এখন আমি রাতের দিকে যাচ্ছি ৷ রোজ যাই বা যাই না, সেটা বড় কথা নয়, আজ আমি ঘড়িকে ফেলে এগিয়ে যাচ্ছি ৷ নাগরদোলা ঘুরছে, ঘসঘসে ক্যাসেটে বেহাগে সানাই ৷ সত্যি মাইরি জিন্দেগীতে কেউ যেন সানাই বাজায় নি বিসমিল্লাবাবু ছাড়া ৷ বেলুনওয়ালার লাঠিতে ঝুলছে পোঁ করার সব সানাই ৷ মেলা বসেছে চারপাশে ৷ আমার প্রত্যেক রাত এমনই পশরা সাজায় ৷
একটা আরশোলা দেখে মনে হয় ঘিয়ে ভাজা, এ বুলবুল কুকুরের মত নয় ৷ প্রতিসরাঙ্ক নির্ণয় না করেই তাকে রামগোপাল ভার্মার নতুন আবিস্কার বলে মেনে নিই ৷ লাক্স-প্যারাসুট ও কুর্কুরে, কোনো নতুন শোয়ের জন্য আমরা তৈরি কি না, তা জানার জন্য টকব্যাকে যাবতীয় খিস্তি শোনা যায় ৷ আলো কমে যায় পুরোপুরি, জিমি রেডি, অগ্নিমিত্রার ক-অক্ষর সহকারী আরশোলার পেছনের জিপ পুরো খুলে দিয়ে যায় ৷ ইস্টার্ট ৷
এখনো কাশ ফোটে ৷ পদ্ম ফোটে ৷ লেখালিখি হয় বর্ষাকাল থেকে ৷ আমিও তিনদিন ছুটি নিয়ে লিখি ৷ এই ভাবেই পুজো আসে ৷ তারপর রাতে রাত মেশে, আমি দিন রাত খেটে চাড্ডি পয়সা জোগাড়ের চেষ্টা করি ৷ মিটে গেলে কিছু পয়সা পাই আর প্রচুর খিস্তি, এই সব ড্যাসের কাজ করছিস ৷ আমি কিন্তু রাতগুলো কাটাই জব্বর ৷ গ্রামেগঞ্জে থাকলে লোকাল মাল জুটে যায় ৷ হেবি খাতির করে লোকজন ৷ কার মেয়ে গান শিখছে, কে ভাল ক্যারম খেলে, কে একবার শুনে কোন এক সামাজিক যাত্রাপালার ঝালাপালা সংলাপ মুখস্ত বলতে পারে তার নমুনা দেয়, অনেক রাত অবধি ৷ দারুন সব রগড় ৷ আমি ছইয়া শুনতে শুনতে ঘুমিয়ে পড়ি ৷ টাটা সুমোয় করে লম্বা লম্বা পাড়ি দিই, মাঝে সাঝে সরকারি বাসের সাথে ধাক্কা মারি ৷
পুজোর আগে, দু-একটা ইস্পেশাল শো হয় ৷ তাতে কাজ জুটলে বোনাস ৷ কাজ না জুটলেও থাকতে হয়, নতুন ট্যালেন্ট খুঁজতে, রামগোপালের মত উর্মিলা পাই না বটে উর্মিমালা নিয়েই শান্ত থাকি৷ পুজোর আগে টেলিভিশনে উপস্থাপিকা কম পড়ে যায় ৷ আমাদের সেটা পুশ করার সময় ৷ কেউ চোখে পড়ল ?ডেট আছে ? অন্য চ্যানেলে কিছু করছে না তো ? আমার একটু একটু তখন পুজোর দিনগুলো মনে পড়ে, আমাদের মত ক্যালানের সামনে, কার মেয়ে নাচ জানে, কার বৌ গান জানে, তারা নাচে-গায়-ডায়লগ বলে, নেচে যেতেই থাকে, গান সব জুড়ে জুড়ে গায় অন্তাক্ষরীর মত, পুরো যাত্রাপালায় সকলের ডায়লগ মুখস্ত বলে, বলে যেতেই থাকে যতক্ষণ না পর্যন্ত আমরা ঘুমিয়ে পড়ি ৷
মন্তব্য
ভাল এবং সতর্ক!
::::::::::::::::::::::::::::::::::::
বহুদিন হলো নিকষ কুঠার ফেলে এসে ভুলে
দাঁড়িয়েছি আজ মেঘের কিনারে এসে
হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।
জামাইবাবু থাকেন কৈ মিয়া?কই ডুব দেন?
-----------------------------------------
নিজস্ব ও সামষ্টিক শোকে স্তব্দ হয়ে আছি
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
নতুন মন্তব্য করুন