আমাদের মুক্তিযুদ্ধ সময়কার কাহিনী আব্বু আম্মুর কাছে অনেক শুনেছি। শুনেছি পরিচিত অনেক আন্কেল আন্টিদের কাছে। কত রকমের কাহিনী শুনেছি কিন্তু যুদ্ধের সময় দেশের সাধারন মানুষ যে কত কষ্ট করেছে তা এমন স্মৃতিচারণ, নাটক, সিনেমা আর বই পড়ে শুধুমাত্র আন্দাজ করতে পারি, কল্পনা করতে পারি, যদিও পাকিস্তানি আর্মির নির্মম অত্যাচার আমার কল্পনারও বাইরে। এসব কাহিনী শুনে কিছু কিছু মানুষের ওপর প্রচন্...
৮. রক ইউ লাইক আ হারিকেন
পরীক্ষিত ও প্রমাণিত কিছু মেয়েলিপনা আছে আমার। মুরুব্বিদের দেখে জেনেছি, নারীমন ভাল করে দেওয়ার অব্যর্থ উপায় হল বাজার করা। এই রোগ আমারও আছে। এমনিতে প্রতিটা পয়সার হিসেব টুকে রাখলেও মন খারাপ হলে কেমন যেন হয়ে যায় সব। যেই আমি কেউ কিছু চাইলে খুঁটিনাটি জিজ্ঞেস করে জেনে নেই, কিছু কিনবার আগে তার যাবতীয় তত্ত্ব-তালাশ করি, সেই আমিই দুই হাতে খরচ করি, সবার ইচ্ছাপূরণ করে দে...
'জল দেখিলে প্রবাসে দেশের কথা মনে পড়ে'।
কথা খানি কার? সেই শয়তান বুড়ো নীরদ সি চৌধুরীর। আমার প্রবাস নাই। আমি দেশেই থাকি। পিঁপড়ে যেমন মাটি-গাছ-গা বেয়ে অবলীলায় বিচরণ করে, তেমন করে দেশের বুকে হাঁটি। আমার প্রবাস বেদনা নাই, তবু কেন জানি আমারো জল দেখলে দেশের কথা মনে পড়ে। দেশকে চিত্রে ভাবতে গেলে জলময় অববাহিকার কথা মনে পড়ে। মনে হয় সে যেন অনেক দূরের কোনো দেশ। তাহলে কি আমি আমার ভেতরেই প্রবাসী? আ...
১. গ্রামে
খুব ছেলেবেলা- আট কি নয় বছর বয়স। নানাবাড়ীতে গিয়েছি শীতের ছুটিতে। নানাবাড়ীর টয়লেটটা ছিল বাড়ী থেকে একটু দুরে জংলামতো নির্জন জায়গায়। তখন নানাবাড়ীর টয়লেট ছিল কাঁচা। বাঁশের বেড়ায় ঘেরা, আকাশ দেখা যেতো। নীচে বিশালাকার গর্তের ভেতর জমা হতো মানববর্জ্য। মঞ্চের মতো উঁচু জায়গায় দুটো তক্তার উপর দুই পা দিয়ে বসতে হতো। দুই তক্তার মাঝখানে ফুটো, সেটা দিয়ে নিক্ষেপিত হতো মানববর্জ্য। সে...
আফগানিস্থান আর ইরানের নো’ম্যনস ল্যান্ড পেরিয়ে মেশাদে পৌঁছলাম চারজন। তেহরানের দিকে রওয়ানা হতে হবে যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব। এখানে বসে থেকে পয়সা খরচ করার ক্ষমতা আমাদের নেই। সকাল এগারোটা বাজে প্রায়। ক্ষিদেও বেশ তীব্রভাবেই জানান দিচ্ছে পেটের ভেতরে, কাবুল থেকে মেশাদ অবধি এই তিনদিনের ভ্রমনে খাবার পেটে পড়েনি বললেই চলে। আর এই লক্কর ঝক্কর বাসের ভ্রমণে ঘুমের কথা না তোলাই ভালো। তবে বিশ্বজ...
আমি ইংরেজি আর হিন্দি ভাষা শিখেছি টিভির কাছে। বলা যেতে পারে, ভাষা দুটোর প্রাণবন্ত অংশ শেখা হয়েছে ওভাবে। অনেক কিছু না বোঝার পর্যায় থেকে আস্তে আস্তে প্রায় সবটুকু রসাস্বাদনের সক্ষমতা পাওয়া যেতে পারে টিভি থেকে, এ কথা আমি নিজের উদাহরণ থেকে বিশ্বাস করি। ট্র্যান্সলেশন, কুৎসিত গ্রামার বই ইত্যাদি হাবিজাবি আমাকে ইংরেজির কিছুই শেখাতে পারেনি, যতটা শেখাতে পেরেছে আমার শৈশব আর কৈশোরের বিটি...
সম্ভবত ২০০১ সালের দিকের কথা। মিরপুবে আপার বাসা থেকে বের হয়ে সন্ধ্যাবেলা আমি , জাকির ( জাকির হোসেইন, এখন সহকারী কমিশনার) আর এহসান ( এহসানুল হক, এখন এলজ়িইডি তে কর্মরত) কিছুক্ষন আড্ডা দিলাম ১০ নাম্বার গোল চক্করে কোন এক চায়ের দোকানে।তখন শুক্র শনিবারে বুয়েট বন্ধ থাকায় প্রায়ই আমি সপ্তাহান্তে মিরপুরে চলে আসতাম কিছুটা পারিবারিক ছোয়া পাবার আশায়। এহসানের চাচার বাসা আর জাকিরের বাসাও একি ...
'ওরে! সে তো অতি পুরাতন কথা!' কিচিমিচি করিয়া দাদু যখন তাহার বগল চুলকাইয়া আগাইয়া আসিলো, ভাবিলাম, 'হইল!
এই বুড়োকে কিছু প্রশ্ন করাই ঝামেলার ব্যাপার। কিছু হইলেই একদম কিষ্কিন্ধ্যা হইতে শুরু করিবে! যেন হনুমান সুগ্রীব কথা না বলিলেই নয়! তবে বুড়ো জানে অনেক, তা না হইলে এইরূপে গুল মারাও বোধ করি সম্ভব হয় না!
আমি শুধু জিজ্ঞাসা করিয়াছিলাম, 'দাদু মিসিং লিঙ্ক কি?' দাদু যেইভাবে 'ওরে!' করিয়া উঠিল, বুঝিলাম...
নীড় সন্ধানী’র ‘জানিদুস্ত’ শিরোনামের লেখাটি পড়ছিলাম। কাকতলীয় ভাবে আমার জীবনেও এরকম একটি ঘটনা ঘটেছিল যা হঠাৎ করেই মনে পড়ে গেল আর লিখে ফেললাম সচলায়তনের জন্য।
সময়টা বোধকরি ১৯৯১, আমি তখন টাঙ্গাইলের বিন্দুবাসিনী বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেনীর ছাত্র। আমাদের শ্রেনীশিক্ষীকা এবং বাংলার শিক্ষীকা ছিলেন ‘ক’ ম্যাডাম (আমি আসল নামটা ব্যাবহার করতে চাচ্ছিনা)। ম...
পুটুল বা পুটলা আমার বাল্যকালের জানিদুস্ত। ক্লাস থ্রী থেকে শুরু । প্রথমে সাধারন ক্লাসমেট, তারপর জানিদুস্ত। দোস্তামি গাঢ় হবার একটা ঘটনা আছে।
একদিন বাংলা ও অংক ক্লাসের বিরতিতে ছেলেমেয়েরা ক্লাসে বাঁদরামির রিহার্সাল দিচ্ছিল। পুটুল হঠাৎ একটা চিরকুটে কি জানি লিখে আমার সামনে দিল। খুলে দেখি লেখা আছে 'হাসান+শামী'। শামী আমাদের ক্লাসের সবচেয়ে শান্ত ভদ্র সুন্দর মেয়েটা। আমি তো চরম হাব...