বাবুলের হাত এবং মাথা দুটোই সমগতিতে চলছে। বুঝতে পারছিনা এটা কি অভ্যাস বসত নিজের অজান্তেই হচ্ছে, নাকি এটাই স্বাভাবিক। হাত চলছে ডানে-বামে কিন্তু মাথা উপরে- নিচে। ব্যাডমিন্টন খেলায় যারা দর্শক সারিতে থাকেন তাঁরা নিজেরাও অনেক সময় বুঝতে পারেননা কর্কের মুভমেন্টের সাথে সাথে তাঁদের চোখ নয়, পুরো মাথাটাই ডানে বামে মুভ করে! এটাও সেরকম নাকি?
ইদানীং ঢাকা শহরে চলাফেরা করা শুধু সময়সাপেক্ষ ব্যাপার নয়, একটা ধৈর্য্যেরও বিষয় বটে। সন্ধ্যা সাতটার দিকে প্রায় একই জায়গায় আধা ঘন্টা ধরে বাসটি নিশ্চল দাঁড়িয়ে আছে, জানালার পাশে বসে উদাস দৃষ্টিতে বাইরে তাকিয়ে থাকা দিপুকে দেখে অবশ্য মনে হচ্ছিলো না হাসপাতালে পৌঁছাতে তার কোনো তাড়া আছে অথবা ক্রমশ ভিতরে ভিতরে অসহিষ্ণু হয়ে উঠছে। দেশের একটি বড় নামকরা হাসপাতালে মেডিকেল অফিসার হিসেবে কাজ করে সে। খুব বেশিদিন হয় নি নামের আগে ডাক্তার শব্দ বসিয়েছে। ইনফ্যাক্ট এক বছরের ইন্টার্ণশীপ শেষ করে এই রকম একটি বড় হাসপাতালে চাকরী পেয়ে যাবে, সেটা সহজে ভাবেওনি দিপু। এই অর্জনের পিছনে দিপুর জাঁদরেল বাবার, যিনি কিনা সরকারের একজন হাই অফিসিয়াল, ভুমিকা অবশ্য কম নয়!
নিয়তির উপর আগ্রাসন চালালাম। খোদাতালা মাওলা কপালে যা রেখেছে রাখুক। আমার পেটে খিদে, পকেটে পয়সা নেই, উপোস থাকাই নিয়তি। দুম করে পড়ে গেলাম ফুটপাতে।
“ সামনে আর পাকা রাস্তা নেই। এখান থেকে পায়ে হেটে যেতে হবে। ” মেজর ফয়সল কবির বলল।
গাড়ি থেকে বের হলাম আমি। তার আগে অস্ত্রভর্তি ব্যাগটা পরীক্ষা করে নিলাম।
“ মেজর সুরঞ্জন। ” ফয়সলের কণ্ঠ শুনে তাকালাম ওর দিকে। একটা সিগারেট অফার করছে ও। “ এখনই টেনে নাও। রাতে আর ধরাতে পারবে না। বানশিগুলো দেখে ফেলবে। ”
পিছন থেকে গম্ভীর কণ্ঠে বলে উঠল মেজর ইশতিয়াক,“কোন বানশি আসলে জাস্ট উড়াইয়া দিব। আমাকে চিনে না।”
মোখলেসুরের চায়ের দোকানে বসে বসে রাজা উজির মারতে মারতে বিস্বাদ চায়ে চুমুক দিচ্ছিলাম আমি, কামরুল আর মনি। এই ব্যাটা মোখলেসুর মোটামুটি সবসময়ই এমন ফালতু স্বাদের চা বানালেও আড্ডা দেয়ার জন্য তার দোকান খুব ভাল জায়গা বলে মাঝেমধ্যে এখানে এসে বসি দীর্ঘ সময় ধরে আড্ডাবাজি করার সুবিধার্থে। কারণ এদিকটায় পাড়ার মুরুব্বিরা খুব একটা আসে না, তাই একটু পর পর উঠে "চাচা স্লামালিকুম; আঙ্কেল ভাল আছেন; জ্বি, আমাদের বাসার সব
আগের পর্ব এখানে
http://www.sachalayatan.com/ipsito/51810
(৯)
তবে মোবারককে ডাকার আগেই ঝাঁকরা চুল কামেশ ঢুকলেন হাসিমুখে। বয়েস চল্লিশ ছাড়ায়নি। বললেন, “ভিক্টিম তিনটে বারোতে শেষ ইমেল করেছেন। কাজেই ধরে নেওয়া যায় ইমেল করার পর আততায়ী ওঁর ক্যাবিনে ঢুকেছে, কিছু কথা নিশ্চয়ই হয়েছে, আর তারপর ছুরি মেরেছে আততায়ী। এই পুরো ব্যাপারটার জন্য তিন মিনিট বরাদ্দ করলেও এটুকু বলা যায় যে খুনটা তিনটে পনেরোর পর হয়েছে।”
১।
সন্ধ্যের দিকে প্রচণ্ড ক্লান্তি অনুভব করেন কামরুল হাসান। সকালে থেকে চলছে এই কবিতা পাঠের আসর। ফয়েজ আহমেদ তার দিকে তাকিয়ে একটু হাসেন। বুঝতে পারেন পটুয়া মহা ক্লান্ত। একটি কাজেই পটুয়ার কখনো ক্লান্তি আসে না, আঁকা আঁকি। আশেপাশে যা কাগজ পাচ্ছেন পটুয়া সকাল থেকে সেখানে নানা আঁকিবুঁকি করে যাচ্ছেন। এখন কবি রবীন্দ্র গোপের ডায়েরীতে চলছে পটুয়ার আঁকা আঁকি। কিছুক্ষণ আঁকিবুঁকি করে হঠাৎ মনে হল পটুয়া কিছু একটাতে মন বসিয়েছেন। পটুয়ার মাঝে কেমন যেন একটা ঘোর লাগা ভাব। সারাদিন ধরে এত কবিতা শুনলেন কিন্তু এখন আর মনে করতে পারছেন না কি কবিতা শুনলেন। মাথার মধ্যে শুধু মোহাম্মদ রফিকের চারটি লাইন ঘুরপাক খাচ্ছে -
সব শালাকবি হবে, পিপীলিকা গোঁ ধরেছে উড়বেই, বন থেকে দাঁতাল শুওর, রাজ আসনে বসবেই।
বনগাঁ এখনও জেগে উঠেনি পুরোপুরি। ভোর বেলা মুষলধারে বৃষ্টি হয়েছে। সেই বৃষ্টিতে লতা পাতা, পাখির গা আর ঘরের চাল ধুয়ে চকচক করছে। রাতের বৃষ্টি দুঃস্বপ্ন, বিকেলের বৃষ্টি মন খারাপের বার্তা আর সকালে বৃষ্টি আনন্দ বয়ে আনে। বৃষ্টির পানিতে গোসল করে জবা, কুমড়ো ফুল আর ধানের সবুজ পাতায় সোনালী রোদের চিকচিকে হাসি খেলছে। মৃদু বাতাসে ঋষি মুণিদের মত ধানের ছটা গুলো এদিক ওদিক মাথা দোলাচ্ছে। ভারতের এই অংশটি বাংলাদেশের স
অফিসে এসে রোজকের অভ্যেস মতো মেইলগুলো চেক করছিলাম। আনসোর্টেড লিস্টে একটি নামে হোঁচট খেলাম। গট আ মেইল ফ্রম এঞ্জেলিনা গোমেজ। গির্জার ঘন্টার মতো থেকে থেকে নামটা বাজতে থাকলো মাথায়। ধেয়ে আসা ঢেউয়ের সামনে দাঁড়াতে যতটুকু শক্তি প্রয়োজন তার শূন্য দশমিক দশ ভাগেরও কম নিয়ে আমি ওর মুখোমুখি হলাম। জানতে চেয়েছে - আমাকে মনে আছে তোমার?