~কল্যানী রমা
(এক)
ছবি ১
টেলিফোন বাজছে।
“কি বললি? টাপ্পু পটি ট্রেইনড হয়ে গেছে? বাহ্ বা, আড়াই বছর বয়সে পটি ট্রেইনড হয়ে গেল?
এতো একটা বিরাট মাইলস্টোন রে!
ডিজনির টিকিট কেটে ফেল্। পটি ট্রেইনড হয়ে গেলে সব সময় বাচ্চাদের ডিজনি নিয়ে গিয়ে ‘টিঙ্কার বেল’-কে দেখিয়ে আনতে হয়।
~কল্যানী রমা
(এক)
ছবি ১
টেলিফোন বাজছে।
শিমুল গাছের গল্প, অন্ধ সাপের গল্প
মেডিকেলের মর্গে সামনে ভীড় লেগে থাকাটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। মর্গ মানেই প্রতিদিন দু'-চারটা অ্যাকসিডেন্ট, দুটা খুন, একটা আত্মহত্যার হ্যাপা সামলান। তাও এটা মফস্বলের মর্গ, ঢাকা শহর হলে যে কি হত, খোদাই মালুম। প্রতিদিনই এখানে লাশ আসে, প্রতিদিনই চলে যায়। মানুষের আর্তনাদের শব্দ আর কাকের কর্কশ ডাকে হাসপাতালের এই দিকটা মাতিয়ে রাখে।
ঠাশ করে একটা শব্দ হলো!
প্রথমে কিছুই বুঝতে পারলাম না আমি কিছুক্ষণ পর অনুভব করলাম আমার গালের চামড়া জ্বলছে । আমি হা করে ছেলেটার দিকে তাকিয়ে রইলাম । এতটা অবাক হয়েছি আমি, ছেলেটা আমার হাতটা ধরে রেখেছে তা যে ছাড়িয়ে নিতে হবে আমাকে সেটা মাথায় ঢুকলো না ।
সামান্য সুইসাইডের কথায় কেউ এভাবে থাপ্পড় দেয়?
‘’মামা, আরো জোরে বল কর।‘’- ৬ বৎসর বয়সী অভ্রের কোন ক্লান্তি নেই। সেই সকাল থেকে টানা ব্যস্ত রেখেছে নির্ঝরকে। কখনো প্লেন নিয়ে, আবার কখনো পুচকে ক্রিকেট ব্যাট নিয়ে। কখনো সখনো করছে গল্প শোনার আবদার! আবার সময় করে কার্টুনও দেখছে মামাকে নিয়ে। কোন আনন্দই বাদ দিতে রাজী নয়। অথচ পড়াশোনায় একদম মন নেই। রীতা ভাবির মেয়েটা কত ভাল রেজাল্ট করেছে স্কুলে!
[ইয়াসুনারি কাওয়াবাতা ১৯৬৮ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পান। ‘স্নো কান্ট্রি’, ‘থাউজ্যান্ড ক্রেনস’, ‘দ্যা সাউন্ড অফ দ্যা মাউন্টেন’ উপন্যাসগুলোর জন্য বিখ্যাত হ’লেও কাওয়াবাতা নিজে বলতেন তাঁর শিল্পকে সত্যিকারভাবে খুঁজে পাওয়া যাবে হাতের পাতায় এঁটে যাওয়া কিছু ছোট,ছোট গল্পে। ১৯২৩ থেকে শুরু করে ১৯৭২-এ আত্মহত্যা করবার কিছু আগে পর্যন্ত তিনি লিখে গেছেন হীরের কুচির মত এমন অনেক গল্প। এই গল্পগুলো স্বপ্নের
এক দেশে এক দুরন্ত-ধুরন্ধর সেনাপতি ছিলেন।
সেই সেনাপতি সুযোগের অপেক্ষায় থাকতে থাকতে একদিন হঠাৎ রাজা হয়ে গেলেন।
রাজা হওয়ার পর সে স্বৈরাচারী শাসন শুরু করলেন।
সেই রাজা আবার খুব রমণীমোহন পুরুষ ছিলেন।
তার পৌরুষ-শৌর্য-বীর্য নিয়ে লোকমুখে অনেক মুখরোচক কাহিনী প্রচলিত ছিলো।
কথিত আছে তার পৌরুষের প্রভাবে ও ক্ষমতায় পুরুষ বাঁদরও সন্তান গর্ভধারণ করতে পারতো।
সারাদিনটায় মনে থাকে না অত, কিন্তু শেষ বিকেলটায় এসে শুভ’র সময় আর কোন মতেই কাটতে চায় না। বলতে গেলে শরীরের অংশ হয়ে ওঠা চেয়ারটাকে একেবারে অসহ্য লাগতে থাকে, ছোট্ট এক খন্ড নিজের ভূবন হয়ে ওঠা কিউবিকলটাকে মনে হয় নির্ভেজাল জেলখানা, সাদা টেবিলের ওপর একাকী পড়ে থাকা কালো মাউসটাকে মনে হতে থাকে কিলবিলে ইঁদুর, ইন্টারনেট আর দুনিয়া ঘোরার জানালা থাকে না- এক নিমেষে হয়ে পড়ে পৃথিবী আড়াল করা ঝাপসা পর্দা।