[justify]
একদিন হঠাৎ স্কুল ছুটি হয়ে গেল আগ ভাগে ।
স্কুল কম্পাউন্ডের বাইরে এসে দেখি সব শূন্য, কেমন ফাঁকাফাঁকা চারদিক ! আমি ভ্যাবলার মত কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকি । প্রচণ্ড গরমে ঘামে চুপচুপে হয়ে গেছে আমার স্কুল ড্রেস । কিছুদূর হেঁটে বাস স্টপেজে এসে দাঁড়াই ।
বাড়ি যাব !
একটার পর একটা বাস এসে থামে । আমি একটাতেও উঠি না । ভ্যাবলার মত দাঁড়িয়ে থাকি !
সবুজ রঙের একটা বাস এসে থামে । খালি বাস।
একেকটা দিন চলে যায় আর তার সাথে চলে যায় কিছু আলো, কিছু রঙ, কতগুলো চেনা-অচেনা অবয়ব। আমরা কখনও যেতে দেই, মনমরা হয়ে ভাবি – ধরে কি রাখতে পারতাম না একটু! আবার কখনও ধরেই রাখি, বেঁধে রাখি স্মৃতীতে! ঝাপসা হয়ে যাবার পরও তো তাই আমরা খুঁজে বেড়াই বার বার! এরকম হাজারো আলো আঁধারিতে মিশে যেতে থাকি, মিশিয়ে নিতে শিখে যাই নিজের স্বত্তাকে সময়ের সাথে সাথে।
দশ বছর আগের কথা।
সেদিন বাসায় তাড়াতাড়ি ফিরতে চেয়েছিলাম ইউনিভার্সিটি থেকে... দ্রুত কাজ গুছাচ্ছিলাম তাই। অন্যান্যদিন এক্সপেরিমেন্ট চালাই রাত আট টা দশটা পর্যন্ত কিন্তু সেদিন এক্সপেরিমেন্টের পাম্প বন্ধ করে দিলাম সন্ধ্যা ছয়টার মধ্যে। তাড়াতাড়ি করে লগবুকে সেইদিনকার উল্লেখযোগ্য খুঁটিনাটি তথ্যাদি টুকে রাখছি... উদ্দেশ্য রাত সাড়ে আটটার মধ্যে বাসায় ফেরা যেন কম্পিউটারের সামনে বসে হাই ভলিউমে সেইদিনের বিবিসি বাংলার অনুষ্ঠান "প্রভাতী" টা শুনতে পারি। তারিখ টা ছিল ইউএসএ তে ১৩ এপ্রিল আর বাংলাদেশে ১৪ এপ্রিল ২০০৪ অর্থাৎ ১৪১১ বাংলা সালের শুরুর দিন পহেলা বৈশাখ। না। বাংলাদেশের বিবিসি বাংলার নববর্ষের কোন অনুষ্ঠান শুনব বলে এত তড়িঘড়ি করছিলাম না সেদিন। তড়িঘড়ি করছিলাম কারণ সেদিন ছিল বিবিসি বাংলার চালানো "হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালী" জরিপের সব চাইতে বেশী নাম আসা বাঙালীর নাম ঘোষণার দিন। ২৬ মার্চ ২০০৪ থেকে বিবিসি বাংলা প্রতিদিন যে একজন করে বাঙালী ব্যক্তিত্বের নাম ঘোষণা করে আসছে, আজ তার বিশতম এবং শেষ দিন। এরই মধ্যে উনিশ জনের নাম জেনে গেছি।
খেলনাটা নিয়ে খেলবার সময়, মনে আছে, ঘোরাতাম একটু একটু করে। এক সময় ফিরে যেতাম আগের অবস্থানে। কিন্তু পুরানো ছবি আর ফিরত না। জীবনের ক্যালিডোস্কোপেও ফেরে না। আমার সে উত্তরবঙ্গের দিনগুলোও ফিরবে না আর। স্মৃতির সরণীতে শুধু মাঝে মাঝে দেখতে পেয়ে যাই তাদের, আচমকাই, কখনো ঝাপসা, কখনো উজ্বল - যেন কাল-ই ঘটেছিল তারা।
আমি আর অন্বেষা জাঁকিয়ে বসি আড্ডা দিতে। পরদিন আর তারপরদিনও ছুটি, আজ অনেক রাত অবধি আড্ডা দিলেও ক্ষতি নেই। সেই কলেজের দিনগুলোর আড্ডাস্মৃতি মনে পড়ে, অবশ্য তখন অন্বেষাকে পাই নি।
১। যারা বইমেলায় আসতে পারেননি তাদের এই পোস্ট পড়া নিষেধ। কারো বইমেলানুভূতিতে আঘাত লাগলে লেখক দায়ী নহে।
২। “বই” ব্যাতীত উল্লিখিত সকল চরিত্র কাল্পনিক।
৩। বই হিংসুকদের জন্য অবশ্যপাঠ্য।
সাপলুডু খেলায় একটা মইয়ের অপশন আছে। গুটি সেখানে পড়ামাত্র ধাঁ ধাঁ করে ওপরে উঠে যায়। আমার বয়স যখন আঠারো, তখন আমার জীবনের গুটি সেরকম একটা মইয়ের ঘরে গিয়ে পড়ল। আমার বয়স ধাঁ ধাঁ করে আঠারো থেকে আটত্রিশ হয়ে গেল!
চার ভাইবোনের মধ্যে আমি ছিলাম সবচে ছোট, হয়ে গেলাম সবার চেয়ে বড়!