¬¬বিয়ারের গ্লাসটা নামিয়ে রেখে ইন্সপেক্টর জেন একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলল, জগতের সেরা প্রতিভাগুলো মনে হয় এইভাবেই শেষ হয়ে যায়।রিচার্ডসন জেন সংক্ষেপে জেন নামেই ওকে আমরা ডাকি।কদিন ধরে ও এক নামকরা বিজ্ঞানী প্রফেসর রবার্ট বিল এর অন্তর্ধান রহস্যের তদন্ত চালাচ্ছিল। জেন মাত্র ২৫ বছর বয়সেই ইন্সপেক্টর হয়ে গেছে। এই পর্যন্ত প্রায় দুই ডজন চাঞ্চল্যকর কেসের সাফল্য ওকে এত তাড়াতাড়ি ইন্সপেক্টর পদে চুলে দিয়েছে। প্রতিবারই অসামান্য একেকটা কাহিনী বের হয়েছে ওর তদন্তে। সেগুলো শুনেও মজা। এবারও সে মজার গন্ধ পেয়ে আমি জাঁকিয়ে বসলাম। দুজনের জন্য দুই বোতল বিয়ারের অর্ডার চলে গেল রূপসী বারগার্ল এর কাছে। জেনকে বললাম, দেরী না করে
[justify]গান, অর্থাৎ সঙ্গীত। আহ! কী হৃদয়ব্যাঞ্জনাকর একটা বিষয়! কথা আর সুরের মায়াজালে আমাদের নিয়ে চলে সময় আর অনুভূতির সীমাহীন কল্পনার জগতে। এ নিয়ে আমার ছোটবেলা থেকেই ব্যাপক আগ্রহ। কিন্তু কেন জানি আমার কাছে সুরটাই বেশি ভালো লাগত। সেখানে গানের কথা কিংবা মর্ম বোঝাটা খুব একটা গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার ছিলনা। আর তাই, স্বতস্ফুর্ত আবেগে এই বাজখাঁই গলার টোন টিউন না করে, কিংবা পরিবেশের আশু শব্দদূষণের সম্ভাবনার তোয়াক্কা না করে কেবলমাত্র লা-লা-লা অথবা উম-উম-উউউ করেই আমার সঙ্গীত চর্চা চালিয়ে যেতাম সারাদিন। আর একারণে প্রাণপণ চেষ্টায় এখন আগের শোনা অনেক গানের সুর মনে করতে পারলেও কথা স্মরণ করতে পারিনা। আমাদের একান্নবর্তী পরিবারের বাসায় তখন শুধু একটা রেডিও আর একটা ১৭ ইঞ্চি ফিলিপস্ টিভি ছিল। সেখানে ঐ সময় কেবল শুক্রবারে বাংলা ছিনেমা দেখাত আর সম্ভবত সোমবারে ছায়াছন্দ হত। তাছাড়া হিন্দী ন্যাশনাল চ্যানেল ধরত টিভিতে ডিশ না থাকলেও, বর্ডার এলাকায় গ্রামের বাড়ি থাকার সুবাদে। সেখানে কিছু গানের প্রোগ্রাম হত আলিফ লাইলার পাশাপাশি।
[justify]
১.
দালজিৎ সিং একটু থতমত খেয়ে যায় ভাণ্ডারি রামের ধমক খেয়ে।
"মোটর সাইকেলে স্টার্ট মার শালা বুড়বাক!" ভাণ্ডারি রাম দাঁত খিঁচিয়ে ধমকায়।
দালজিৎ আমতা আমতা করে তবুও। "কিন্তু বিশুর কেসটার কী হবে সাব?"
ভাণ্ডারি রাম পিচিক করে থুথু ফেলে মাটিতে। নেপাল বর্ডার থেকে বদলি হয়ে আসা প্রত্যেকটা চ্যাংড়াই এখানে এসে ত্যাড়ামি শুরু করে। ভাণ্ডারি রাম বহুবছর ধরে এদিকে আছে, দালজিতের মতো বহু বাঁকা লাঠিকে সোজা করে ছেড়েছে সে।
"এই নিয়ে দুইবার তুই আমার মুখে মুখে কথা বললি।" নিচু গলায় বলে ভাণ্ডারি। "আমি এইসব পছন্দ করি না। বুঝলি?"
[justify]সাকা: আ জার্নি বাই বোট
সকাল থেকে বেশ কর্মব্যস্ততার মধ্যে কাটিয়ে বিকেল নাগাদ যখন বাড়ি ফিরি তখন পুরো শরীর জুড়ে এক ধরনের তিক্ত অবসাদ নেমে আসে। এ সময়টা না ভালো লাগে ঘুমিয়ে কাটাতে আর না ভালো লাগে চুপচাপ বসে থাকতে। তাই প্রতিদিনই এ সময়টায় বাইরে বেরিয়ে পড়ি। বাসার কিছুটা দূরেই ঢাকা টু নারায়ণগঞ্জ রেল পথ। রেল লাইন ধরে হাঁটার মজাটা পেয়েছিলাম সেই ছোটবেলায়। প্রতিদিন বিকেলে বাবার হাত ধরে এই রেল লাইন ধরে হাঁটতাম। অবশেষে এটি একটি অভ্যাসে পরিণত হয়ে গেছে। এখন যদিও বাবা নেই কিন্তু অভ্যাসটা ছাড়তে পারি নি। তবে কখনোই মনে হয় নি আমি একা হাঁটছি। সবসময় আমার পাশে বাবার উপস্থিতি টের পাই। মনে হয় বাবা আমার হাত ধরে পাশেই হাঁটছেন আর বলছেন, “ শিপু, এই যে লোহার পাত দেখছ এর উপর রেলের চাকা গড়িয়ে গড়িয়ে চলে। যদি কখনো এই পাত থেকে চাকা খানিকটা বিচ্যুত হয়ে যায় তবে আর রক্ষে নেই। মানুষের জীবনটাও ঠিক তেমনি। যেই পথে তোমার চলার কথা তা থেকে খানিকটা সড়ে দাঁড়ালেই ভারসাম্য হারাবে, কখনোই লক্ষে পৌঁছতে পারবে না। তোমার মা নেই, আমিও যে চিরদিন বেচে থাকবো তাও নয়। হয়তো একা একাই তোমাকে পথ চলতে হবে তাই সাবধানে পথ চলবে।” কে জানতো বাবার সেদিনের কথাটা এত শীঘ্রই ফলে যাবে। বাবা যে দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত তা কখনোই জানতে পারিনি। তবে বাবাকে প্রায়ই বেশ চিন্তিত দেখতাম। হয়তো ভাবতেন নিজের অবর্তমানে এই বোকা ছেলেটা কী করবে? বিপদে কে পাশে এসে দাঁড়াবে? একদিন শরতের বিকেলে ঠিকই সকল ভাবনার অবসান ঘটিয়ে বাবা বিদায় নিলেন। আর আমি একূল ওকুল হারিয়ে মাঝ নদীতে হাবুডুবু খেতে লাগলাম। বাবার কথা ভাবতে ভাবতে চোখদুটো ভিজে উঠেছে।
ড্যান্স কার্ড
[justify]
১. মা কিলপে, ককেনেস্ ও লস এঞ্জেলস্ শহরে আমাদেরকে নেরুদা পড়ে পড়ে শোনাতেন।
২. একটা বই: টোয়েন্টি লাভ পয়েমস্ অ্যান্ড আ সং অব ডিস্পেয়ার; সম্পাদকীয়- ইসোদা; বুয়েনস্ আয়ারস্, ১৯৬১। প্রচ্ছদে নেরুদার একটা ড্রয়িং আর নোট আকারে লেখা- এই সংস্করণে বইটির মিলিয়ন কপি ছাপা হচ্ছে। ১৯৬১ সালে নেরুদার বইয়ের কাটতি মিলিয়নের কোটায় ছিল কি? নাকি ঐ সময় পর্যন্ত নেরুদার লেখা সব বই মিলিয়ে মিলিয়নতম কপি? আমি একটু ভয় পেয়ে ভাবি দুটো সম্ভাবনাই বিরক্তিকর।
১.
"চলুন, চা খাই। সাথে পুরি।" চৌধুরী বেশ উদাত্ত আহ্বান জানান।
দুলাল সাথে সাথে রাজি হয়ে যায়। "চলেন চলেন!"
আমার পাপী মনটা খুঁতখুঁত করতে থাকে। ব্যাপার কী? চৌধুরী কি আজ এত দূর থেকে আমাদের ডেকে এনে চা আর পুরির ওপর দিয়েই চালিয়ে দেবে?
তেলেভাজার দোকানের ভেতরে ঢুকে চৌধুরী বেশ জাঁকিয়ে বসেন একটা বেঞ্চে, আমরা উল্টোদিকের বেঞ্চে বসি। বাইরে আমগাছের ডালে বসে একটা কাক কা-কা করে ডেকে ওঠে।
...
রিসাইকেল
২০১০ সালের মৃত্যু ঘটলে ২০১১ সালের জন্ম হয়। ২০১১ সাল শুরু হলে মানুষজন উল্লাস করে। অতি উৎসাহীরা টাইম স্কোয়ারে জড়ো হয়। পুরানো বা নতুন প্রেমিকা কিংবা বউদের চুম্বন করে। আবার কেউ কেউ পুরানো বছরের মৃত্যু ঘটেছে দেখে কিছুটা দুঃখ পায়। ২০১০ সালে কি কি উল্লেখযোগ্য ঘটেছে চিন্তা করতে গেলে মাথায় সবকিছু ঠিকমতো না আসায় গড় হিসেবে বছরটাকে মোটামুটি ধরে নিয়ে নতুন বছরে আরো ভালো আরো দুর ...
চৈত্র মাসের রাত ১১টা খুব বেশি রাত না। তার ওপরে আজ বৃহস্পতিবার। কাল পরশু ছুটির দিন। 'নাইট ইজ স্টিল কিড' হওয়ার কথা হলেও পৌষ মাসের ইলেকট্রিসিটিবিহীন অজপাড়াগাঁয়ের মতো বেঘোরে ঘুমাচ্ছে স্বর্গের সবাই। ফেরেশতাগুলা সারাদিন কাজ করে করে ক্লান্ত আর মানুষগুলা কামে কামে গলদঘর্ম। শুধু একজনের চোখেই ঘুম নাই। তিনি পিতা আদম। আর ১ ঘন্টা পরেই তার জন্মদিন। আদম কোনো বিগত জমিদার চৌধুরী, সৈয়দ কিংবা স ...
আসুন আমরা প্রায় পনের বছর আগের একটা গল্প শুনি। গল্পের নায়ক ফরহাদ- বয়স সাতাশ, ছয়ফুট লম্বা, শ্যাম বর্ণের পেটানো শরীর এবং যে কিনা টুকটাক ফুটবলও খেলে। ফরহাদ একজন টেলিফোন এক্সচেঞ্জ অপারেটর। আমাদের এই গল্পটা যে জায়গাতে শুরু তার সম্পর্কে একটু না বললেই নয়। রাজধানী ঢাকা থেকে আরও চারশ কিলোমিটার দক্ষিনের একটা সীমান্তবর্তী মফস্বল শহর, যেখানে তখনও ডিজিটাল টেলিফোন এক্সচেঞ্জ হয়নি, আছে একটা ...