অনেককাল আগের কথা। আমি তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। ক্লাসে মোট ছাত্র–ছাত্রী ৩৬ জন। ক্রিস্টালোগ্রাফি কোর্সের ল্যাব ক্লাসে আমাদের মাইক্রোস্কোপ নিয়ে কাজ করতে হয়। সুবিশাল ক্লাসরুমের চারপাশের দেয়াল ঘেঁষে টেবিল পাতা আছে। আমরা হাজিরা খাতায় নাম সই করে মাইক্রোস্কোপ তুলে নিয়ে দৌড়ে গিয়ে জানালার সামনে রাখা টেবিল দখল করি। জানালার সামনে বসার দুটো সুবিধা। এক – রাস্তা দ...
খুব বৃষ্টিতে ভিজতে ইচ্ছে করছে। নাহ গুড়ি গুড়ি বৃষ্টিনা, একেবারে ঝুম ঝুম বৃষ্টি।বৃষ্টির শব্দে কেমন যেন একটা মাদকতা আছে, আচ্ছন্ন করে রাখে মন। বৃষ্টির কথা মনে হলেই আমার দেশের কথা মনে পড়ে। ইচ্ছে করে বাসায় বসে কাথা মুড়ি দিয়ে আদা চা আর চানাচুর মুড়ি খাই, সেই সাথে জম্পেশ আড্ডা।সবথেকে ভাল হয় আষাঢ়ে গল্প। গল্প করতে করতে একসময় দুপূর হবে, মা হয়ত ডেকে বলবে, ‘এই খেতে আয়’, গিয়ে দেখব ভূনা খিচুড়ী আর ...
এবার ঢাকা এয়ারপোর্টে নেমেই টের পেলাম, পত্রিকায় লেখা 'গরমে জনজীবন বিপর্যস্ত' শিরোনামটি মিথ্যে নয়। এ সময় এমন গরম পড়বে সেটা আগেই জানতাম। বাসায়ও বিদ্যুৎ নেই, ঘামে জবজব হয়ে বসে থাকি প্রথম দিন...
তবুও আমার প্রিয় শহর ঢাকা, কী এসে যায় গরমে?
জেট ল্যাগের জটিলতা কাটাতে না কাটাতে কাক্কুর ফোন।
'ভাতিজা, এইবারও দেখা না করে যাবা?'
আমি জবাবে বলি, ‘এই তো কাক্কু- কালকেই মধ্যেই আসবো, আপনি কি এখনো নয়া পল্...
চাঁদের সাথে হেঁটে বেড়ানোর সেই রাত্রে বাবা শহর হতে ফিরলেন । ইলিশ মাছের পেটের মতো ঐদিন সারা গ্রাম চকচক করছিলো জোছনায়। বাড়ির পেছনের হাওড় জুড়ে থৈ-থৈ করছিল পানি। ঢেউগুলো বার-বার এসে আছড়ে পড়ছিলো রান্নাঘরের পেছনের নারিকেল গাছগুলোর গোড়ায় ।
রান্নাঘরে খেতে বসে বাবা বললেন দু-একদিনের মধ্যে আমাদের সবাইকে নিয়ে শহরে চলে যাবেন। পরদিন থেকেই টের পেলাম আসলেই আমরা গ্রাম ছেড়ে চলে যাচ্ছি।
বাই...
একদম পোলাপান বেলায় বাসায় নিয়মিত কোন দৈনিক পত্রিকা রাখা হতো না। বাবা যেদিন যা খুশী কিনতেন, কোনদিন কিনতেনও না। খবরাখবরের জন্য রেডিও ছিল সবচেয়ে জনপ্রিয়। সকালে একবার রাতে দুবার বিবিসি আর ভয়েস অব আমেরিকার খবর শোনা হতো। আজকে অবাক লাগলেও সত্তর দশকে দল বেঁধে, আয়োজন করে মানুষ রেডিও শুনতো। কাছাকাছি মানুষদের মধ্যে একমাত্র বড় মামা আর মেজ চাচার বাসায় দৈনিক পত্রিকা নিয়মিত ছিল। বড়মামা সরকা...
তরল কথা ১
........................
লিপনের ভাইয়ের বিয়া। ঢাকার বাইরে। তো সাথে গেছে পরিতোষ, শম্ভু, দীপক আরো কয়জন। একদিকে বিয়া হইতাছে আর তারা সব নদীর পাড়ে গিয়া তরলায়িত হইতাছে। কিসের বিয়া, কার কি! এইভাবে তরলায়িত হইয়া সবাই আবার হাঁটা ধরছে, সবাই দুলতাছে। হাঁটতে হাঁটতে তাদের কারো আর কিছু মনে নাই। পরের ঘটনা সুমনই ভাল বলে,
- দোস্ত সকাল হইলে দেখি আমরা একটা ঘরে, কেমনে আইলাম মনে পড়ল না, দেখি সাইডে পরিতোষ উপতা ...
জীবন থেকে নেয়া
আমার যতো দোষ
আমাদের ছোটবেলায় ঢাকা শহরে মধ্যবিত্ত পরিবারে ভি।সি।আর এর বেশ একটা প্রচলন ছিল। যার প্রভাবে আজকের আমাদের শহুরে জীবনযাত্রা অনেকটাই বিদেশ ঘেষা। আমরাও এর প্রভাব মুক্ত ছিলাম না। আমাদের যৌথ পরিবার ছিল বিধায় তিনরকমের শো চলত। বড় ভাই, যুবক চাচাদের ইংরেজী ফ্লিমের শো, অবশ্যই যখন আব্বু এবং অন্য মুরুব্বী চাচারা বাসায় থাকতেন না তখন। আব্বু - চাচাদে...
আমাকে মাঝে মাঝে ভূত-এ পায়, আমার পাশের মানুষটি এই ভূত-এ পাওয়া আমিকে খুব ভয় পান, আমি নিজেও বুঝি যে, তিনি খুব অসহায় হয়ে পড়েন এই সময়গুলিতে। এ যেনো চাঁদগ্রস্ততা এক, হাঁটছি ফিরছি সংসার করছি জীবনের ঘানিতে তেল দেয়ার প্রয়োজনেও নিত্য জীবনক্ষয়কারী চাকরিটিও ঠিকই করে যাচ্ছি, কিন্তু আমি নেই, এই জীবনে কোথাও নেই। তাহলে কোথায় আমি? প্রশ্নটা করি, উত্তর নেই। এ এক অসম্ভব হেঁয়ালিময়তা, নিজেরই সাথে নিজের।...
অফিসের গেট থেকে সিকিউরিটি ফোন করে জানালো জামান নামের একজন আমার সাথে দেখা করতে চায়।
জামান। আমি দুই সেকেন্ড চুপ থাকলাম নামটা শুনে। বিরক্ত হবো কিনা ভাবছি। দুই সেকেন্ডে আমার মস্তিস্কের কোষগুলো যেন কয়েকশতবার স্মৃতিভ্রমন করে এলো। ওকে অফিসে আসতে দেয়া ঠিক হবে কিনা বুঝতে পারছিলাম না। বললাম- আমি আসছি।
জামান একটা জীবন্ত উপন্যাসের ট্র্যাজিক হিরো কিংবা ভিলেনের নাম। ঔপন্যাসিকের চোখে ...
(এই লেখাটি অন্য নামে আরেকটি ব্লগসাইটে প্রকাশিত হয়েছিল প্রায় একবছর আগে। জানিনা এই লেখাটি সচলায়তনের নীতিমালাকে লংঘন করলো কিনা।
লেখাটি একটু বড় বলে প্রথমে অর্ধেকটা দিয়েছিলাম। এখন শেষের অংশটুকুও একসাথে জুড়ে দিলাম। সবার ধৈর্য্যের পরীক্ষা হবে তাতে।)
আমাদের শৈশব বা কৈশোরের সময়টি ছিল বড় অদ্ভুত। আজকের সময়ের সাথে তুলনা করলে মনে হয় কত কিছু জিনিস ছিলনা তখন। এখন যেমন একটি স্কুল বা কলেজ ...