পাশ করার পরেই একটা চাকরি পেয়ে গেছিলাম। খুব বড় কোনো চাকরি নয়। তবে ও চাকরি করতে থাকলে নিজেকে মধ্যবিত্ত বলা যেত হয়তো। সাত-সকালে উঠেই নাকে মুখে কিছু দিয়ে একটা ঝোলাব্যাগ কাধে বেরিয়ে পড়তাম। তারপর কিছুটা হাটা, বাসের হ্যান্ডেলে ঝোলাঝুলি, রিকশা, তারপর অফিস।
আমাদের বাড়ির পাশে কিছুটা ফাঁকা জায়গা ছিলো। সেখানে দুটো নারিকেল গাছ, কিছু জঞ্জাল, একটা কবর, আর বেশ কিছু মানুষ। সেই মানুষদের যে বাড়ি, ...
“ এই লেখাপড়া দিয়া তো কিছু হইবোনা।এর চাইতে রিকশা কিনা দিমু,রিকশা চালাবা, তখন বুঝবা জীবন আসলে কী? বাপের পয়সায় গায়ে বাতাস লাগায়া ঘোরো তো, কিছু টের পাও না। রাস্তার দুইপাশে দেখোনা, তোমাদের চাইতে অনেক অল্প বয়সে সংসারের হাল ধরতে হয়।” পড়াশোনায় ঢিল দিলেই আমার মা অথবা বাবা এই ডায়লগ দিতেন।রিকশা চালাতে তেমন আপত্তি না থাকলেও, আমি আর আমার ছোটবোন বুঝতাম যে এখন এখানে বসে থাকাটা বা পালটা যুক্তি দ...
১) মিনহাজ ভাইয়ের সাথে আমার পরিচয় গত বছরের আগস্ট মাসের মাঝামাঝি সময়ে। বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন আসা ছাত্রছাত্রীদের সহায়তা করে ISI নামক সংগঠনে স্বেচ্ছাশ্রম দিতে যেয়ে জানতে পারলাম বাংলাদেশ থেকে একজন ছাত্র আসার কথা - তার জন্য বাসা খুঁজে দিতে হবে। একটু অবাক হলাম। – সচরাচর নতুন বাংলাদেশী ছাত্র ছাত্রীরা আসার আগে কারও না কারও সাথে যোগাযোগ করে আসে - কিন্তু মিনহাজ ভাই এর কথা কেউই জানেনা।...
অবতরণিকা:
গত মাসটা বড়ই দৌড়ের উপর গেল। বিশেষত গত দু-তিন সপ্তাহে মূলভূমি ইউরোপের আটটি ছোট-বড় শহরে ঢুঁ মারতে হয়েছে। [সব সময় বেড়ানোর সুযোগ পাইনি, তবে সামগ্রিকভাবে যে মন্দ লেগেছে তা নয়। বেড়ানোর লেখা বা নিদেনপক্ষে ছবি দেওয়ার ইচ্ছা ছিল, কিন্তু আগেভাগে কিছু বলে ফেলে পোস্টখেলাপী হতে চাই না।] সদ্য ফিরলাম কলকাতায়। সেখানে আবার বিশেষরূপ আপ্যায়নের ফলে পরিপাকযন্ত্র বিদ্রোহ করেছেন। সব মিলিয়...
একটি বিশেষ পর্যালোচনায় দেখা গেছে আমি গত কয়েক বছর ধরেই নববর্ষে কোন না কোন গল্প লিখে আমার ফেসবুকের নোটে দিয়ে দেই। ভাবটা এমন যে বিশেষ দিবসে কোন পত্রিকা থেকে সম্পাদক সাহেব লেখা চাইছে আর আমি বিচক্ষণ লেখকের মত কিছু একটা লিখে দিচ্ছি।
আসলে প্রতিবারই এমন কিছু একটা ঘটে যে আমি নিজের অজান্তেই সেই কাহিনীটা সবার সাথে শেয়ার করার জন্যে লিখে ফেলি। এইবার তেমন কোন বিশেষ ঘটনা ঘটেনি, যেটা তখনই লিখে ফেলতে হবে। তবুও লিখেছিলাম এই জন্য যাতে ট্র্যাডিশনটা না ভাঙ্গে!
তেমন সিরিয়াস টাইপ কোন লেখা না। পহেলা বৈশাখের দিন সারাদিন যা যা করেছি তারই কিছু অংশ লিখেছি।
১লা বৈশাখ ১৪১৭।।
লেখিকা হওয়ার কোন যোগ্যতাই আমার নেই। কারন, আমি হলাম বাদশাহী আলসেখানার আলসেদের মত, লিখতে আমার মহা আলিস্যে। আর যদিও বা কিছু ছোট ছোট লেখা লিখে ফেলি মাঝে মাঝে, সেগুলো জনসাধারণের পাঠের উপযুক্ত মনে হয় না আমার। তাতে থাকে আমার একান্ত ব্যক্তিগত কিছু অনুভূতির ছোঁয়া। পানিতে নেমে এখনও কাপড় ভেজার ভয় আমার কাটেনি। কেন যেন, ব্যক্তিগত অনুভূতিগুলোকে আমার মনের কুঠুরিতে সযত্নে লালিত মুহূর্ত করেই ...
[justify]
১.
আন্দেজের বন্দী নামে সুধাময় করের একটা বই বেরিয়েছিলো সেবা প্রকাশনী থেকে। সুধাময় কর কি রক্তমাংসের মানুষ, নাকি ছদ্মনাম, কে জানে, তবে বইটা বেশ গা ছমছমে। উরুগুয়ের কয়েকজন রাগবি খেলোয়াড় বিমান দুর্ঘটনার কবলে পড়ে আন্দেজের চিলে অংশে আটকা পড়েন। কয়েকজন মারা যান দুর্ঘটনার সময়, কয়েকজন মারা যান শীতে, কয়েকজন মারা যান বরফধ্বসে। রেডিওতে তারা শুনতে পান, তাদের উদ্ধারের চেষ্টা বাতিল করা হয়ে...
হঠাত্ বালিশ নিয়ে এতো গবেষণা কেন ? এর পিছনে একটা গল্প আছে ।
মাস দেড়েক আগে আমার ফার্স্ট ইয়ার ফাইনাল পরীক্ষা চলছিল বিধায় সাত দিন যাবত্ আমাদের সিসিমপুর গোষ্ঠীর দেখা সাক্ষাত্ হয় না । ইকড়ি, শিকু, হালুমকে খুব মিস করছি । অসম্ভব খারাপ লাগছে ইকড়ির জন্য (ইকড়ি আমার একমাত্র বন্ধু, সবচাইতে কাছের জন । আমাদের বন্ধুত্বের কাছে গিলগামেশ আর এনকিদুর বন...
[justify]
তিনি তল্লাবাগেই থাকতেন তখন। আমারও ওই পাড়ায় নিয়মিত আনাগোনা, উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে বসে আছি, ক্লাস শুরুর নাম নেই, পুরো বেকার। সারাদিন আড্ডা চলে, সুনীলের ভাষায় বন্ধুপ্রীতি প্রায় সমকামীদের মতই। গলির মাথায় সিগারেট কিনতে গেলে মাঝে মাঝে দেখা হয় তাঁর সাথে, কখনো কখনো তিনি পরিচিত হাসিও দেন, মনে হয় পাড়ার একজন বখাটে যুবকই ভাবেন আমাকে। আর আমিও তাঁকে বলতে পারিনি ...
তখন মাত্র ক্লাস টেনে উঠেছি। স্কুলের সবচেয়ে সিনিয়র হিসেবে একটু গরম গরম ভাব দেখাই। যেকোন অনুষ্ঠান আয়োজনের একচ্ছত্র এবং অলিখিত ভার আমাদের উপর। কোন স্যারের বিদায় অনুষ্ঠান, ঈদে মিলাদুন্নবীর মিলাদ মাহফিল কিংবা রবীন্দ্র-নজরুল স্মরণে আলোচনা অনুষ্ঠান সব দায়িত্ব আমাদের। স্যারেরাও আমাদের উপর ভার দিয়ে ঝামেলা মুক্ত থাকতে চান। আমরা মাইক ভাড়া করা, ডেকোরেটর ভাড়া করা, মানপত্রের অর্ডার দেয়...