নিস্কর্মা শেইদুল্লাকে মনে আছে তো? সেই যে কোন কিছু না করেই স্রেফ বসে বসে ধনী হয়ে যেতে চেয়েছিল, আর অবলীলায় হাতের কাছে আসা ধন-রত্ন পায়ে ঠেলে চলে যাচ্ছিল শুধু সামান্য পরিশ্রমের ভয়ে! শেইদুল্লাকে আইডল বানাতে চেয়েও কখনো পারিনি। আলদার কোশে আর শিগাই বাইয়ের গুনগুলি রপ্ত করতেই যেন ছুটে চলেছি দিন-রাত। বোকা ইভানের মত চুল্লির উপর বসে ব্যাঙের ছাতা খাওয়ার সাধ আমার বহুদিনের। আর সবাই যখন ঘুমিয়ে যাবে তখন তেপান্তরের মাঠে গিয়ে চিৎকার করে ডাকবো সিভকা-বুর্কাকে। তার এককান দিয়ে ঢুকতে না পারলেও ক্ষতি নেই বিশেষ। জাদুকরী ভাসিলিসাকে পাওয়ার লোভে ব্যাঙের ঠোঁটে চুমু খাইনি কোনদিন। কি জানি, স্বপ্ন ভঙ্গের ভয়েই হয়তো।
স্রষ্টা বড়ই নিষ্ঠুর, মনে মনে ভাবি আমি। নয়ত আমার গতকাল কেনা ছোট্ট লাল গাড়িটা, চাপ দিলেই যেটা দৌড় দেয়, ইদুরের চেয়েও জোরে দৌড়াতে পারে সেটা, এত তাড়াতাড়ি হারায় কিভাবে? আর গেল কোথায় ওটা? খাট, ড্রেসিং টেবিল, শো-কেস কোন কিছুর নিচেই তো খোজা বাদ দেই নি!স্রষ্টা নামক না দেখা অস্তিত্বের প্রতি প্রবল একটা অভিমান জমা হয় আমার।
বাংলাদেশে বাস ড্রাইভার (এবং ট্রাক ড্রাইভার) কে ডাকা হয় ওস্তাদ। ওস্তাদ অর্থাৎ দক্ষ, সুনিপুন, পটু। কোন একটি বিষয়ে অগাধ পান্ডিত্যের অধিকারী। চলাচলের প্রায় অনুপযুক্ত কিছু যানবাহন নিয়ে ঢাকাসহ সমগ্র বাংলাদেশ পাঁচ টনের রাস্তায় এরা যে ধুন্দুমার কান্ড লাগিয়ে দেয় এতে তাদের ওস্তাদ না ডেকে উপায় নেই।
আমি কখনও পাহাড় দেখিনি, ঝরণা দেখিনি। শিখিনি কুলকুল বয়ে যাওয়া নদীতে অবগাহন করতে। দেখিনি তালগাছে বাবুই পাখির বাসা।ইট কাঠ পাথরের এই যান্ত্রিকতায় মোড়া আমি।মাঝে মাঝে রাতের বেলা ঘুম ভেঙ্গে যায়। টেবিল ল্যাম্পটা জ্বালাই তখন। আমার টেবিল ল্যাম্পটা থেকে ঝি ঝি পোকার মত একটা শব্দ বের হয়।আর ফ্যানটা ঘুরতে থাকে। কটর কটর কটর ফ্যান ঘোরার শব্দ হয়।সিগারেটের সাদা ধোয়ার আড়ালে নিজেকে ঢাকার একটা ব্যর্থ চেষ্টা চালাই তখন। আ
আমাদের বাড়ীতে একটা রঙিন টিভি ছিল, সেটাতে শুধুমাত্র বিটিভি চলত। তখনো আমাদের মফস্বল শহরে ডিশ এন্টেনা আসেনি। আমাদের শহরে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে ডিশ আসে সম্ভবত ৯৪-৯৫ সালের দিকে। কিন্তু তার আগে অনেকের বাড়ির ছাদে এরিয়েল টিভি এন্টেনা দেখা যেতো। আমাদের ছাদেও একটা ছিল। মাসিক বিল দেওয়ার ঝামেলা না থাকাতে আমার বাবা মনে হয় এন্টেনা বসাতে কার্পণ্য করেননি। আমাদের ভাইবোনদের কোন দাবী ছিল না যে এন্টেনা বসাতে হবে। স
শুরুতেই বলি আমার কৌ্তুহল বা জানার ইচ্ছা কোনটাই জার্মান দুষ্টু ব্যাটা ফস্টাস এর মত না। যারা ফস্টাস এর নাম শোনেননি তাদের জন্য অল্প একটু বলি। এই ব্যাটা জ্ঞানের বিনিময়ে শয়তানের কাছে তার আত্মা বিক্রি করে দিয়েছিল। আমি বড় জোর শয়তানের কাছে নিজের দেহটা বিক্রি করতে পারি (শয়তান নাকি সবসময় রূপসী রমনী রূপেই আসে!) এর বেশি কিছু না।কিন্তু তারপরো ছোট থাকতে আমার কৌতুহলের অন্ত ছিল না।আব্বুর দাড়ি কেমনে গজায় থেকে শুরু করে কারেন্ট কি জিনিস বুঝার জন্য টেবিল ফ্যানের শক খাওয়া কোনটাই বাদ দেই নাই।
[justify]এককালে বাসার বুজুর্গদের বুলি শুনতে শুনতে প্রায় বলি হয়ে গিয়েছিলাম, “লেখাপড়া করে যে, গাড়ি-ঘোড়া চড়ে সে। তাই গাড়ি-ঘোড়া চড়তে বেশি বেশি পড়ালেখা করো”। আমি মানি না, মানতাম না। কারণ জলজ্যান্ত চোখের সামনে দেখতাম, আব্বু তো কোনো পড়ালেখাই করে না। তাও দেখি দিব্যি রোজ ভুটভুট করে মটোরসাইকেল গাড়িতে করে অফিসে যায় আর আসে। আর বাসায় এসে শুধু আমার পিঠের চামড়া তোলার পাঁয়তারা খোজে। অবশ্য আব্বুকে কখনও ঘোড়ায় চড়তে দেখিনি আমি। তবে আমাকে মাঝে মাঝেই পড়ার সময় ঘোড়ার ডিম বলতে দেখেছি। তাই তখন মনে হতো আমার সাথে ঘোড়ার ডিম এর কোনো যোগসূত্র আছে বা থাকতে পারে। আর সেই ডিমটা ফুটে বাচ্চা হলেই আব্বু সে বাচ্চা ঘোড়ার পিঠে চড়ে বসবে।
দিনকাল ভালই কাটছিল। ঘুমথেকে উঠে মাঝেমধ্যে ইউনিভার্সিটি যাই, দোকানের ঝাঁপি খুলি, কফি-বিড়ি খাই, দুই-চার জন বন্ধুবান্ধবের সাথে গালগল্প মারি, সন্ধেবেলা বাসায় ফিরে টিভি দেখি – লুপটা এই রকমই চলছিল। দেশে থাকতে ভালই ছিলাম, ভালমন্ধ খাইতে পারতাম, এদিক-সেদিক যাইতে পারতাম, আড্ডাবাজির রমরমা দিন আছিলো সেইগুলান। হঠাৎ করে বলা নাই কওয়া নাই, যাদের সাথে গুলতানি মারতাম তাদের সিংহভাগই মেধাপাচারের শিকার হল। কিন্তু আ
[justify]আমি আস্ত একটা ভীতুর ডিম। ছোট থাকতে অতি তুচ্ছাতিতুচ্ছ কারণে আমি ভীত হতাম, শংকিত হয়ে কাঁপতাম। কিন্তু বেজায় লাজুক হওয়ার কারণে আমার ভয় কাউকে বুঝতে দিতাম না। একমাত্র আম্মুর চোখে মাঝে মাঝে ধরা খেয়ে যেতাম। বড় হলে নাকি ভয়-ডর আস্তে আস্তে কমে যায়। কিজানি কী কারণে নিয়মের হেরফেরে আমার হলো এবং হতে থাকলো এর উলটো। উদ্ভট উদ্ভট সব কারণে আমি ভীত হতে থাকলাম।