ঝাঁ চকচকে সুন্দর একটা সকাল। ঝিরিঝিরি বাউরী হাওয়ায় তিরতির করে কাঁপছে গাছের পাতাগুলি। যেন কি এক আনন্দযজ্ঞে মেতে আছে সমস্ত প্রকৃতি! এমন একটা সকাল নিয়ে যেকোনো যুবক দিব্যি দু-চার লাইন কবিতা আওড়ে যেতে পারে বা গুনগুনিয়ে গাইতে পারে রোম্যান্টিক কোনো গান!
হাত বাড়িয়ে বেডসুইচ খুজতে গিয়ে পেলেন না। কেমন একটা চোরা অস্বস্তি হল। নাকি অস্বস্তিটাও কাল্পনিক?
-তুমি এইসব গল্পটল্প কেনো লেখো?
-তুমি এইসব ন্যাকা ন্যাকা প্রশ্ন কেনো করো?
-রাত হচ্ছে ন্যাকা ন্যাকা প্রশ্ন করার সময়! ... আচ্ছা বাদ দাও, কীভাবে লেখো? মানে প্লটের পেছন পেছন চরিত্র আসে নাকি চরিত্রের পেছন পেছন প্লট আসে, নাকি...
খামরঙা বড় বড় সব কার্টুন বাক্সগুলো বাইরের বারান্দায় রাখা হয়েছে। একে একে বাড়ির প্রায় সব মালামাল ওই কার্টুনে ভরে ফেলেছে বাবা আর মতিন কাকু। এখন চলছে টেপ ফিতে দিয়ে মুখ আটকানোর কাজ। ‘ক্যাঁচ ক্যাঁচ’ শব্দ করে মতিন কাকু ইয়া লম্বা একটা টেপ টেনে বের করলেন রোল থেকে। এদিক ওদিক তাকিয়ে বিরক্ত কণ্ঠে বললেন, ‘আরে দূর, কাঁচিটা কই রাখলাম?’
বাবার এত মন খারাপ হল কেন বুঝতে পারলাম না। অবশ্য মন খারাপ না মেজাজ খারাপ তাও ঠিক ধরা যাচ্ছে না। কি যে মুশকিল। এদিকে আজ বিকালে যে থান্ডার-ক্যাটস আছে, সেদিকে কারো খেয়ালই নেই।
সবই তো ঠিকমত করলাম আজকে। শুক্রবারের ছুটির দিনটায় একটুও গড়াগড়ি না করে সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠলাম। দাঁত মাজলাম ভাল মত। তারপর বাড়ির কাজ সব শেষ করেছি। ট্রান্সলেশন অবশ্য ভুল হয়েছে দুইটা। কিন্তু গুণগুলোতো সব ঠিক হয়েছে নাকি!
খোলা শার্সি দিয়ে ঘোর লাগা চোখে দূরের দিগন্তে বহুক্ষণ তাকিয়ে ছিলেন আজাদ সাহেব। সম্বিত ফিরল বাসের হেল্পারের ডাকে। ‘হায়রে বুড়া মানুষটা কানে কম শুনে মনে হয়!’ ছেলেটার দিকে কটমট করে তাকাতেই হেসে ফেলল সে। আবার বলল
-চাচা কখন থেইকা বলতেসি জানলাটা বন্ধ করেন, ভিইজা গেলেন তো! দেখি আপনে সরেন, আমি জানলাটা লাগায়ে দেই। বলেই বেরসিকের মত শার্সিটা টেনে দিল ছেলেটা।
-কী এমন রাজকার্য সামলাচ্ছিলে তুমি যে আমার ফোন ধর নাই?
ফুটন্ত তেলে পাঁচফোড়নের মত জ্বলে উঠল মিলি!
-ইয়ে মিটিং এ ছিলাম, তাই খেয়াল করি নাই…
-অফিস থেকে ফেরার পথে পেইনকিলার আনবা বিশটা!
-কেন জান? আবার মাথাব্যথা হইসে নাকি?
-জ্বি না, চল্লিশবার ফোন করসি তোমাকে, আমার হাতটা ব্যথা হয়ে গেসে।
-কই চারটা মিসকল তো…
-ফাইজলামি কর তাইনা? খেয়াল করে নাই আবার কথা বল!
-আচ্ছা বল কেন ফোন করসিলা।
১.
অফিসের কাজগুলো গুছিয়ে দুপুরে ইন্টারনেটে ক্লিক করতেই বিরক্ত লাগলো। হোমপেজ এরর। আবারো গেছে নাকি? দুদিন পরপর এ এক হ্যাপা। কখনো ফাইবার কেটে যায়, কখনো আইএসপির ইউপিএস জ্বলে গেছে, কখনো সার্ভার ডাউন। আইটিতে ফোন করলাম। আইটির ছেলেটা এসে দেখে বললো, আপনার হোমপেজ সমস্যা। হোমপেজে ফেসবুক ছিল। ফেসবুক নাকি কোথাও খুলছে না। ওটা বদলে হোমপেজ গুগল করে দিল। এবার খুলছে। আমি তেমন রেগুলার ফেসবুকার নই। তাই পাত্তা দিলাম না ব্যাপারটাকে।
কাক না ডাকা ভোরে কলির ঘুমটা ভেঙ্গে গেল। নিত্যকার অভ্যাস। পুরো বাড়িতে দুটো মাত্র প্রাণী -কলি আর তার পিসি, গত দশটা বছর ধরে যে মানুষটাকে সে নিয়মিত জ্বালাতন করে আসছে আর তিনি মুখ বুজে তার অত্যাচার সহ্য করছেন। অন্য সবার কাছে কলি একটা একাবোকা, পড়ুয়া, শান্ত, মা-মরা মেয়ে। কিন্তু ভেতরে ভেতরে তার অনেক জেদ আর সব জেদ খাটে শুধু ঐ নরুন পেড়ে সাদা কাপড় পরা নিরীহ পিসির কাছে। দুদিন ধরে তার সবচেয়ে কাছের এই মানুষটা তা
মহাখালি বাস টার্মিনাল থেকে ড্রিমল্যান্ড নামে যে সব বাস ছাড়ে, সেগুলো, ময়মনসিংহ হয়ে-
সব শেরপুর জেলায় যায়, খড়মপুর বাসস্ট্যান্ডে থামে- এখানেই শেরপুর পৌরসভার শুরু।
খড়মপুর থেকে ব্যাটারি চালিত অটো-রিক্সায় শেয়ারে দশটাকা দিলে পৌছানো যায় খড়ারপার চৌরাস্তা।
যার, পশ্চিমে শ্রীবর্দী আর দক্ষিণ দিকে গেলে জামালপুর শহর।
উত্তরের সোজা রাস্তায় মাইল বিশেক গেলে একটি মোড়ে রাস্তা দুভাগে ভাগ হয়ে গেছে-