আমাদের মফস্বলে ওই একটিই বাঁধাই ঘর ছিল।
বাঁধাইকর ছিল কালো একটা লোক। শুকনো, অথচ কেমন খানিকটা তেলতেলে লোকটা মোটা ফ্রেমের চশমা পরে সারাদিন মুখ গুঁজে বই সেলাই করে চলত! লোকটার সরু লম্বা আঙুল দেখে সেগুলোকে মায়াবী ভাবার কিছু ছিলনা! কিন্তু কীরকম মায়া করে লোকটা বইয়ের পুরনো মড়মড়ে পাতাও নরম মাংসের মতো সেলাই করে ফেলত! বই যেন না, পুরনো কাপড়! বইগুলোও যেন গলে পড়ে যেত লোকটার হাতে! সুলতা বৌদি আমার চুলে আঙুল দিয়ে বিলি কাটলে যেমন আমার অদ্ভুত আদর লাগত, সেরকম। অথবা সেইবার যখন আমি আর তনি ওদের পোড়ো ভিটের শুকনো ডোবায় পালিয়েছিলাম! তনি কেবল আমার হাত জাপটে ধরে আমার গায়ে হেলান দিয়ে পড়ে ছিল! আর আমি ওকে যতই ধাক্কাই উঠতে চাচ্ছিলোনা, সেরকম!
পাঁচশ বছর আগে এমনি একদিন, হয়ত বড় আড়ষ্ট ভঙ্গিতে বিদ্যাপতি গিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন মিথিলার রাজা শিবসিংহের রাজসভায়, হয়ত আড়ালে এককোণে একলাই লুকিয়ে ছিলেন, হয়ত মনে ভাবছিলেন...
"হেসে ভালোবেসে দুটো কথা কয়
রাজসভাগৃহ হেন ঠাঁই নয়,
মন্ত্রী হইতে দ্বারীমহাশয়
সবে গম্ভীর মুখ।
মানুষে কেন যে মানুষের প্রতি
ধরি আছে হেন যমের মুরতি
তাই ভাবি কবি না পায় ফুরতি--
দমি যায় তার বুক"
বিষে বিষক্ষয় বলে যে ব্যাপারটা আছে আমার বেলায় সেটা একবোরেই অকাট্য। দুঃখ, বিষন্নতা, হতাশা এই জাতীয় প্রতিটি ব্যাপার থেকে বের হতে আমার বিষে বিষক্ষয় পদ্ধতির ভেতর দিয়ে যেতে হয়েছে। যেরকম একবার এক কষ্ট পেয়ে মূক ও বধির হবার উপক্রম হয়েছিলো, তখন আমাকে বাচাঁয় The Bicycle Thief.
১। গুঁড়ো গুঁড়ো বৃষ্টির মধ্যে ডুবে যেতে থাকে বাড়ীঘর মাঠ পাহাড় নদীতীরের পাথর, বালি ক্যাকটাস, আমি তুলি ঝেড়ে জল ফেলি আরো আরো আরো৷ ফোঁটা ফোঁটা জল৷ ওয়াশ ছবি বলে একে, এ ছবির অনেক অনেক ডিমান্ড আজকাল৷ ঐ যে যখন ঠিকানাহীনেরা দৌড়ে যেতো বৃষ্টি আসা মাঠের উপর দিয়ে নৌকার দিকে, ছইয়ের উষ্ণ করতলে আশ্রয়ের আশায়, পিছনে বৃষ্টিকে মনে হতো জাপানী ছবি--সেই সময় থেকে এতদূরে আমরা, এখন দূরবীণ কষেও সেসব আর দেখা যায়
১.
ক্রমে চারিদিকে রাষ্ট্র হইয়া গেল Bridgeমোহন অবশেষে গ্রামে আসিতেছেন।
১.
মা কইল, তারা শুধু ছেলের লেখাপড়া টা চায় আর কিছু না।
আমি কইলাম, পড়াশুনা বিক্রি করিনা।
মা কইল, পড়াশুনা কি নিজের জন্য?
আমি কইলাম, না। পরকে বিলাইয়া দেওয়ার জন্য, নিজের পড়শুনা জাহির কইরা বিক্রির জন্য না। অন্ধজনে দেহ আলো। Let there be light.
মা কইল, ওরাও তো পর।
আমি কইলাম, তাইলে আপন হইতে চায় কেন?
শোনো ছেলের কথা। তাই বলে কি বিয়ে করবি না?
বহুদিন নিস্তব্ধতায় কেটেছে তার নিয়নের রাতগুলি, মেঘের সকাল সমূহ। নিটোল পুকুরের কালো কৈ মাছের ডাঙ্গায় ভ্রমণের ছটফটানিতে তার সারা গোধূলী অস্থির হয়েছে অসংখ্যবার। এই সব অস্থিরতার আড়ালে বেঁচে থাকার আকুলতা কখনো কখনো ফিরে এসেছে, কখনো জীবন্মৃত্যুর জটিলতার ড্রয়ারে তালাবদ্ধ রাখতে হয়েছে সূর্যালোকের প্রেমপ্রার্থী অবান্তর ইচ্ছেগুলোকে। অন্ধকারে একটি উজ্জ্বল ঘরের জন্ম হয়েছে গোপনে গোপনে। কিছু কৌতুহলী ফুল ও তাদের সব
০১.
পড়ছিলাম ঋতুপর্ণঘোষের সাক্ষাৎকার। কবেকার জানি না। অনেক আগের হয়তো। কথা বলছিলেন তার বিজ্ঞাপন ও ছবি বানানোর নানা অনুষঙ্গ নিয়ে। ছবিতে রং-এর ব্যবহার নিয়েও বললেন অল্প-স্বল্প। একজায়গায় জানালেন নিজের ছবিকে “ঋতুপর্ণ ঘোষের ছবি” বলে বিজ্ঞাপিত করার অনাগ্রহের কথা। বললেন, বায়ান্ন জনের ছবি কখনো ঋতুপর্ণের একার ছবি হতে পারে না। আর এক জায়গায় ক্যামেরার সামনে কখনো কাজ করবেন কী না প্রশ্নের উত্তরে স্ট্রেইট এবং খুব কনফিডেন্টলি বললেন, “না”।
একঃ
তাওয়েলোরো
- বের্নার বাঁলাঁ দাদিয়ে।
সে ছিল চাঁদের মত সুন্দর, বাছাটি আমার !
তাওয়েলোরো রে! তাওয়েলোরো !
যাদুমনিরে, সে ছিল দিনের ঔজ্জ্বল্যের মত সুন্দর !
ওরে আমার তাওয়েলোরো! তাওয়েলোরো রে!
সে এক দীর্ঘ অতীতের কথা, যখন পশুপাখিরা কথা কইত, যখন মানুষ, পশুপাখি আর জড় বস্তু একে অপরের ভাষা বুঝতে পারত।
তাওয়েলোরো! তাওয়েলোরো !