মুখফোড়ের লেখাঃ আদমচরিত ০০৮

উৎস এর ছবি
লিখেছেন উৎস (তারিখ: রবি, ০৮/০৭/২০০৭ - ১১:০০অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

বন্ধুবর মুখফোড়ের লেখাটা বিনা অনুমতিতেই পুনঃপ্রকাশ করলাম। মুখফোড় নিজগুনে ক্ষমা না করে দিলে, মডুরাম প্লিজ মুছে দিয়েন।
----------------------------------

স্বর্গে বড় গোল হইতেছে।

ঈশ্বর একখানি তোয়ালা ঠান্ডা পানিতে ভিজাইয়া মস্তকে মাঝে মাঝে ঘষিতেছেন। অদূরে আদম-ঈভের কুটির হইতে অশালীন গালাগালি ভাসিয়া আসিতেছে।

আদম বলিতেছিলো, "রমণ করিতে দিবি না কেন মাগী? মাগনা পাইয়াছি নাকি তোকে? নগদ একখানি পঞ্জরাস্থি খরচা করিতে হইয়াছে তোকে ঘরে তুলিতে। কড়ায় গন্ডায় উশুল করিয়া ছাড়িব!"

ঈভ চেঁচাইয়া কহিতেছিলো, "যা যা তোর মত ফুটা বোটের কাপ্তেন কত দেখিলাম! খালি মুখে ফটর ফটর! রমণ করিতে চাস তো যা আগে গিয়া নিষিদ্ধ ফল গোটা কতক চাবাইয়া আয়। তারপর যদি তোর সংবিধান সমুন্নত হয় তো আসিস!"

আদম আবার চিৎকার করিয়া কহিল, "সমুন্নত হইবে কীরূপে? ছলাকলা কিছু দেখাবি তবে না হইবে! যে-ই না চেহারার ছিরি! যা গিয়া স্নান করিয়া সুগন্ধি মাখিয়া ঘন্টা খানেক চৌষট্টি কলা চর্চাইয়া দ্যাখা! তাহার পরে দেখিস রমণ কাকে বলে! তোর চৌদ্দগুষ্টিকে রমণাইয়া ছাড়িব, মাগী ...।"

ঈশ্বর কানে অঙ্গুলি প্রবিষ্ট করিলেন। তাঁহার সৃজনের এই পরিণতি! এমন ইতর ভাষায় মনুষ্য কথা কহে? তদুপরি ইহারা নরনারী, একে অপরের পরিপূরক! ইহারা কোথায় অবাধ, সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষরূপে জীবন যাপন করিবে, তাহা নহে, দিনরাত রমণ লইয়া কাজিয়া করিতেছে।

ঈশ্বর ঠিক করিলেন, আদম ঈভের কুটিরে একজন মডারেটর নিয়োগ করিবেন। সে ইহাদের সামলাইয়া রাখিবে।

কাকে মডারেটর নিয়োগ দেয়া যায় তাহা লইয়া ঈশ্বর একটু পেরেশানিতে পড়িলেন। স্বর্গদূত কাউকে নিয়োগ দিলে ঝামেলা, উহারা জড়বুদ্ধিসম্পন্ন, আদম ঈভকে নিরস্ত করা তাহাদের পক্ষে নিতান্ত অসম্ভব। তাছাড়া তাহারা ঐ কুটিরে থাকিলে প্রচুর কুবাক্য শিখিয়া নিজেরাই বখিয়া যাইবে।

চিন্তার অবসরে অদূরে ম্যাৎকার শুনিয়া ঈশ্বর সম্বিৎ ফিরিয়া পাইলেন। দেখিলেন, অদূরে একটি পনসবৃক্ষের কান্ডে দু'টি পদ তুলিয়া দিয়া পরম আরামে পানসপত্র চিবাইতেছে আদমের পোষা ছাগুটি।

ঈশ্বরের মাথায় বুদ্ধি খেলিয়া উঠিল। তিনি ইশারায় ছাগুরামকে কাছে ডাকিয়া সমস্ত ব্যাপার জলবত্তরলম করিয়া বুঝাইয়া বলিলেন। ছাগু পিতামাতার তৃতীয় সন্তান, সে নাচিতে নাচিতে আদম-ঈভের কুটিরে গিয়া ঢুকিল।

ঈশ্বর তোয়ালা মাটিতে ছুঁড়িয়া ফেলিয়া চৌকিতে লম্বা হইলেন। দূরে হট্টগোল কিছুটা স্তিমিত হইয়াছে।

ছাগুরাম গম্ভীর মুখে আদমকে বলিল, "কোন অশালীন কথা বলিও না আদম। ঈভ, তুমিও অশালীন কথা বলিও না।"

আদম দন্ত খিঁচাইয়া কহিল, "ক্যানো রে ছাগু? তুই কোথাকার কে?"

ছাগুরাম বলিল, "আমি মডুরাম। অদ্য হইতে তোমাদের মডারেট করিব। বাজে কথা বলিলে গুঁতাইয়া দিব। এই দেখ শিং।" সে নিজের শৃঙ্গ দেখায়।

আদম মুষড়িয়া পড়িয়া বলিল, "ঈশ্বর খালি পোঁদে কঞ্চি দ্যান। স্বীয় স্ত্রীর সহিত ঝগড়া করিতেছি, তাঁহার কেন ইয়ে জ্বলে?"

ছাগুরাম ক্রুর হাসিয়া বলিল, "বাজে কথা চো*াইও না আদম। বাজে কথা চো*ানো আমি পছন্দ করি না।"

ঈভ চেঁচাইয়া বলিল, "ওরে ছাগু, তুই নিজেই তো গালাগালি করিতেছিস ...!"

ছাগু চোখ টিপিয়া বলিল, "মডুরাম হওয়ার মজাই তো ইহা! বুঝিলে মাগী?"

আদম ঈভ ঠান্ডা মারিয়া গেলো। ছাগুরাম আপনমনে খিস্তি করিতে লাগিলো। ঈশ্বর ততক্ষণে চৌকিতে শুইয়া নাসিকা গর্জন করিতেছেন।


মন্তব্য

??? এর ছবি

মজার লেখা উৎস। আরেকটা মজার বিষয়, আপনাদের চাপে আমাকে শেষমেষ আনব্যান করা হয়েছে। তারচে মজার বিষয়, আনব্যান করলেও আমার ব্লগ লেখার অপশন বন্ধ করে রাখা হয়েছে। অরূপের বোঝা দরকার, আমি ভয়ের কোনো বস্তু নই। এত যাচ্ছেতাই গালাগাল করার পরও আমি তার অনুগামী হই নি, এই দৃষ্টান্ত থেকে তার শিক্ষা নেয়া উচিত ছিল। অরূপকে ফ্যাসিস্ট হওয়ার হাত থেকে ফিরিয়ে আনুন আপনারা।

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

আপনাকে অনলাইন দেখে ইমরুলের পোস্টে মন্তব্য করে এসেই দেখি আপনার মন্তব্য। ভালো লাগলো।

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

উৎস এর ছবি

লেখাটা মুখফোড়ের। এই প্রতিভাটা লুকিয়ে আছে এখনও, লোকটা পোস্টাচ্ছে না হয়তো গোলমাল দেখে।

??? এর ছবি

ধন্যবাদ জুবায়ের ভাই। হাসি আমারো ভাল লাগছে আজ সারাদিন, জীবনে প্রথম ব্যানড হৈলাম!

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

এবং আনব্যানড! হাসি

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

??? এর ছবি

আনব্যানড, বাট নট অ্যালাউড টু ক্রিয়েট অ্যানি কনটেন্ট!

সুমন চৌধুরী এর ছবি

ওইটা আমার দোষ। বেখেয়ালে ঘটছে। বাইরে গেছিলাম। কড়া রোদ ছিল। ইউরোপের অনৈম্লামিক গ্রীষ্মকাল বড় ভালো লাগে...
.......................................
ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

উৎস এর ছবি

আসলে ব্যক্তি অরূপের সাথে পরিচয় হলে আপনি আশ্চর্য হবেন। সে রসিক, দিলখোলা, অভিমানি মানুষ। আমি ৬/৭ বছর ধরে তাকে চিনি। সমস্যা হচ্ছে প্রথম প্রথম অরূপকে ভুল বোঝার অনেক সুযোগ থাকে। সেই নিজেই সেটা করে দেয়। আপনারা প্লিজ নিজের মতো লিখতে থাকেন, এসব নিয়ে ভয় না করেই। সচলায়তনে যদি লেখা না আসে তাহলে সেটাই হবে সচলায়তনের ব্যর্থতা।

শ্যাজা এর ছবি

সুমন রহমানকে ফিরতে দেখে ভাল লাগলো।
সারাদিনে আজ এই প্রথম অনলাইন এসেই দেখি সুমন ব্যানড হয়েছেন। বেশ বিরক্তই লাগছে এসব দেখে।

সচলায়তনে সুস্থ্য ও সুন্দর পরিবেশ আশা করি।

ফালতু ক্যাচাল নয়।


---------
অনেক সময় নীরবতা
বলে দেয় অনেক কথা। (সুইস প্রবাদ)

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।