তাহলে গল্পটা এভাবেই শেষ হচ্ছে?
বলতে পারিস।
মুকূল চারিদিকে নজর বোলায়। মুক্তো ঝরানো হাসির মতো পূর্ণিমা রাত। ডালিতে সাজিয়ে রাখা ফুল হয়ে হাজার হাজার তারায় ভরে আছে আকাশ। তাদের মাঝখানে মৌন ঋষির গভির দৃষ্টিতে দিনের আলো ছড়িয়ে চেয়ে আছে চাঁদ-
মেঠো চাঁদ রয়েছে তাকায়ে
আমার মুখের দিকে,- ডাইনে আর বাঁয়ে
মেঠো চাঁদ-কাস্তের মতো বাঁকা, চোখা-
১.
ফোনের রিং বেজে উঠার সাথে সাথেই রিসিভ করলো আবির । কিন্তু ওইপাশ থেকে অভিমানের সুরে ভেসে আসলো প্রশ্ন ?
তুমি ফোন ধরতে দেরি করলে কেন ?
প্রশ্ন শুনে আবির একটুও বিচলিত না হয়ে স্বাভাবিক ভাবেই উত্তর দেয় । কোথায় দেরি করলাম , সাথে সাথেই তো ধরলাম ।
কে শোনে কার কথা , সপ্তর্ষি এবার মনে হয় আরও রেগে গেল ।
১.
মোবাইলে খুব তীক্ষ্ণ এলার্ম বেজে ওঠে। পাশ ফিরে প্রচন্ড বিরক্তি নিয়ে কেয়া স্টপ লেখা যায়গাতে ছুঁয়ে দেয়। বিশ বছরের এই জীবনে তার কাছে সব থেকে কঠিন কাজ হচ্ছে এত সকালে ঘুম থেকে ওঠা! বুধ বারের সকালটাই এমন বিরক্তিকর! এদিন সকালে ক্লাস থাকে। ঘুম থেকে তাই অনেক আগে উঠতে হয়। আবার উঠতে ইচ্ছে করে না বলে আয়েস করে চা এ চুমুক দেয়ার সময় থাকে না। আবার চাইলেই এলার্ম বন্ধ করা গেলেও মা এর একটু পর পর ডাকাডাকি বন্ধ করা যায় না। তাই উঠতেই হয়। ক্লাসেও যেতে হয়।
কয়েকদিন আগেও এটা ছিলো একটা স্কুল। এর মাঠে সকালে ঘুম ঘুম চোখে সারি বাঁধা ছেলেমেয়েদের সামনে দপ্তরীর হাতের দায়সারা টানে আকাশে এক মন্থর ভূবন চিলের মতো ডানা মেলতো সবুজের মাঝে লাল একটি বৃত্ত, সহকারী প্রধান শিক্ষকের গম্ভীর আদেশের পর অনেক বিপথগামী কণ্ঠের মাঝে পাশের আমগাছের পাতায় কাঁপন ধরাতো কী শোভা কী ছায়া গো কী স্নেহ কী মায়া গো।
।।১।।
স্কুলে ঢোকার মুখেই তপনের দেখা পায় সজল। স্কুলের গেটের কাছের ঝাঁকড়া বটগাছটার নিচে আমড়াওয়ালার দোকানের সামনে। আমড়াটাকে ফুলের মতো কেটে ওতে ঝাল লবণ মাখিয়ে দিয়েছে আমড়াওয়ালা।
সজলকে দেখেই তপন দ্রুত বড় একটা কামড় বসিয়ে দেয় আমড়াতে। গোটা দুয়েক আমড়ার পাপড়ি চালান হয়ে যায় পেটে। সজল কিছু বলার আগেই তপন বলে ওঠে...
“তোকে নিজামী স্যার গতকাল খুঁজেছিল ক্লাসে...”
মুম রহমান
১.
একুশে ফেব্রুয়ারির সকালটা রায়ানের খুব ভাল লাগে। ভোর বেলা থেকেই কেমন একটা উৎসব উৎসব আমেজ। প্রভাত ফেরি, ফুলের গন্ধ, অসংখ্য মানুষ, ব্যানার, ফেস্টুন - সব মিলিয়ে দারূণ একটা ফূর্তি ফূর্তি ভাব। শুধু একটা জিনিসই খারাপ লাগে রায়ানের - খালি পায়ে ঘোরাঘুরি, দ্যাটস রিয়েলি ডার্টি।
আজকের ফেব্রুয়ারির সকালটা অন্য রকম। বাইরে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। খুবই হাল্কা। দার্জিলিংয়ে মেঘের ভেতরে
রাস্তায় নামলাম ।
আগে ধারণা ছিল স্পিডব্রেকারে শুধু গাড়িই 'উষ্টা' খায়, আমার ধারণা ভুল । মানুষও খায় । হাঁটতে হাঁটতে এইমাত্র আমিও উষ্টা খেলাম একটা নিরীহ স্পিডব্রেকারে ।
তাইলে পাউডা কাটাই লাগবো, ভাইজান? মেয়েটা আকুল হয়ে প্রশ্ন করে।
কেউ যদি আমার কাছে জানতে চায় যে আমার জীবনের সবচেয়ে প্রিয় সময়টা কি, তাহলে আমি বলব যে, আগে যখন আমার মা আমাকে রাতে ঘুমানোর সময় গল্প শোনাতো, সেই সময়টা আমার সবচেয়ে প্রিয়। আর সবচেয়ে খারাপ সময়টা হল যখন আছিয়া খালা আমাকে বাথরুম করিয়ে দেয়। আমার বয়স বার। আমাকে এই বয়সেও বাথরুম করিয়ে দিতে হয়, কারণ আমি হাঁটতে পারি না। এমনকি আমি একটু নড়তে পযর্ন্ত পারি না। একটা সড়ক দুঘর্টনায় আমার সারা শরীর অবশ হয়ে গেছে। ঐ দুঘর্টনা