১৯৭১সাল !
স্বাধীন বাংলাদেশের প্রচন্ড স্বপ্ন নিয়ে বাংলার মানুষ মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ল। রহিম,করিম, সজল, সামছুও ছিল যুদ্ধে।
রহিমঃ "এই যে আমরা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়লাম , সেটা কিন্তু শেখ মুজিবের নির্দেশেই তাই না ?"
করিমঃ "হ্যা, তো ?"
সজলঃ (ফ্যালফ্যাল করে তাকায়)
সামছুঃ " কি বলতে চাস , বুঝিয়ে বল ! "
১.
ছোটবেলা থেকেই আমার বৃষ্টি খুব প্রিয়। কিন্তু আজকের বৃষ্টিটা খুব বিরক্ত লাগছে। ভাসির্টি থেকে বাড়ি ফিরছি। মুষলধারে বৃষ্টি পড়ছে। ভাসির্টি যাওয়ার সময়ও রোদ ছিল অথচ এখন এই বৃষ্টি। ছাতাও নিয়ে আসিনি। বৃষ্টি থামা পযর্ন্ত অপেক্ষাও করতে পারছি না, বাসায় ফিরতেই হবে। বাসায় সময়মত না গেলে আমার খবর আছে। কারণ আজকে আমাকে পাত্রপক্ষ দেখতে আসবে। এই নিয়ে সপ্তম পাত্রপক্ষ। কোনো পাত্রকেই আমার মায়ের পছন্দ হয় না। আমি বুড়ি না হওয়া পযর্ন্ত মনে হয় কোনো পাত্র পছন্দ হবেও না।
- আপনের ঘটনা কি? গদ্য না পদ্য?
কাদের তার পাশে বসা বাবরী চুলের দুখী দুখী চেহারার লোকটিকে জিজ্ঞেস করলো।
- পদ্য
- এহহে , তাইলে গেঞ্জাম বেশি। গদ্য হইলে আমি ওসি সাবরে বলে অল্পের উপর ঝামেলা শেষ করতে পারতাম। পদ্যের উপর মনে করেন রাগটা বেশি। পদ্য একটু হিন্দুয়ানী ব্যাপার না। বুঝেনই তো।
বাবরী চুল কিছুক্ষণ চুপ থেকে কাদেরকে জিজ্ঞেস করে,
- আপনার কি গদ্য?
(এক ধরনের ছোটো গল্প আছে যেগুলো বুক পকেটে দু টাকার নোটের সাথে ভাঁজ করে রেখে দেয়া যায় সাবলীল, হুট করে সকাল বা বিকেলের এক কাপ চা এর সাথেই পড়ে ফ্যালা যায় অল্প সময়েই। এই গল্পগুলোকে আমি বলি 'পকেট গল্প' এটা সেরকম ই এক পকেট গল্প )
[justify]
আফজাল মোটেও স্বস্তির মধ্যে নেই।
সারাটা দিন ধরে কারেন্ট থাকে না। এই গরমের মধ্যে কারেন্ট ছাড়া থাকা যে কী রকম কষ্টকর তা এখন আফজাল হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে। আগেরকার দিনে মানুষরা যে কীভাবে থাকত সে এখন তা চিন্তাও করতে পারে না। সে মেসে থাকে। তার রুমমেট শরীফ হচ্ছে বড্ড ঘুমকাতুরে। এই অসহ্য গরমেও সে দিব্যি আরাম করে ঘুমায়। ঘুমানোর সময় তার মুখটা কিছুটা হা করা থাকে। মুখ দিয়ে প্রায়ই লালা পড়ে বালিশ ভিজে যায়। আফজালের দেখতে কুৎসিত লাগে। কিন্তু কিছু বলতে পারে না।
[justify]রিকশাওয়ালা বলল, ‘ভাই এসে গেছি।’
রিকশাওয়ালার কথায় সহবত ফিরে পেলাম। মাথার মধ্যে চিন্তা এত বেশি ঘুরপাক খাচ্ছে যে অন্য কোন কিছুই মাথায় ঢুকছে না। জিজ্ঞেস করলাম, ‘কত?’
‘বিশ টাকা দ্যান।’
মানিব্যাগ থেকে দশ টাকার দুটো নোট ধরিয়ে দিলাম। অন্য সময় হলে পনের টাকার ভাড়া বিশ টাকা কেন এই নিয়ে তর্ক জুড়ে দিতাম। কিন্তু আজকে ব্যাপারটা অন্যরকম।
তেত্রিশ বানর নিয়ে লঙ্কাকাণ্ড হয়ে যাবার পর আবু ইউসুফ এদের বিদায় করার জন্য ব্যস্ত হয়ে গেল। ব্যাটা বদমাশ আমাকে বলে,
- তোর গত জন্মদিনে তো আমি কিছু দেইনি। এই তেত্রিশ বানর আমি তোর জন্মদিনের উপহার দিলাম
আমি বললাম,
- শুধু গত না বিগত কোন জন্মদিনেই তুই আমাকে কিছু দেস নাই। আগত কোন জন্মদিনেও কিছু দেয়া লাগবে না। আমারে মাফ কর।
১
একজন মানুষের বাসায় যে তেত্রিশটা বানর থাকতে পারে সেটা নিজ চোখে না দেখলে আমি কখনো বিশ্বাস করতাম না। আবু ইউসুফ এর কাজ কর্ম সবসময়েই উল্টাপাল্টা। বিজ্ঞানী মানুষ অবশ্য একটু পাগলাটে না হলে মানায় না। এর আগে ইউসুফ যখন কোমল সাহিত্য মেশিন বানিয়েছিল, তখন ওটার ডেমো দেখানোর জন্য আমাকে ডেকেছিল। বলে, তুই তো ব্লগে নানা উল্টা পাল্টা কথা লিখিস, তোর কিছু লেখা দে, আমার মেশিনে ঢুকিয়ে দেখি কেমন কাজ করে। আমি ওকে ভালোবেসে মুড়ি খা বলে চলে এসেছিলাম। পরে ওর মেশিন এর দুর্গতির কাহিনী শুনে সমবেদনা জানাতে বাসায় গিয়ে দেখি এই কাণ্ড। এক রুমের ভিতর নানা আকারের নানা জাতের তেত্রিশটা বানর পুরে রেখেছে। ঘটনা প্রথমে চেপে যাবার চেষ্টা করলেও পরে অনেক পীড়াপীড়ির পর ব্যাটা মুখ খুলল। কথা শুনে আক্কেল গুড়ুম। সে তার বানরের পালকে কবিতা লেখা শিখাতে চায়। বলে, বিজ্ঞানী সফদর আলী যদি গিনিপিগ ট্রেনিং দিয়ে কাচ্চি বিরিয়ানি রান্না করাতে পারে তবে আমি কেন বানর দিয়ে কবিতা লিখাতে পারব না? সফদর আলী যে একটা গল্পের চরিত্র এটা কিছুক্ষণ বোঝানোর চেষ্টা করে আমি হাল ছেড়ে দিলাম। এরপরে বানর দিয়ে কবিতা লেখানর কি দরকারটা কি সেটা বুঝার চেষ্টা করে নৌকাই ছেড়ে দিলাম।
নিউ কামাল অ্যান্ড ব্রাদার্স
----------------------------
আনু-আল হক
--------------