[justify]
১
স্বাতী এসে জানালার পর্দা সরিয়ে দেয়। বাইরে দুটি চাঁদ ঝুলে আছে। আমরা এখন ঈশ্বর-ঈশ্বরী।
যেদিকে তাকাই কেবল ধূ ধূ করছে ছায়াহীন মাঠ, কোথাও বালি, কোথাও মাটি। কোথাও শুকনো ঘাস, কর্কশ গুল্ম, কোথাও একেবারে ন্যাড়া। তামাটে আকাশ গনগন করছে দারুণ রোদের তেজে। এর ভিতর দিয়ে যেতে হবে দীর্ঘ দীর্ঘ দীর্ঘ পথ। অন্য কোনো উপায় নেই।
সেফালাস ছিলো পবনদেব ইয়োলাসের পৌত্র। পিতামহের মতই দিলদরিয়া ছিলো সে। আর উপরি হিসাবে সে ছিলো খুবই শিকারপ্রিয়। ভোররাতেই সে বনে বনে হরিণ শিকার করতে বেরোতো। আর পুব আকাশ থেকে ঊষাদেবী ইওস তাকে দেখতেন। আহা, কে এমন চমৎকার ছেলেটা? খবরও নিলেন, এ ছেলে পবনদেবের নাতি। জেনে দেবী আরো পুলকিত হলেন আর রোজই তাকে দেখতে লাগলেন আরো ভালো করে। দেখতে দেখতে একদিন দেবীমহাশয়া পড়ে গেলেন প্রেমে।
যে মানুষ ব্যর্থতার স্বাদ কখনো পায় নি---সে এক অপূর্ণাঙ্গ মানুষ
পথ চলতে গিয়ে আছড়ে পড়েনি যে
সে কী করে বুঝবে ধুলো ঝেড়ে ফেলে আবার উঠে দাঁড়ানোর মাহাত্ম্য--
[justify]বাবার কোনো স্মৃতি নেই আমার। ছোট্ট বাচ্চাদের খেলনা রোবট কিংবা বহুমুখী ট্যাবলেট থাকে, আমার সেইসব-ও ছিলো না, আমি বড় হয়েছি কেবল সংখ্যার শূন্যতার ভেতরে, শ্রোডিঙ্গারের বেড়ালের অস্তিত্ব-অনস্তিত্বকে সঙ্গী করে! মা আমাকে খুব সূক্ষ্মভাবে পরিচালিত করে বড় করেছে, আমি এখন ভেবে ভেবে বের করতে পারি।
সূর্যদেবের প্রাসাদ। সে এক আশ্চর্য ব্যাপার। লক্ষ কোটি সোনা রূপা হীরাপান্না গজমোতির দীপ্তি চারিদিকে। অন্দর ও বাহির সবই ঝকমকে। সবসময় সেখানে মধ্যদুপুর, সকাল সন্ধ্যা বা রাত্রি নেই। পৃথিবীর মরণশীল মানুষদের মধ্যে কেউই সেই তাপদীপ্ত চিরমধ্যাহ্নের প্রাসাদে বেশীক্ষণ থাকতে পারবে না, অসহনীয় দীপ্তিতে ঝলসে যাবে। সেই প্রাসাদে সূর্যদেব নিজের অমর পরিচারক-পরিচারিকাদের নিয়ে থাকেন।
আমার ধারনা প্রাচীন মিসর এর বাসিন্দারাই প্রথম বলেছিল প্রতিটি মানুষ ব্যাক্তি ৬ বা ৭ টি ভিন্ন ভিন্ন উপাদান দ্বারা তৈরি। যদিও বাইবেল তিনটি উপাদান এর কথা বলে, এক – শরীর , দুই – আত্মা আর তিন - অতি আত্মা বা বিদেহী আত্মা। এই প্রাচীন মিসরীয়রা আমাদের ধারনার চাইতে বেশী বুদ্ধিমান ছিলেন এবং এসব ভাবার মত যথেষ্ট সময় এদের ছিল। আমি এসব ব্যাপারে নির্বিকার হলেও তাদের ধারনা যা বুঝেছি তাতে এই মানব শরীর ভিন্ন ভিন্ন তত্তের একক মুল ধারক, আমাদের দেহ কেবল রক্ত মাংসের একটি আবরন। অথবা সহজ করে বলা যেতে পারে আমাদের এই দেহ একটি বাড়ি ,যেখানে এইসব তারা মাঝে মাঝে থাকে, কখনো কখনো একসাথে। কিন্তু একটি সব সময়ই থাকে যা এই বাড়ি আলোকিত আর কর্মক্ষম করে রাখে।
নৈঃশব্দের বাগানে ঘুরে ঘুরে যায় রৌদ্রদিন ও জ্যোৎস্নারাত। কখনো তারা-ফুটফুট অমানিশা। কখনও বা ঝরোঝরো বাদলপ্রহর এসে আশিরবক্ষচরণ স্নান করিয়ে যায় এই বাগানকে।
রবীন্দ্রনাথের প্রতি আমার একরকম চাপা ক্ষোভ আছে। কোন বিষয় নিয়ে ভাবলেই দেখা যায়, তিনি আগেই সবচে সুন্দর কথাটিই লিখে ফেলেছেন তা নিয়ে। প্রত্যহের যেকোন আবেগে, যেকোন মুহুর্তে তিনি এসে হাজির হন; অন্য যে কারো আগেই। তাঁর জন্যই হয়তো আমার কখনো লেখক হওয়া হবেনা।
আজকের গল্প আটালান্টার। সে যখন ফুটফুটে একটা মেয়ে, সবেমাত্র জন্মেছে, তখনই তার বাবা-মা তাকে ফেলে এলো বনের ধারে। তখন শীতের শুরু, রাতের বেলা বেশ শীত পড়ে। বাচ্চা শীতেই মরে যাবে না হলে আমিষাশী বন্যজন্তুরাই বাচ্চাটাকে খেয়ে ফেলবে, ঝামেলা শেষ। এই ভেবে বাবা-মা ফিরে চলে গেল, তাদের পুত্রসন্তান চাই, মেয়ে দিয়ে কোন কচুটা হবে?