হাইওয়ে উত্তরদক্ষিণে যায়। জমি যায় পূর্বপশ্চিমে। ছোটাছুটি করে শান্ত হয়। রাস্তা যায়। ঐ নতুন রাস্তা। সাইদ তখন ছোট ছিল। তার বাপ দেখাতে তাকে। আজ তারা কেউ নাই। জমিনের নিচে (প্রায়) শান্তিতে। কেবল একটা দূরাগত বাইপাস বেঁকে আসছে তাদের দিকে। তারা হাত নাড়ে, পাও নাড়ে। কিন্তু যাবে কই?
গ্রাম্য গোরস্তানে সাইদের সঙ্গে আলাপ। মাগরিবের ঠিক আগে আগে। আমি বসে ছিলাম একটা বিরাট গাছের নিচে। খানিকটা ছা...
[justify]সেদিন মাহফুজের টেবিল গোছাতে গিয়ে দেখি একটা সবজে-বাদামি বোতাম। আমি বেশ অবাক, টেবিলে বোতাম কেন? আর বোতামটাও আমার অচেনা। না, এমন না যে বাসার সব জামাকাপড়ের বোতামের চেহারা আমার মুখস্থ। কিন্তু এই বোতামটা আমার অচেনা, বেড়ালের চোখের মত। বেড়াল আমি একদম সহ্য করতে পারিনা। আমার ধারণা, বেড়ালরাও আমাকে একদমই সহ্য করতে পারেনা, আমাকে দেখলেই শক্ত হয়ে বেঁকে দাঁড়িয়ে চোখে চোখে তাকায়। এবং সম্ভবত ব...
বইয়ের পোকা
সব বাবা-মায়েদের মধ্যেই একটা মজার ব্যাপার দেখা যায়। বাচ্চাটা এক্কেবারে মহা বদের বদ দি গ্রেট হলেও বাবা-মার ধারণা থাকে তাদের সন্তানের চেয়ে লক্ষী আর দুইটা কোথাও খুঁজে পাওয়া যাবে না। কিছু অভিভাবক আরো কয়েক ডিগ্রী বেশি। স্নেহের টানে তারা এমনই অন্ধ হয়ে যান যে তাদের পিচ্চি একটা মশা মারলেও মনে করতে থাকেন যে নিশ্চই ওর মধ্যে ভবিষ্যত আইনস্টাইন নাহয় কমপক্ষে মোহাম্মদ আলী লুকিয়ে ...
১
প্রায়ান্ধকার ঘরে চুপ করে বসে আছি সেই দুপুরের পর থেকে। একদম চুপ। দূরের টেবিলের উপরে হালকা ডোমপরানো লাল আলোটা জ্বলছে, থ্রী-ডি মুভি ক্যামেরা যুক্ত আলট্রা-মাইক্রোস্কোপ সিস্টেমও সেই একইরকম সেট করা আছে। মাইক্রোস্কোপ-স্টেজের উপরে সেই স্লাইড, তাতেই সেই ভয়ানক স্যাম্পেল। সবচেয়ে আধুনিক অ্যানালাইজার যুক্ত আছে সিস্টেমে, স্ক্রীণে ত্রিমাত্রিক প্রোজেকশন করে করে সংখ্যাতালিকা দিয়ে দিয়...
[justify]চট্টগ্রামের আন্দরকিল্লাস্থ হাজারি গলি তার মতো করে বিকাল আর সন্ধ্যা সাজায়। কোনোমতে দুইটা রিকশা পাশাপাশি গেলে আর মানুষ হাঁটার জায়গা থাকে না। হাঁটতে গেলে কারো গায়ে গা না লাগিয়ে হাঁটা দুষ্কর। দুপাশে গাদা গাদা ওষুধের দোকান। আবার কেসিদে রোডের দিকে বেরোনোর রাস্তায় একের পর এক সব সোনার দোকান। সোনা গলানোর পোড়া পোড়া গন্ধ এখানকার হাওয়ায় বাড়তি উপাদান। রাস্তার দুই পাশে এত এত বাড়ি উঠে...
চোদ্দ হাজার পুরুষ আগেকার কথা।
দক্ষিন এশিয়ার এক প্রত্যন্ত অঞ্চলে সবুজ শ্যামল একটা গ্রাম আন্ডামারা। গ্রামের প্রধান ফসল তরমুজ। আর কোন ফসলের চাষবাস শেখেনি ওরা। ফলে তরমুজের বিনিময়েই চাল ডাল সহ অন্যান্য জিনিসপত্র যোগাড় করতো গ্রামবাসী। ওখানে এত হাজারে হাজারে তরমুজ ফলতো যে বেশীরভাগ মাটিতেই গলে পচে যেত। অথচ কয়েক ক্রোশ দূরের বাজারে তরমুজের খুব চাহিদা। সেখানে তরমুজের বিনিময়ে অনেক...
জীবনটা তো এই কফির মতোই বিটকেলে। ভালো লাগলে ভালো, না লাগলেও অনাগত স্বাদের আশায় চুমুক দিয়ে দেখি, ভালো তো লাগতেও পারে!
পনেরো বছর আগে মীরা, আমি কেউ-ই কফি খেতাম না। চা খেতাম। ঘোরলাগা বৃষ্টির বিকেলগুলোতে চায়ের বাহানাতেও দেখা হতো কত। কে জানে? হয়ত মীরা এখন আর চা খায় না, ইশকুলপড়ুয়া ছানাটির পড়া দেখতে দেখতে পুরোনো বইয়ের ...
১।।
সোবহানবাগ মসজিদের ঠিক উল্টোপাশে আমি দাঁড়িয়ে আছি। আকাশের সূর্যটার তেজ বাড়ছে ধীরে ধীরে। সকাল প্রায় সাড়ে এগারটা। এরমধ্যেই ঘামে আমি একদম গোসল করে ফেলার মত অবস্থা। দ্রুত রাস্তা ক্রস করে এ আর প্লাজায় ঢুকি। প্লাজার এসি-টা বেশ ভাল। এতক্ষন বাইরের রোদে হেঁটে আসার পর এখন এই শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত শপিং মলের শীতল হাওয়া কেমন যেন একটা স্নিগ্ধ অনুভূতির সৃষ্টি করে। আমি উইন্ডো শপিং শুরু করি। ক...
কফির তিতা-মিঠা সুবাসে মাতাল নাচে আবেশী বেহালা - নাচিয়ে যাও আমায়,ভালোবাসার শেষ প্রান্ত অবধি - কোহেনের কড়া কণ্ঠ ঠোঁটে ওঠে মাপা চুমুকে। ঘোলা কাঁচে ধাক্কা খেয়ে আলুথালু মেঝেতে লুটায় হলুদ আলো। ছড়ানো সোফায় গড়িয়ে পড়ে হাসি। রেশম চুলে আঙ্গুল চালানোর ফাঁকে একজোড়া সতর্ক চোখ চট করে দেখে নেয় - পা রাখার ভঙ্গিটা ঠিক আছে তো?
এনিথিং এলস স্যার?
ল্যপটপের আড়াল থেকে মাথা নাড়ে হাসি। দ্রুত তার জায়গা ...
[justify]
একটা অন্ধ বধির ট্রেন
আমরা সবাই অন্ধ বধির সেই ট্রেনের আরোহী। আমরা নানা বিষয়ে গল্প করি, হাসি। আমাদের মাঝে থেকে যাওয়া অন্ধকার ঘষে ঘষে আরো কালো করি। ট্রেনের বগিগুলোর প্রশংসায় পঞ্চমুখ হই। অন্ধ বধির ট্রেনের গতিতে, তার ক্রমাগত চলতে থাকায় আমাদের মুগ্ধতা বাড়ে। জানালাগুলো কালো রঙ করে দিয়ে আলোর নিশানার নিকুচি করি। পরে আবার গল্পে মাতোয়ারা হই। পরে একদিন আমাদের একজন ট্রেনের চেইন টান...