২০০১ এর জুন থেকে আমি দেশান্তরী। ২০০৭ এর নভেম্বর পর্যন্ত দেশে ফিরতে পারিনি। প্রথমে বাংলাদেশ থেকে জাপান। জাপান থেকে আমেরিকা। আমেরিকা থেকে কানাডা। এক দেশ থেকে আরেক দেশ। লম্বা জার্নি। জীবনটা কাটছিলো মোটামুটি দৌঁড়ের ওপর। কতো কতো প্রিয় জিনিস যে ফেলতে ফেলতে গেলাম! কতোজন যে আমার হাতছাড়া হয়ে গেলো! কতোজন যে আমার হাতটি ছেড়ে দিলো! কিন্তু একজনের সঙ্গে সম্পর্কটা আমার ছিন্ন হলো না। তিনি হুমায়ূন আহমেদ।
[justify]ঊনি ছিলেন অথবা ছিলেন না। কোন এক শৈশবে অথবা নির্জন কৈশোরে হাহাকার বিষণ্ণ পথটায় উনার প্রহচ্ছন্ন ছায়া পড়েছিল, সেই থেকে উনাকে চিনি। এ চেনা দীর্ঘ, পর্যায়যুক্ত, শূন্যতা কখনো মুগ্ধতার। উনি হয়তো আমাকে গভীর জীবনবোধের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে ভিতর ভেঙে চুড়ে দেন নি মাহমুদুল হকের মতো, হয়তো দীর্ঘ অথচ দৃঢ় গাঁথুনির মায়াজালে আচ্ছন্ন করেন নি ইলিয়াসের মতো এমনকি হয়তো ভাষার কারুকার্যে মোহিত করেন নি শওকত ওসমানের ম
আমার বড়দের(!) বই পড়ার শুরুটা হুমায়ূন আহমেদকে দিয়েই।সেও অনেক ছোট্টবেলায়।খুব ছোটবেলার অনুভূতিগুলো সাধারণত খুব প্রকট হয়। আমার ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে।মনের একটা বিশাল অংশ জুড়ে দীর্ঘদিন হুমায়ূনপ্রভাব ছিল।এখনো কি নেই?তার ভালবাসার গল্পগুলো পড়ে ভালবাসার যে ধারণা হয়েছিল,আজো তা অটুট।তার নাটকগুলো থেকে শিখেছিলাম কিভাবে নির্লিপ্ত বাক্যের জোরালো প্রয়োগ ঘটানো যায়!
ঝাঁ ঝাঁ দুপুরে ভোকাট্টা ঘুড়ির পিছনে দৌড়াতে দৌড়াতে মাঠ ঘাট পেরিয়ে অজানা এলাকায় হাজির হওয়া বা একদল ছেলে মিলে সময় পেলেই পদ্মার বুকে ঝাঁপিয়ে পড়া বা উজানে যাওয়া বালিবাহী নৌকা ধরে কিছুদুর গিয়ে আবার স্রোতে গা ভাসিয়ে দিয়ে ফিরে আসা কিংবা শীতের সকালে গাছ থেকে সদ্য পাড়া খেজুরের রস খাওয়ার জন্য গ্লাস হাতে ভাইবোনদের সাথে লাইন দেয়া অথবা ঝড়ের মধ্যে মায়ের বারণ না শুনে আম কুড়োতে দৌড় - যাওয়া বা
কাজীদা, মানে আমাদের কাজী আনোয়ার হোসেন, সেবা প্রকাশনীর জন্মদাতা, কর্ণধার, কোটি কোটি বাঙ্গালীর আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্নের পৃষ্ঠপোষক, কুয়াশার লেখক, বাংলা ভাষার সর্বকালের শ্রেষ্ঠ অনুবাদকদের অন্যতম, এবং বাংলা বইয়ের জগতের জনপ্রিয়তম চরিত্র মাসুদ রানার জনক।
কোন ক্লাসে পড়েছিলাম এই কবিতা এখন তা আর মনে নেই। সিক্সে কি সেভেনে কি এইটে। তবে মনে আছে ইংরেজী বইটার পৃষ্ঠাগুলো হালকা লালরঙা ছিল। পাতাগুলো ওলটালেই নিউজপ্রিন্টের মিষ্টি গন্ধটা এসে নাকে টোকা দিত। মা খুব যত্ন করে সবগুলো বইয়ের মলাট করে দিত। তার উপর আমি সুন্দর করে লিখে রাখতাম বইটার নাম।
বাংলাদেশ ছেড়ে বাইরে থাকা যুগপৎ সুখের এবং বেদনার ব্যাপার। সুখ এইজন্য যে, আয় এবং ব্যয় সঙ্গতিপূর্ণ। সুখ এইজন্য, কারণ লোডশেডিং নেই। সুখ এইজন্য, সরকারী অফিসগুলো ঘুষ ছাড়াই কাজ করে দেয়। সুখ এইজন্য, কথায় কথায় স্থানীয় প্রভাবশালী মাস্তানেরা ধমক দিয়ে যায় না। এতসব সুখের ভীড় ছাপিয়ে কেবল দুঃখটাই প্রবল হয়ে ওঠে, নিঃসঙ্গতা। চেনা মানুষগুলো কেউই যে পাশে নেই!
যেসব গল্প কেউ জানে না-১
------------------------------------