জয়-যুক্ত না হইয়া খন্দকার রাশিদ সাহেবের স্বপ্ন দুষ-যুক্ত হইলো: স্বপ্ন’র আগে এবং পরে।
কিন্তু এই স্বপ্ন তো শুধু খন্দকার রাশিদ (কেআর) সাহেবের একার হয়ে থাকে নাই। ‘স্বপ্ন’ নামক সংস্থাটি ব্যাক্তির সীমাবদ্ধতা ছাড়িয়ে কখন যে সমাজ, এমনকি রাষ্ট্রের সমকক্ষ হইয়া উঠলো; তা কেআর সাহেব নিজেও টের পাননি। কিন্তু কীরূপে? তাহা জানিতে হইলে আমাদিগকে পিছনে যাইতে হইবে।
প্রথমেই একটা ঘোষণা দিয়ে রাখি। আমি বিদেশি নই, ১০০% খাঁটি বাংলাদেশি। বছর তিনেক দেশ থেকে দূরে থাকার পর আবার এসেছি দেশে। দেশে আসার পর অনেক কিছু পরিবর্তন চোখে পড়েছে, সেটাকেই ৯৫% অভ্যস্ত, ৫% অনভ্যস্ত চোখে ধরার চেষ্টা করেছি। আজকে মূলত: ঢাকার সীমার মধ্যেই থাকব।এটা ব্লগর ব্লগর আর দিনপঞ্জি ক্যাটেগরির লেখা, সেভাবেই এটা ট্যাগান্বিত। সিরিয়াস বা গঠনমূলক কিছু এখানে পাবেন না।
আর, এখানে যে চিত্র তুলে ধরা হয়েছে সেটা আজকের ঢাকার সাথে নাও মিলতে পারে, এটা কয়েকদিনের অভিজ্ঞতার সারাংশ।
১। দেশের বাইরে কতদিন ছিলাম, অনুভূতির ওপর যে সেটার একটা প্রভাব আছে, তা এবারই প্রথম টের পেলাম। দেশ থেকে দূরে ছিলাম প্রায় সাড়ে তিন বছর। এর আগে অবশ্য বার কয়েক বিদেশ গিয়েছিলাম কয়েক দিনের জন্য। সেসব স্বল্প সময়ের বিচ্ছেদ আর ৩ বছরের বিচ্ছেদের পর ফিরে আসার মাঝে কতটা পার্থক্য সেটা প্লেন ঢাকার মাটি স্পর্শ করা মাত্রই স্পষ্ট ভাবে ধরা পড়ল, আগেরবার ফিরে এসে খুশি লাগছিল যে- যাক পরিচিত পরিবেশে ফিরে এলাম।। এবার ল্যান্ড করার পর প্রথমেই মনে হল জানালা দিয়ে আমি একটু মাটি দেখব, আমার বাংলাদেশের মাটি!
সুশীলের ত্যানাসমগ্র
আনু-আল হক
------------
১. “যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চাই” বললেই বিষয়টা ‘রাজনৈতিক’, আর থামায়া দেয়াটা খুব অ-রাজনৈতিক!
ওস্তাদজী-কে চা দেয়া হয়েছে। সাথে কয়েকটা বিস্কিট। তিনি শিক্ষার্থীর সুর সাধনা শোনার ফাঁকে ফাঁকে চায়ে চুমুক দিলেন বটে, কিন্তু বিস্কিট গুলো ছুঁয়েও দেখলেন না। যাবার সময় ছাত্রীকে বললেন; শুভ একটা কাগজ দাও। ওস্তাদজী কাগজ হাতে পেয়ে তার ভেতর বিস্কিট গুলো মুড়িয়ে নিলেন, রুমালে পয়সা বাঁধার মতো খুব যত্নে। মুখে একটা সহজ ভাব এনে বললেন; আমার মেয়েটার জন্য নিয়ে যাই, ও খুব খুশী হবে।
বঙ্গবন্ধুর একত্তরের ৭ মার্চের সেই ঐতিহাসিক ভাষণের পর থেকেই পূর্ব বাংলার মানুষ মনে মনে প্রস্তুতি নিচ্ছিল কোন একটি যুদ্ধের। যদিও তার প্রকৃতি ও প্রাবল্য সম্পর্কে সাধারন মানুষের কোন প্রকার ধারনা ছিলোনা। তবে তাদের মধ্যে মুক্তির আকাঙ্খা জাগ্রত হয়েছে প্রবলভাবে। ছাত্রনেতাদের এবং বঙ্গবন্ধুর বিভিন্ন বক্তৃতা থেকে বাংলার মানুষ 'মুক্তিযুদ্ধের চেতনা' হৃদয়ে ধারণ করেছে। এর রূপ সম্পর্কেও জেনেছে।
আমার বিশ্বাস প্রতিটি মানুষের ছোট বেলাতেই কেউ না কেউ থাকে যে তার মনোজগতে প্রচণ্ড ভাবে প্রভাব ফেলে। কেউ না কেউ তার রুচির ধরনটা গড়ে দিতে থাকে— তার প্রাত্যহিক যাপিত জীবনের ভেতর থেকেই। যেমন আমার বেলায় ছিলো আমার ছোট মামা।
ছোট মামার যে কোন কাজে এসিস্ট্যান্ট হতে পারাটা ছিলো সে সময় আমার সব চেয়ে কাঙ্ক্ষিত কাজ। মামার এসিস্ট্যান্ট হয়েই বিজয় দিবসে নানুদের বাসার উঠান পুরোটা পতাকা দিয়ে সাজিয়েছি।
সময়টা কি ১৯৮৮ নাকি ৮৯? ঠিক মনে আসছে না। তবে এই দুটো বছরের যে কোন একটা বছরে চট্টগ্রামে 'বিজয় মেলা' নামক একটা ব্যাপার চালু হয় সার্কিট হাউসের সামনের খোলা মাঠে। ওই মাঠটি তখন শিশুপার্ক হয়নি। সার্কিট হাউস তখনো জিয়া স্মৃতি যাদুঘর হয়নি। খোলা ময়দানটিতে আমার কোন কোন বিকেলে আড্ডা দিতাম। স্টেডিয়ামের উল্টোদিকের এই মাঠে কিছু কাঠের চেয়ার টেবিল বসানো থাকতো দারুল কাবাবের পক্ষ থেকে। স্টেডিয়াম মার্কেটে চট্টগ্রামের একমাত্র কাবাবের দোকান। সেখান থেকে ট্রেতে করে ধোঁয়া ওঠা কাবাব পরোটা নিয়ে আসা হতো সার্কিট হাউসের সামনের ঢালু ময়দানে। আমাদের পকেটে সেই সময়ে কাবাব খাওয়ার পয়সা হয়নি। তাই আড্ডা দিতে দিতে কেবল গন্ধ শুঁকেই অর্ধভোজন সেরে মনে মনে বলতাম, দেখিস একদিন আমরাও।
এই গল্প মুক্তিযুদ্ধের সময়কার গল্প নিয়ে লিখা না; এটা ২ জন মুক্তিযোদ্ধার ব্যক্তিজীবন নিয়ে লিখা, যার একজন আমার বাবা, আরেকজন আমার মামা। আমি সবসময় নিজেকে খুব ভাগ্যবান মনে করি; জন্মের পরপরই যে ২ জন মানুষ সবার প্রথম রোল মডেল হিসাবে সামনে এসেছেন, তাদের ২ জনই মুক্তিযোদ্ধা। মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়ে উনারা দেশের জন্যে কতো বড় সাফল্য বয়ে এনেছেন, সেটা নিয়েতো আর আলাদা করে বলার কিছু নাই। আমি বরং বলতে চাই উনারা ব্যক্ত
কবে থেকে ওরা আমার পিছনে পড়ে আছে? পাঁচ-দশ-পনের, নাকি আরো বেশি সময়?