মাথার ভেতরে গল্পেরা অবিরাম ধাক্কাধাক্কি করে যায়। এ ওকে ধাক্কা দেয় তো ও একে মারে ঠেলা। কার আগে কে বেরিয়ে আসবে এই নিয়ে ঝগড়া, মারামারি, গালিগালাজ, ঠেলাঠেলি। ...কেননা ঘুম এখনও গাঢ় হয়নি। কিছুটা সময় পাওয়া যেতে পারে - এটুকুই আশা। স্বপ্নেরা এখনও হানা দেয়নি একযোগে। মাথার ভেতরটা এ মুহূর্তেও যথেষ্ট পরিষ্কার। তবে কিনা এই সুযোগ চলে যাবে যেকোনো মুহূর্তে। লাল, নীল, বেগুনি, হলুদ, কমলা, কালো, ধূসর স্বপ্নেরা ঝেঁটিয়
(লেখাটা আমার অন্য আরেকটি ব্লগ(লিঙ্ক) থেকে নেয়া লেখা।
[justify]যেখানে হারু দাঁড়িয়ে আছে সেটা আসলে একটা ডাস্ট্বিনের অংশবিশেষ।অনেকদিন আগে এটা ট্রাক ধাক্কা মেরে ডাস্টবিনটার দফারফা করে দিয়েছিলো । এখন সেটার পাশে একটা চায়ের দোকান।বিড়িটা হারু সেখান থেকেই কিনেছে।
হারু যখন বিড়ি খাওয়া শুরু করে তখন তার বয়স দশের বেশি হবে বলে মনে হয় না । তার বাবা যখন আধখাওয়া বিড়িটা রেখে তার মা-কে নৃশংসভাবে পেটাতে শুরু করে, তখন সে বিড়িটা নিয়ে পাশের ঘরের কালুর সাথে বসে টান দেয়া শুরু করে। সেদিনের প্রচন্ড কাশির কথা ভুলতে পারেনি হারু। আজো কাশে,তবে এখনকার কাশি আর তখনকার কাশির মধ্যে অনেক তফাৎ।
[justify]
ইল
সূর্যবংশে ইল নামে এক রাজা ছিল। শিকার করতে গিয়ে বন খুব ভালো লেগে যায় বলে সে রাজত্ব ছেড়ে বনে থেকে যায়। ঘুরতে ঘুরতে এক যক্ষরাজের অনুপস্থিতিতে তার সাজানো শূন্য গহ্বর দখল করে নেয়। যক্ষরাজ অন্যান্য যক্ষ নিয়ে এসে যুদ্ধ করেও ইল রাজার সাথে পেরে ওঠে না। যক্ষরাজ যক্ষিণীকে বলে- তুমি মায়াবী হরিণী সেজে ইলকে উমাবনে নিয়ে এসো। তাহলেই আমরা গহ্বর আবার নিজেদের কব্জায় আনতে পারবো। মহাদেবের অভিশাপে উমাবনে কোনো পুরুষ গেলে সে নারী হয়ে যায়। যক্ষিণী মায়ার খেলা খেলে ইলকে উমাবনে নিয়ে আসলে ইল হয়ে পড়ে সুন্দরী ইলা। ইলা ঘুরতে ঘুরতে চন্দ্রপুত্র বুধের নজরে পড়ে। বুধ ইলাকে রাণী করে। তাদের এক পুত্র হয়। পুরূরব। জন্মের পর থেকে পুরূরব খেয়াল করে তার মা সবসময় মুখ গোমড়া করে রাখে। পরে একদিন বুধের কাছে বৃত্তান্ত জানতে পারে ইলার ছেলে। মাকে অভিশাপ থেকে মুক্ত করতে গৌতমীগঙ্গায় স্নান করে বুধ, ইলা আর পুরূরব কঠোর তপস্যা শুরু করে। মহাদেব ও পার্বতী এসে ইলকে অভিশাপমুক্ত করে। গৌতমীগঙ্গায় আবার ডুব দিলে সুন্দরী ইলা পরিণত হয় সশস্ত্র যোদ্ধা রাজা ইলে। - গল্পটা পড়ে ‘এক্স’ চিৎকার করে বলে- পুরুষবাদ নিপাত যাক।
মেহার্ন সাহেব নিজে ছোটখাটো, পরিপাটি মানুষ, জামা কাপড়ে মার্জিত রুচির ছোঁয়া। ধুসর চোখজোড়াতে শ্যেনদৃষ্টি এই আইনজীবীর যশের সাথে পুরোপুরি মানানসই। মক্কেলদের সাথের উনি সবসময় শুকনো স্বরে কথা বলেন। অনেক চেষ্টা করে তিনি রপ্ত করেছেন মক্কেলের সঙ্গে একইসাথে সহানুভূতি এবং একটা দূরত্ব নিয়ে কথা বলার কৌশল। "আপনাকে আবারো মনে করিয়ে দিতে চাই যে আপনি একটা কঠিন অবস্থার মধ্যে আছেন এবং সবকিছু খোলামেলা ভাবে আলাপ করা ছাড়া এর থেকে বেরিয়ে আসার আর কোন পথ খোলা নেই।"
লিওনার্দো ভোল তার ফাঁকা দৃষ্টি দেওয়ালের থেকে সামনে বসা উকিলের দিকে ফেরালো। "বুঝতে পারছি", তার কণ্ঠে শুধুই হতাশা ঝরে পড়ে। "কিন্তু আমি কোনভাবেই মানতে পারছি না আমাকে এই খুনের আসামী করা হয়েছে। এতো নিষ্ঠুর, এতো কাপুরুষের মত একটা অপরাধের সাথে আমাকে জড়ানো হচ্ছে।"
রমণ সুমহান বেজায় বিরক্ত হন। ফাকমিদুলকে ইদানীং আর সহ্য হচ্ছে না তার। নির্বোধ লোকের সঙ্গ তিনি অপছন্দ করেন না, কিন্তু সেই নির্বোধ যদি তার প্রাপ্য থেকে তাকে বঞ্চিত করে, তার ওপর চটবার বৈধ কারণ তৈরি হয় বই কি। ফাকমিদুলকে পশ্চাদ্দেশে একটা লাথি মেরে মাইক্রোবাস থেকে নামিয়ে দিতে ইচ্ছা করে তার, কিন্তু জীবনের সায়াহ্নে এসে তিনি বুঝতে শিখেছেন, ক্রোধ তার মহত্তম অবস্থানে পৌঁছায় সংবৃত হয়ে। তিনি মনের একটি কুঠুরি খুলে একটা চেরাগ বার করেন, তারপর রাগের দৈত্যটাকে পুরে ফেলেন তার ভেতর। ফাকমিদুলের পশ্চাদ্দেশে কোনো কিছুই এখন করতে যাওয়া সমীচীন হবে না। এখন মিত্রতার সময়।
কিন্তু ফাকমিদুল কাজটা কঠিন করে তোলে মুহুর্মুহু! "ঐ যে আরেকটা পাখি! কাকপাখি!"
এতো সাজ জীবনেও সাজেনি নীলা। আজ এতো সেজেছে যে তার কান্না পাচ্ছে। কান্নাটা সেজেছে বলে যে পাচ্ছে তা নয়। কান্না পাচ্ছে তাকে আজ পণ্য হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে প্রায়। সাজিয়ে-গুজিয়ে মানুষের সামনে নিয়ে যাওটাকে নীলা সহজ করে নিতে পারছে না। দুঃস্বপ্নেও এমটা ভাবেনি নীলা। অথচ আর তার মা-বাবা এই কাজটা করলেন। নিথর হয়ে বসে আছে নীলা। কি করবে, কিছু কি পারবে করতে; ভেবে যাচ্ছে, ভেবেই যাচ্ছে!
এমন অসময়ে কে এলো?
[justify]ডিসকোর্স
- অনন্ত আত্মা
মোবাইলটা ডান কান থেকে বাম কানে নেয় হিমেল।
- কোথায় বললে, মিরপুর এক নাম্বার মরণচাঁদের সামনে; ওকে ব্যাপার না আমি পৌঁছে যাব সাড়ে এগারোটার মধ্যে। দেখো, তুমি আবার দেরি কোর না। অর-রাইট, বাই সুইটি।
সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে মোবাইলটা পকেটে রাখে হিমেল। আকাশের দিকে একবার তাকায়, ঘন নীল আকাশ, ঝকঝকে রোদ চারিদিকে। পায়ে পায়ে পাকা মসজিদের মোড়ে মফিজ ভাইয়ের দোকানে আসে সে।