০১.
কীন ব্রীজের নিচের যে জায়গাটা এখন পাশ্চাত্যের মতো অনেক আধুনিক একটা নদীর পাড় হিসেবে শিক্ষিত মানুষ ছাড়াও আম জনতার কাছে স্বীকৃতি পেয়েছে, যেখান থেকে দাঁড়িয়ে সোজা সার্কিট হাউসটা দেখা যায়, অথবা লাল নীল আলো ভেসে আসে ছোট শহর থেকে ক্রমশ বড় এক নগর হয়ে যাওয়া সিলেটের জিরো পয়েন্ট থেকে, ঠিক সেই জায়গায় কোনো এক বিকেলে হাওয়া খেতে খেতে ফারহানার সাথে আমার প্রথম দেখা। মনে পড়লে এখনো অবাকই লাগে, আ ...
হ্যালো, আমি ডেভিড।
হাই, আমি ক্যামিল!
খুব অন্তরঙ্গ একটা পরিস্থিতি ছিল কিন্তু এটা।
কোনটা?
এই যে, আমরা সিগারেট ধরাতে একই আগুন ভাগাভাগি করলাম।
যদি আপনার মনে হয়।
তাই। আপনার কিছুই মনে হয় না?
হুঁম?
আমাদের হাত কিন্তু একজন আরেকজনেরটা প্রায় ছুঁয়ে গিয়েছিলো। খেয়াল করেননি বোধ হয়; আমি আপনার দিকে তাকালাম, আপনি আস্তে করে নিজের মাথা তুললেন। আমরা একজন আরেকজনের দিকে তাকালাম। কি জানি, জিন ...
"মা, তোমার কাছে সেফটিপিন হবে একটা? " তানিয়ার গলার স্বরে বর্তমানে ফিরে আসে দীপান্বিতা, একটু অপ্রস্তুত হয় মেয়ের অবাক আর প্রশ্নময় চোখ দেখে। তানিয়া এত অবাক কেন? মাকে কি সে খুব অন্যরকম দেখছে?
তানিয়া স্কুলের জন্য তৈরী হচ্ছে, সেফটিপিন চাইছে কাঁধে ওড়না আটকাবার জন্য। হাতের চুড়ি থেকে সেপটিপিন খুলে ওর দিকে এগিয়ে দেয় দীপান্বিতা।
"মা, কী হয়েছে তোমার? খুব অন্যমনস্ক দেখাচ্ছে তোমায়।" তানিয় ...
- অনন্ত আত্মা
আমার নাখাস্তা গল্পগুলো যারা করুণা করে পড়েন, তারা আমার বন্ধু কমলের নাম নিশ্চয়ই জানেন। আজকের লেখা কমলকে নিয়েই। কমল ওর নামের মতই হালকা, পলকা কিন্তু আসর জমানো ছেলে বলে আমাদের কাছে ওর কদর বি এন্ড এইচ এর চেয়ে কম না।
আমাদের আর কমলদের বাসার দূরত্ব খুব বেশি না। যখনকার কথা বলছি, কমলদের বাড়ীটা তখন একতলা। গেট দিয়ে ঢুকতেই প্রথমে যেই রুমটা পরে সেটা কমলের। কমলের রুমে কমল একাই ঘুম ...
লিন্ডা আমেরিকান স্টাইলে স্কার্ট পড়া। উচ্চতা মাঝারি। গায়ের বর্ণ দেখে তার জাতীয়তা বলা কঠিন। যে সময়ে তার আসার কথা তার আগেই এসেছিল। ঝেং তাকে অভ্যর্থনা জানালো সে আসার পর। তার তর সইছিল কীনা বলা কঠিন। আর লিন্ডা কথা বলার পর বোঝা গেল, সে ন্যাটিভ নয়। গাড়িতে ওঠার পর ফোনে কারো সাথে কথা বলল স্প্যানিশে। ঝেং এর বন্ধু ডাল্টন পুরো ব্যাপারটা ম্যানেজ করছিল। ঝেং যেহেতু তখনও গাড়ি চালানো রপ্ত করতে ...
দরজা খুলতেই দেখলাম মেয়েটিকে; বয়স বার-তেরর বেশী হবে না। বোধহয় কাগজ কুড়াতে এসেছে। কিছুটা অবাক হলাম। এমন নয় যে হোস্টেলে সকালে কাগজ কুড়াতে কেউ আসেনা, বরং প্রায় প্রতিদিন ভোরে ঘুম ভেঙে যায় ছোট ছোট ছেলে-মেয়েদের চিৎকার চেচাঁমেচিতে। শুধু আমার ঘুম ভাঙে তাও নয়; পাশের রুমের রিফাত মাঝেমাঝে দরজা খুলে কড়া বকা লাগায়, তারপর আবার দরজা বন্ধ করে ঘুমিয়ে পড়ে। আমার অবশ্য বাচ্চাগুলোর কারণে বেশ সুবিধা ...
তখন আমি ক্লাস থ্রি তে পড়ি, বেশ রোগা পটকা চেহারা আমার। ক্লাসের বাকি ছেলে মেয়েদের চাইতে শারিরিক শক্তিও অনেক কম, সুতরাং বাকিরা যে যে তাদের গায়ের জোর আমার উপর ফলাবে তা একেবারে বলাই বাহুল্য।
“জোর যার মুলুক তার” কথাটা অবশ্য সেই সময়ই আমার কাছে পরিষ্কার হয়ে গেছিলো।
বয়সে বড়, গায়ে-গতরে বড় বন্ধুদের থেকে তাই মাঝে মধ্যেই স্কুলে গাট্টা গোট্টা খেতাম। প্রথম প্রথম ব ...
লেখকঃ কুম্ভীলক
মনটা ভালো ছিল না। কোন কারণ নেই। দৌড়-ঝাপ করতে করতে ক্লান্তির মতন এক ধরণের অনুভূতি গ্রাস করে ফেলে বলে মনে হয়। যেরকম জীবন-যাপন করি আর জীবন থেকে যা কিছু আশা করি, তাতে করে অনুভূতিটাও নতুন নয় আর এর পরিণতিও জানা। তবু নেশার মতন এই অবসাদকে টিকিয়ে রেখেছি অনেক বছর। এটাই মাঝে মাঝে হয়ে উঠে বেঁচে থাকার অনুপ্রেরণা। সত্যি আশ্চর্য! প্রথম প্রথম ঘটনার ঘনঘটা ছিল, এখন সূত্র-বাঁধা। বৈচ ...
(পর্ব এক)
১
মুজিবের ভালো লাগছে না। তাসনুভার ব্যাপারে না ভাবলেই কি না?
কিন্তু মুজিবের কেমন যেন একটা বক্ষজ্বলন হচ্ছে, অনেকটা এসিডিক রিঅ্যাকশন এর মত। ভাববে না বললেই তো না ভাবা যায় না, মানসিক শ্রম দেয়া লাগে। অতিরিক্ত চেষ্টা। এটার কোথায় যেন একটা বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যাও পড়েছিল সে।
মুজিব মেথডিকাল হয়। 'মেক দ্য বেস্ট অফ আ ব্যাড সিচুয়েশন।' কি করা যেতে পারে এখন?
না, কিন্তু এটা কিভাবে ব্যাড ...
তখন কার্তিক মাস। বিকালের রোদ বাঁকা হতে হতে হাঁটুর কাছে এসে ঠেকেছে। আর ছাগলের গুটি গুটি ল্যাদা তাতে চকচক করছে। কতগুলা আবার চ্যাপ্টা হয়ে মিশে গেছে মাটির সাথে। কিন্তু চারদিকে শুধু চারকোণা মুখের কতগুলা গরু চড়ে বেড়াচ্ছে, ছাগলের দেখা নাই। কিন্তু ছিল, একটু আগেই একটা ছাগল চ্ছিল। তার আবার ইয়া বড় মুখের কাটা। আর সেন্ট্রাল মসজিদের হুজুরের মত জর্দা খাওয়া দাঁত। কিন্তু এখন আর নাই ...