[justify]ভাবছিলাম কত আর নিজের কথা লিখা যায়। সবই লিখে ফেলেছি প্রায়, সব কথাই হয়েছে বলা। বলার মত যত কথা ছিল এতদিনে সব ফুরিয়ে তলানিতে এসে ঠেকেছে। কিন্তু জীবনটা যেন দিগন্তরেখার মত, অই যে শেষ-প্রান্তটা দেখা গেল বলে ও আসলে শেষটা দেখা যায়না কখনোই। থিসিস জমা দেয়ার পর জব হয়ে গেল বলে ভাবছিলাম জীবনে এবার বুঝি একটু স্থিরতা এলো। এই অনাবিল সুখের আকাশে ভাসতে ভাসতেই ধাক্কার মত এক টুকরো কালো মেঘ আমাকে ছু
ভাবছিলাম কত আর নিজের কথা লিখা যায়। সবই লিখে ফেলেছি প্রায়, সব কথাই হয়েছে বলা। বলার মত যত কথা ছিল এতদিনে সব ফুরিয়ে তলানিতে এসে ঠেকেছে। কিন্তু জীবনটা যেন দিগন্তরেখার মত, অই যে শেষ-প্রান্তটা দেখা গেল বলে ও আসলে শেষটা দেখা যায়না কখনোই। থিসিস জমা দেয়ার পর জব হয়ে গেল বলে ভাবছিলাম জীবনে এবার বুঝি একটু স্থিরতা এলো। এই অনাবিল সুখের আকাশে ভাসতে ভাসতেই ধাক্কার মত এক টুকরো কালো মেঘ আমাকে ছুঁয়ে ভিজিয়ে দিয়ে গেলো যেন হঠাৎ করেই। চোখে আজ তাই আঁধার দেখছি। এমন ভয়ঙ্কর একটা খবর জেনে ঠিক তার পরদিনই দেশ ছাড়তে আমার মন সরেনা। তবু চলে আসতে হয়। সেই প্রথমবার যেবার দেশ ছেড়েছিলাম সেবার ব্যাকুল হয়ে কেঁদেছিলাম নিজের জন্য, এবার কাঁদলাম আমার আড়াই-বছরের ভাগ্নেটার জন্য। পুরা চার ঘণ্টার ফ্লাইটে এক ইউরোপিয়ান আমার পাশে বসে আমাকে বারবার জিজ্ঞেস করছিল সে কোন সাহায্য করতে পারবে কিনা, আমি কিছু বলতে পারছিলামনা, হাতের তালুতে চোখ মুছছিলাম শুধু।
এয়ারপোর্ট থেকে ফিরে এসে সারাদিন কেটে গেল অকল্পনীয় ব্যস্ততায়। পিসির সামনে বসার সুযোগ করে উঠতে পারিনি। বিকেলের দিকে রুমে ফিরেই তাই ইন্টারনেট ঘাটতে বসে গেলাম। লিঙ্কের পর লিঙ্ক ক্লিক করে যাচ্ছি, কিন্তু নিরাশা ছাড়া কোথাও সেদিন আমার জন্য আশার একফোঁটা আলো ছিলনা। রাতের না ঘুমানো ফ্লাইটের ক্লান্তি, সারাদিনের দৌড়াদৌড়ির ধাক্কায় আমি আর পারছিলামনা চোখ খুলে রাখতে। দপদপ করে লাফানো কপালের শিরাগুলা যেন এক্ষুনি ছিঁড়ে যাবে। ল্যাপটপ বিছানার পাশে রেখে কখন যে বালিশে মাথা এলিয়ে ঘুমিয়ে পরেছি টের ও পাইনি। ঘুম ভেঙ্গে দেখি দিনের আলোর ছিটেফোঁটা ও নেই, বাইরে থেকে আসা আলোতে আমার রুম আধো আলোকিত, আধো অন্ধকারে ভরা। আমার উঠতে ইচ্ছে করেনা, বিছানায় আর ও কিছুক্ষণ গা এলিয়ে মরার মত পরে থাকি। হোস্টেলের এই ফ্লাটে কোন সাড়াশব্দ নাই, ফ্লাট-মেটরা সব সন্ধের ক্লাসে চলে গেছে বোধহয়। এই চার কামরার ফ্লাটে আমার বড্ড একলা লাগে, দমবন্ধ হয়ে আসতে চায় যেন। এই নীরবতা ভীষণরকমের অসহ্য ঠেকে, মনে হয় শব্দ করে কিছু একটা ভেঙ্গে ফেলি।
আমি দিন গুনতে থাকি, শুক্রবারের জন্য অধীর অপেক্ষায় সময় যেন আর এগোয়্না আমার। অবশেষে শুক্রবার ও এসে যায়। ফোনে ভাইয়া আপুর সাথে কথা হয় দীর্ঘক্ষণ। ভাগ্নেকে আজকে একজন ওটির কাছে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তিনি ও একি কথা বললেন, আমার ভাগ্নের নাকি অটিজম এর বেশ কিছু সিম্পটম আছে। এর আগে মহাখালীর সাহিকে আমি আসার আগের দিন আপুসহ গিয়েছিলাম ভাগ্নেকে নিয়ে। আড়াই-বছর হবার পর ও কথা বলছিলনা, সেই জন্যই নিয়ে যাওয়া। কিন্তু নিয়ে গিয়ে যা শুনলাম তার জন্য আমরা প্রস্তুত ছিলামনা মোটে ও। তারপর ও ওরা বললো ওরা এখন ও শিউর না তাই অটিস্টিক বেবিদের জন্য যেই টেস্ট আছে সেটা করার জন্য বলে দিলো। আমরা পরের শনিবারের স্কেজিউল নিয়ে নিলাম। আপুর ভার করা মুখের দিকে আমি আর তাকাতে পারছিলামনা। আমার সদা-উচ্ছল ভাগ্নের নিষ্পাপ মুখের দিকে তাকিয়ে আমার বুক ভেঙ্গে যাচ্ছিল, তবু ও মুখে একটা স্বাভাবিক হাসি ঝুলিয়ে রাখলাম, ভাবটা এমন যেন ওর কিছুই হয়নি।
এবার যে নয়টা দিন বাসায় ছিলাম, প্রতিটা দিন সকালের দিকে বাবা আপুর বাসা থেকে ঘুমন্ত ভাগ্নেকে এনে আমার ঠিক পাশটাতে শুইয়ে দিত। আপু এই সময়টাতে স্কুলে ছুটত, ফিরতে ফিরতে সেই দুপুর হোত তার। এই সময়টুকুর পুরাটাই কাটতো আমার ভাগ্নের সাথে। ঘুমের মাঝে আমার পাশে শোয়া ভাগ্নের ছোট হাতদুটো কখনো কখনো আমাকে আকড়ে ধরে থাকতো, মাঝেমাঝে গায়ে উঠিয়ে দিতো এক পা। এই সময় কপালে একটু চুমো দিলে মিষ্টি করে হেসে উঠতো, কখনো বা পাশ ফিরে শুতো ও ।ওর ঘুম না ভাঙ্গা পর্যন্ত আমি ওর পাশেই শুয়ে থাকতাম। ঘুম ভেঙ্গে ও কিছুক্ষণ একটু কান্নাকাটি করতো, ওই সময়টাতে ওকে কোলে নিয়ে একটু পিঠ চাপরে দিলে আস্তে আস্তে ঘুম কেটে যেত, ঠিক আদুরে বিড়ালের মত কোলের ভেতর সেটে থাকতো আমার বাবাটা। এইকদিন ওর নাওয়া, খাওয়া, ঘুম পাড়ানো, পেম্পারস বদলানোর কাজগুলা বেশ আনন্দের সাথেই করেছি। আর করবো নাই বা কেন ও তো আমার ও ছেলে। ওর বাবা বলে, ও কথা শিখলে আমাকে ছোটমা বলে ডাকবে, মেজ আপুকে মা আর বড়াপুকে বড়মা বলবে। এই ডাকটা শুনবো বলে অপেক্ষা করে আছি অনেকদিন।
ওর জন্মের আগেই দেশ ছেড়েছিলাম। বছরে এক-দুবার আসার সুবাদে কিছুটা সময় ওর সাথে কাটানো হয়েছে। আর এবার পরপর দুবার কাছাকাছি সময় দেশে আসাতে ইন্টারেকশনটা বেশিই হয়েছে ওর সাথে। ও আমাকে চিনতে শুরু করেছিল, আমার সাথে বেশ খাতির ও হয়ে গিয়েছিল আমার ভাগ্নের। কিছুতেই মানতে পারছিলামনা যে ও অটিস্টিক বেবি। যদি ও ওর লক্ষণগুলো বেশ যাচ্ছে, তবু ও মনে হচ্ছিল যে আমাদের হয়তো কোথাও ভুল হচ্ছে, ও যেন আর পাঁচটা বাচ্চার মতই স্বাভাবিক। কিন্তু আমার ভাগ্নে আই কন্টাক্ট করে খুব কম, কোন কিছু করলে সাথে সাথে মিমিক করেনা, নিজের মত খেলতে ভালবাসে, মা বাবা দাদার বাইরে মিনিংলেস কিছু শব্দ করে, সারাক্ষণ অস্থির হয়ে থাকে, কোন খেলনায় তার বেশিক্ষণ মন থাকেনা ভেঙ্গে ফেলতে চায়, একাএকাই হাসে কোন কারণ ছাড়াই। এসব লক্ষণগুলা আমি এক্কেবারে ফেলে দিতে পারিনা। কালকে সাহিকে আবার ও ওর অটিজমের টেস্ট করানো হবে। যদি ও আমরা জানি কি রেজাল্ট আসবে, তবু ও মনে হয় কোন মন্ত্রবলে যদি ওর টেস্ট নেগেটিভ আসতো, যদি এইকটা দিন শুধু একটা দুঃস্বপ্ন হত। সব জেনেশুনে ও আমার আশায় বুক বাধতে বড্ডো ইচ্ছে করে, অজানা ভবিষ্যতের ভবিতব্য আমরা কতটাই বা জানি। একটা কথা না বললেই না, আমাদের পরিবারের এই অসম্ভব মানসিক টানাপোড়নের দিনগুলাতে সহ-সচল তানিম এহসান ভাইয়ের যে আশাতীত সহযোগিতা পেয়েছি তার জন্য উনার কাছে আমার কৃতজ্ঞতার শেষ নেই।
মন্তব্য
আমি বিশেষজ্ঞ নই, তবে কেন যেন মনে হচ্ছে আপনার ভাগ্নে অটিজমে আক্রান্ত নয়। আই কন্টাক্ট কম, নিজের মত খেলে, কিছুক্ষন খেলার পর খেলনা ভেঙ্গে ফেলে অন্ততঃ এই তিনটি লক্ষন কে আমি স্বাভাবিকই বলব। ওর সুস্বাস্থ্যের জন্য শুভকামনা।
আমি নিজে ও বিশেষজ্ঞ নই, তবে বিভিন্ন ওয়েবসাইটগুলাতে উল্লেখ করা লক্ষনগুলা ওর সাথে মেচ করে যাচ্ছে, আর দু জায়গায় তো অলরেডী দেখানো হোল দুজায়গায়ই কাছাকাছি মতামত পাওয়া গেছে।
আমারও মনে হয় না অটিস্টিক। অনেক বাচ্চা নিজের মতো খেলতে পছন্দ করে। আর আগেভাগে ডায়াগনোজ করে কিছু সাহায্যের ব্যবস্থা করলে এই দূর্বলতাগুলো সারানো যায়।
তবে আর যাই করুন, "আমার বাচ্চা অটিস্টিক নয়" এইরকম গোয়াতুর্মিতে না থেকে যথাযত পরীক্ষা এবং সাহায্যের যোগাড় করাই ভালো।
'"আমার বাচ্চা অটিস্টিক নয়"এইরকম গোয়াতুর্মিতে না থেকে যথাযত পরীক্ষা এবং সাহায্যের যোগাড় করাই ভালো'। এই ভয়েই তো ওকে থেরাপিস্ট এর কাছে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ভাইয়া, যাতে যদি ও অটিস্টিক বেবি নাও হয় তবু ও আমরা কোন চান্স নিতে চাইনা । আর বাচ্চার অটীজম আছে কিনা এটা আইডেন্টিফাই করা হয় মাবাবার স্টেটমেন্ট এবং অব্জারভেশন এর উপর ভিত্তি করে কারণ অনেক বাচ্চার ভিজিবল অটিজম ব্যাপারটা থাকেনা।আমার ভাগ্নের ক্ষেত্রে ওনারা Asperger syndrome, এর কথা বলছেন এখন পর্যন্ত।এখন থেরাপিস্ট এর কাছে রেগুলার সেশন করলে বোঝা যাবে ঠিক ওর প্রব্লেমটা কোন স্টেজে।
আমরাও চাই টেস্ট রেজাল্ট নেগেটিভ আসুক। মানসিক টানাপোড়েনের এই সময়টাতে সাহস হারাবেন না !
ইনশাল্লাহ সব ঠিক হয়ে যাবে।
চেষ্টা করছি ভাইয়া নিজের মনবোল ধরে রাখতে, বোনকে সাহস যোগাতে। সব ঠিক থাকুক এই কামনা আমার প্রতিনিয়ত।
কেন যেন মনে করে নিতে ইচ্ছে করছে আপনার ভাগ্নেটি সুস্থ আছে পুরোপুরি- অনেক বাচ্চাই তো আছে দেরী করে কথা বলতে শুরু করে, খেলে একা একাই, এমন কি পিচ্চিসুলভ হাত পা ছোড়াছোড়িও অত করে না। এখনই হাল না ছেড়ে অপেক্ষা করুন আরো- আর তার চাইতে বড় কথা, যতদূর জানি- অটিজম নিরাময়যোগ্য এবং এই শিশুরা প্রতিভাবান হয়। ওর জন্য অনেক অনেক দোয়া।
~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...
সব ধারনাগুলা ভুল প্রমানিত হোক, আমি ও মনেপ্রাণে তাই চাই মর্ম ভাই। অটিজম নিরাময়যোগ্য হলে ও যতটুকু জেনেছি তাতে বাংলাদেশে কিছু কিছু জায়গায় ছাড়াছাড়াভাবে কেউ কেউ কাজ করছে এটা নিয়ে।কতখানি সাপোর্ট পাওয়া যাবে এখন ও বুঝে উঠতে পারছিনা।
নিশ্চয়ই ভাল খবর আসবে, জানিয়েন আমাদের, আর শক্ত থেকেন বাকী সবার জন্য।
facebook
সেটাই যেন হয় অনুদা, ভাল খবর আসুক এই প্রত্যাশা আমার ও।
বাবার জন্য শুভকামনা।
সাহস রাখেন, সব ঠিক হয়ে যাবে।
জীবনে সব কিছু তো আর আমাদের ইচ্ছে মত হয়না,কি আর করার আছে বলেন।
তারপরও দোয়া করি ছোট্ট বাবাটার রিপোর্ট যেন নরমাল আসে।
সাথে থাকার জন্য ধুন্যবাদ পুেপ।আপনাদের দোয়ায় আমার বাবাটা যেন ভাল হয়ে যায়।
ও সুস্থ হোক, সুস্থ হোক। আর কিছুই বলতে চাইনা।
এই লেখা পড়ে আমার কান্না পাচ্ছে। কারণ আমার দশ বছরের ছোট্ট কাকাতো ভাইটা অটিস্টিক। ও যে কেমন করে কি করে, বলে বুঝাতে পারবো না। না পারে পরিচিত জগতকে মেনে নিতে, না পারে কোন সাঙ্কেতিক বিষয়ে নিজেকে মেলে ধরতে। খায় কি? কিছুই না প্রায়। ওর কোন বায়না নেই, কোন ইচ্ছে নেই-- যেন একটা হেঁয়ালি কিংবা ঘোরের মধ্যে থাকে। সারাদিন আপন খেয়ালে কেটে যায় তার। সারা বাড়িতে একমাত্র আমার সাথে ওর ভাব। বাসায় থাকলে ও আমার কাছেই থাকে, আমার সাথে খায়, ঘুমায়। কিন্তু ওর অনেক কথাই আমি বুঝিনা। কান্না পায় তখন। আধো আধো জড়ানো ভাষায় কি যেন আমারে বলতে চায়। তখন ওকে জড়িয়ে ধরে কিছুক্ষন কেঁদে নেই, কিংবা আদর করে দেই। কাকার সাথে ও ফ্রি। আর মাকে ও প্রায় দেখতেই পারেনা, কথাও বলেনা মায়ের সাথে। দুই বছর আগে ওকে স্কুলে ভর্তি করা হল, এইবারের এক্সাম এর খাতায় ও গোল্লা গোল্লা দাগ এঁকে দিয়ে এসেছে। জিজ্ঞাসা করতেই ওর কি রাগ। শেষে আমাকে এসে বলল- বদ্দা আমি নিখছি তো দ্যাখ, বলে আমাকে খাতা দিয়ে একটা হাসি দিল। সেই হাসিতে যে মিলিয়ন ডলারের স্নিগ্ধন্তা মিশে আছে, সেই হাসির জন্য আমি প্রান দিতে পারি।
ডাকঘর | ছবিঘর
আপনার ভাইটার জন্য অনেক অনেক শুভকাম্না তাপসদা।ও কি কোন থেরাপী নিচ্ছে??
ও যখন ছোট ছিল তখন থেকে ওর সমস্যাগুলি এত প্রকটভাবে ধরা দেয়নি। সবাই ভেবেছিল যে অনেক ছেলেমেয়েই আছে যাদের স্বাভাবিক বিকাশ একটু দেরিতে শুরু হয়। কিন্তু পাঁচ ছয় বছরেও যখন সামান্য গ্রোথও শুরু হল না তখন দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়। বিভিন্ন ডায়গানেস্টিক সবপ্লটে ম্যানুয়াল ট্রিটমেন্টগুলি শুরু করা হয়েছে, চলছে এখনো কিছু কিছু করে। কিন্তু রি-এক্সেন এর মাত্রা প্রায় পয়েন্ট সামথিং এর ঘরে। ডাক্তাররা আজ এইকথা বলে তো কাল সেই কথা! বিব্রত হয়ে যাই আমরা। আর বলছিলাম না, ও অন্যান্য অটেস্টি বাচ্চাদের চেয়ে খানিকটা আলাদা। ওর অনুভূতিগুলি ম্যান টু ম্যান ভ্যারি করে। আসলে একটা চিরস্থায়ী অসহায়ত্ব নিয়ে এরা জন্মেছে, কি আর করা যায়।
আবারও আপনার ভাগ্নেটির জন্য ভালোবাসা এবং শুভকামনা জানিয়ে গেলাম। ওরা স্পেশাল হয়, সত্যি...
ডাকঘর | ছবিঘর
আমার অটিজমে আক্রান্ত এক কাজিনকে খুব কাছ থেকে দেখেছি ওর ছোটবেলায়। আই কন্ট্যাক্ট না করা বা মিমিক না করা ব্যাপারগুলো ঐ বয়সী বাচ্চাদের ক্ষেত্রে স্বাভাবিক না হলেও খুব একটা পাত্তা দেইনি আমরা কেউই। দুই বছর বয়সে যখন ওর কথা বলা শেখার কোন লক্ষণই দেখা যাচ্ছিলো না তখন আমার নানী প্রথমে বলেন এটা খুব একটা স্বাভাবিক না। তারপর অনেক ডাক্তার, দৌঁড়ঝাপ শেষে জানা গেল এই ফুটফুটে ছেলেটা আসলেই অটিজমে আক্রান্ত। অনেক অটিস্টিক বাচ্চাই কথা বলতে পারে কিন্তু ঠিক স্বাভাবিকভাবে নয়, কিন্তু কাজিন তাদের দলেও ছিল না। ও কথাও বলে না। এখন ওর বয়স সাড়ে সাত বছর।
আশা করছি আপনার ভাগ্নের টেস্টের রেজাল্ট নেগেটিভ আসবে। যদি পজিটিভও আসে ভেঙ্গে পড়বেন না। ঢাকাতে তাও বেশকিছু সুযোগ সুবিধা পাওয়ার কথা। রংপুরে আমার কাজিনের জন্য আমরা তেমন কোন সহায়তাই পাইনা।
ঢাকাতে বেশ কজায়গায় দেখলাম অটিজম নিয়ে কাজ করা হচ্ছে, তবে ঠিক ভরসা পাচ্ছিনা। ভুল ডায়াগনোসিস ও হয় মাঝে মাঝে। আপনাদের শুভকামনা আমা্র ভাগ্নের পাথেয় হোক।
বাংলাদেশের খুব বড় একটা ফ্যাশন হাউজের কর্ণধারের বাচ্চা হওয়ার পরে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে অনেকটা সময় পার হয়ে গেলো, কিন্তু বাচ্চার দাঁত উঠলো না। তাই নিয়ে তো উনার স্ত্রী মহা চিন্তিত। দাঁত কি তবে উঠবে না?
স্বামী বললেন চিন্তা করো না, এমন মানব এখনো জন্মেনি যার দাঁত নাই, ঠিক হয়ে যাবে। একসময় ঠিক হয়েও গেলো।
কিছু কিছু ক্ষেত্রে সময় কম বেশি লাগতে পারে, আশাকরি স্বাভাবিক হয়ে যাবে
শুভকামনা রইলো
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
আপনার আশঙ্কা সত্য হোক নজু ভাই।
আত্মীয় বন্ধু মহলে কিছু অটিস্টিক বাচ্চা দেখেছি, যে সিম্পটমগুলো বললেন সেগুলোই দেখা যায় অল্প বয়সে। যত আগে ডায়াগনসিস করা হয় তত বেশি সময় পাওয়া যায় বাচ্চা আর বাবা মাকে ট্রেইন্ড করে তার জীবনটা সহজ করে তোলার জন্য। এই লিঙ্কটা দেখতে পারেন।
http://rapsupport.org/2012/02/02/non-verbal-autistic-girl/
একজন অটিস্টিক কিশোরী কম্পিউটারে টাইপ করে নিজেকে প্রকাশ করেছে অটিস্টিক মানুষের মাথার ভিতরটা কিভাবে কাজ করে। অটিস্টিক শিশুদের মস্তিষ্ক আর সাধারণ মানুষদের চে অনেক বেশি ক্ষমতাসম্পন্ন। এই অস্বাভাবিক ক্ষমতাটা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না বলেই তারা অমন করে। ট্রেইনিং এর মাধ্যমে এই ক্ষমতাটা নিয়ন্ত্রণ করতে শিখলেই তারা কোন একটা মাধ্যমে অসাধারণ প্রতিভার স্বাক্ষর রাখতে পারে। আমার অটিস্টিক কাজিন সংখ্যা সংক্রান্ত যেকোন ব্যাপারে ওস্তাদ। আরেক শিশুর কথা জানি পিয়ানো বাজানোর জাদুকর। অর্থনীতির শিক্ষক আরেক বাবা তার অটিস্টিক শিশুকে শেয়ার মার্কেট বুঝিয়ে দেয়ার পর সে নাকি ১২ বছর বয়সেই অনলাইনে শেয়ার ব্যাবসা চালায়। ওদের ব্রেইনকে এনগেজড রাখতে হয়। কোন একদিকে চ্যানেলড করতে হয় ব্রেইন পাওয়ারকে।
আর অটিজমের লেভেল আছে, একটা স্কোর থাকে। মাইল্ড অটিজম হলে সেটা নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসা সহজ, বিশেষ স্কুলে পড়াশোনা করলে পূর্নবয়স্ক হতে হতে সে মোটামুটি সমাজে খাপ খাইয়ে কিভাবে বসবাস করতে পারবে তার জন্য প্রস্তুত হয়ে যায়। তবে বাবা মা ও পরিবারের প্রচুর ধৈর্য্য লাগবে। শুভকামনা রইল।
~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~
হুম যত পড়ছি, এই ব্যাপারটা নিয়ে আর ও জানতে পারছি শিশিরকণা।এই তথ্যগুলা আমার নজরে ও এসছে। অনেক ধন্যবাদ ভিডিওটা শেয়ার করার জন্য।
শুভকামনা। আশাকরি ভালো খবর আসবে।
আমার ও একি প্রত্যাশা উদাসদা।
আমার সমস্ত শুভকামনা রইল ওর প্রতি।
টেনশনে থাকলাম।
খবর দিয়েন।
এত কিছু বুঝি না। ওর জন্য শুভ কামনা। ইনশাআল্লাহ ঠিক হয়ে যাবে সব।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-
ফেসবুক -.-.-.-.-.- ব্যক্তিগত ব্লগ
বাচ্চাদের মন খারাপ করা খবর শুনলে কখন যে নিজের মনটা খারাপ হয়, সেটা বুঝতেই পারি না। মন ভালো করা খবর আসবে নিশ্চয়, সেটাও জানাবেন অবশ্যই।
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
এবিষয়ে আমার কারিগরী জ্ঞান নেই, তবে আমার কাছে যে তথ্য রয়েছে তার ভিত্তিতে আপনাকে অনুরোধ করব ভাগ্নেকে একবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিকাশ কেন্দ্রে নিয়ে যান। আমার সম্মানিত স্ত্রী পেশায় একজন ক্ষুদ্র চিকিৎসক এবং এসকল শিশুদের নিয়ে কাজ করে। তার কাছ থেকে জানতে পেরেছি ডঃ নারায়ন সাহেবের কথা যিনি শিশু বিকাশ কেন্দ্রের শিশুদের চিকিৎসা দিয়ে থাকেন। আর ডঃ নারায়ন সাহেব এবিষয়ে যথেষ্ট দক্ষ। ওঁর জন্য দোয়া রইল।
বন্দনাদি, আপনি আপনার ভাগ্নের যে লক্ষনগুলোর কথা বললেন তাতে ওর অটিস্টিক হওয়ার সম্ভাবনা খুবই অল্প। ইদানীং অনেক বাচ্চাদেরই এ ধরনের লক্ষন দেখা যাচ্ছে। সেক্ষেত্রে ডাক্তাররা উপদেশ দেন বাচ্চার সাথে বেশি বেশি কথা বলতে হবে, টিভি কম দেখাতে হবে, বাবামাকে বাচ্চাকে বেশি সময় দিতে হবে, বাচ্চার আশেপাশে তার সমবয়েসি বাচ্চার উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে বাবামাকে ছোট একটা ট্রেনিং করানো হয় সবকিছু বুঝিয়ে দেয়ার জন্য। অনেক বাচ্চাকেই আমি পুরোপুরি সুস্থ হয়ে যেতেও দেখেছি। তাই ভয়ের কিছুই নেই।
এরপরও যদি ও অটিস্টিক হয়ে থাকে আমার ধারনা সেটা খুব মাইল্ড লেভেলের। একটু ধৈর্য ধরে চিকিৎসা করিয়ে সেটা নিরাময় সম্ভব। আমাদের সবার মধ্যেই অনেক ধরনের অস্বাভাবিকতা থাকে। অটিস্টিকরা সে তুলনায় অনেক মেধাবী আর ভাল মনের মানুষ হয়। এদেরকে নিয়ে একটাই সমস্যা সেটা হল এদের ব্যপারে পরিবারের সবাইকে একটু বেশি যত্নশীল হতে হয়। বর্তমানে বিএসএমএমইউ তে নিউরোমেডিসিন বিভাগের তত্ত্বাবধানে অটিজম সেন্টার খোলা হয়েছে। সেখানেও কথা বলে দেখতে পারেন।
আবারও বলছি আমার ধারনা ও অটিস্টিক না। প্রার্থনা করছি যেন না হয়। আপনি মন খারাপ করেন না। শুভকামনা রইল।
ভালো খবর আসুক সেই কামনা করি ।
ভাগ্নের জন্য ভালোবাসা ও শুভকামনা।
আমাদের আগামীর কাণ্ডারি একটা শিশু সুস্থতার বাইরে থাকবে এটা মানতে পারি না কোনভাবেই। আমার কেন যেন মনে হয় ও অটিস্টিক হবে না। জানি না কেন এমন মনে হয়।
ওর জন্যে সবটুকু শুভকামনা রইলো।
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
কিছু বাচ্চার দেরীতে কথা বের হয়, কারণ জানি না, কিন্তু তার মানে অটিস্টিক নাও হতে পারে। আমার ছেলেও সেই বয়েসী, সেও কথা বলছে দেরীতে। আপনার ভাগ্নের টেষ্টে সুখবর থাকবে বলে আশা রাখছি। বাবুটার জন্য অনেক শুভকামনা।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
নতুন মন্তব্য করুন