিটার শুনে আমাদের আর্তি
টিকিটের টাকা যোগাতে কি পারে কোটি মানুষের অন্ন?
নিউ ইয়র্কে জমেছে মানুষ বাংলাদেশের জন্য
রবি শঙ্ ...
কত কিছুই ঘটে, হাত না-পেতে সমভাবে
জেনে রেখো চুপচাপ, নিঃশব্দ জলফুল ফুটে
নিরূপায় বললে নির্ভরতা কমে
দ্বিমত করো না-দ্বিধা
শর্তহীন লোভে পুড়ে
তারপরও বলবো কেন যে কোনো খবর রাখো না-মনের
অনায়াসে আদর-চুম্বনসহ নিলাজ দাঁতের বিস্তার
দয়া করো ক্লান্ত দেহ থেকে উড়ে যাক বেদনাভার
মাঝে মাঝে মাথায় একটা লাইন ঘুরতে থাকে, মনে হয় সেই লাইনটাকে আরো কয়েকটা লাইনের সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়ে একটা কবিতা গোছের কিছু না দাঁড়া করালে আরে চলছেই না। এইভাবে অনেক কিছুই লেখা হয়েছে যা মাঝে মাঝে অন্য কাউকে দেখাতে ইচছা করে, কিন্তু সাহস তো পাইনা। তাই ভাবলাম এক কাজ করি, আমার প্রিয় একটা ইংরেজি কবিতার অনুবাদটা সবার সামনে প্রকাশ করি। তারপর না হয় অবস্থা বুঝে নিজের মৌলিক লেখাগুলোও একসময় দেও ...
দেখা হয়েছিলো তোমাতে আমাতে, মনে পড়ে, কোন শরতে?
আমায় কিন্তু সেই দেখা-দেখি দাগ কাটে প্রতি পরতে।
জীবন বহিয়া চলে,
অসীম কালের তলে।
হয়তো অনেক বাকি রয়ে গেছে, যা চেয়েছো তুমি আমাতে।
জেনেছিগো আমি কোনও কোনও অপ্রাপ্তি পারেনি তোমাকে থামাতে
আমায় চাওয়ার তরে।
অনেক বছর পরে
আজও ঘুরে ঘুরে শরৎ আসে যে, কিন্তু কি তুমি জানো?
প্রথম শারদ আবেশ এ প্রাণে তুমি শুধু বয়ে আনো।
জলপাই জড়ানো তোমার হাতে যখন
গর্জে ওঠে রাইফেল আর
মূর্ছা যায় সারি সারি সিঁদুর...
তহন কি তুমি আর মোগো গাঁর রহিমুদ্দী থাহো?
তহন কি ঝাঁক ঝাঁক বেহেশতি কৈতর
দরাজ ভাইটালি টানে ধরফর করতি করতি
বানের পানির লাহান আসমান ছিঁড়া নাইমা আসে
তুমার তালুতি বাপ?
অথবা যখন তুমি
সাহেবের বেশে হাজার তলার চিমনিতে বসে
কলমের তুচ্ছ খোঁচায়
পাজরের অলিতে গলিতে চালিয়ে দাও বুলডোজার
তহন, দাতাল শুয়ারের গপ্পো কব ...
জীবনে কোন না কোন সময় সব মানুষই নাকি একবার হলেও কবি হয়। আমিও হয়েছিলাম। কাঁচাহাতে লেখা কৈশরের দুর্বল কবিতা, কিন্তু তাতেই আমার জীবন ঝালাপালা। নব্বুই-একানব্বুইয়ের দিককার ঘটনা। আমি সবে মাত্র মাধ্যমিকের পাট চুকিয়েছি। মফস্বল শহরে বন্ধুত্বের বৃত্তে চলছে জীবন। বন্ধুদের কেউ নব্য বিপ্লবী --- বামপন্থায় দীক্ষা নিচ্ছে। কেউ বা নব্য কবি --- কাব্য সাধনায় ব্যস্ত। এদের মাঝে বেমানান আমি ক্রীড়াম ...