“দোস্ত আমাকে বাঁচা। খুব বিপদের ভিতর পড়েছি।” হঠাৎ একদিন ফোনে বাল্যবন্ধু আফানুর রহমান আদনানের এই আর্জি শুনে নিজেকে সামলাতে পারলাম না।
“কেন কি হয়েছে? কোন ফৌজদারি ঝামেলায় পড়েছিস নাকি?” জিজ্ঞাসা করলাম।
(১)
চন্দনের বনে হাঁটছি আমরা।
‘ভ্রু পল্লবে ডাক দিলে, দেখা হবে চন্দনের বনে’।
আমার কড়ে আঙুল ধরে নেভা হাঁটছে আর অবিরাম প্রশ্ন করে যাচ্ছে এটা কি, ওটা কি? আর প্রতিটিই জবাবের পর অবধারিত পরের প্রশ্ন- 'কেন'? মেয়ের কাছে পৃথিবীর সবজান্তা আমি উত্তর দিয়ে যাচ্ছি অবিরাম। 'এটা? এটা হচ্ছে ডাস্টবিন। ময়লা ফেলে।'
'কেন?'
'রাস্তা নোংরা হয়ে যাবেতো তাই সবাই একজায়গায় ফেলে; এটাতে ফেলে।'
১
প্রদীপ বিরক্ত মুখে পঞ্চম কাপ চা হাতে নিয়ে বসে আছে চায়ের দোকানে। সকাল থেকে কিছুই পেটে পড়ে নি। চিনি বেশি দিয়ে চা খেলে ক্ষুধা কমে যায়। কিন্তু খালি পেটে চিনি বেশি দিয়ে পরপর পাঁচ কাপ চা খেলে যে বমি ভাব শুরু হয় তা জানা নেই প্রদীপের। এখন তার বমি পাচ্ছে। প্রানপন চেষ্টা করছে বমি আটকানোর। সে বমি বিষয়ক চিন্তা ভাবনা বাদ দেয়ার চেষ্টা করলো। অন্য দিকে মনোযোগ দেয়ার চেষ্টা করছে প্রদীপ। উজ্জ্বল আসলে চায়ের দাম তো দেবেই সাথে কিছু টাকাও দেবে।
-স্যার, দেখেনতো আমাকে কেমন লাগছে?
তিথির কথা শুনে আমি মুখ তুলে তাকাই। তিথি (আমি হুমায়ূন পাগলা মানুষ। উনার লেখা আমি গিলি। পড়িনা। তাই ছাত্রীর আসল নাম উহ্য রেখে নাম দিলাম ‘তিথি’) আমার ছাত্রী। আজকে শুক্রবার তাই জুম্মার নামাজ পড়ে পাঞ্জাবী আর খুলি নাই। দু’টো ভাত মুখে দিয়েই চলে এসেছি পড়াতে। আমাকে দেখেই তিথির মুচকি হাসি।
- স্যার আপনি বসেন। আমি আসছি। দশ মিনিট।
ছেলেটি ডান হাতের তর্জনি দিয়ে নাক খুঁটতে খুঁটতে আমাকে জিজ্ঞেস করল, আপনের নাম কবুতর ফারুক?
আমি খেয়াল করলাম নাকের ময়লা সে তার পিরানে মুছল। ভেজাল। আমি উত্তর না দিয়ে বললাম, পাকশালায় তোর কি কাম?
ছেলেটি বলল, আমি ময়দা মাখি। নান রুটির ময়দা।
কুত্তারে যে ভদ্রসমাজে কুকুর নামে ডাকা হয় সেটা হয়ত সবুজবাগ মহল্লার লোকজন ভুলে গিয়েছিলো অথবা কুত্তাকে তারা কখনো কুকুর নামে ডাকার প্রয়োজনীয়তা বোধ করে নাই। কিন্তু যখন সবুজবাগ মহল্লায় একটা মালিক বিহীন পা-ভাঙ্গা বিলাতি কুত্তার আবির্ভাব হয় তখন ওই কুত্তাকে "বিলাতি কুত্তা" কইতে তাদের সংকোচ লাগে। আবার "বিদেশি কুকুর" শব্দদ্বয়েও তারা ঠিক স্বাছন্দ বোধ করেনা। তখন তারে তারা টমি নামে ডাকা শুরু করে। টমি কেন?
১
"এখনও বিবর্ণ স্বপ্ন আমার, নীরবে এঁকে যায় ধূসর রঙে আমায়। শূন্যতায়।
বাস্তবতার নিয়মে মন, সবই যেন শূন্যতা এখন। হঠাৎ আমি হারিয়ে আজ, সত্ত্বার বিপরীতে বসবাস। শূন্যতায়। "
মাথা নিচু করে হাঁটতে থাকা নাহার ভেবে পায়না কোন্দিকে যাবে। অফিস থেকে বেরিয়ে বাস স্ট্যান্ড পর্যন্ত চলে গিয়েছিলো পুরোনো অভ্যাস বসত। গত ন'মাস সে এই একই রুটে চলেছে। বাসের কিছু নিয়মিত হ্যালপার পরিচিত
হয়ে গিয়েছিলো। ওদেরই একজনের তাগাদায় হুস হয়। সেই শুরু উদ্দেশ্যহীন হাটা। উদ্দেশ্যহীন ঠিক না, বলা যেতে
মিঃ গোয়েব্লারের বয়স চল্লিশের মত। জার্মান জাতীর মধ্যে যেহেতু গোসল করার স্বভাবজাত প্রবণতা কম তাই উনার চর্বি জমে যাওয়া বিশ্রী ঘাড়ের ভাঁজে জমে থাকা ময়লাকে আগ্রহে নিলাম না। চল্লিশ বছরের শরীরে ইতিমধ্যেই বিয়ার বাউ( বিয়ার পান করলে ভুড়ি হয়। এটার আঞ্চলিক নাম বিয়ার বাউ) হয়েছে। ভুড়ির ভারে উনি হাঁসফাঁস করছেন। আমুদে লোক মনে হলো। উনি এসে বিছানায় বসতেই ক্যাচ করে শব্দ হলো। সিঙ্গেল বিছানা আমার। অনেকটাই পুরাতন। বিয়া