একটি লোকের কথা বলি। বেশ বয়েস তার, আর সেকারণেই হয়তো কথা খুব কম বলে সে। তার চেহারায় সারাক্ষণই এক ক্লান্তির ছাপ। সে ক্লান্তি এতো প্রকট যে, সেটি ছাপিয়ে রাগ বা আনন্দ, কোনোটাই প্রকাশ করা সম্ভব হয় না। লোকটি ছোট্ট একটি শহরে, একটি রাস্তার শেষ মাথায়, চৌরাস্তার কাছাকাছি একটি বাড়ীতে বাস করে। আর সবার মতোই এতোটা সাদামাটা যে, আলাদা করে চোখে পড়েনা সে। তার মাথায় একটি ধুসর টুপি, পরণে ধুসর প্যান্ট আর ...
কতকাল পরে এমন জ্যোৎস্না। কতকাল ধরে শহরে শহরে থাকি, জোরালো বিদ্যুৎবাতি জ্যোৎস্না দেখতে দেয় না, নক্ষত্র দেখতে দেয় না। শহরের লোকেদের এসবের কোনো দরকারও নেই, তারা বিষয়কর্মে ব্যস্তসমস্ত। নক্ষত্র দেখে বা জ্যোৎস্না দেখে কীই বা লাভ হবে তাদের ?
শহর ছাড়িয়ে এসেছি বেশ কিছুক্ষণ, শ্রীনি মানে শ্রীনিবাস ড্রাইভ করছে। ও আর অনন্তকৃষ্ণন আনতে গেছিলো আমায় এয়ারপোর্ট থেকে। এখন কাছিয়ে এসেছে গন্তব ...
হুমায়ূন আহমেদের "মাতাল হাওয়া" নিয়ে আগ্রহ ছিল মূলত তার ইতিহাস নির্ভর আগের কয়েকটি উপন্যাসের কারনে। "মধ্যাহ্ন" আর "জোছনা ও জননীর গল্প" আগেই পড়েছিলাম। তাই কিছুদিন আগে হাতে পেয়ে পড়ে ফেললাম "মাতাল হাওয়া"। এই বইয়ের কাহিনীকে মোটামুটি দু'ভাগে ভাগ করা যায়। নাদিয়া-হাবীব-হাসানদের কাহিনী আর হুমায়ূনের আত্মকাহিনী। নাদিয়া-হাবীব-হাসানদের গল্প বলার ফাঁকে ফাঁকে হুমায়ূন তার নিজে ...
[বিজ্ঞপ্তি ১: অনেক আগে একটা সাই-ফাই লেখা শুরু করেছিলাম। নানা কারণে সেইটা শেষ করা হয়নি। একেবারে নবিস টাইপের এই লেখাতেও ক'জন সচল নিয়মিত বিরতিতে তাঁদের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। শুধু তাঁদের কথা ভেবেই এই প্রকল্পটা পুনরুজ্জীবিত করা হল। এই অভাজনের অনিঃশেষ কৃতজ্ঞতা তাঁদের প্রতি।]
[বিজ্ঞপ্তি ২: সাই-ফাই বলে আমি কিছু কিছু জিনিস,কিছু কিছু ধারনা কল্পনা করে নেবার স্বাধীনতা নিয়েছি।এসবের কিছু ...
বহু বছর হলো মহালয়া ভোর দেখা হয় না। না, ভুল বললাম, দিনটা আসে ঠিকই। সেই দিনের ভোরও দেখা হয়, কিন্তু সেই শিউলি-উঠান, রাশি রাশি ফুল ঝরতো যেখানে, সেই শীত শীত আলো-আঁধারিতে ভোর চারটেয় বেজে ওঠা আশ্চর্য আকাশবাণীর কল, সেই গান, "বাজলো তোমার আলোর বেণু", আর সেই সব সুর আর কথার ঝর্ণার মধ্য দিয়ে আলো হয়ে ওঠা সেই শরতের স্বর্ণঝরা ভোর, সেই আশ্চর্য কন্ঠটি বলে যে কিনা বলে উঠতো "আশ্বিনের শারদপ্রাতে বেজে উঠেছে আ ...
কু-উ-উ-উ-ঝিক-ঝিক-ঝিক---কু-উ-উ-ঝিক-ঝিক-----
চলে যাচ্ছি----চলে যাচ্ছি-----চলে যাচ্ছি-----------
ছুটে চলেছে বিশাল ড্রাগন মুখে আগুনের ধোঁয়া ।আস্তে আস্তে মিলিয়ে যাচ্ছে স্টেশন----চেনা শহরের শেষ চিহ্ন।
দু'পাশের ধানক্ষেত --ক্ষেতে কাজ করা চাষী---মাঠে চরা গরুর পাল--বাঁশী-বাজানো রাখাল-বালক----খাল-বিল-----নদী-
মাছের জাল আটকে রাখা বাঁশের মাচান---দূরগ্রাম---হাটুরে মানুষ; কত দ্রুত পিছনে চলে যাচ্ছে সব---আড়াল হয়ে যাচ্ছে।
জ ...
এটা বেশ তাৎক্ষণিক তাড়ায় লেখা। একেবারেই গুছানো গাছানো না। কিন্তু ভিতর থেকে কেমন যেন একটা তাড়া, না লিখে আর পারা গেল না। আসলে যত দিন যাচ্ছে, আমি মুহম্মদ জাফর ইকবালের লেখার ভয়ানক ভক্ত হয়ে উঠছি। গত কয়েক মাসে তাঁর অনেক লেখা পড়তে পারলাম অনলাইনে।
আজকে পড়ছি সদ্য অনলাইনে ওঠা "স্কুলের নাম পথচারী"। গতকাল পড়েছি "রাজু ও আগুনালির ভুত"। পড়তে পড়তে একটা অদ্ভুত আনন্দ হয়। কচি নতুন পাতায় রোদ্দুর পড়ে ...
ক্রমশঃ মিশে যাচ্ছি পাহাড়ের অশ্রুধারার ভিতরে।এই জলধারার অন্তে জন্ম নিয়েছে যে নদী আমি তার নাম দিয়েছি--'নিঃসঙ্গতা'।
দূর থেকে দেখলে------সে কেবল দূর থেকেই দেখা----মনে হয় দিগন্তে আকাশ আর পাহাড় একসাথে মিশে আছে- খুব ঘনিষ্ঠ
বন্ধুর মতো- জড়াজড়ি করে আছে।দৃষ্টিভ্রম।এক বন্ধু বলেছিল,-'পাহাড়ের জন্য আমার খুব কষ্ট হয়।কেমন একাকী-নিঃসঙ্গ দাঁড়িয়ে থাকে'।মানি।চোখের বিভ্রমে যাই মনে হোক --পাহাড়তো সত্যি সত ...
ঝাঁক ঝাঁক জোনাকি গাছের মাথায় মাথায় পাতায় পাতায় জ্বলছে আর নিভছে জ্বলছে আর নিভছে। আমরা কয়জন ছাদের উপরে মাদুরে, তখন নভেম্বর মাস, বেশ শীত পড়ে গেছে। কম্বল টম্বল ভালো করে গায়ে জড়িয়ে বসেছি আমরা গুছিয়ে, চায়ের ব্যবস্থাও আছে। আমরা অপেক্ষা করে আছি উল্কাবৃষ্টির। লিওনিড মিটিয়র শাওয়ার। সিংহরাশির উল্কাবৃষ্টি।
কতকাল হয়ে গেলো? বহু বহু কাল? যেন মনে হয় গতজন্ম! অথচ মাত্র বারোবার পৃথিবী সূর্যপ্র ...
মূল গল্প: আন্তন চেখভের দি হেড অফ দ্য ফ্যামিলি
জুয়ায় হেরে অথবা পাল্লা দিয়ে মদ গিলে পেটের বারোটা বাজিয়ে থমথমে গুমোট মেজাজে দিন শুরু করাটা স্তেপান স্তেপানিক জিলিনের রীতিমতো নিয়মে দাঁড়িয়ে গেছে। সকাল থেকেই একটা তেতো রঙ চেপে বসে থাকে তার খিটখিটে, আলুথালু, তোবড়ানো ফ্যাকাশে চেহারায়। খুব ধীরে ধীরে সে কাপড় পরে, ঝলমলে ফরাসি জলে ছোট ছোট চুমুক দেয়, তারপর বাড়িময় পায়চারি করে বেড়ায়।
“কোন জ্ ...