মনমাঝি
(কাজী নজরুল ইসলাম ও শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় সম্পর্কে শিবরাম চক্রবর্তীর স্মৃতিচারন)
বাংলা সাহিত্যে শিশু সাহিত্যিক ও রস-লেখক হিসেবে খ্যাত শিবরাম চক্রবর্তীর নতুন করে পরিচয় দেয়া নিষ্প্রয়োজন। তার ‘হর্ষবর্ধন’ চরিত্রটার সাথে অনেকেরই হয়তো অনেক সহর্ষ পাঠস্মৃতি জড়িয়ে আছে।
প্রথম স্কুলের গণিত স্যার এর নামটা আমি কিছুতেই মনে করতে পারছি না! ছ-ফুটের শরীর, ছিপছিপে গড়ন, লম্বা নাক…এইটুকু মনে আছে, আর মনে আছে স্যারের ক্লাসে গল্প করা, ঐ গল্প শুনতে শুনতেই গণিতের প্রতি ভালোলাগা তৈরী হয়েছিল। কত কি মনে আছে! স্যারকে কেন মনে নেই! ভীষণ অসহায় লাগে মাঝে মাঝে নিজেকে! স্যারকে আমার মানুষ বলে মনে হতো না! মনে হতো কোনো দেবতা, গল্প শোনাতেন যেন স্বর্গ রাজ্যের, ভ্রমনপ্রিয় ছিলেন স্ ...
এমন একজন মানুষকে নিয়ে আমি লিখছি যাকে আমি দেখিনি কোনোদিন। আমার জন্মের আগেই তিনি চলে গেছেন এই পৃথিবী ছেড়ে। তারপরও তাকে নিয়ে লিখতে বসেছি, কারণ তিনি আমার অদেখা একজন হলেও তিনি বেঁচে আছেন আমার পুরো অস্তিত্ব জুড়ে। দাদু আমার মা'র মুখে আমি শৈশব থেকে শুনছি তার গল্প, যে গল্পগুলো আমাকে নাড়া দিয়েছে বারবার। আমাদের পরিবারে তাকে নিয়ে এত গল্প এ ...
সব মানুষেরই মনে হয় একটা পরিসীমা থাকে। আমাদের সকল দৈনন্দিন আর পার্থিব জগতের দূরত্বগুলো মাপার জন্য আছে নানান পরিমাপ, আছে নানান দ্রুতগামী আর শ্লথ সব বাহন। জাগতিক সবই কিছুই আমরা করি এক পরিসীমার ভেতরে থেকে। শুধু স্মৃতির শহরেই এসব কিছুর বালাই নেই, সেখানে স্থান-কাল-পাত্র সবকিছুই অর্থহীন, পার্থিব সবই মূল্যহীন। একটা মিমি চকোলেটের জন্য আক্ষেপও শেয়ার মার্কেটে কোটি টাকার হারানোর বেদনা ...
চা-আড্ডা শেষে, আমি আর ইকো, দুজন নদীর পাশ ধরে হাঁটতে হাঁটতে গেলাম শিচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ে, ইকো’রা যেখানে পড়ছে। গল্প আর আড্ডার বিষয়বস্তু সম্পর্কে কেউ কেউ জানতে চাচ্ছিলেন, মূল বিষয়বস্তু চীন, বাংলাদেশ, কোরিয়া, ভ্রমন, ভালো লাগা, মন্দ লাগার মতো সাধারণ বিষয়গুলোও।
মাঝখানে কিছুক্ষন চললো ভাষা শেখার এবং শেখানোর চেষ্টা। আমি ‘শুভ সকাল’, ‘কেমন আছেন?’ ইত্যাদি প্রাথমিক কিছু বাংলা শেখালাম, শি ...
টিনচালা একটি ঘর, কোথাও আবার কংক্রিট ঢালাই, মিরাবাজারের এই টিনচালা ঘর আর কংক্রিটের ছাদের নিচে সর্বক্ষণ শুয়ে থাকেন মুনিরের মা। বয়স কত হবে তার, অনুমান করি, একেবারে কম হলেও আশি বছর, সব দাঁত পড়ে গেছে, ছেলেরা কেউ আজ তার পাশে নেই, বড় ছেলে মারা গেছে পঁচানব্বুইয়ে, বাকি তিন ছেলে বউ বাচ্চা নিয়ে কানাডার প্রবাস জীবনে। টিনচালা ঘরের দেয়ালে হাসনাহে ...
পর্ব আকর্ষণঃ পান্ডা দেখা ও চীনা বহুবর্ণিল চা খাওয়া
চার হাজার বছরের পুরোনো ব্রোঞ্জ সভ্যতার শহর ‘ছংদু’, দক্ষিন চীনের রাজ্য সিচুয়ান এর রাজধানী, আমার যাত্রার কেন্দ্রস্থল। চীনের যে কোনো দিকে গেলে আমরা পাবো হাজার হাজার বছরের ইতিহাস।
ছবি ও গল্পে প্রথম পর্বে যাত্রার উদ্দেশ্য সম্পর্কে লিখেছিলাম, লিখেছিলাম আমার ভ্রমন ও প্রথম দিনের দেখা ও জানা ছংদু সম্পর্কে। স ...
কই থাইকা শুরু করি, কিভাবে শুরু করি, এইটা নিয়া নিজের মধ্যেই একটা সংশয় বিরাজ করতেছে বেশ কিছুদিন ধইরা। তারপর মনে হইলো রিকাবীবাজারের রথের মেলার কথা, ওইখান থাইকা তো শুরু করা যায়, এবং আমি তখনই স্বজ্ঞানে সুস্থ মস্তিস্কে এই সিদ্ধান্তে নিয়া ফেলি, অথবা কইতে পারেন মনস্থির কইরা ফালাই, লেখাটা আমি ওইখান থাইকা-ই শুরু করব।
রথের মেলা, আমরা গেছলাম খরগোশ কিনতে...
নোমান তখন নতুন একটা মোটরসাইকেল কিন ...
কানে বাজছে- আমি একদিনও না দেখিলাম তারে… বাইরে বৃষ্টি।
যাচ্ছি বাসে, শহরের দিকে ঘুরতে। আমরা গ্রামেই থাকি, কোরিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম এই বিশ্ববিদ্যালয় টি গড়ে তোলা হয়েছে নিতান্তই গ্রামে। যদিও এখানকার গ্রাম আর শহরের পার্থক্যে এটুকুই যে, শুধুমাত্র বিল্ডিং এর ঘনত্ব আর উচ্চতা একটু কম আর বেশি। যা হলে স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল, ইন্টারনেট ‘স্পীড’, ২৪ ঘন্টার দোকান, বার, পাব কোনো কিছুতেই কোনো পার ...
চোখের সামনে সাদা কাগজ খুলে বসে আছি। বোতামে আঙুল। এক অদ্ভুত সংক্রান্তিতে কেটে যাচ্ছে সময়। বিষাদ আর আস্বাদের, জীবনের মধ্যে সন্নাস্যের, অভ্যাসের সাথে আচ্ছন্নতার সংক্রান্তি । কাল থেকে নিজকে খুব একা মনে হচ্ছে। জানি না কেন। কেন জানি না কোন আনন্দের উপলক্ষ হলেই আমার চারপাশে আততায়ীর মত বিষণ্নতাগুলো ঘুরঘুর করতে থাকে। এক ধরনের আত্মকুণ্ডলায়নের চক্রব্যুহে আমি আটকে গেছি মনে হচেছ। কিন্ত ...