আঁকাবাঁকা পাহাড়ী পথটার উপর দিয়ে সাবধানে গুহার সামনের পাথুরে চাতালে উঠে এলাম। মস্ত সেই ধূসর পাথরটা! দুখন্ড হয়ে ভেঙে আছে। পাথরটার সামনে গিয়ে বসে পড়লাম, ঝুঁকে পড়ে আমার লোমশ হাত বাড়ালাম ওটার দিকে। এখনো ওটার গায়ে লালচে-বাদামী দাগগুলো জেগে আছে। কুশ আর খুমানের গতকালের লড়াইয়ের চিহ্ন!
আমি ওদের যুদ্ধের সাক্ষী। আবছাভাবে মনে করতে পারি খুমানকে কুশ এক ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিলো, খুমান হুম...
খটখট-খটাখট, কী-বোর্ডে আঙ্গুল চলছে বারবার। চারিদিকে আর কোন শব্দ নেই, আর কেও নেই। সব ঘুম,
জেগে আছি শুধু আমি। লেখাটা আজকেই শেষ করতে হবে। কিন্তু সামনে এগোচ্ছে না কিছুই। যতই কী-বোর্ডে ঝড় তুলছি ততই বেকস্পেসে চাপ পরছে। কালকেই ম্যাগজিনের জন্য গল্প জমা দেবার শেষ তারিখ। বুঝে উঠতে পারছি না কিছুই কারণ রাত শেষ হতে বেশী বাকী নেই কিন্তু গল্পের এখনো অনেক বাকী।
সন্ধ্যায় মাথায় আসা গল্পের প্লটট...
কাঁটায় কাঁটায় সাড়ে দশটায় মিটিং রুমে ঢুকেই যেন একটা বিপদের গন্ধ পেল বিদেশ। কষাইখানায় ঢুকলেই ছাগলেরাও বোধ হয় এই গন্ধটাই পায়। টেবিলের শেষ মাথায় সদা হাসিখুশী মিঃ বেয়ার ভয়ানক গম্ভীর মুখে বসে। বাকীরাও সবাই চুপচাপ। দশ মিনিটের মধ্যেই মিটিং শেষ। অর্থনৈতিক মন্দার জন্য প্রোজেক্ট তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে যাচ্ছে, সবাইকে আগামী পনের দিনের মধ্যে দেশে ফিরে যেতে হবে।
একটি কথা না বলে সবাই মিটিং রুম ...
গত পরশু সচলের জন্মদিন গেল, কত অসাধারণ অনেকগুলো লেখাই না আসলো, তাই ভয়ে ভয়ে এই লেখাটা আজকে দিলাম, সূর্যের পাশে মোমবাতি জ্বালানোর ব্যর্থ প্রয়াস না করে একটু পরিবেশ হালকা হয়ে আশার অপেক্ষা করতে লাগলাম, কিন্তু সে সময় যেন আর আসে না। আমি বসে বসে মনে করার চেষ্টা করতে লাগলাম, যখন সচল সচল করে সবার মাথা খারাপ করতাম না, তখন কি করতাম? তখন মনে পড়ল গল্পের বই, ছায়াছবি, পিএসথ্রি তে ভিডিও গেম, এরক...
আম্বিয়া খাতুনের বয়স কত হবে ? ৯০ এর কাছাকাছি তো অবশ্যই। শরীরের শক্তি শেষ প্রায়। বেঁকে গেছে কোমর। পায়ে বাতের ব্যথা। হাঁটতে কষ্ট হয়। তারপরও লাঠি নিয়ে হাঁটতে চায় না সে। কতবার কতভাবে বলেছে সবাই। কিন্তু আম্বিয়া খাতুনের জেদ বড় শক্ত। যেন সময় আর প্রকৃতির সাথে জেদ করেই নুয়ে পড়া কোমর নিয়ে লাঠি ছাড়াই ছোট ফ্ল্যাটের এক ঘর থেকে আরেক ঘরে হেঁটে বেড়ায় আম্বিয়া খাতুন।
ঘোলাটে চোখের দৃষ্টি ক্ষীণ । ...
দুই।
ফেল করা মার্কশীট অংক বইয়ের মধ্যে ভরে, শীতের দুপুরে স্কুলের মাঠ পার হয়ে লেবার কলোনী আর সুগার মিলের অফিসার্স কোয়াটার্সের সামনে বয়ে যাওয়া ছোট্ট নদীর সঙ্গে জোড়া দেওয়া হাতে কাটা খাল যা কিনা চিনিকলের জলীয় বর্জ্য নিস্কাশনের উদ্দেশ্যে বানানো, ফলে তার পানির রং লালচে, দুর্গন্ধযুক্ত আর সবসময়ই কুসুমের চেয়ে গরম, - রীনা সেখানে স্কুল ড্রেস উঁচু করে হাটু পানিতে দাঁড়িয়ে, আম্মা রেজাল্ট দে...
[ আন্তন চেকভের দ্য বেট গল্পটা নেটে পড়লাম, আমার আগে পড়া ছিল না। চেকভের অনেকগুলো গল্পের অনুবাদ নিয়ে একটা বই আছে আমার কিন্তু ওটা এখনো পুরো শেষ করিনি। এই গল্পটা বেশ বিখ্যাত, হয়ত অনেকবার অনুবাদ করা হয়েছে। সে তুলনায় আমার এই সাহস করে ফের অনুবাদ করতে বসা সবাই ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন আশা করি।]
দ্য বেট
আন্তন চেকভ
শরতের এক অন্ধকার রাত। বুড়ো ব্যাঙ্কার হাঁটছিলেন তার পড়ার ঘর...
এই পর্ব লিখিতে বসিয়া আমি যেন দীর্ঘকালের আটকাইয়া রাখা দীর্ঘশ্বাস ছাড়িলাম, আর আশা করিতেছি, আমার প্রিয় সচলের পাঠকগন ও ছাড়িলেন, কারন তাও খুবই স্বাভাবিক, ৫নং মানে আপাতত এই সিরিজের ইতি, যদি না আবার কোন মামার নেক নজরে পড়িয়া যাই, তাহার পর আবার আসিয়া সচলে ইনাইয়া বিনাইয়া সেই গল্প ফাঁদিয়া বসি। যদিও মনস্থির করিয়াছি, যথেষ্ট সংযত হইয়া গাড়ী চালাইব যাতে করিয়া এরূপ না ঘটে, তবে কিছ...
শামসুদ্দিনদের গ্রামের বাড়িতে একটি কৃষ্ণচূড়া গাছ ছিল। বাইরের বারান্দায়, যেখানে গ্রাম্য শালিস ডাকা হতো, ধান মাড়াই হতো আর পানের বিড়া বানানো হতো সন্ধ্যার পর, সেই পুরো এলাকা দখলে ছিল ওই বিশাল কৃষ্ণচূড়া গাছের। ডালপালা চতুর্দিকে ছড়িয়ে দিয়ে মহারাণীর মত ওখানে সে তার ক্ষুদ্র রাজত্ব করে যাচ্ছিল কয়েক দশক ধরে। সারাবছর তার চিরল সবুজ পাতারা মায়া ছড়িয়ে রাখত উঠানের কোণ জুড়ে, আর বসন্ত এলে তার ...
১।
শীতের সন্ধ্যা, ঝপ করে আলো কমে অন্ধকার হয়ে আসে। আর পাহাড়ী হাওয়ায় মরিচের ধার। বাগান থেকে আমরা ঘরে চলে আসি, ড্রয়িং রুমের ওম-ওম আতিথেয়তায় ভালো লাগে, বাইরে এখন বেশ বৈমাতৃক শৈত্য। সোফা টোফা দেয়ালের দিকে ঠেলে দিয়ে ঘরের মাঝখানে মস্ত এক মাদুর পেতে এষা মাঝখানে রাখলো চানাচুর-মুড়ির বাটিগুলো। বললো চা আসছে।
আমরা কলেজবেলার মতন বসে গেলাম, একটা খবরের কাগজ পেতে মুড়িচানাচুর ঢেলে ফেলা হলো, এ...