স্যুটকেসটা বেশ বড় ছিল। যতদিন বিছানার নিচের জায়গাটা জুড়ে ছিল বোঝা যায়নি। এখন শূন্যতার মাপে বোঝা যাচ্ছে, শূন্যতাটি বিরাট। বিষন্ন লাগছে হঠাৎ।
অথচ এমন তো লাগার কথা ছিল না! বহুদিন ধরেই একই বাড়িতে থেকেও সম্পূর্ণ আলাদা ছিলাম আমরা। হাসি থেমে গিয়েছিলো অনেক আগেই, ইদানিং বন্ধ হয়েছিলো কথাও। এর কিন্তু কোনো নির্দিষ্ট কারন নেই, কোনো নির্দিষ্ট ঘটনার কথা বলতে পারি না যেখান থেকে এ দূরত্বের সৃ...
‘লইয়া যাইন মাই।
ডাইন আতঅ (হাতে) বান্-বা, গলাত্ বান্-বা।
আর কুনু জা’গাত্ বান্ধইন না-জান।
ড্যাগঅ ছুয়াইয়া পিন্-বা।
লইন বইন, লইন বাই (ভাই), আশা ফুরন(পুরণ) অইবো, বরকত পাইবা........’ -
মাথায় সাদা টুপি, প্যান্ট আর পাঞ্জাবী পরনে। গলার সুর আকৃষ্ট করে মানুষগুলোকে। ওদের মন তখন সদ্য হাঁটতে শেখা শিশুর মতোন নড়বড়ে কিংবা পদ্মপাতার টলটলে জলকণা। আঁকড়ে ধরতে চায় বিশ্বাসের খুঁটি, গহীন অতল হাঁতড়ে খুঁজে ফিরে ...
(উৎসর্গঃ অত্যন্ত প্রিয় এক সচল, সন্ন্যাসীদাকে-- যিনি এখন কাম্রাজ্যে (তুলনা :সাম্রাজ্য) অবসর জীবন কাটাচ্ছেন।)
প্রথম পর্বঃ আশরাফুল ও মাশরাফিদের সাথে একদিন
দ্বিতীয় পর্বঃ এবার কান্ড পাকিস্তানে
এক
আশরাফুল ড্রইংরুমে বিরস বদনে বসে আছে। একটু আগেই বউয়ের সাথে রাগারাগি হলো। রাগারাগির বেশিরভাগই অবশ্য ওর বউ করলো...আশরাফুল শুধু মাঝখানে বারদুয়ে...
মজুরের সংজ্ঞা কী? দিন-মজুরের ?
একটা বিবর্ণ খাতা ছাড়া আমার তো আর কোনো সঞ্চয় নেই।
দিন আনি। কী আনি ? কী জানি । তবু দিন খাইনা। আর যখন খিদের চোটে গা-গুলিয়ে দেয়া হলুদ আলোটা বন্ধ করে শুয়ে পড়ি - তখন কানের গহীনে বিদ্যাসাগর বলেন - কবিকে খেতে দিও ...
... আমি তখন তলিয়ে যেতে থাকি, আরো, আরো, আরো অচেনায় ... তখন কারা আমায় খেতে দেয়? কাদের খাওয়া থেকে? আমি তো মজুর নই । উদ্বৃত্তখোর কবিমাত্র। মজুরের ছলকে পড়া ঘাম। ...
পাঁচ টাকা রিকশা ভাড়ার রাস্তায় চার টাকার পথ আসতেই মনটা উসখুস করতে শুরু করে। অবাধ্য চোখ রাস্তার বামদিকে আভাস খোঁজে। বিন্দুমাত্র আভাস পেলেই, “এই রিকশা, থামেন থামেন। এখানেই নামবো”। আভাস যে সব দিন ঠিক হয় তাওনা। কোন কোন দিন দেখা যায় বোকার মত টার্গেট ভুল করা হয়েছে। তখন এক টাকা রিকশা ভাড়া গচ্চাতো যায়ই সাথে বাকি পথটুকু একা একা ঠেঙ্গিয়ে যেতে হয়। যেদিন আর ভুল হয়না সেদিন বাকি পথটুকুকে বড্ড ...পাঁচ টাকা রিকশা
ইদানীং প্রাকৃতিক আচরণগত কারণে ছোট বেলায় পড়া ষড়্ ঋতুর কোন অস্তিত্ব বাংলাদেশে খোঁজে পাওয়া যায় না। কখন কোন ঋতু আসে আর কখন যায় সেটা শুধু পত্রিকা পড়ে জানা যায়। যেই শরতের আকাশে সাদা সাদা মেঘের ভেলা ভেসে বেড়ানোর কথা সেখানে দেখা যায় বড় বড় কালো মেঘের দৌড় ঝাঁপ। কখনো প্রকৃতিকে অন্ধকার উপহার দিয়ে নেমে আসে ধরনীতে বৃষ্টি হয়ে, ভাসিয়ে দিয়ে যায় শহর,বন্দর, গ্রাম, মাঠ ঘাট, রাস্তা ও বিস্তীর্ণ সমতল ভ...
১।
হাল্কা নীল ভোর, খুব মৃদু একটা আভা শুধু দেখা দিয়েছে। এখনও সূর্য উঠতে অনেক দেরি, পুবের আকাশে এখনো লাল রঙই লাগে নি। হাওয়ায় হাল্কা শীত-শীত ভাব। একটা ভোরজাগা পাখি সুরেলা গলায় ডেকে উঠলো, গানের প্রথম আখরটির মতন বাধো-বাধো ডাক।
সুজাতা জেগে গেছিল আগেই, অনেককাল ধরেই শেষরাতে ঘুম ভেঙে যায় তার। সেই স্কুলে থাকার সময় সে রাত জাগতে পারতো না বলে শেষরাতে মা ডেকে দিতো, সে উঠে পড়তে বসতো, সেই অভ্য...
সকাল থেকেই ঘুরি ঘুরি বৃষ্টি হচ্ছে। সারা রাতের অঝর ধারায় বৃষ্টির ফলে শহরের অনেক সড়ক পানির সাথে কোলাকুলি করছে। আসলে কোলাকুলি বললে ভুল হবে, প্রখর সূর্য তাপ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য সড়ক গুলো পানির নিচে ডুব দিয়ে আছে। তাছাড়া সারা বছর ধরে গাড়ির নির্যাতন সইতে সইতে সড়ক গুলি মুমূর্ষ হয়ে গিয়েছিল, তাই পানি চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছেন স্বয়ং উপরওয়ালা।
আদৃতা সকালে ঘুম থেকে উঠে অসুস্থ শাশুড়ীর জ...
ঈদের দিন আমাদের বাড়ীর বুয়ার কাছে তাদের বস্তির এক অর্থব বুড়ীর কথা শুনে মন খারাপ হলো খুব। ভীষন অসুস্থ আর একেবারেই হাঁটতে চলতে পারে না বলে এবার ফেতরার পয়সাও তুলতে পারেনি। রীতিমতো না খেয়ে আছে।
বাবা, মা, চাচা, চাচী ও খালা-ফুপু দের সালাম করে পকেট ভারী হয়েছিল বেশ। তার কিছু অংশ আর বন্ধুদের বলে কয়ে আরো কিছু জমিয়ে বিকেলে বুড়ীর ভাঙ্গা কুড়েঘরের সামনে গিয়ে হাজির হলাম। আমাকে দেখে আনন্দে উজ্জ...
এখানে রোদ জমে আলোর নদী হয়ে যাচ্ছে। আমরা গতরাতের কুয়াশার চাদর খুলে ঝাঁপি দিই, ঝাঁপি দিই বিবস্ত্র শরীরে। জলের ওম লেগে আসে আস্তিনে, চোখে, মুখে, নাকে। আমরা হাঁপি খাই। মাছের ঘ্রাণ নিয়ে অটুট হয়ে আছে কয়েকটি শালুক। আমরা তাদের কাছে গিয়ে দাঁড়াই। রোদের গল্প শুনি।
আমরা শুভালক্ষ্মীর জলে সিনানে।
দূরবর্তী মাঠে স্তনমতো হয়ে আছে একটি বট; তাহার শাখাহাড়ে, পাতার গোপনে কতগুলো শালিক খেলা করে বাতাসের...