১,
ঝাকানাকা সচরাচর যা করেন, তা-ই করলেন। একটি ভুরু আরেকটি থেকে ইঞ্চি দুয়েক ওপরে তুলে ফেললেন। কীভাবে, সে এক রহস্য। বোধ করি আরিজোনার মরুভূমিতে লী মেজরসের কাছে মাসদুয়েক ভুরুকুংফু শিক্ষারই ফল।
একদা এমনই বাদলশেষের রাতে---
মনে হয় যেন শত জনমের আগে---
পৃথিবীটা যে গতিতে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে তার চেয়েও দ্রুত গতিতে দুটো বাক্য এসে তার চোখের সামনের ল্যাপির পর্দা জুড়ে দাড়ায়। এত রাতে কে মেইল দিল? মেরুণ ফ্রেমের চশমাটা একটু নেড়ে বসালো সে নাকের উপর। প্রেরকের অচেনা নাম দেখেই বুঝলো পথিক পথ হারাইয়াছে। টেলিফোনে ক্রস কানেকশানর মতো ইমেল ক্রসকানেকশান।
ঢাক-ঢোল পিটিয়ে অনুবাদ শুরু করেও সময়ের অভাবে ২য় পর্বটা দেয়া হয়ে উঠছে না। খুব শিগ্রি দেব। কিন্তু আমাকে লেখায় পেয়ে বসেছে। দিলুম এবার একটা মৌলিক গল্প ঝেড়ে। দেখুন তো সচলের মানের সাথে যায় কিনা। এটা একটা অভিযানের গল্প। কিংবা বলতে পারেন চরম বোকামীর গল্প।
এ গল্পের সমস্ত ঘটনা ও চরিত্র কাল্পনিক। বাস্তবের কোন ঘটনা বা চরিত্রের সাথে সামান্যতম মিল পাওয়া গেলে তা কাকতাল মাত্র।
-------- মধ্য প্রজন্ম
অদূরে কোথায় যেন হট্টগোল হইতেছে, ঈশ্বর কর্ণপটহে কনিষ্ঠা অঙ্গুলি প্রবিষ্ট করিয়া আনমনে চুলকাইতে চুলকাইতে শুনিতেছিলেন। নন্দন কানন ক্রমশ হট্টগোলের জায়গায় পরিণত হইতেছে। স্বর্গদূতগুলি নিয়মিত হল্লা পাকায়। ইহার পিছনে আদমের কোনো ভূমিকা নাই তো?
তিনি গলা খাঁকরাইয়া ডাকিলেন, "গিবরিল!"
গিবরিল কিয়দক্ষণ পর তাহার রশ্মিনির্মিত ডানা ঝাপটাইতে ঝাপটাইতে বারান্দায় আসিয়া দাঁড়াইল।
জেলখানায় আয়না পেতে বিস্তর লড়তে হয়েছে দেলু রাজাকারকে। আব্বুজির তাহফীমুল কুরআনের কপি পেতে তেমন সমস্যা হয়নি, সমস্যা হয়নি বড় হুজুরের মানব সৃষ্টির হকিকতের কপি পেতেও, কিন্তু একটা আয়না যোগাড় করতে গিয়ে কালঘাম ছুটে যাওয়ার দশা। সীমারের দল দেয়নি শেষপর্যন্ত। নিজের মাসুম শাকল দেলুকে পত্রিকায় দেখতে হয়, মাসে এক দুইবার।
কতো মানুষের মাথায় কতো চিন্তা বলক দিয়ে ওঠে। একেকজনের একেক দিকে খায়েশ। খায়েশের কি আর হিসাব নিকাশ নেওয়া চলে? আমাদের জহিরের খায়েশ ছিলো ধাঁধা। মর্জিমতো বাংলা লোকবুলির সমুদ্র সেঁচে তুলে আনা সুপাক ধাঁধা পেশ করতো সে। বাকি সবার হাঁসফাঁস হোত সেই সুপাক পরিপাক করতে গিয়ে। সে-ই একদিন জিজ্ঞাসা করেছিলো, 'কোন জিনিস কাটলে বড়ো হয় বল।'
___________
ভেসে যায় আদরের নৌকো
[justify]আমার বয়স তখন পাঁচ। রবিবারের এক দুপুরে আমদের পাড়ায় এক ঝাঁকা মুরগীর ছানা নিয়ে একজন হকার আসে। রেশন তুলতে বাবার সাথে আমি তখন বাইরে, তো সেই হকার আমার হাতে ছোট্ট একটা ছানা তুলে দেয়। অদ্ভুত নরম আর মিষ্টি একটা উষ্ণতা হাতের তালুতে শিহরণ তুলে। বাবাকে ঘ্যাঁনঘ্যাঁন করে বলতে থাকি মুরগীর ছানা কিনে দেয়ার জন্য। বাবার অতো টাকা-পয়সা নেই। মিস্ত্রী হিসেবে কাজ করে বাবা। আর মার অনেকদিন ধরেই অসুখ। তাই সে কোনো
# আমাদের কলোনিতে উত্তাপ ছড়িয়ে যাবার মতো কোনো ঘটনা আজকাল ঘটে না দেখে জয়নাল চাচার মন বেজায় খারাপ। চাচা উত্তেজনা প্রিয় কোনো মানুষ নন। তাই তিনি যখন আজ চা বানাতে বানাতে বললেন- কলোনিটা মইরা গেল গা, তখন আমাদের অবাক না হয়ে উপায় থাকে না।
ঘটনার আরেকটু গভীরে গেলে স্পষ্ট হয় চাচার হাহাকারের পেছনের কারণ।
জন্মনীড় ছেড়ে, চেনা মাঠ বন নদী পাহাড় ঝর্ণা সব কিছু ছেড়ে উড়াল দিয়েছিলাম, অচিন দেশের দিকে, জ্যোৎস্নাপালকের পাখিরা সেদিকে থাকে। জন্মজলের বিন্দুগুলো ঝরে পড়ে যাচ্ছিলো ডানা থেকে।