‘ঘটনাটা কাশিপুরের জঙ্গলের। কাশিপুর চিনলি না! আঃ মরণ। আকাট মুর্খদের নিয়ে হয়েছে যত জ্বালা।’ ভাষা-আন্দোলনের গল্প শোনাতে গিয়ে কাশিপুরের জঙ্গলের গল্প ধরেছেন কানাইলাল পণ্ডিত। সেখানেও নাকি একটা ভাষা আন্দোলন হয়েছিল। কানাইবাবু কাশিপুরের লোক কিনা, তাই গল্পটা তিনি জানেন।
‘শোন রে হতভাগার দল।’ কানাই বাবু তাচ্ছিল্যভরেই গল্পটা শুরু করলেন। ‘কাশিপুর হলো সেই কাশিপুর। কোন কাশিপুর? আরে যেখানে শরৎবাবুর এক মামার বাড়ি সেখানে। কী বললি, শরৎবাবুকেও চিনলি না? আরে অকর্মার ঢেকিরা! শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, বুঝলি। এবার ঠিক চিনেছিস তো? ভাগ্যি তোদের, নইলে ঘাড় মটকে দিতাম। ওই কাশিপুর আবার গফুরেরও কাশিপুর। মহেশ গল্প পড়িস নি? কাশিপুরে মহেশ আর আমিনাকে নিয়ে ছিল গফুরের সংসার। ঢাকা থেকে সুন্দরবন কিংবা চিত্রা এক্সপ্রেসে চড়ে সোজা চলে যাও দর্শনা। সেখান থেকে বাসে জীববন্নগর। তারপর রিক্সা-ভ্যানে চড়ে চলে যাও কাশিপুর। বুঝেছিস রে হতচ্ছাড়ার দল?’
কানাইবাবু ছাত্রদের গল্প শোনাতে থাকুন, এই ফাঁকে আমরা ঘুরে আসি কাশিপুরের জঙ্গলে।
কাশিপুর জঙ্গলে রাজা হলো রগচটা বাজপাখিটা। প্রকাণ্ড একটা শেওড়াগাছে তার রাজপ্রাসাদ। আগে অবশ্য এই বনে রাজা-মন্ত্রী বলে কিছুই ছিল না। দুষ্টু বাজপাখিটা ষড়যন্ত্র করে রাজা সেজে বসে আছে। অবশ্য তার পাইক-বরকন্দাজও কম নয়। হাজার খানেক কাল-কেউটে সাপ পুষে রেখেছে চতুর বাজটা। এরা তার পুলিশ বাহিনী। দাঙ্গাবাজ স্বভাবের ফিঙেরদল তার সেনাবাহিনি। এছাড়া এক শিয়াল পণ্ডিতকে উৎকোচ দিয়ে দলবলসহ তাকে পুষে রেখেছে উপদেষ্টা হিসাবে। শিয়ালের দল ছাড়াও আছে একদল বনবিড়াল। কেউটেদের যাতে অসুবিধে না হয় তাই গুইসাপ কিংবা বেজিদের বনের ধারে ঘেঁষতে দেয় না রাজা বাজপাখি।
এক।।
বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক সূত্র থেকে জানা যায়, বহু বছর আগে পৃথিবীর মানব সভ্যতা পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। এই পৃথিবীতে এক সময় মানুষ শিল্প ও বিজ্ঞান চর্চার মাধ্যমে উন্নতির পথে এগিয়ে যাচ্ছিল। এর পর বিভিন্ন ধর্মের মানুষের মধ্যে যুদ্ধের কারণে সেই সভ্যতা বিলুপ্ত হয়- প্রাচীন পৃথিবীর সৃষ্টিকর্তা (যাকে তারা ঈশ্বর-আল্লাহ-ভগবান-গড ইত্যাদি নামে ডাকতো) নিহত হন।
তার বহু বছর পর পরম করুণাময়ী সর্বশক্তিময়ী ঈশ্বরী ঠিক করেন আবার মানবী সভ্যতার জন্ম দেবেন। এই উদ্দেশ্যে তিনি প্রথম নারী এডা-কে তৈরি করেন এবং তাকে স্বর্গে বড় করে তুলতে থাকেন। এডা বড় হওয়ার পর তার খুব একা একা লাগতে থাকায় এডার ডান পাঁজরের হাড় থেকে ঈশ্বরী তৈরি করেন নতুন পৃথিবীর প্রথম পুরুষ ইভোকে। নতুন পৃথিবীর বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থ থেকে জানা যায়, ইভো ঈশ্বরীর বিরুদ্ধাচারণকারী "শয়তানী"র প্ররোচণায় এডাকে জ্ঞান বৃক্ষের ফল খেতে উৎসাহ দেন। এতে ঈশ্বরী তাদের শাস্তি দিতে পৃথিবীতে নিক্ষেপ করেন এবং তা থেকেই পৃথিবীতে নতুন মানবীসভ্যতা গড়ে ওঠে।
[ব্রাজিলিয়ান লেখক পাওলো কয়েলহো বর্তমান সময়ের জনপ্রিয় লেখদের একজন। তার লেখায় আছে মানুষকে বদলে দেয়ার যাদুমন্ত্র। পেয়েছেন অসংখ্য পুরস্কার যার মধ্যে আছে ওয়ার্ল্ড ইকনোমিক ফোরামের ক্রিস্টাল এওয়ার্ড, ফ্রান্সের লিজিয়ন দ্যা অনার ইত্যাদি। তার বিখ্যাত বই অ্যালকেমিস্ট আন্তর্জাতিক বেষ্ট সেলার ও বিশ্বের বহুল পঠিত বইগুলোর একটি। তার ক্ষুদে গল্পগুলো বিশ্বসাহিত্যে বিশেষ সংযোজন। কয়েক লাইনের এসব গল্পগুলো পাঠককে গভীর
মূল- অরসন স্কট কার্ড
[অনুবাদকের কথা- অরসন স্কট কার্ড আমেরিকান লেখক। মূলত বৈজ্ঞানিক কাহিনী লেখেন, তবে তার সৃষ্টি বহুমাত্রিক। তার গল্পসংকলন 'ম্যাপ্স ইন দ্য মিরর' হস্তগত হয়ে বেশ কয়েকমাস আগে। পড়তে গিয়ে লেখকের চুম্বকের মত পাঠক ধরে রাখার ক্ষমতা বুঝতে পারি। যা এর আগে পেয়েছিলাম মাইকেল ক্রাইটন, গ্রিশাম, ড্যান ব্রাউনের লেখার মধ্যে। গল্প সংকলনের একটা অনুবাদের চেষ্টা করলাম শুধু ওই মজাটা শেয়ার করার জন্য। পেরেছি কিনা পাঠকের হাতে তার বিচার ন্যস্ত করলাম। ধন্যবাদ। ]
(১)
~বিপাশা~
- “হ্যালো, রীনা এবার শুনতে পাচ্ছিস? ব্লু-টুথটা একটু নড়ে গেছিল। যাইহোক যা বলছিলাম, আরে সে অনেক ঝামেলা। রাজপরিবারে বিয়ে হওয়া যে কি ঝকমারি, সে আর তুই কি বুঝবি?”
- “থামতো বিপাশা! এদিকে ‘হার হাইনেস বিপাশা সিং’ শুনতে নিশ্চয়ই দারুণ লাগে?”
শীত আসি আসি করা বছরের এই সময়টায় দুপুরগুলোর একটা ঝিম ধরানো ওম থাকে।
কুসুম কুসুম রোদ, রিক্সার অবিরাম ঝাঁকুনি আর রাস্তার সহস্র খুঁটিনাটি দৃষ্টিকে ক্লান্ত করে একটা স্বচ্ছ পর্দা নামিয়ে দিচ্ছিল রতনের সামনে। দু’ধারের দোকানগুলো মন্থর গতিতে সরে সরে যাচ্ছে। কোনটাকেই নজর করে দেখা হচ্ছেনা।
রতনের মাথার চারপাশে একঝাঁক ভাবনা নাছোড়বান্দা মাছির মতো ঘুরছে। বসছে, সুড়সুড়ি দিচ্ছে, আবার ঘুরে ঘুরে উড়ছে।
‘এডুকেশন ছাড়া বের হওয়ার কোন রাস্তা নাই, বুঝছ। তোমাদের পড়তে হবে, অনেক পড়তে হবে। শুধু টেক্সটবই পড়লেই চলবেনা’ তানভীর ভাইয়ের কথায় আমরা সবাই মাথা নাড়ি বিজ্ঞের মত। তানভীর ভাই অনেক স্কলার লোক। ইঞ্জিনিয়ারিং ইউনিভার্সিটিতে পড়েন, চোখে মাইনাস সিক্স পয়েন্ট ফাইভ পাওয়ারের মোটা কালো ফ্রেমের চশমা। দেখলেই বুঝা উনি আসলে একটা জিনিস। উনার রুম ভর্তি খালি বই আর বই। আর দেয়ালে দাড়ি ওয়ালা কত গুলা মানুষের পোস্টার লাগানো। আ
‘সে আমাকে কথা দিয়েছে যে আমি যদি তাকে লাল গোলাপ দেই তবে সে আমার সাথে নাচবে’- কান্না ধরা কণ্ঠে কথাগুলো ভেসে আসছিল একজন তরুন ছাত্রের কণ্ঠ থেকে; ‘কিন্তু কোথায়- আমার বাগানে তো কোন লাল গোলাপ নেই’।
পাশেই একটি ওক গাছের উপরের বাসা থেকে নাইটিংগেল পাখি ছেলেটির এই কান্না ভেজা আকুতির কথা শুনছিল এবং গাছের পাতার ফাঁক দিয়ে বাইরে তাকিয়ে সে বিস্মিত হল।
“হ্যাঁ, হ্যাঁ, স্যার, আজকের মধ্যেই ফার্নিচারগুলো আপনার বাড়ি পৌঁছে যাবে। ‘বেঘুন ফার্নিচারের’ জেনারেল ম্যানেজার জানিয়েছে, আপনার জন্য কিছু এক্সপোর্ট কোয়ালিটি ফার্নিচার আলাদা করে সরিয়ে রেখেছে তারা। আমরা হচ্ছি ওদের সবচেয়ে বড় ফান্ডিং পার্টনার, আপনি নিঃসন্দেহ থাকতে পারেন স্যার, ওদের সেরা জিনিসটাই দেবে আমাদের। আপনাকে তো ইন ফ্যাক্ট উপহারই দিতে চেয়েছিল ওরা, কিন্তু আপনি রাজী না হওয়াতেই স্পেশাল ডিসকাউন্টে....