শেষবারের মত ঘুরে আসা যাক ধূলিময় প্রিয় প্রান্তর
যেখানে আমার গতিময় পদচ্ছাপ
চাপা পড়েছে বিকট কংক্রিটের নিচে
সেই এক জলমগ্ন নৌকার খোলে আমার সর্পভীতি
রূপান্তরিত হয় জলাবদ্ধতায় অদৃশ্য ম্যানহোলের অন্ধকারে
শেষবারের মত আমি সেই গা-ছমছম দৃশ্যটি ছুঁতে চাই।
এখনো আমি খুব বিমর্ষতায় ভোরের ঘুম-ভাঙা মাঠের
শিশির জড়ানো আলোতে
আঁকড়ে ধরি গোলপোস্ট, কর্নার কিক, রেফারির বাঁশি
[justify]১
চিত্র ১:
১৭৬৯। হাইতি। এখানে মাটির রঙ আলকাতরা-কালো, তারচে' বেশি কালো এই ফসলি জমির শ্রমিকদের গায়ের রঙ। ওরা ৪৪ জন। একটানা কাজ করছে সেই উষা থেকে, যখন সূর্যের-ও চোখ খুলে নি, আর এখন সূর্যের ঘুমিয়ে পড়ার সময়। পাক্কা ১২ ঘণ্টা। শ্বাপদের মতো সর্তক চোখে তাকিয়ে আছে শ্বেতাঙ্গ মনিব। কাজে একটু এদিক ওদিক হলে চাবুকের বাড়ি, গরম শিকের ছ্যাঁকা। ওরা কাজ করে যায়, মাঝে মাঝে হাঁপিয়ে উঠলে উঁকিঝুঁকি মারে আশপাশে, দ্রুত লয়ে কথা বলে। ওরা কাজ করে যায়। নিয়তি। মানুষের অপমান। ঈশ্বরের নিস্পৃহতা। ওরা কাজ করে যায়। মার খায়। মরে যায়। বংশানুক্রমিক। হয়তো দিনের শেষে এক টুকরো রুটি ও জল মিলবে, ভাগ্য ভালো হলে মাংশ লেগে থাকা হাড়, সবজি-ভাজা। আর নিশাচর পাখির মতন থেকে থেকে ভেঙে যাওয়া ঘুম।
ডাফনি ছিলো নদীদেবতা পানিয়াস এর মেয়ে। মেয়ে ছোটো থেকেই খুব ডাকাবুকো স্বভাবের, যেমন তেজী তেমনি জেদি। দিনে দিনে মেয়ে বাড়ে, যত বাড়ে ততই সুন্দরী আর শক্তিমতী হয়ে ওঠে। কিশোরী বয়স থেকেই স্বাধীন আরণ্য সিংহীর মত সে বনে বনে শিকার করে বেড়ায়। সে পশুচর্মের পোশাক পরে, চুল খোলা রাখে। সে আরণ্যক হ্রদে স্নান করে, বনের ফল আহার করে।
আমাগো সইন্দাকালে পাইত্যাল ডাকত। তাগো ন্যাজ বটা না। খাড়া খাড়া। মাজে মাজে জুনি জ্বলত। সেজন্যি বাতি না আঙ্গালেও চলত। আর কুড়আ পুষলি মাফে ধরত।
বাপা মাফ--এই কইরাইতো খাতি নাতি বেলা গেল---শুতি পারলাম না। তরে ধরি কুন সুমায়! তরে মাফ কইরা দিছি।
এই উপকথা ব্যাবিলনের। তবে রচিত গল্প হিসাবে এটাকে আমরা প্রথম পাই রোমান কবি ওভিডের লেখায়। পিরেমুজ আর থিসবির করুণ-মধুর কাহিনি। এ কাহিনি চিরকালের, যুগে যুগে দেশে দেশে বারে বারে এ কাহিনি আমরা পেয়েছি ভিন্ন ভিন্ন আঙ্গিকে, মানুষের নিবিড় ভালোবাসার কাছে সংঘবদ্ধ বিষয়বুদ্ধি কীভাবে পরাজিত হয়েছে, তার গল্প!
এই উপকথা ব্যাবিলনের। তবে লিখিত গল্প হিসাবে এটাকে আমরা প্রথম পাই রোমান কবি ওভিদের লেখায়। পিরেমুজ আর থিসবির করুণ মধুর কাহিনি। এ কাহিনি আসলে চিরকালের, যুগে যুগে দেশে দেশে এই কাহিনি আমরা পেয়েছি নানা আঙ্গিকে। মানুষের ভালোবাসার কাছে সংঘবদ্ধ বিষয়বুদ্ধি কীভাবে পরাজিত হয়েছে, তার গল্প!
পথ চলতে গিয়ে অনেকের সাথেই দেখা হয়; সেটা হোক জীবন চলার পথে কিংবা দৈনন্দিনের ক্ষুদ্র গন্তব্যের পথে । কিছু মুখ মনে থাকে, কিছু মুখ হারিয়ে যায় বিস্মৃতির অতলে । কিছু মুখ ভাবায়, কিছু মুখ জাগায় । এই মুখগুলো জায়গা করে নেয় হৃদয়ের কোনো অজানা কোণে । সবসময় নয়, মাঝে মাঝে হয়তো কোনো একাকিত্বের মুহূর্তে কিংবা কোনো কোলাহলমুখর ক্ষণে এরা ভেসে উঠে মনের পর্দায় ।
ছুটি বললেই কেন যেন মনে পড়ে যায় একটা সবুজ রঙের ট্রেন, সবুজ মাঠ চিরে হালকা শীতের হাওয়ার ভিতর দিয়ে সোনালী রোদের ভিতর দিয়ে চলেছে দূরপাল্লায়। কূউ উ উ ঝিকঝিক করে ছুটে চলেছে। আকাশ নীল, নীল, নীল, দূরে দেখা যায় সমুদ্রের তীররেখা, পাশ দিয়ে চলে আমাদের ট্রেন। কেন জানি এই ছবিটা মনে পড়ে, এরকম দেখিনি কিন্তু কোথাও, মনে মনে বানানো একটা ছবি, সেই ছোট্টোবেলায় বানানো, তারপরে বড় হতে হতে কেবল আরো গাঢ়ই হয়েছে ছবি, একটুও মো
ভুলে ভরা ধূলাসংসারে আঁট করে রাখা থাকতো কাজ আর কাজ, অকাজগুলোও সারি সারি। পালাক্রমে চলতে থাকতো আলাপ বিলাপ প্রলাপ। ঠাসবুনোট সময়, একেবারেই ফাঁকা ছিলো না কোথাও। তবু কোন গহীন পথে ঢুকে পড়তো স্বপ্ন, স্বপ্নেরা। কোথায় তাদের গোপনকুঠি? কেউ জানতো না।
[i]কোথা থেকে শুরু করি অর্ফিউস আর ইউরিডাইসের গল্প? কেবলই মান্ডুর বাজবাহাদুর আর রূপমতীকে মনে পড়িয়ে দিচ্ছে যে! বাজবাহাদুর তারা-ঝমঝম আকাশের তলা দিয়ে রূপমতীর প্রাসাদের দিকে আসছে আর আসছে, কিছুতেই আর পথ ফুরায় না। ঠিক তখনই নিজের প্রাসাদের ছাদের উপরে বসে রূপমতী মধ্যরাতের রাগিণীতে আকাশেবাতাসে ছড়িয়ে দিচ্ছে আকুলতা। ওরা দু'জনেই জানতো বিরহই আসল মিলন, ফুরায় না ফুরায় না ফুরায় না।