বইটা যে ঠিক কীভাবে হাতে এসেছিল, আজ আর মনে নেই। বন্ধুর বড় বোনের বিয়েতে উপহার দেবার জন্য বোধহয় ‘তক্ষশিলা’ থেকে কিনেছিলাম বইটা, থার্ড ইয়ারে থাকতে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ভ্রাম্যমান লাইব্রেরী থেকে লেখকের “দিশি গান-বিলিতি খেলা” পড়ে বিষয়গুণে ও বিদগ্ধ বিটলেমিতে মুগ্ধ হয়েছিলাম। এবার বইয়ের নামটা আমার খামখেয়ালী মনে বেশ ভালো লাগায় কিনে ফেললাম। রাতে ঢাকা-চট্টগ্রাম বাসে কৌতুহলের বশে আর সময় কাটানোর জন্য বইটা খুল
[justify]১.
বছর কয়েক আগে 501 Must Read Books নামের এক বই জোগাড় করেছিলাম, অলস পাঠকেরা যেমন করে আর কী, যেন সেই ৫০১টা বই পড়লেই জগতের সব সাহিত্য সম্পর্কে ঝানু হয়ে যাব, বেছে বেছে কিছু পড়া হবে আর মাঝে মাঝে ইজি চেয়ারে পা ঝুলিয়ে কপাল কুঁচকে ভাবব যে এই কয়টা বই-ই এখন পর্যন্ত পড়তে পারলাম না!
[প্রাক-কথনঃ
বই নিয়ে কথাবার্তা বলার মত আনন্দময় কাজ দুনিয়াতে কম। ফেসবুকে একটা গ্রুপ আছে- বইপড়ুয়া। এ গ্রুপে যাঁরা আসেন তাঁদের একটা ব্যাপার একরকম- সবাই বই পড়েন। শুধু পড়েন না, বই নিয়ে আলোচনা হয়- মন্তব্য, প্রতিমন্তব্য। চমৎকার একটা অভিজ্ঞতা।
বইপড়ুয়া'য় গিয়ে চুপচাপ থাকাটা মুশকিল। বই নিয়ে আলাপ করা হয়েই যায়।
মাঝে মাঝে বই পড়ে সেটা নিয়ে কথা বলতে ইচ্ছা করে। 'রিভিউ' বলাটা ঠিক হবে না এগুলোকে, তবে বই-তাড়িত কথা তো অবশ্যই।
এ ধরণের লেখাগুলোর সবচেয়ে ভাল লাগা অংশ হল পাঠকের মতামত, একই বই নিয়ে কত কত কথা পড়ুয়াদের। অদ্ভুত আনন্দের একটা ব্যাপার!
এবারের কথাগুলো তারেক নূরুল হাসান-এর 'কাঠের সেনাপতি' নিয়ে। বইপড়ুয়ায় করা পোস্টটারই খানিকটা পরিমার্জিত রূপ এটা, বলে রাখা উচিত!]
আমাদের ছোটোবেলাতেও (মানে বেশিদিন আগে না) শহরেই একটু নিরিবিলির দিকে দিব্যি জোনাকিদের দেখা মিলত। এখন নগরায়ণের ঠেলায় তারা সব উধাও। তা কেউ যদি প্রশ্ন করে, জোনাকিদের ‘কনজার্ভেশন’ প্রয়োজন কেন, তাদের আদৌ দরকারটা কী, তাহলে কী উত্তর দেবেন?
আমি বলব, গত দুই সপ্তাহে যে একগুচ্ছ ছানাপোনার প্রেজেন্টেশনের পরীক্ষক হয়ে এলাম, অ্যালঝাইমার্স (স্মৃতিভ্রম) আর বার্ধক্যের উপর, সেগুলোর প্রতিটা – প্রতিটাই – কাজ করা গেছে কেবলমাত্র সামুদ্রিক জোনাকিদের জ্যোতি ধার করে!
চল্লিশ বছর হয়ে গেল তবু কিছু লোক এখনও একাত্তরে যুদ্ধে নিহতের সংখ্যা নিয়ে খোঁচাখুঁচি চালিয়ে যায়। এইসব নাস্তিক-ইসলামবিরোধী-আওয়ামীলীগার-ভারতের দালাল এখনও প্রমাণ করার চেষ্টা করে চলেছে যে তাদের ‘মুক্তিযুদ্ধে’ নাকি তাদের তিরিশ লাখ লোক মারা গেছিল। একথা যে সর্বৈব মিথ্যা, তা এটা স্মরণ করলেই বোঝা যাবে – প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া বলেছিলেন, “Kill 3 million of them and the rest will eat out of our hands” – তাই বাংলাদেশ যে স্বাধীন হয়ে যেতে পেরেছিল, এটাই যথেষ্ট প্রমাণ যে দয়ালু পাকিস্তানি সেনারা তাদের তিন মিলিয়ন ছুডুভাইকে আসলে মেরে উঠতে পারেনি।
তবুও ব্যাটারা থামে না, তাদের নির্লজ্জ মিথ্যাচার চালিয়েই যায়। তাদেরকে ডাউন দেবার জন্য কিছু কট্টর প্রমাণওয়ালা বিপরীত প্রোপাগাণ্ডার দরকার পড়েছে। এক শ্রদ্ধেয় বড়ভাই আমাকে বোসম্যাডামের বইটা ধরিয়ে দিয়ে বললেন, এর চেয়ে নিরপেক্ষ, বাস্তবনিষ্ঠ অনুসন্ধানপূর্ণ বই আজকাল পাওয়াই অসম্ভব, এবং এটা অকাট্যভাবে আমাদের কথা প্রমাণ করে দিয়েছে; আমি যেন এটা নিয়ে কিছু লিখি যাতে ঈমানদার ভাইবোনেরা ব্যাপকহারে শেয়ার দিতে পারেন।
"ব্যাড মানি"
ব্যাড মানি কেভিন ফিলিপ্সের একটি আর্থ-রাজনৈতিক বিশ্লেষণ। কেভিন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সনের ১৯৬৮ সালের নির্বাচনে সিনিয়র স্ট্যাটেজিস্ট ছিলেন। ওয়াশিংটনকে খুব কাছে থেকে দেখা এই বিজ্ঞ রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞের দৃষ্টিভঙ্গী আমার কাছে ভালো লাগলেও তার লেখার ধরণ তেমন ভালো লাগেনি। জটিল এবং দীর্ঘ বাক্যে সহজ কথাগুলো অনেক বেশী স্পেস নিয়ে বলেন তিনি। ফলে মূল পয়েন্ট ধরতে বেগ পেতে হয়।
ক্রিসমাস আর নববর্ষ মিলিয়ে প্রায় দুসপ্তাহের কাছাকাছি ছুটি ছিলো। ইদানীং বই পড়া বেড়েছে আমার। আসল লক্ষ্য ছিলো ইংরেজী পড়ার গতি বাড়ানো। সেটা করতে এসে বই পড়ার পুরোনো নেশাটা ফিরে এসেছে আবার। ইচ্ছে ছিলো এই দুই সপ্তাহে ছ'টার মতো বই শেষ করব। সে আশার গুড়ে বালি দিয়ে সপ্তাহটা এমনি এমনিই কেটে গেলো। ভাবলাম যে কয়টা বই পড়েছি সেটা নিয়ে এবেলা দুচার লাইন লিখি।