ক্যামেরা নিয়ে আমি ঠিক পুলিশের কানের কাছাকাছি ঘেষে আছি।
একটা ছেলে খুব সামনে এসে পড়েছে, টিয়ারের শেলটা হাতে তুলে নিয়ে ছুড়ে দিতেই তাকে উদ্দেশ্য করে খিস্তিও তুবড়ি ছুটলো - আরে ওরে মারনা - দুই ঠ্যাঙের মধ্যে .. এক পশলা ফাকা গুলি করতে থাকা সেপাইগোছের লোকটা নল নিচে নামিয়ে এনে গুলি করার ভঙ্গি করে - শেষ মূহূর্তে মারে না। হলুদ জামা পড়া লোকটা শান্ত ভঙ্গীতেই হেটে যায়। সারাদিন বহুৎ জ্বালাইছোস... আরে মারেন না.. আওে উইটা খালিগায়ে একটা ছেলে শূন্যে লাফিয়ে উঠে .. পড়তে পড়তে একদল মানুষের শরীরে ঢাকা পড়ে যায়। তাকে নিরাপদ জায়গায় বয়ে নিয়ে যায় ওরা। এরপর তাকে আর দেখা যায় না। মিছিল আবার জমতে শুরু করে।
মিছিলের ছবিতে আমার আগ্রহ নেই.. ছোট ছোট ছেলেরা পর্যন্ত বেশ সাহস দেখাচ্ছে.. সূর্যের দিকে তাকাই সন্ধ্যে হলেই এই পুরো এলাকায় গাঢ়ো নিস্তব্ধতা নেমে আসবে .. এই মিছিল কালকে কি রূপ নেবে আগাম ঠাহর করা যায় না,, আমার কিন্তু ভালোই লাগে মূহূর্তটা।
সবার মধ্যে একটা খেদ আর শংকা।
মিছিলের শ্লোগান পুড়ছে। কিন্তু মিছিলের স¤িমলিত চিৎকার অনেক দুর নদী পেরিয়ে যাত্রাপালায় ডুবে থাকা কোন অন্ধকার রাত্রের কথা মনে হয়।
এক দশক.. মিছিল থেকে দুরের রাস্তায়।
একটু সামনে এগিয়ে পায়ে পায়ে পুলিশের কাছে চলে আসি। ক্যামেরার লেন্স মিছিলের দিকে কিন্তু রেকর্ডারের কান পুলিশের মুখের কাছে। আগুনের কুন্ডল আর ইটের টুকরো ভুলে আড়চোখে হটাৎ সুন্দরীর দিকে তাকানোর মতোই পুলিশ ছুয়ে যাই। চিন্তাটা আগে ছিল না। এখানে আসার পরই চিন্তাটা মাথায় খেলে যাবার পরই মিছিল পেছনে পড়ে থাকে। ভেতরে একটা উত্তেজনা কাজ করে। পুলিশরা কেমন ? কি তাদের চিন্তার ধরন। দানবের মত ঝাপিয়ে পড়ার সময় তার মুখ ফসকে কি কি শব্দ বের হয়। কেমন চোখে দ্যাখে তাদের যারা তার গুলি সামনে দিয়ে হেটে যাচ্ছে। কেমন তাদের ক্রোধ যখন দিনের পর রাতজুড়ে বিশ্রামহীন টহল দিয়ে বেড়াতে হয় শহরময়। উষ্মার চেহারাটা এমন তাহলে যখন তাদেও উপর উড়ে উড়ে এসে পড়ে ইটের ঝাক।
পাগলের মতো কেটে যায় তিনটা দিন।
কালো ফিতেয় আটকা পড়ে থাকে অজস্র গাল, ক্রুদ্ধ চোখ, অসহায় হতাশা, দর্পী জিঘাংসা ...
আমি আরো মিছিলের জন্য অপো করে আছি ..
কবে মিছিল বেরোবে আর একদঙ্গল মানুষ পুলিশ আর পুলিশ মানুষের কান ঘেষে দাড়াবো .. চোখ থাকবে মিছিলের ভানে আর মন ... কেবলি পুলিশের কাছে -
আপনারা যে যাই বলুন
(সাম্প্রতিক ছাত্র বিদ্রোহের ৩ দিন নিয়ে)
মন্তব্য
হ
ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ
অজ্ঞাতবাস
এটা সেইরকম হয়েছে। জাঝা
হাঁটুপানির জলদস্যু
চলুক । সাথে সেই দিনগুলোর ছবি দিতে পারেন ।
-----------------------------------------
মৃত্যুতে ও থামেনা উৎসব
জীবন এমনই প্রকান্ড প্রচুর ।।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
নতুন মন্তব্য করুন