কাজে ক্ষান্ত দিয়ে জহিরুল আলম ফেসবুকে ঢুকলেন।
ফেসবুকে চেনা, আধা-চেনা, অচেনা মানুষের ছবি দেখা জহিরুল আলমের একটা প্রিয় কাজ। ছবি দেখে তাদের সম্পর্কে ধারণা করার চেষ্টা করেন। কেমন তাদের জীবন? তারা কি সুখী? তাদের স্বপ্ন কী? এইসব ভাবতে তার ভাল লাগে। অচেনা মেয়েদের সঙ্গে কথা বলতেও তার ভালো লাগে যেহেতু, নিজেকে নানা নতুন আকার ও প্রকারে উপস্থাপনের সুযোগ পাওয়া যায়।
আপনার স্বপ্ন কী? ফেসবুক চ ...
আমি তখন ক্লাস টেন। নিউ টেন। জানুয়ারি মাস। আর আমাদের বারান্দার টবের গোলাপ গাছেরা আফরিনদের বারান্দা ছুঁই-ছুঁই। গতবছর ওরা দুই ভাই-বোন মিলে ফুল ছিঁড়ে ছিঁড়ে পাপড়িগুলি সব বোতলে জলে রেখে পারফিউম বানাতো। এ বছর দেখি আফরিন ওপরতলা থেকে পানি দেয় আমাদের গাছে, ফুল আর ছেঁড়ে না। আমি ভুল করে বা ঠিক করে মাথা বাড়িয়ে দেই। আফরিনের দেয়া পানি জল হয়ে আমার মুখে নামে, কেন যেন খুব কান্না পায় আমার। গোলাপ গা ...
বিশাল একটি চেইনশপ। কত জিনিস যে পাওয়া যায় এখানে!
প্রথম পোকার স্বর:
এ জীবন
নিষ্ঠুর, নিষ্ঠুর।
(জেন কবিতা)
ইয়ে কোম্পানি ক্যায়া চিজ হ্যায়?
(ক্যাপ্টেন উইলিয়াম গর্ডনকে মঙ্গল পান্ডের প্রশ্ন)
১
জ্ঞানী উইকে আমরা ভুলি নাই। শিশুকাল থেকেই উই পড়তে শিখে। সেই থেকে তার নাম জ্ঞানী উই, কারণ আমরা কেউই কখনো পড়তে শিখি নাই। একদিন জ্ঞানী উই বসে ছিল ছোট বিলের ধারে। খড়ের গাদা থেকে মিষ্টি একটা গন্ধ আসছিল। আর বৃষ্টিতে ধুয়ে যাওয়ার পর আকাশটা কমলা রঙের। জ ...
পত্রমিতালী জিনিষটা আজকাল আর চলেনা, কিন্তু আমাদের ছোটবেলায় বেশ চলত। কুণালের সঙ্গে অবশ্য আমার শুরুতে সাধারণ বন্ধুত্বই ছিল। একই ক্লাসে পাশাপাশি বসে কাটিয়ে দিয়েছি বেশ কটা বছর। বারো ক্লাস শেষ করে আমি ভর্তি হলাম, মফস্বলের কলেজে, আর ও চলে গেলো কলকাতায় ইঞ্জিনীয়ারিং পড়তে।
কলকাতা থেকে মাঝে মাঝেই চলে আসতো ও। আর সঙ্গে নিয়ে আসতো কলকাতার গল্প। কফি হাউসের আড্ডাটা যে মোটেই খারাপ নয ...
চেনা জঙ্গলের আঁচলে এসে রাত গভীর হয়েছে। তার হাতে একটি শাদা রঙের আকৃতিতে লম্বা মোমবাতি। নির্জন জঙ্গলে নির্জন আলো জ্বালাবার সাথে সাথে ছায়াদের শরীর পুড়ে যেতে থাকে। একটি একটি করে তারা দৌড়ে পালায় ঘন গাছের আড়ালে।
মাথার ওপরে শূন্যে ঝুলে আছে নির্লিপ্ত নক্ষত্রখচিত আকাশ, দিনের বেলায় তার যতই রোমাঞ্চ জাগানো রঙ হোকনা কেন এখন সে প্রান্তিকের রঙ কালোর ঘরকন্না করছে। সে আকাশে দিকে তাকায়। আকাশ ...
কয়েকদিন ধরে ধস্তাধস্তির পর একটা গল্প লিখলাম। একদম বানিয়ে বানিয়ে।
১
জুলেখার মা ছিল পাগল। বাপের খোঁজ জানি না। জুলেখার মাকে একটা খালি ঘরে রাখার নিয়ম ছিল। খালি ঘর, কারণ সে সব আসবাব কুপিয়ে ভাঙত। তাকে আমরা ভাঙনবুড়ি ডাকতাম। আমাদের আম্মারা এইসব বলতে মানা করত। কে শোনে। জুলেখা কোনো স্কুলে পড়ত না। তবে তখনকার দিনে তাকে মাঝে মাঝে জানলায় দেখা যায়। রঙবেরঙের জামা গায়। জানা যায় এগুলো সেই বানা ...
ক্রমশঃ মিশে যাচ্ছি পাহাড়ের অশ্রুধারার ভিতরে।এই জলধারার অন্তে জন্ম নিয়েছে যে নদী আমি তার নাম দিয়েছি--'নিঃসঙ্গতা'।
দূর থেকে দেখলে------সে কেবল দূর থেকেই দেখা----মনে হয় দিগন্তে আকাশ আর পাহাড় একসাথে মিশে আছে- খুব ঘনিষ্ঠ
বন্ধুর মতো- জড়াজড়ি করে আছে।দৃষ্টিভ্রম।এক বন্ধু বলেছিল,-'পাহাড়ের জন্য আমার খুব কষ্ট হয়।কেমন একাকী-নিঃসঙ্গ দাঁড়িয়ে থাকে'।মানি।চোখের বিভ্রমে যাই মনে হোক --পাহাড়তো সত্যি সত ...
কুকুর সম্পর্কে একটা দুইটা কথা যা আমি জানি না
রাস্তার ঘেয়ো কুকুরটা হঠাৎ কাছাকাছি চলে আসাতে আঁতকে উঠি। দ্রুত সরে যাবার সময় কুকুরটার দগদগে ক্ষত আর বিবর্ণ চোখে চোখ পড়ে। তখনি পেছনের একটা ইটে পা ফসকে রাস্তায় পড়ে যাই। আতংকে কেঁপে উঠি। কিন্তু কুকুরটা সরে পড়ে। উঠে দাঁড়াই। লেংচে লেংচে চলা কুকুরটার পথে ব্যথা আর যন্ত্রণার অদৃশ্য লাভা অনুমান করি। নিজের যন্ত্রণাহীন আনন্দদায়ক জীবনের সাথে ...
ব্যাপারটা ভুলে গুলে খেয়েছিলাম বহুবছর আগেই। স্মৃতির পাতায় বাহুল্য জিনিষ জমা থাকলেও তার পাতা উল্টায় অনেক দ্রুত। পড়াশোনা আর তারপর জীবিকার তাড়নায় এসব ছোটখাট জিনিষ মনে রাখার সময় কই। নতুন নতুন ব্যাপার স্যাপারের বিচিত্রকথন মনের খাতায় লিখতে লিখতেই তখন সময় চলে যাচ্ছিল। আর সাধারণত যা হয়, যার সাথে যোগাযোগ থাকে না তার কথা মনে পড়েও কম। তারপরও মনে ছিল, হালকা অস্পষ্ট কিছু কথা, এক পলকের একটু ...