সাঈদ
টেলিভিশন নিয়ে প্রথম পর্বে সবার কমেন্ট দেখে আমি চিন্তায় ছিলাম কবে ২য় পর্ব দিব, আবার স্মৃতির ঝাঁপি খুলে নিয়ে বসবো। আজ তাই সেই তাগাদা থেকেই ২য় পর্ব লেখা (ঠিক লেখা না, টাইপ করা)
টিভি প্রোগ্রাম চালু হবার আগ থেকেই ঘরের ভিতর ঘুর ঘুর করতাম , কখন আরম্ভ হবে টিভি। ঘোষক ঘোষিকা দের সেই ঘোষনা - তারপর পবিত্র কোরআন থেকে তেলওয়াত তারপর ত্রিপিটক বা বাইবেল বা গীতা পাঠ , অনুষ্ঠান সূচী - সবকিছুই গোগ...
হঠাৎ একটা পাখির কথা মনে পড়ছে আজ। নিঃসঙ্গ পাখিটা সবুজ বাঁশের জঙ্গলে নির্জন দুপুরে লাল ঠোঁট নিয়ে চুপ করে বসে থাকতো। দিনরাত একই জায়গায় বসে থাকতো সে। পাখিটা আমার ছেলেবেলার সবচেয়ে স্পষ্ট স্মৃতি। একদিন সেই পাখিটার জন্য মাকেও ত্যাগ করেছিলাম। সেই গল্পটাই বলি আজ মা দিবসে।
চাটগাঁর ভাষায় ভাতের প্লেটকে বলে 'বাসন'। যে পাখিটার কথা বললাম সেই পাখিটা দাদা বাড়ির একটা বাসনের উপর আঁকা ছিল। সাদা...
বয়সের হিসাবে খুব বৃদ্ধ না হলেও নিজেরে বয়স্ক ভাবা শুরু করেছি এরই মধ্যে। এই তো, বছর দুয়েক আগে ৩০ বছর অতিক্রম করেছি, এখন এই কোমর থেকে পড়ে যাওয়া যাওয়া প্যান্ট পড়া, বডি ফিটীং শার্ট পড়া ছেলে পুলে দেখলে নিজেকে বুড়োই মনে হয়।
আমার নানা-দাদা দের মত করে বলতে ইচ্ছা করে সেই ১৯৫৬ সালে, তখন ... কিংবা আমার নানীর মত করে এক হাতের কনুই বরাবর আরেক হাত দিয়ে ধরে মাপ দিয়ে বলতে ইচ্ছে করে এত বড় ফজলি আম আমার বাপ...
[justify]
আমার নানাভাই যৌবনে বেশ রাশভারি মানুষ ছিলেন। মোটা কালো ফ্রেমের চশমা চোখের পুরোনো ছবিগুলোর দিকে তাকিয়ে আরেকটা ব্যাপার বোঝা যায়, তিনি ছিলেন দুর্দান্ত সুর্দশন!
কথিত আছে, কেবল রাজপুত্রের মত পাত্রের দিকে তাকিয়েই ধনাঢ্য বাবা তাঁর দশ ছেলেমেয়ের মধ্যে সবচেয়ে আদরের মেয়েটিকে ছাপোষা চাকুরের হাতে তুলে দিয়েছিলেন। কাজটা যে মোটেই সুবিবেচনাপ্রসূত ছিলোনা এই নিয়ে নানুমণি প্রায়ই প্রবল হাহুতাশ করেন।
আমার একটা আপেলগাছ ছিলো। তার ডানে-বামে আরো দুটো গাছ ছিলো। বাগানজুড়ে ছিলো আরো শখানেক। কিন্তু ঐ গাছটা শুধু আমারই ছিলো। আমাদের ছোট্ট উঠোনের পাড় ঘেঁষে একটু ঝুঁকে দাঁড়িয়ে থাকত। বরফচাপা শীতের শেষে তার ডালে দোলনা ঝুলিয়ে দিত আব্বু। মেহদি একবার গাছে উঠে চুপিসারে দড়ি কেটে দিয়েছিলো। আর আমি ধপাস করে মাটিতে।
মেহদিটা ভীষণ দুষ্ট ছিলো। একবার আপেল ছুঁড়ে মেরেছিলো আমার দিকে। সেটা সোজা এসে লেগে ...
ব্যাপারটা কেমন যেনো দুঃস্বপ্নের মতো, বারেবারে ফিরে আসে।কতদিন হয়ে গেল তবু ভোলা যায়না একটি বারের জন্য ও।কবছর হলো বাবার সাথে কথা বলেনা মিতিন, মনে করতে পারছেনা।আশেপাশের মানুষ বাবার জন্মদিন পালন করে, বাবাদিবসে আনন্দ উল্লাস করে, এসব ওর কাছে যেন অর্থহীন লাগে,যন্ত্রনার মত মনে হয়।মায়ের লজ্জায় কুঁকড়ে যাওয়া সেই মুখ মিতিন কেমন করে ভুলে যাবে।মনে মনে ভেবেছিল বাবার উপর প্রতিশোধ নেবে।কিন্ত...
(আমার স্কুলের নাম “জিয়া সার কারখানা কলেজ” । সম্প্রতি বাড়ি গিয়ে দেখি স্কুলের নাম মুছে ফেলেছে, ওখানে লেখা হবে “আশুগঞ্জ ফার্টিলাইজার এন্ড ক্যামিকেল কলেজ”। সরকার এসে হয়ত এক চুটকিতে নাম পরিবর্তন করে দিতে পারে, কিন্তু আমরা যারা গড়ে উঠেছি এই স্কুলে, চলতে ফিরতে, হাতের লেখায় বা ছাপা কাগজে, সুখ বা দুঃস্বপ্নে, স্মৃতি কাতরতায় উঠে আসবে পুরনো নামটিই। জিয়া নামটির মধ্যে হয়ত রাজনৈতিক গন্ধ আছে, ক...
সোহিনীর মা-বাবা দুজনে ওকে পাহারা দিয়ে ইস্কুলে আনা নেওয়া করতেন পালা করে। সোহিনী নাকি প্রেমে পড়েছিল পাশের বয়েজ স্কুলের এক ক্লাস উপরের একজন ছেলের। আমাদের গ্রামাঞ্চলে কিশোরপ্রেম মানে বিকেলে একটু দেখা করা, গল্প করা, মাঝে মাঝে একসঙ্গে স্টেশনবাজারের দোকান থেকে ঘুগনি খাওয়া-এর বেশী কিছু না। তবু এই ব্যাপারটুকুও সোহিনী বাবা একেবারেই অ্যাপ্রুভ করেন নি। তাই এত বাধা-নিষেধ, মেয়েকে আটকান...
একটা ঘরের ভেতরে আমাকেসহ ৫/৬ জনকে আটকে রাখা হলো। বাইরে থেকে তালাবন্ধ। ভেতরে কোনো আলো নেই। দুপুরে কি খেয়েছিলাম, মনে নেই। এরপর ৩/৪ টা গোল্ডলীফ/নেভী/কেটুর ভাগ পেয়েছি। নিজের টাকায় সিগারেট কেনার মতো টাকাও তেমন ছিল না। রাতে খাওয়া হয়নি। যে ঘরে বন্দী আছি, সেখানে খাবার মতো পানিও নেই। বাথরুম? অকল্পনীয়! তবে বেশিক্ষণ সেখানে থাকতে হবে না, সেটা জানি। ভোরের সূর্য ওঠার আগে যেভাবে দেয়াল বেয়ে এখানে ...
শিশুদের সম্পর্কে আমার একটা পর্যবেক্ষণ আছে। সেটা হলো প্রতি প্রজন্মে শিশুদের বিটলামি জ্যামিতিক হারে বাড়ে। আমাদের বাবা-মার কাছে আমরা নিয়মিতই শুনেছি আমাদের তুলনায় তারা কত শান্ত ছিল (যদিও পরে আমার মায়ের কিছু কীর্তিকলাপ শুনে সেগুলো মেনে নিতে আমার যথেষ্ট আপত্তি আছে), কিন্তু আমার বড় বোনের শিশুপ্রীতির সুবাদে বেশ কয়েক প্রজন্মের বাচ্চাকাচ্চা দেখে আমার এই বিশ্বাস বেশ পোক্ত হয়ে...