গিবরিল আসিয়া হাঁপাইতে হাঁপাইতে কহিল, "শিগগীর আইস, সর্বনাশ ঘটিতেছে!"
আদম খড়শয্যায় অর্ধশায়িত হইয়া সাভিনিবেশে একটি পাতলা পুস্তক পাঠ করিতেছিল, মনোসংযোগে বিঘ্ন ঘটায় সে চটিয়া কহিল, "সর্বনাশের জন্য কিছু বাকি আছে নাকি? আমার যা কিছু ছিল বুঢ়বাক ঈশ্বরের চক্রান্তে মাটি হইয়াছে। মহাপ্লাবনে স্বর্গ ডুবিলেও আমার কিছু আসে যায় না হে গিবরিল!"
রুমি আর সুবর্ণার সম্পর্কটা ভালো ছিল, বেশ পোক্ত। ওদের দুজনের বন্ধুমহলের কেউই ভাবেনি সম্পর্কের শেষটা এভাবে ঘটবে। কিন্তু কত কিছুই তো আমরা ভাবি না, কিন্তু এমনি এমনি ঘটে। তাই ওদের গল্পটাও মিলনাত্মক হোল না।
রাজনীতির প্রতি তার কোন আগ্রহ বা যোগাযোগ ছিল না ৬২ কি ৬৬তেও। এমনকি ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানের সময়ও সে নিবিষ্ট মনে চাকরী করে যাচ্ছিল। কিন্তু জেলফেরত শেখ মুজিবকে তার বিশেষ পছন্দ হয়ে গেল। মাওলানা ভাসানীর চেয়েও ব্যক্তিত্ববান নেতা মনে হলো শেখ মুজিবকে। রাজনীতি না করলেও শেখ মুজিবের ভাষণের জন্যই তার শক্ত ভক্তে পরিণত হয় সে। ইলেকশনের সময় অফিস কামাই দিয়েও ভোটের কাজ করেছে সে(আসলে সিনিয়রকে ভোটের প্রচারের কথা বলে
আয়োলের গান
- মারি ফেলিসিতে এবোকেয়া
হ্রদের তীরে একটি মন্দসমীরণপুষ্পবিভূষণকোকিলকূজিত কুঞ্জের কোণে কদম্বতরুর দিকে চাহিয়া ঈশ্বর উলু দিয়া উঠিয়া কহিলেন, "কেউ কি একটি বাঁশি যোগাড় করিতে পার?"
আদম গিবরিলের পঞ্জরে কনুই দ্বারা খোঁচা মারিয়া কহিল, "যাও হে দূত, তোমার ফরমায়েশ খাটিবার ওয়াক্ত নজদিক।"
গিবরিল বিরস কণ্ঠে কহিল, "আমি শুধু বার্তা বহন করি ওহে আদম! বাঁশি সংগ্রহের কর্ম সে আমার নহে।"
শাহিদা বেগমের বয়স ষাটের কাছাকাছি ।তিনি থাকেন তার বড় ছেলে শিহাবের সঙ্গে ঢাকা শহরের এক বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্টে ।যদিও তার মন পড়ে থাকে ছোট্ট গাঁয়ে,যেখানে তিনি সংসার শুরু করেছিলেন অনেক বছর আগে।কিন্তু সংসারটা ঠিকমতো গোছাতেও পারেননি।হঠাৎ এক সড়ক দুর্ঘটনা স্বামীকে তার কাছ থেকে কেড়ে নেয়।তখন ছেলেটির বয়স ছয় আর মেয়েটি দুই বছরের ।সেই থেকে তার একলা চলার সংগ্রাম শুরু ।রাতদিন খাটা খাটনি করেছেন ছেলেমেয়ের জন্য ।
১.
অন্ধকারের যুবকেরা অন্ধকার খুঁজে ফেরে। মূলত জায়গাটা তাদের চেনাই। তবু তারা আরো রাত বাড়ার অপেক্ষায় থাকে। আরো অন্ধকারের অপেক্ষায় কিংবা গাঢ় অন্ধকারের অপেক্ষায়। যুবকদের যেকোন নামই হতে পারে। সুমন, বিল্টু কি মন্টু! নামে কি আসে যায়? তারা অন্ধকারের মানুষ। নামগুলোও তাই অন্ধকারেই থাকুক।
২.
সন্ধ্যার মুখে মুখে পৃথিবী যখন ঘুমানোর আয়োজন করছিল তখন দূর থেকে হন হন করে বুড়া মঙ্গল মিয়াকে এগিয়ে আসতে দেখা গেল। মঙ্গলকে দেখে পৃথিবীর মনে অমঙ্গল আশংকা দানা বেঁধে উঠলো। এরকম বিনা নোটিশে কখনো আসে না সে। লালমুখোকে তার খুব হিংসা। ঝুট ঝামেলা থেকে বহুদূরে ব্যাটা কোটি কোটি বছর ধরে নাকে কার্বন ডাই অক্সাইড দিয়ে আয়েশ করে ঘুমিয়ে যাচ্ছে। যখন ইচ্ছে ঘুমোয়, যখন ইচ্ছে জাগে। বিরক্ত করার কেউ নেই। দুটো বেঢপ চাঁদ আছে,
টিকটিকিটা টিকটিক করে উঠলো।
আজকাল কেমন যেন নির্লিপ্ত হয়ে গেছে অরুণ। চুপচাপ থাকে। আর ভাবে।
কে এই অরুণ ? আমি। অরুণ সেনগুপ্ত, আমার নাম। যদিও আজকাল লোকে পাগল বলেও ডাকে।
শব্দ কাঁধে নিয়ে চলে যাই হেঁটে হেঁটে। যতদূর সম্ভব সীমানা মেলেনা। আদি অন্ত দিগন্ত মিশে যায়।