জুবায়ের কখনো কখনো সখের বসে কবিতা লিখতো, মুখে মুখে রচিত কবিতা আবৃতি করে শোনাতো, সে সব আমি জানি। কিন্তু জুবায়ের যে কখনো ছড়া লিখতো বা লিখেছিল, সেটাই আমার জানা ছিল না। এবার ঢাকা থেকে ওর প্রকাশিত হওয়া বেশ কিছু পুরনো লেখার কাটিং (যে সব কিনা ওর বোন ঝর্ণা সংগ্রহ করে রেখেছিল।) সাথে করে নিয়ে এসেছিলাম।
মন ঠিক মজল না তোমাদের মা দিবসে...
একা একা যাকে নিয়ে ভাবি-হাসি-কাঁদি বসে,
কান্না ও হাসিটুকু আমারই সে থাক না!
সব নিয়ে চেঁচামেচি? আমি ভাই কাক না!
অসহায় দিনশেষে যে গায়ের ঘ্রাণ পেয়ে
মনে হয়, ফের বেঁচে উঠলাম প্রাণ পেয়ে!
যার কথা ভাবলেই সারা বুক প্রান্তর--
মেঘ ডাকা দিনে যেন পাহাড়ি তেপান্তর!
যাকে নিয়ে কল্পনা গল্প না--সত্যি!
যার পেটে একদিন আমি এক রত্তি
ছিলাম, অ্যাত্তোটুকু থেকে আজ মস্ত!
কইলটা কী নরেন মোদি?
হের প্রতিবাদ আমরা যদি
না করি, তো করবে কিডা?
--সবাই মিলা হিন্দু পিডা!
সাঈদী মামা চান্দে গেছে,
শুইন্যা সবে হাইস্যা দিছে
...টাটকা ঘায়ে নুনের ছিডা!
--সবাই মিলা হিন্দু পিডা!
ইসলামি দেশ, এইখানে বাল
হিন্দু এত হুদাই কেন?
মাইর বুঝে না? রেপ বুঝে না?
হিন্দুগুলা ভুদাই কেন?
রাইত্তে পালা ইন্ডিয়াতে
বেইচ্যা তগো বসত ভিডা!
--সবাই মিলা হিন্দু পিডা!
মধ্যযুগের খোঁয়াড়ে আজ
নব্যযুগের জীবগুলো
'ভাবনার উপর খাজনা বসাও'
লেজ নাড়িয়ে কয় হুলো ।
এক খাঁচাতেই বন্দি সবাই
মাংসাশী আর শাকাশী,
হুলো ঘোরায় শাষণছড়ি,
বাদবাকি সব জলখাসী ।
সংখ্যাগুরু গবাদিরা
গোবর ছাড়ে আরামে
ধীমান গরু ধ্যান করে আর
গাভী ভোগে ব্যারামে ।
ক্ষ্যাপা বলে, 'স্বাধীনতা,
জ্যান্তো বাঁচো নয় মরো'
হুলো শুধু চোখ পাকায়,
'চুতমারানি চুপ করো' ।
যাদের মনে দ্বিগুন জ্বলে
কে বলেছে খেলাধুলায় আমরা র'ব পিছে?
জানো না কি হারা ছাড়া জিততে চাওয়া মিছে!
"হারতে হারতেই জিততে হবে" - সত্য চিরন্তন।
তবু কেন হারলে তুমি খারাপ করো মন?
যতই আমরা হই না কেন খেলায় পরাজিত,
হয়ো নাকো তবু তুমি একটুকুও ভীত।
সত্য কথা, ন্যায্য কথা, সবাই জেনে নাও -
বাংলাদেশকে হারতে দেখে লজ্জা কেন পাও?
এক যে অকালপক্ব রে,
ওই মেয়ে তার লক্ষ্য রে,
ভাবনা শুধু তারেই নিয়ে
চায় হতে তার সখ্য রে।
ভ্যালেন্টাইনের চক্করে,
একটি প্ল্যানের ছক করে,
লিখলো জামায় নিজ রক্তে,
সেই প্রিয় নাম, অক্ষরে।
রক্তে বড়ো অক্ষরে,
নাম লেখা শার্ট সখ করে
গায় চাপিয়ে সেই মেয়েটির
দরজাতে সে ‘নক’ করে।
দরজা খুলে ‘টক’ করে
যেইনা মেয়ের লক্ষ্য রে
পড়লো গিয়ে রক্ত লেখায়,
ফাঁসলো প্রেমের চক্করে।
যেইসব শুয়োরেরা মানবতা মানবতা চিল্লায়,
জন কেরি! না কী জানি শুনেছি যে নাভি নাকি পিল্লায়!
যেইসব পণ্ডিতে টকশোতে মারে নানা তন্ত্র,
নজরুলে কইছে কী? মতি ভাই কী দিয়াছে মন্ত্র!
ধরা খেয়ে কথা নাই তারা আজ চুপচাপ চোষে কী?
বহু পরিকল্পনা, ভেঙ্গে গেল, ঠিক সেই রোষে কি?
জামাতের টেকাটুকা খায় নাকি পাকি তেল মালিশে?
কথা শুধু বলে তারা বাংপাকি মিটমাটে শালিশে।
ভোট নিয়া মতি মিয়া দেখ দেখি করল কী কিচ্ছা!
আয় তো তোদের মুণ্ডুগুলো আয় দেখি ‘ফুটোস্কোপ’ দিয়ে,
দেখি কত ভেজালের মেকি আছে তোদের মগজের ঘিয়ে।
কোনখানে বেশি স্যামকাকুডর, কোনপাশে কম ভাজা কার
কোন বামে তোর তেল গ্যাস নাই, কোন ডানে চাটে রাজাকার
জামাত শিবির মারছে মানুষ--
বললে তোমার জ্বলে কেন?
"দুর্বৃত্ত" বসাও তুমি "জামাত"
কথার স্থলে কেন?
বিএনপি যে সঙ্গে আছে--
বলতে তোমার ক্লান্তি লাগে?
মারছে পুলিশ নিরীহ লোক--
বললে তবে শান্তি লাগে?
পিটলে হেফাজতকে ওয়েব
দাও ফাটিয়ে প্রতিক্রিয়ায়...
মনির যেদিন পুড়ল সে রাত
ব্যস্ত ছিলে রতিক্রিয়ায়!
সারা বছর ঘুমিয়ে থেকে
উঠলে হঠাৎ জ্বলে কেন?
বোবা ছিলে, তোবা বলে
জোরসে জবান চলে কেন?
আদর্শ আর নীতি নিয়ে ওদের অনেক বড়াই ছিলো
ওদের কাছে মুক্তিযুদ্ধ ‘দুই কুকুরের লড়াই’ ছিলো!
চিরকালই এই দাদারা ইহার উহার লেজুড় ছিলো
এই দাদাদের পোটলায় লাল খোর্মা এবং খেজুড় ছিলো!