ডান হাতে বিকটাকার একটা বই, সাথে চক-ডাস্টার। বাম হাতে একটিমাত্র জিনিস- তিন ফিট লম্বা, লিকলিকে, চকচকে একটা বেত। স্মিতহাস্যে সদা উজ্জল দু'খানা ঠোঁট আর পুরু লেন্সের কারণে উল্লেখযোগ্য মাত্রায় ছোট মনে হওয়া একজোড়া পিটপিটে চোখ- তাঁর শুধু এই দুইটি জিনিস যিনি দেখবেন, তিনি তাঁকে নিতান্ত-ই কোমল মনের রসিক একজন মানুষ বলে ধরে নিবেন। যিনি শুধু তাঁর ডান হাতের দিকে তাকাবেন, তাঁকে প্রচন্ড বিদ্যানুরাগী, জ্ঞান-তাপস একজন মানুষ বলে নির্দ্বিধায় স্বীকৃতি দিবেন। কিন্তু এই দুইয়ের সাথে, বাম হাতের অদ্ভূত ভয়ংকর ভঙ্গিমায়, তীব্রভাবে দোদুল্যমান বেতখানি যিনি দেখবেন, অভিন্ন একজন মানুষের বিভিন্ন অংশের চরমতম বৈপরীত্য দৃষ্টিগোচর হবার প্রচণ্ড প্বার্শ-প্রতিক্রিয়ায়, হৃদযন্ত্রের যাবতীয় কার্যকলাপ সাঙ্গ করে তৎক্ষনাত তার ইহধাম ত্যাগ করার সমূহ সম্ভাবনা আছে বৈকি!
[justify]
-তুই অমন কইরা আমার দিকে চাইয়া আছোস ক্যান?
কেউ কেউ চরম অপরিণামদর্শী। ভাগ্য নিয়ে কাবাডি খেলতে পারে কেউ কেউ। সদরুল বাশার ঠিক সেরকম না হলেও কাছাকাছি। কেরাণীহাট থেকে শহরমুখী কোষ্টার সার্ভিসে ওঠার সময় সদরুল বাশার তার ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে ভাসমান অমাবস্যাই দেখছিল। শহরে তার পরিচিত দুয়েকজন আছে ঠিকই, কিন্তু রাতে থাকার মতো কেউ ঘনিষ্ট কেউ নেই। দূর সম্পর্কের এক খালাতো ভাই আছে তার মেসে ওঠা যেতে পারে খুব দায়ে ঠেকলে। ঠেকায় সে ইতিমধ্যে পড়ে গেছে। বাবার সাথ
রাত জেগে থাকার নেশাটা ক্রমশ পেয়ে বসেছে মাদকের মতো। শেষ রাতের দিকে ক্লাসিকেল সংগীত ছেড়ে দিয়ে মনের ক্ষুধা মিটিয়ে নিচ্ছি বেশ ভালোভাবেই। এখন উল্লেখ করার মতো তেমন কোন কাজই হচ্ছে না। টুকটাক কিছু মুভি দেখা, ক্লাসে বসে গল্পের বই পড়াও কমে গেছে। অথচ এসবই ছিল আমার কাজ। ইদানীং কমে যাচ্ছে কেন এটার কোন উত্তর আমার কাছে নেই। খুব আত্মকেন্দ্রিকতায় ভুগছি বেশ কয়েকদিন ধরে। মাঝে মাঝে প্রাণের মানুষটাকেও মনে পড়ে
[justify](১)
ও জানলে কি হবে
অ্যান্থনি ভারাল্লো
-
[justify]
[justify]প্রথমে কিছুক্ষণ ব্লা ব্লা করা যাক। বাসাবাড়ি বাড়িঘর ঘরবাড়ি কোনোটার মানেই এক না। পূর্ববঙ্গের লোকেরা বাসা বলে। পশ্চিমবঙ্গে বাড়ি। শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় ব্যোমকেশ মারফত এই তথ্য বলেন (আমি উচ্চশিক্ষিত)। এছাড়া, বাসাবাড়িতে মানুষ থাকে। কিন্তু বাড়িঘরে স্বয়ংচল বিমান থেকে বোম মারা যায় (পত্রিকা পড়ি)। বাড়িঘরে আগুন লাগে (ঐ)। বাড়িঘর বন্যায় ডুবে যায় (ঐ)। বাড়িঘরে প্রচুর দুর্যোগ। কিন্তু ঘরবাড়ি ছেড়ে দূরে থাকা যায়, বাসাবাড়ি হলে যায় না। আবোলতাবোল ভাবতে ভাবতে সময় কাটাই। ব্লা ব্লা ব্লা। তবে অন্যমনস্ক হওয়ার নিয়ম নাই।
করমণ্ডল এক্সপ্রেস
[justify]লাল বিড়ালটার দুষ্ট আত্মা আমাকে এখনো সবসময় তাড়িয়ে বেড়ায়। কাজটা ঠিক করেছিলাম কিনা জানি না। ঘটনাটির শুরু হয়েছিল এভাবে- আমি আমাদের বাগানে একটি পাথরের স্তূপের ওপর বসে আছি। নেহাত পাথরের স্তূপ বললে ভুল হবে। এটা আসলে যুদ্ধের সময় বোমার আঘাতে বিধ্বস্ত আমাদের বাড়ির অর্ধেকেরও বেশীর ধ্বংসস্তূপ। সেখানে আমরা, অর্থাৎ আমি, মা, ছোট ভাইবোন- পিটার ও লেনি থাকি। আমি যেখানে বসে আছি, তার চারদিকে ঘাস, ঝোঁপঝাড়- সব
অফিস যেতেই হয়। সবারই কোনো না কোনো কারণ থাকে। টাকা, মানুষের সমাজে জায়গা, ক্ষমতা, জীবনে বৈচিত্র, ব্যস্ত থাকা ইত্যাদি।
শাহিন অফিসে যাওয়া শুরু করে কর্মজীবী নারী হওয়ার জন্য। তারপর সে বলা শুরু করে কাজটাকে ভালোবেসেই সে কাজ করে। বিশ্বাসও করতে চেয়েছিল কথাটা। কিন্তু কোনো সৃষ্টি আর তার স্রষ্টার সম্পর্ক এখন আর সরাসরি ও সহজ নাই। কাজেই কাজের প্রতি আদিম ভালবাসার দিনও নাই। যান্ত্রিক পুনরুৎপাদনের ছলাকলা ছাড়া করার তেমন কিছুই নাই।
মানুষ সাধারণভাবে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে থাকা একটি জীব। এর নানা বৈজ্ঞানিক ও সমাজতাত্ত্বিক ব্যাখ্যা আছে, বিজ্ঞজনেরা তা জানেন, এখানে বলার তেমন প্রয়োজন কী? সম্পর্কিতরা একে অন্যের ক্ষতি করেনা (অন্তত এটাই প্রচলিত ধারণা)। তাই মানুষ ক্রমাগত সম্পর্ক তৈরি করে। রিকশাওয়ালাকে মামা ডাকে, দোকানিকে ভাই, অফিসকে বলে পরিবার।