রাত শেষ হয়ে আসছে ধীরে ধীরে। আকাশের দিকে তাকালে এখনও সময়টা আন্দাজ করা যায় না। আমি উঠে পড়ি। এপাশ ওপাশ অনেকক্ষণ তো হলো! বিছানাবালিশ ধীরে ধীরে উষ্ণ মনে হচ্ছে। আর কতোক্ষণ এভাবে গড়াগড়ি করা যায়?
আমি উঠে পড়ি। জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে দেখি কিছু পরিষ্কার হয় না। তাও কী মনে করে তাকিয়েই থাকলাম। হালকা কুঁজো হয়ে বসলাম। আমি সবসময় এভাবে বসি। ছোটবেলায় নানী রেগে যেত, বলতো "পিঠ সোজা কইরা বয়। ব্যাঁকা ...
অনেকদিন আগে থেকেই তারাদাস বন্দ্যোপাধ্যায়ের তারানাথ তান্ত্রিক আর অলাতচক্র বইদুটো খুঁজছিলাম। মৃদুলদা’ই প্রথমে বলেন বইদুটোর কথা। তারানাথ তান্ত্রিক নিয়ে প্রথম দুটো গল্প লিখেছিলেন বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়। যা নিয়ে পরে এই বইদুটো লেখেন তারই ছেলে তারাদাস। তারাদাস তার বইয়ের ভূমিকায় বলেন তারানাথ তান্ত্রিক নাকি বাস্তবেই ছিলেন। গল্পগুলো পড়তে পড়তে আমার মনে পড়ে গেল আমার বড়মামার ...অনেকদিন আগে থেকেই তারাদাস বন্
[১]
এলার্ম ঘড়িটা দুইবার বাজলো, তৃতীয়বার বাজবার আগেই রনির ডান হাতটার চাপড়ে সেটা বন্ধ হয়ে যায়। ওর ঘুম ভেঙ্গেছিলো আগেই, এতক্ষন শুয়ে শুয়ে ডায়রীটা পড়ছিলো। যে পাতার উপর চোখ আটকে আছে সেটাতে বড় করে লেখা “এটেম্পট নাম্বার ১৪”। আগের পৃষ্ঠাটা উল্টায় রনি। সেটাতে বড় করে লেখা “এটেম্পট নাম্বার ১৩” যেটা আবার লাল কালি দিয়ে কাটা, যার একটাই অর্থ এটেম্পটা সফল হয়নি। দীর্ঘশ্বাস ফেলে রনি, সামান্য একট...
আমার বন্ধু দুলালের মাথায় সারাক্ষণ উদ্ভট সব ব্যবসার চিন্তা ঘোরে। আর নতুন কোন চিন্তা এলেই ছুটে আসে আমার কাছে। আমি হচ্ছি তার যে কোন ব্যবসার অটো অংশিদার। তার এরকম বেশ কিছু ব্যাবসায় বাধ্য হয়ে টাকাও লগ্নি করতে হয়েছে আমাকে। এবং বলাই বাহুল্য সে সব টাকা গচ্চা খাতেই বিলীন হয়ে গেছে। তারপরও আমি ধৈর্য্য হারাইনি। দুলালও উৎসাহ হারায়নি। তার নতুন নতুন ব্যাবসা পরিকল্পনা চলছে পুরোদমে।
কিন্ত...
দেওয়ানহাট ওভারব্রীজের টাইগারপাসের অংশে পশ্চিম রেলিংটার নির্দিষ্ট একটা অংশে প্রতিদিন একটা কালো প্যান্ট পড়া খালি গা উস্কোখুস্কো মানুষকে বসে থাকতে দেখি। কোনদিন দেখি বসে আছে, কোনদিন শুয়ে বা ঘুমিয়ে, কোনদিন আবার রেলিংটা দুহাতে জড়িয়ে ধরে ব্রীজের বাইরের দিকে ঝুলে আছে। অদ্ভুত লাগতো। পাগল কিসিমের মানুষ, হয়তো পুরোপুরি পাগলই। কিন্তু এরকম অদ্ভুত জায়গায় কেন আস্তানা গেড়েছে, তা নিয়ে আমার...
আজ রাতে শীত আসলেই বেশি পড়েছে, সামান্য এই চাদরে কিছুতেই মানতে চাইছে না। শীতে খাটের উপর রেবেকা কেমন গুটিশুটি মেরে ঘুমিয়ে আছে, দেখে মায়াই লাগে। আহারে মেয়েটা কত রাত না জানি, না ঘুমিয়ে কাটিয়েছে। কম্বলটাও পুরান, পাতলা। রেবেকার শীত মানছে বলে মনে হয় না, কিন্তু শালা কিছুই করার নেই। বিয়ের পর মেজ ভাই যে নতুন কম্বলটা পাঠিয়েছিলেন করাচী থেকে বেশ ওম হত ওটাতে। কিন্তু সোলাইমানের বাচ্চা সব নিয়ে গে...
মোংথোয়াই নিজেকে আটকাতে পারে না আর। যেন সে ভেঙ্গে ভেঙ্গে পড়ে যাচ্ছে, মাটির সাথে মিশে যাবার অনুভূতিতে কেমন যেন সে মহুয়া মাতাল সন্ধ্যায় পথ হারিয়ে ফেলেছে। এতণ ধরে চোখের ভেতর জ্জ কাপ্তাই বাঁধের মধ্যে আটকে থাকা পানির মতোই জ্জ জমে থাকা কষ্ট যখন ভরা বর্ষার শৈলপ্রপাতের ঢলের মতো ধেই ধেই করে নেমে আসলো, তখনই সম্বিত ফিরে পেলো সে। মগজের ভেতর এখনো ওগলাচ্ছে দ্রুম-দ্রুম-দ্রুম। ওইতো ধীরে ধীরে নি...
সকাল থেকেই খিঁচড়ে আছে মেজাজ। রাতেও ভালো ঘুম হয়নি। পাশের বাড়ীর যুগলের ঝগড়া তুঙ্গে উঠেছিল গতরাতে। মাঝে মাঝে একটু থেমে থেমে প্রায় সারা রাত ধরেই চললো । বাবা মায়ের এই ঝগড়ার মাঝে ছোট বাচ্চাটি কেঁদে উঠলো বারবার। ভোরের দিকে থামলো। আপোষে নাকি ক্লান্তিতে, তা বলতে পারবো না। মরুকগে! আমার কি? ঘুম হলোনা, এ নিয়েই বিরক্তি আমার। আজ সকালেই কর্তাদের সাথে জরুরী মিটিং অফিসে। সেখানে ভালোভাবে নিজেকে ...
দুপুর ঢলে পড়ে বিকালের দিকে। বাড়ী এখন নিঝুম, আমগাছে ঘু ঘু ডাকে ঘুমেলা সুরে। দোতলার বারান্দায় ইজিচেয়ারে বসে থাকে অনুরাধা, দুপুরে ঘুম তার কোনোকালেই হয় না। আগে সেলাই, উলবোনা এইসব নিয়ে দুপুর কেটে যেতো, এখন তো আর সেইসবও নেই। হঠাত্ করে কালো আর হলুদ উল দিয়ে বোনা সেই বাঘা সোয়েটারটার কথা মনে পড়ে গেলো। তখন ঝোরা কিন্ডারগার্টেনে আর অভি তখন মাত্র বছর দুইয়ের। সোয়েটারটা ঝোরার জন্য বুনেছিলো প্...
আমরা তিন বোন এক ভাই। তবে আমাদের সবার বড় এক বোন নাকি জন্মের মাত্র এক মাসের মাথায় মারা গিয়েছিলেন। সে হিসেবে চার বোন এক ভাই। অবশ্য সেকথা আলাদা। আমার বেঁচে থাকা তিন বোন হচ্ছেন সোহেলী আপা, শিউলী আপা, আর পারুল আপা। সবার শেষে আমি, আমাদের বংশের বাত্তি। কিন্তু বংশের বাত্তি কিভাবে হলাম, আপারা কেন হতে পারলো না, সেটা আমি বলতে পারবো না। আমি যে বাত্তি, বংশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার, সেটা আ...