সবিতা, বাড়িতে একলা দরজাটা আছে।
অঋণী গৃহস্ত গেছে জলের ধারে, শাপলাফুল ভেজে আজ ভোজন হবে।
সবিতা, জানালাগুলো মায়ামায়া খোলা।
জানালারা কথা বলতে জানে, জানালারা কথা শুনে।
একটা কমলাগাছ দাঁড়িয়ে আছে বারান্দায়। কলম করা, বনসাঁই। কমলাগাছ বাতাস হাতড়ায়।
দরজা উঁকি দিতে গিয়ে খুলে যায়।
চুরচুর।
সবিতা, অইটা কী জানো? টিকিটিকি। গৃহস্ত বাড়ির নিরব দর্শক।
টিক-টিক-টিক।
বাহ্! এমন শো-পিস সবাই আজকাল খর...
কৃপাহত্যার বলিরেখা ফুটেছে বেওয়ারিশ ত্বকে,
লোমকূপে দ্বিতীয় প্রণয়ের সোঁদা গন্ধ;
মৃত্যু চাই।
বকুলফুলের বনে। বাষ্পীয় সময় উবে
যায়, জলদাগ তুলে রাখে দেয়াল। রঞ্জনের
সকল উপাদান তোমার হাতে তুলে দিলাম চকিত। কেবল
আমার
অঘোর
মৃত্যু
চাই।
০
মেহগনি বাকলে রোদ লেগে চিকচিক করছে। রাখাল মাঠের ওম খুঁড়ে খুঁড়ে তুলে নিয়ে বাড়ি ফিরে- তাহার নাম খড়। তাহার থলের ভিতরে বাতাসের বাঁধুনি।
ওই, তোমার গাঁয়...
এখানে আগের পর্ব
৬
কয়েকদিন কেটে গেছে, সত্যক আর রুবেন সারাদিন একসঙ্গে কাজ করে। কাজ করতে করতে ক্লান্ত হয়ে গেলে সত্যক নিজেই একসময় বলে," আর তো পারা যায় না, চলো চা আর ঝালমুড়ি খেয়ে আসি৷"
সন্ধ্যার চা-ঝালমুড়ির আড্ডা বেশ ভালো লাগে মনে হয় দুজনেরই, কোনো কোনোদিন এর সঙ্গে থাকে বড়ো বড়ো সিঙারা৷ কোনোদিন চায়ের সঙ্গে ঝালমুড়ি থাকে না, থাকে কচুরি আলুরদম৷ সত্যকের শেফ-র...
বিক্রি দিয়ে আসি তিন পাটি ঘুম: অবনী বাড়ি আছো?
==================================
মাঝরাত্রে ঘুম ভাঙলে আর সুখ লাগে না। মেঘ দেখা যায় না যে মেঘ খাবো! তারাগুলো ভীষণ নারীবাদি, কেবল নিজেদের মেলে ধরে। ওরা কি মেঘবালকের মাঠে যাবে না?
অনেকগুলো মেষ আছে, অনেকগুলো গাভী। ঘাসের, শিশিরের ওম নিয়ে তারা লাইনে দাঁড়ায়। খামারী লোকগুলো দুধ দুয়ে নেয়। দুধের রঙ মেঘসাদা।
হুঁশ, হুশ।
'একটু-ও যাবো না।'
'না গেলে সরে দাঁড়া।'
রাত কী আজ ...
৫
রাতে ঘুমিয়ে পড়ার আগে সত্যককে ফোন করে রুবেন। আস্তে আস্তে বলে, "স্যর, কালকে সকালে যদি তাড়াতাড়ি না উঠতে পারি, যদি দেরি হয় ... আগে থেকে মাফ চেয়ে রাখছি৷ আসলে এরকম যেদিন হয়, তার পরদিন খুব ক্লান্তি লাগে, মাথায় ব্যথা ... আমি তবু যাবো, কিন্তু যদি ঠিক সময়ে না পারি ... " রুবেনের গলা কাঁপছিলো৷
"ওহ্ হো, তখন মনের ভুলে বলে ফেলেছি কালকে কাজ৷ না না রুবেন, আস...
সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের লেখা নিয়ে নির্মোহ মন্তব্য প্রকাশে বরাবরই আমি ব্যর্থ। এর মূল কারণ – শুরুতেই এমন একটি ধারণা নিয়ে পড়া শুরু করি, মনে হয় – পাঠক হিসেবে আমার প্রত্যাশার সবটুকুই পূর্ণ হবে। এ তীব্র পক্ষপাতের ঘোরতর সমস্যাটি হলো, একবার হতাশ হলে আরেকবার মুগ্ধ হওয়ার সম্ভবনা বিলীন হয়ে যায়। পাঠক হিসেবে আমার এমন অভিজ্ঞতা হয়েছে একজন জনপ্রিয় এবং আরেকজন সম্ভবনাময় তরুণ লেখকের গদ্য পাঠে।
...
===========================
আপেল-ঘ্রাণে ম্রিয়মান হয়ে গেছে বাকি সব হেমন্ত
হেমন্ত স্মৃতিতে ঘুমঘুম
পানের বরজে রাতের ছায়া লুকোচুরি খেলে অক্লান্ত
ক্লান্ত ঘর আছে নিঝুম
আপেলে অটুট থাকে স্পর্শের লিপি, নরম অক্ষর
এক কালি ও পাঁচ কলমে আঁকি আপন স্বাক্ষর
হাতে যদি তোলা একটি সিঁড়ির অবয়ব
অবয়ব আমার জানে মালতীর গন্ধ সব
আপেল গঠনে মেঘ আছে থোকা থোকা
চাঁদের ভস্ম কার কাড়ে নজর
মৌনতার ঘরে দু'জন রই চুপচাপ
পানের বরজ...
০
ঘুম নিয়ন্ত্রণক যন্ত্রটার কাঁটা প্রায় শূন্য ছুঁইছুঁই করছে। আর পাঁচ সেকেন্ড বাকি।
মহাজাগতিক তরঙ্গ, বর্হি-আক্রমণ ইত্যাদি নিরোধক দশ ইঞ্চি কাঁচের শামিয়ানার ওপারে বিচ্ছুরিত আলোর অরণ্য। একটা উল্কা ঈগল হয়ে ঠোঁকরে যেতে চায় নিরাপত্তা-কাঁচ; নিজে পুড়ে খাক হয়ে যায় নিমেষেই।
১
ধীরে ধীরে চোখ মেলে সে।
ঘুম নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রটা অনেক কাজের- বিশেষ করে অর্ণবের মতো নিদ্রাহীনতায় ভোগা মানবদের জ...
১. লোকটি মাওলানা মতি। মুখে ছোট ছোট কাঁচা পাকা দাড়ি, মাথায় জিন্নাহ টুপি। সন্ধ্যা হলেই সফেদ পাঞ্জাবীর উপর জিন্নাহ কোট চাপিয়ে, হারকিউলিক্স ব্রান্ডের নতুন সাইকেলখানা চালিয়ে অক্লান্ত ছুটে চলেন এক পাকি ক্যাম্প থেকে আর এক ক্যাম্পে। পেল্লাই পেল্লাই গোঁফওয়ালা খানসাহেবদের সাথে কী সব সলাপরামর্শ করেন। মাঝে মাঝে হো হো শয়তানী হাসিতে কেঁপে উঠে টেবিলখানা। চক চক করে উঠে মাওলানা মতির দুই চোখ...
========================================
০
প্রথমে ভেবেছিলাম অ-আ-ক-খ ইত্যাদি অনুচ্ছেদে লিখব। কয়দিন পর অক্ষর ফুরিয়ে যাবে। সে বিবেচনায় সঙখ্যাবাচক অনুচ্ছেদ। ০। শূন্য থেকে এসে শূন্যে মিলাবে একটি নদী।
আমি এসব লিখতে চাই নি। আমাকে বাধ্য করা হয়েছে, আমাকে বাধ্য করেছেন। নিজের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য।
১
শব্দ রসায়নে নিষ্ক্রিয়। পদার্থে ক্ষয়িঞ্চু, ব্যবহারে বিবর্তিত। মানুষ শব্দের ঈশ্বর। ঈশ্বর ও তার সৃষ্টি পরষ্পরক...