আদুভাই নামের আমাদের পাড়ায় এক বড়ভাই ছিলো। মানুষ ভালো কিন্তু জগতের কোন কাজই ভালো মত পারতো না সে। সোজা কথায় আমড়া কাঠের ঢেকি আর কী। আমাকে সাথে নিয়ে সারাদিন গোপালের মিষ্টির দোকানে বসে থাকতো আর একটু পর পর জোর করে আমাকে মিষ্টি খাওয়াতো। আমার কপ্ কপ্ করে মিষ্টি খাওয়া দেখলে নাকি উনার মন ভালো হয়ে যেত। তখনও আমার হাফ্-প্যান্ট পড়ার বয়স। আদুভাই বিরাট অকর্মণ্য মানুষ। স্বাভাবিকভাবেই পরিবার থেকে শুরু করে বন্ধুস
নির্বিকার-নির্বোধ
[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিয়োজিত ভারতীয় কূটনীতিক দেবযানী খোবরাগাড়েকে নিয়ে কয়েকটা দিন প্রচুর কথাবার্তা হয়েছে। এই গল্পে খোবরাগাড়ে প্রাসঙ্গিক নন। তার নামটা অপ্রচলিত বলে সামান্য বদলে নিয়ে নতুন একটা শব্দ কয়েন করলাম, খুব-রগুড়ে। অর্থাৎ, অনেক রগড় ঘটায় যা, বা রগড় ঘটান যিনি। রগড়ের অর্থের মধ্যে কৌতুক, ঘর্ষণ, পেষণ, ইত্যাদি যেমন আছে, তেমনি আছে ঢাকের কাঠির আওয়াজ।]
জয়-যুক্ত না হইয়া খন্দকার রাশিদ সাহেবের স্বপ্ন দুষ-যুক্ত হইলো: স্বপ্ন’র আগে এবং পরে।
কিন্তু এই স্বপ্ন তো শুধু খন্দকার রাশিদ (কেআর) সাহেবের একার হয়ে থাকে নাই। ‘স্বপ্ন’ নামক সংস্থাটি ব্যাক্তির সীমাবদ্ধতা ছাড়িয়ে কখন যে সমাজ, এমনকি রাষ্ট্রের সমকক্ষ হইয়া উঠলো; তা কেআর সাহেব নিজেও টের পাননি। কিন্তু কীরূপে? তাহা জানিতে হইলে আমাদিগকে পিছনে যাইতে হইবে।
মাত্র পাঁচ মিনিটের জন্য বাসটা মিস্ করলাম। পরের বাস আরো ঘন্টাখানিক পর। অলরেডি অফিসের জন্য লেইট হয়ে গেছি। এই দেশে বাসের কঠিন সময়ানুবর্তীতার উপর সঙ্গত কারণেই মেজাজ খারাপ হলো। ‘ইশ্, আর মাত্র পাঁচটা মিনিট দেরি করে এলে বাসের কি এমন ক্ষতিটা হতো’ ভাবতে ভাবতে বাস স্টপে বসলাম। স্টপে আমার পাশেই আরো একজন বৃদ্ধ ভদ্রমহিলা বসে আছেন। রুপ দেখলেই বোঝা যায়, এক সময় ডাকসাইটে সুন্দরী ছিলেন তিনি। দুইজনই পাশাপাশি চুপচ
আমি নিজে মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে। ছোট বেলা থেকে মধ্যবিত্তদের নানান সমস্যার কথা শুনে শুনে বড় হয়েছি। ‘মিডল্ ক্লাস মেন্টালিটি’ নামের জনপ্রিয় একটা গালিই তো প্রচলিত আছে। সেই গালিটা অবশ্য আমরা মিডল্ ক্লাসরাই সবচেয়ে গম্ভীরভাবে নিজের আনন্দ ঢেকে রেখে আরেকজন মধ্যবিত্তের উপর সবচেয়ে বেশি ব্যাবহার করে থাকি। আমি নিজেই যে কতবার ভুরু কুঁচকে আরেকজনকে “মিডল্-ক্লাস-মেন্টালিটি” গালি দিয়ে মনে মনে হেসেছি তার হিসেব ন
৭ ডিসেম্বর, সময় সন্ধ্যা ৬টা।
স্থান মতিঝিল জীবন বীমা ভবন এলাকা।
তথাকথিত বিরোধীদলীয় জোটের ডাকা টানা 'অবরোধের' একটি দিন।
খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষের বিরক্তি চরমে পৌঁছেছে। কাঁহাতক আর সহ্য হয় এইসব বেহুদা স্টান্টবাজি!
বড় বড় খবরের কাগজের বড় বড় সম্পাদকেরা সম্পাদকীয় পর্ষদে আলোচনা করেন ব্যাপারটা নিয়ে। বড় বড় টেবিলের এপারে ওপারে বড় বড় সাংবাদিকেরা ঘটনার সব চুল এক এক করে ছেঁড়েন, তারপর চেরেন। ছোটো ছোটো পিয়নেরা মাঝারি আকৃতির ট্রেতে করে কয়েক দফা ছোটো ছোটো কাপে চা আর ছোটো ছোটো পিরিচে কেক-বিস্কুট দিয়ে যায়। মোটামুটি বড় বড় মিটিং রুমের বাতাসে বড় বড় গোল গোল শব্দ ইতস্তত ভেসে বেড়ায়।
হাসপাতালটার ঠিক উল্টোদিকেই অনেকগুলো দোকান, বেশিরভাগই খাবারের। দোকানগুলোর বৈচিত্রও চোখে পড়ার মতো – একটা ঝকঝকে চেহারার দামি ফাস্ট ফুডের দোকান, গোটা দুয়েক মাঝারিমানের হোটেল, আর একদম বামদিকের কোনায় একটা খুপড়িঘরে চায়ের দোকান। বোঝাই যায় যে হাসপাতালটা থাকার কারনেই এখানে এতগুলো দোকান গজিয়ে উঠেছে, এবং সবকয়টাই মোটামুটি ভালো চলে। বিশেষ করে এই শেষ বিকালের সময়টাতে চায়ের দোকানের ভিড়টা বেশ ভালোই জমে উঠেছে।
- মেয়ে আমেরিকান
আম্মা শুনে চোখ কপালে তুলে বলে,
- সাদা চামড়া?
- নাহ
হাঁফ ছেড়ে বলে,
- তাহলে কি আমাদের দেশী? আমেরিকায় বড় হয়েছে?
আমি বলি,
- নাহ আফ্রিকান আমেরিকান।
আম্মা আবারও চোখ কপালে তুলেন। একটু হেঁচকি তুলে কান্নার ভঙ্গী করেন। কিন্তু কান্না আসে না। 'ও মতিনের বাপ, এদিকে আসো। আমি শেষ' বলে বিকট চিৎকার করার চেষ্টা করেন। কিন্তু গলার আওয়াজ বেশিদূর যায়না। আব্বা ঘটনাস্থলে পৌঁছে নাটুকে গলায় বলেন,