ছেলেবেলায় আমি চুড়ান্ত রকমের হাবা ছিলাম। প্রথম স্কুল যাত্রার বয়সে আমার চেয়ে বেশী হাবা নাকি শহরে খুব বেশী ছিল না।
সময়কাল ১৯৭৪ সাল। শহরে নতুন এসে প্রাইমারী স্কুলে ভর্তি হয়েছি প্রথম শ্রেনীতে। স্কুলে ভর্তির আগে আমি ঘরে বসেই বাবা মার কাছে পাঠ নিয়ে ক্লাস ওয়ান, ক্লাস টু দুটোর বইই পড়ে শেষ করে ফেলেছিলাম। তাই কথা ছিল আমাকে সরাসরি ক্লাস টু-তে ভর্তি করিয়ে দেয়া হবে যাতে একই ক্লাসে পাঠরত মাম...
০১.
“হল” শব্দটা আমার কাছে বরাবরই মহান কিছু বলে মনে হত। ইমন ভাই যেদিন ভর্তি হবার পর জাবি’র হলে সাতদিন কাটিয়ে বাসায় এলেন সেদিন ফুপু “হল” কে হোস্টেল বলায় ভাইয়ার চোখেমুখে যে আহত ভঙ্গি দেখেছিলাম তার পর থেকে “হল” আমার কাছে স্বর্গরাজ্যের প্রতিশব্দ বলে মনে হত, যেখানে সারাদিন আড্ডা মারা যায়, যেকোন সময় খেলা যায়, ইচ্ছে হলে দিনরাত ঘুমানো যায়, ঘুমুতে ইচ্ছে না হলে সারারাত গান শোনা যায়। যেখানে ...
পড়ন্ত নভেম্বরের কোন এক শীতে ঘামি, মাইকের ঘোষনা মেশে অন্য মাইকে, চন্দননগর জুড়ে জগদ্ধাত্রী পুজো। কত লোক হারিয়ে যায়। বিশেষত ছোট ছোট বাচ্চারা। পুকুর পারে আলোর ভেল্কিতে সুকুমার রায় আর বেন লাদেন। আর কচি মুখগুলি থেকে উড়ে যাওয়া সিগারেটের ধোঁয়া তখনও শোনেনি মিশেল ফুকোর কথা। আর আমি কয়দিন ধরে ক্রমাগত ভাবছি আমার যে গল্পগুলো হারিয়ে গেল তাদের কথা। হালক...
আমরা সংস্কৃতির নানা রঙ উপভোগ করি এই বাংলাদেশে। কেউ কেউ পাশ কাটিয়ে যাই। কেউবা ব্যাক ডেটেড উচ্চারণ করি। তবে ধর্মীয় আর সামাজিক অনেক অনুষ্ঠানই আমাদের মননের প্রকাশমানতার জন্য।
গত রাত পার হয়েছে ১২ই রবিউল আউয়াল। আমার পৈত্রিক ভিটার চারিদিক থেকে কানে এসেছে মাইকের আওয়াজ। সেখানে হযরত মুহাম্মদ (সা:) স্মরণ করে ওয়াজ আর জিকির করা হয়েছে। রাত ভোর ঘুমে জাগরণে শুনতে শুনতে দিন শুরু করলাম।
আজ বা...
আমার এখনো স্পষ্ট মনেআছে সেই ছোট্টবেলা আমাদের শহরের বাজারে যমুনি নামে এক পাগলী ছিল। আমাদের বাসা বাজারের লাগোয়া ছিল বলেই বোধহয় এই পাগলীকে আমরা রোজ দেখতাম। পাগলীটি মাঝে মাঝেই খুব চেঁচাতো আর মাঝে মাঝেই কি সব উদ্ভট আওয়াজ করতো তা লিখে বোঝাতে পারবো না। ওহ্ বলতে ভুলে গেছি মহিলাটি সম্ভবতঃ বিহারী ছিল কারন রেগে গেলে সে হিন্দীতে গালিগালাজ করত আ...
আমার একমাত্র দিদির যখন বিয়ে হয়েছে সি সময় আমি ক্লাস ফাইভ এ পড়ি। আমি তখন পুঁচকে, বয়েস নয় কি দশ
দিদির বিয়ে হয়ে যাবার প্রায় পনেরো বছর অবদি আমাদের বাসায় মহিলা বলতে মা ছাড়া আর কেউ নেই। আজো মনে পড়ে ছোটবেলা মাকে অনেক সাধাসাধি করতাম একটা ছোট্ট বোন এনে দেবার জন্য। বলতে কোনো বাধা নেই বাড়ীতে অন্য কোন মহিলা না থাকায় সেই সময় কোনো রকম লাজ লজ্জা ছাড়াই নির্ভাবনায় আমরা আমাদের জামাকাপড় পাল্টাতাম
...
(জানিনা, এই লেখাটি এখন সচলায়তনে পোষ্ট করা ঠিক হচ্ছে কিনা – মাঝে মাঝে পুরনো লিখা খুঁজতে গিয়ে, এমন সব অসমাপ্ত/অপ্রকাশিত লেখা পেয়ে যাই, ক্ষণিকের জন্যে হলেও থমকে দাঁড়াই । এই লেখাটিও তেমনি, লিখেছিলাম, জুবায়ের সাহেব প্রথম যখন হসপিটেলে যান, তখন –যদিও আর পোষ্ট করা হয়নি । জুবায়ের সাহেব চলে গেছেন, দিন থেমে থাকেনি, কারো জন্যই থেমে থাকেনা - তাঁর ছেলেমেয়েদের দিনও, যেকরেই হোক, চলে তো যাচ্ছেই ! আমার ...
৬. নানা রঙের মানুষগুলি - ২
আমার সেই সময়ের আরেক হিরো পাড়ার খোকা ভাই, পোশাকী নাম আবদুর রহমান। তাঁর কনিষ্ঠ সহোদর ফটু এবং মামাতো বা ফুপাতো ভাই মটু আমার সমবয়সী, সে বাড়িতে আমার যাতায়াত অবাধ। খোকা ভাই থাকতেন বাড়ির বাইরের দিকের একটি ঘরে। ফোর এইচ ক্লাবের ফুটবল ছাড়া আর সবকিছুতে প্রধান সংগঠক খোকা ভাই। ক্যারমে তিনি বগুড়া শহরের রানার আপ, চ্যাম্পিয়ন বাদুড়তলার মিন্টু। খোকা ভাই ব্যাডমিন...
স্কুলে থাকতে একুশে ফেব্র“যারির প্রভাত ফেরি যোগ দিতাম বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট এর হয়ে। একটা নীল রং এর ট্রাক আসত আমাদের নিতে । আমরা সেই ট্রাকে উঠতাম। সেদিনের জন্য আমরা হতাম রেড ক্রিসেন্টের সদস্য । সারা বছর এর কি কার্যক্রম হত আমাদের স্কুলে তার মাথা মুন্ডু কিছুই জানতাম না। আমাদের শ্রেনীর এক বন্ধুর ভাই এই সংগঠনটির সাথে যুক্ত দেখে প্রতি বছর আমাদের স্কুল থেকে প্রভাত ফেরি জন্য লোক তার...
“এখানে যারা প্রান দিয়েছে রমনার উর্দ্ধমুখী কৃষ্ণচূডার তলে
যেখানে আগুনের ফুলকীর মত এখানে ওখানে জ্বলছে অসংখ্য রক্তের ছাপ
সেখানে আমি কাঁদতে আসিনি”
ইউটিউবে মাহবুব উল আলম চৌধুরীর লেখা আর কাজী আরিফ এর কন্ঠে ‘একুশের প্রথম কবিতা’ শুনছিলাম। কেন জানি কোনভাবেই কাজে মন বসাতে পারছিলামনা। আজ কানাডাতে ১৯ শে ফেব্রুয়ারী বিকেল ৫ টা, বাংলাদেশে ২০ ফেব্রুয়ারী সকাল ৬ টা।২০ শে ফেব্রুয়ারী যার স...