সেভেন সেভেন স্মরণে
এম আব্দুল্লাহ
৭ জুলাই ২০০৫। অন্যান্য দিনের মতো সকাল ৫ টার শীফটে কাজ শুরূ করেছি। ২৫ নং বাস ধরে স্টেপনি গ্রীণ থেকে সোজা ব্যাংক স্টেশনে এসেছি। লণ্ডন আল্ডারগ্রাউণ্ডের কর্মব্যস্ততা শুরু হতে তখনো দেরী আছে। তখনো জানিনা কি গজব নেমে আসছে লণ্ডন ট্রান্সপোর্টের উপর।
রেস্তোরার জানালা দিয়ে আসা আলোর আঁচ হঠাৎ কমে আসলো; দু একটা পাখি হুড়োহুড়ি করে হাওয়া দাঁপিয়ে উড়ে গেলো। বেরিয়ে দেখি জল ছিটাতে আকাশে প্রকান্ড সব মেঘের মজুদ। ঘড়িতে তখন কেবল চারটা বাজে। রাস্তার পাশের বেঞ্চিতে গা এলিয়ে বসে স্মৃতির কোষাগার থেকে তুলে নিলাম কয়েকটা হলোগ্রাফিক ছবির এলবাম। এতদিন পর ছবিগুলো দেখে ছবির সব মানুষকে পুরপুরি কাল্পনিক চরিত্র মনে হচ্ছিলো। আমার সব স্মৃতিতে কমবেশি কল্পনার ভ্যাজা
নিয়তি দিদিমণি গল্প শোনাচ্ছেন, "এক দেশে এক রাজা ছিলেন। সেই রাজা একদিন এক সাধুর কাছে এক বর পেলেন। রাজা যা ধরবেন তাই সোনা হয়ে যাবে। রাজা তো আনন্দে এক লাফ দিয়ে প্রথমেই দু'হাতে চেপে ধরলেন রাজসভার থাম। থাম সোনার হয়ে গেল। তারপরে ধরলেন ছত্রচামর, তাও সোনার হয়ে গেল। রাজার আনন্দ ধরে না। এরপরে রাজা স্নান করতে যাবেন, যেই না তেল মাখতে গেছেন, তেল হয়ে গেল সোনার তাল। আর তেল মাখা হলো না। বিমর্ষ হয়ে তেল ছাড়াই স্ন
[center]০১
উন্মাতাল ঢেউ তার উত্তাল গর্জনে
বেসুরো প্রকৃতির কোন কোণে
পাহাড়ের সারি-আকাশকে ছাপিয়ে
অসীম থেকে শুরু আর
পায়ে আছড়ে পড়ে শেষ আমার!
০২
পাশে বালুচর সমুদ্র; শেষে অচলের
গোমরা থমকে যাওয়া চাউনি;
বুক ফেড়ে শ্বেতস্রোতের বিন্দু বিন্দু জলে
বৃষ্টির মত ঝরনা মনে বিষণ্ন সাধ আনে!
শীতের সকালটায় হি হি করে কাঁপতে কাঁপতে স্যারের বাসায় পড়তে গিয়ে দেখি বাগানের পুরনো বেদিটায় একা একা বসে আছেন। বললেন, 'আজ পড়াব না রে, মনটা ভালো নেই'। সবাই খুশি মনে ফিরতে শুরু করতেই ডেকে বললেন, 'আশালতা, তুমি থাকো, তোমার সাথে কথা আছে'। আমি অবাক হওয়ার চেয়ে চিন্তিত হলাম বেশি। কারন একা ফিরতে হবে। তার মানে রোজদিন দরজার আড়ালে গোলাপ হাতে দাঁড়িয়ে থাকা উনার পাগল ছেলেটার সামনে দিয়ে একাই যেতে হবে, এইট
ভর্তি হওয়াগুলো কেমন মিলেমিশে গিট্টু পাকিয়ে যায়। সেই কবে প্রথম বাড়ীর বাইরে পাড়ার বাইরে বেরোনো ইস্কুলে ভর্তির জন্য, সঙ্গে করে নিয়ে গেল অভিভাবকরা, বেরিয়ে কিন্ডারগার্টেনে ভর্তি, তারপরে সেই স্কুল থেকে বার হয়ে হাইস্কুলের ক্লাস ফাইভে ভর্তি, তারপরে কলেজ, তারপরে অনেক দূরে অচেনা বিদেশে গ্র্যাড স্কুল--সব অ্যাডমিশনগুলো মিলেজুলে একাকার হয়ে যাচ্ছে, যেন সব কিছু একটা বিরাট মালার মতন, আলাদা করে চেনা যাচ্ছে না বীডগ
কলম দিয়ে লিখিনা বহুদিন। না লিখতে লিখতে আঙুলের গিঁটে গিঁটে মরিচা ধরে গেছে। বাংলা ইংরেজী দুই প্রকার হাতের লেখাই জঘন্য হয়ে গেছে। কখনো একটা পৃষ্টা লিখতে হলেও ঘাম ধরে যায়, আমার লাইন হয়া যায় আঁকাবাকা আর লেখার চাপে ব্যাথাতুর থাকে কনিষ্ঠ আঙুল। স্বাক্ষর করা ছাড়া কলমের কোন কাজ নাই আজকাল। আঙুলগুলো কীবোর্ডের প্রতি এত বেশী নির্ভরশীল হয়ে গেছে যে, দুই আঙুল দিয়ে একটা কলম ধরে লেখার ধৈর্য একেবারে নেই।
বাবার অফিস থেকে সন্ধ্যে নাগাদ দুজন লোক এসে কি বলতেই মা যেন কেমনধারা হয়ে কাছের চেয়ারটায় ধপ করে বসে পড়লেন। এই ছবিটায় না থাকলেও বাবা সম্পর্কিত এটাই আমার প্রথম স্মৃতি। পরের স্লটের দৃশ্যটায় দেখি ঐ লোক দুজনের সাথে মা, ভাই আর আমি শীতের রাতে একটা গাড়িতে করে ছুটে চলেছি কোথায়। কে একজন বলছে, আমরা বডি নিতে যাচ্ছি। আরেকজন ধমকে উঠে বলছে, আহ্, কিসব বল, এখনও কনফার্ম হয়নি তো। পাশের সিটে মা পাথরের মত মুখ
এই লেখাটা বাবার জন্য
আমার সেই বাবা, ছোটবেলায় যার উদাম বুকে শুয়ে আমার ছোট্ট কানের একটা নিখুঁত ছাপ ফেলে দিতাম...
আমার সেই বাবা, যে অকারনে ঘুমের মাঝে এখনো পা দোলায়, কারন তার শিশুকন্যাকে পায়ের উপর শুইয়ে দোলা দিয়ে ঘুম পাড়ানোর অভ্যাস যার এখনো যায়নি...
আমার সেই কিশোরমনা বাবা, যার বয়স আসলে এখনো বারো...
আমার সেই পাগলা বাবা, পড়ার টেবিলে আমাকে দেখলেই যে বলে, "ঘুমা মা, ঘুমা।"
আমার এক বন্ধু আগামী মাসে ব্যাংকক যাচ্ছে ঘুরতে। এটা তার দ্বিতীয় বিদেশ ভ্রমণ, এর আগে ইন্ডিয়া গেছে একবার। প্রতিবারই আমাকেও জিগ্যেস করে যাব না কি, কেন যেন কিছুতেই ওর সাথে সময়ে মেলেনা। আমিও অবশ্য গত তিন বছরে বেশ কয়েকবার বাইরে গিয়েছি। যথারীতি সে সেময় আমার বন্ধুর সময় মেলেনি। তিন বছর আগে, ২০০৮ সালে আমরা একসাথে পাসপোর্ট করতে গিয়েছিলাম অবশ্য। সেই পাসপোর্ট করার অভিজ্ঞতা নিয়েই পরে একটা লেখা লিখেছিলাম যেটা তখন