[ নিন্দুকেরা খালি হরতালে ভাঙচুরের আর মনির পুড়ানো’র ছিদ্রান্বেষণ করে। হরতাল জিনিসটা আসলে খারাপ না। বইটা কেনা হয়েছে ৯ তারিখে, হাতে পেয়েছি ১২ তারিখে, পড়ে ফেলেছি ১৫ তারিখে অথচ কাজের চাপে (নাকি আলসেমি’র?) বহুদিন ধরেই এই পোস্ট লিখি লিখি করেও লিখে ফেলার সময় পাচ্ছিলাম না।
হরতালের সুবাদে পেয়ে গেলাম যখন কি আর করা। ‘হেইল হিটলার’ বলে কী-বোর্ডে ঝাঁপিয়ে পড়লুম। আপনারাও ‘হাত মে বিড়ি, মুখ মে পান/লড়কে লেঙ্গে পাকিস্তান’ বলে পড়ে ফেলুন। আজ সময় না পেলে কালকেও হরতাল আছে, তখনও ‘জয় পাকিস্তান’ বলে পড়ে ফেলতে পারবেন। মেহেরজানের গুণমুগ্ধ পাঠিকারা পাশে একটা ‘ম্যারী মি, আফ্রিদি’ প্ল্যাকার্ড রাখতে পারেন। কোনটাই পছন্দ না হলে একবাটি মুড়ি নেন। তারপর? তারপর আবার কি? মুড়ি খান! ]
একজন জনপ্রিয় সাহিত্যিক (খুব সম্ভব হুমায়ুন আহমেদ) বলেছিলেন সাক্ষাৎকারে অর্থাৎ প্রশ্ন আর তার উত্তরের মাঝে কাউকে খুঁজতে যাওয়া অনেকটাই বোকামি। কারণ সাক্ষাৎকার প্রদানকারী যদি নিজেকে লুকিয়ে রাখেন তাহলে শত প্রশ্ন করেও তাকে বের করা সম্ভব নয়। তারপরও লেখকের সততার উপর আমরা আস্থা রাখি বলে সাক্ষাৎকার গ্রন্থগুলো আমাদের প্রিয় পাঠ্য হয়ে ওঠে। একজন লেখককে অামরা সাধারণত দুভাবে চিনতে কিংবা জানতে পারি। এক তার লেখা আর
স্বাস্থ্য উদ্ধারের জন্য চিকিৎসকের পরামর্শে রবীন্দ্রনাথ ১৯১২ সালে শিলাইদহ কুঠিবাড়ীতে অবস্থান করেছিলেন দীর্ঘ সময়ের জন্য। কষ্টকর চিন্তাসাধ্য লেখালেখির উপরে নিষেধাজ্ঞা থাকায় তিনি তখন নিজের কিছু কবিতা ইংরেজিতে অনুবাদ করেছিলেন। মূলত ১০টি ভিন্ন ভিন্ন কাব্যগ্রন্থ থেকে কবিতাগুলো নেওয়া হলেও এর অর্ধেকই ছিল গীতাঞ্জলির।
জিম করবেট হলেন জঙ্গলের বিজ্ঞানী। জঙ্গলের প্রতি পরতে পরতে লুকিয়ে থাকে মৃত্যু, জিাঘংসা, কূটিলতা। সে সব শুধু সুনিপূণ ভাবে আবিষ্কারই করেনি করবেট, রীতিমত জঙ্গলের আইন তৈরি করে উত্তরসুরিদের জন্য একটা সুনির্দিষ্টি পথনির্দেশনা রেখে গেছেন। জঙ্গল আজ বিলুপ্তির মুখে, তাই করবেটের ‘‘জাঙাল লোর’’ কতদিন কাজে লাগবে তা নিয়ে সন্দিহান আমরা। কিন্তু অ্যাডভেঞ্চার যাদের রক্তে মিশে আছে, তারা কী থেমে যাবেন। না, তাই কি হয়! শিকারের নেশা মানুষ কমাতে বাধ্য হয়েছে, কিন্তু দিন দিন বেড়ে চলে পর্বতের হাতছানি। এক হিমালয়ই ভুলিয়ে ভালিয়ে তার বুকে ডেকে নিয়ে শত শত পর্বতারোহীর প্রাণ কেড়ে নেয়। হিমালয় যেন মায়াবী ঘাতক--সে এভারেস্টই হোক আর কাঞ্চনজঙ্ঘা কিংবা অন্নপূর্ণা। কিন্তু এর মায়ডাকও তো উপেক্ষা করার মত নয়। তাই পদে পদে মৃত্যুর হাতছানি উপেক্ষা করে, তুষারের বুকে অগ্নির উপাখ্যান রচনা করতে নিশিতে পাওয়া মানুষের মতো চূড়ার দিকে অগ্রসর হন অদম্য প্রাণ অভিযাত্রীকেরা।
গ্যাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেজের (গ্যাবো) বাবাকে একবার প্রশ্ন করা হয়েছিল, আপনি কোনো সময় উপন্যাস লিখতে চান নি? উনি নাকি একটি বিষয় নিয়ে যাও বা লিখতে চেয়েছিলেন, বেশ চিন্তা-ভাবনা করেছিলেন, এক সন্ধ্যায় গ্যাবো ফোন করে একটা শব্দের ব্যাপারে জানতে চাইলেন তিনি বুঝে যান যে গ্যাবো নিজেই সেই ঘটনা নিয়ে লিখতে আরম্ভ করেছে, তাই আর উপন্যাস রচনায় মনোনিবেশ করেন নি।
বই রিভিউঃ পৃথিবীর পথে পথে
গ্রন্থকারঃ তারেক অণু
প্রকাশকঃছায়াবীথি, বইমেলা ২০১৪
কী বিপদেই না ফেলেছিলেন আমাকে মুহম্মদ জাফর ইকবাল!
“আমি এমন কিছু করিনি, যার ফলে কেউ তা লিপিবদ্ধ করার মতো মূল্যবান বিবেচনা করতে পারে। আমি মরে পচে গেলে আমাকে বিস্মৃত না হওয়ার একমাত্র সুযোগ হতে পারে পড়ার মূল্যবান কিছু রেখে যাওয়া। বহু ঐতিহাসিক ঘটনা আমি প্রত্যক্ষ করেছি এবং সেইসব ঘটনাকে একটি সুনির্দিষ্ট রূপ দিতে যারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন, একজন সাংবাদিক হিসেবে আমি তাদের সাক্ষাৎকার গ্রহন করেছি.................. এই আত্মজীবনী বয়োবৃদ্ধের সন্তানের মতো। এটি থেকে বেশি কিছু আশা করা যথার্থ হবে না। এর মধ্যে আছে কিছু গালগল্প, কিছু সুড়সুড়ি, কিছু খ্যাতি নাশ, কিছু বিনোদন............”