জয় করে এলাম মারিয়া-হাম

বন্দনা এর ছবি
লিখেছেন বন্দনা [অতিথি] (তারিখ: সোম, ০২/০৭/২০১২ - ৮:২৯অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

কদিন আগেই কনফারেন্সের বাহানায় সদ্য ঢোকা অফিস থেকে গাদা-খানিক ছুটি বাগিয়ে নিলাম। এইবারের গন্তব্য ছিল স্টকহোম। আমার বন্ধু রঞ্জু ওখানেই থাকে, ওকে জ্বালানোর এই মারাত্মক সুযোগ হাতছাড়া করাটা ভীষণ অন্যায় হয়ে যেত। যাবার আগেই আর এক দোস্তকে অনলাইনে জ্বালিয়ে মারলাম যেন স্টকহোমে এসে আমার সাথে যোগ দেয়। অবশেষে আমার ক্রমাগত ঘ্যনঘ্যন প্যনপ্যান সহ্য না করতে পেরে ইতালি থেকে স্টকহোমে উড়ে চলে আসবে বলে টিকেট করে ফেললো সুজীব। ভিয়েতনামীস ল্যাব-মেট ডাং ও এবারের কনফারেন্সে জয়েন করলো আমার সাথে। লোকে কনফারেন্স শেষ করে ঘোরাঘুরি করে, আমার কাহিনী পুরাই উলটা। আমি আর ডাং মিলে কনফারেন্সের আগেই ঘোরাঘুরির একটা ছোট্ট কিন্তু টাইট স্কেজুয়েল দাঁড় করিয়ে ফেললাম। এইবারের প্ল্যানে ছিল বুদাপেস্ট, ভিয়েনা, প্রাগ, আর কন্সটেঞ্জ, সাথে তো স্টকহোম থাকছেই। দুইবন্ধুকে এই স্কেজিউলে ফিট করার আদ্যপন্ত চেষ্টা করে ব্যর্থ হলাম। অবশেষে আমি আর ডাং মিলেই ঘুরতে যাবো এমনটাই ঠিক হল।তো স্টকহোম পৌঁছেই সেদিনই আবার ডোমেস্টিক ফ্লাইট নিয়ে বুদাপেস্ট চলে গেলাম। সবকিছু ঘুরে ঠিক কনফারেন্স যেদিন শুরু হবে তার আগের-দিন জার্মানির কার্লসরুহে থেকে উড়াল দিয়ে আবার স্টকহোমে ফেরত এলাম দুপুরে।

বিকেলের দিকে প্রিকনফারেন্স ডিনার এটেন্ড করতে গেলাম নোবেল মিউজিয়ামের ঠিক মুখোমুখি বসানো ওল্ড-টাউনের একটায় রেস্তোরায়। ডিনার শেষে ফেরত আসছি পাশ থেকে কে যেন বলে উঠলো সি ইজ ফ্রম বাংলাদেশ অ্যান্ড সি ইজ ডুয়িং হার পিএইচডি ফ্রম...।এ, কথা কানে আসতেই আমি ঘুরে পিছু ফিরে দেখলাম, কে আমাকে মনে রাখলো আবার। এগিয়ে গিয়ে সলজ্জ হেসে বললাম হুম আমিই সেই কিন্তু তোমাকেতো আমি ঠিক মনে করতে পারছিনা, গতবার কি তোমার সাথে আমার পরিচয় হয়েছিল। আমাকে মনে করিয়ে দিল উনি পোল্যান্ড এর অয়ারসো ইউনি থেকে আসছে। আমি বললাম, হু হু তোমাকে মনে পড়েছে আমার। আমি শুধু স্পেশাল কিছু মানুষকে মনে রাখি, ইউ আর ওয়ান অফ দেম, এই বলে পোলিশ লুল প্রফেসর আমাকে চোখ টিপি দিল। আমি হেসে দিলাম, মনে মনে বললাম, বুড়া হইছো তবু ও লুলামি যায়না তোমার। এরপর লুল প্রফেসর এর সাথে কিছুক্ষণ গল্প করে বাইবাই জানিয়ে বন্ধুদের কাছে ফিরে আসতেই পচানি খেলাম প্রফেসরের লুলামির জন্য।

গরীব ছাত্রী হিসেবে বলে কয়ে এইবার কনফারেন্স থেকে কনফারেন্স ফি প্রায় সাড়ে ছয়শো ইউরো মাফ করিয়ে নিয়েছিলাম। আমাকে বলা হল, তুমি যদি কামলা(স্টুডেন্ট এসিস্ট্যান্ট) খেটে দিতে রাজী থাকো তোমাকে ফিস মওকুফ করে দেয়া যেতে পারে। বাকুম-বাকুম করতে করতে রাজী হয়ে গেলাম। কামলা দেয়া মানে ওরাল সেশনে কেউ প্রশ্ন করলে আমাকে মাইক্রোফোন দিয়ে আসতে হবে এইটুকুই। কনফারেন্সে ভালোমতোই কামলা দিলাম। কনফারেন্সের প্রেসিডেন্ট ও এসে একবার জিজ্ঞাসা করে গেল আমার কোন অসুবিধা হচ্ছে-নাতো, সম্ভবত হবু ডাক্তরআফারে কাম করতে দিয়ে তাদের একটু খারাপ লাগতেছিল। কনফারেন্সের তৃতীয়দিনের মাঝরাতে সু মিলান থেকে এসে যোগ দিল আমাদের সাথে। সু্জীব পৌঁছাতেই তিন-দোস্ত মিলে সেন্ট্রাল স্টেশনে রাত একটায় একরম সোরগোলই তুলে ফেললাম। হইচই করতে করতে রঞ্জুর রুমে ফিরে এসে ভীষণ ঝাল দিয়ে রান্না করা মুরগী-আলু ঝোল আর তেলাপিয়া ফ্রাই দিয়ে সাপার করে ফেললাম।

DSCF7367
DSCF7368
DSCF7376
DSCF7377
DSCF7419

গতবছর ইউরোপে আসলে ও ফিনল্যান্ডের ক্রুজট্রিপ করা হয়ে উঠেনি সময়ের অভাবে। এবার রঞ্জু তাই আগে থেকেই এই ট্রিপের জন্য ভ্যনভ্যন করে আমার কান পচিয়ে ফেলছে, অগত্যা কনফারেন্স শেষের দিন বাং মারব বলে ওকে ট্রিপের এরেঞ্জ করার জন্য বলে দিলাম। সময় স্বল্পতার জন্য কাছের একটা দ্বীপে গিয়ে সেদিনই আবার ফিরে আসার বুকিং দিয়ে ফেললো রঞ্জু এবং অতি-অবশ্যই এই ট্রিপের স্পন্সর সে নিজে। তো পরদিন কনফারেন্স থেকে তড়িঘড়ি ফিরে ব্যাগ গুছিয়ে আমরা চারজনে বেরিয়ে পরলাম। ডাং চলে যাচ্ছে কোপেনহেগেনে ওর চাচাদের সাথে দেখা করতে, আমরা তিনটা স্লুসান যাচ্ছি ক্রুজ ধরতে।

DSCF7501
DSCF7498
DSCF7422
DSCF7386

জাহাজে চেক-ইন করে খুঁজে খুঁজে নিজেদের কেবিন বের করে ফেললাম, জিনিসপাতি কেবিনে রেখে দৌড়ে একদম জাহাজের ছাদে চলে এলাম। জাহাজ ছাড়বে সন্ধ্যে ছটায়, আমরা বেশ আগেই চলে এসছি, হাতে তখন ও মিনিট পনের মত বাকী, ঝপাঝপ আশেপাশের ছবি তুলা শুরু করে দিলাম আমি আর সুজীব। জাহাজ থেকে স্টকহোমের ভিউটা বেশ লাগছিল।। আমি আর সু্জীব মারাত্মক এক্সাইটেড, রঞ্জু বেশ কবার ক্রুজে এসছে বলে সে বেশ চুপচাপ। আমি আর সু্জীব এতবড় জাহাজে কখন ও চড়িনি জীবনে। ঘুরে ঘুরে ধবধবে সাদা জাহাজটা দেখছিলাম আর ক্লিক ক্লিক ছবি তুলছি। হাতের কাছে এক খেজুরের দেশে( রঞ্জুর ভাষ্যমতে ইরান দেশের মানুষরা নাকি খেজুরের দেশের) বালক পেয়ে তিনজনের ফটো তুলে দিতে বললাম। সেই বালক ক্যামেরা হাতে পেয়ে মোটামুটি আমাদের তিনজনের বেশ কিছু ফটো-সেশন করে দিল কয়েকটা এঙ্গেল হতে। এবার ক্যামেরা ফেরত পেয়ে আমরা সলো ফটো-সেশন শুরু করলাম একেকজনের প্রোফাইল পিকচার কিংবা কে জানে কার কার ও আবার বিয়ের ফটোক কিনা। এইসব করতে করতে জাহাজ ছেড়ে দিল, বন্দর হতে ধীরে ধীরে যখন জাহাজ বাল্টিক সীর গভীর থেকে গভীরে যেতে লাগলো আমরা আনমনা হয়ে দেখতে লাগলাম এই অপার সৌন্দর্য আর সেগুলা ক্যামেরার ফ্রেমে বন্দি করতে ব্যস্ত হয়ে গেলাম। দুপাশে কিছুক্ষণ পরপর ছোট ছোট দ্বীপ পরছিল, ওগুলাতে আবার চোখে পড়ার মত ছোট্ট ছোট্ট কিছু বাড়ি, রঞ্জুর মুখে শুনলাম সুইডেনের অনেকেরই নাকি এরকম দ্বীপে বাড়ী আছে। মানে অনেক লোকই দ্বীপ কিনে নিজের জন্য বাড়ী করে ফেলছে। কি যে হিংসে হচ্ছিল যখন শুনলাম এই ব্যাপারটা বেশ কমন ও নাকি এইখানে। যাদের এমন দ্বীপ-বাড়ি আছে, সবারি আবার নিজস্ব বোট আছে আসাযাওয়ার জন্য। কি ভাগ্যবান একেকজন মানুষ এরা ভাবতেই অবাক লাগলো, কিছুটা মন খারাপ ও। বারবার মনে হচ্ছিল ঈশ আমার যদি একটা একার দ্বীপ থাকতো, মন খারাপ হলেই চলে আসতাম।

DSC02754
DSC02722
DSC02715

DSCF7491

আমাদের মতই এমন উচ্ছ্বসিত আর ও কিছু মানুষ দেখলাম যারা ক্রমাগত আশেপাশের ছবি তুলে যাচ্ছে। সাদা ধবধবে জাহাজ সিনড্রেরেলা আমাদের নিয়ে তখন তরতর করে এগিয়ে চলছে আশেপাশের সব ফেলে ফিনল্যান্ডের কোন একটা দ্বীপ মারিয়া-হামের দিকে। আকাশটা বেশ মেঘলাই বলা চলে, ছবিগুলাতে ও মেঘলা আকাশের বিষণ্ণতা ভর করেছে যেন থেকে থেকে। যতদূর চোখ যায় ছোট ছোট অসংখ্য দ্বীপ। এসব পাথুরে দ্বীপগুলাতে সবুজ গাছের ছড়াছড়ি যেন। পাশ দিয়ে চলে গেল আর ও কিছু জাহাজ। আমরা চেয়ার টেনে ডেকে বসে যাই কিছুক্ষনপর, ছবি তোলায় বিরতি দিয়ে চোখ দিয়ে এবার নীল সাগর আর সবুজ দ্বীপের সৌন্দর্য গিলতে থাকি। সুন্দরের সাথে মন খারাপের কোন সম্পর্ক আছে কিনা জানিনা,কিন্তু আমার অযথায় মন কেমন করতে থাকে। আর ও কিছুক্ষণ পর জাহাজ যখন গভীর সাগরে ঢুকে পড়লো, চারিদিকে পানি ছাড়া কিছু দেখা যাচ্ছিলোনা। হাওয়ার জোরে আর ডেকে বসা যাচ্ছিলোনা, বন্ধুদের তাড়ায় উঠতে হল। নিচে নেমে জাহাজের শপটাতে গিয়ে ঢুকলাম।এখানে ট্যাক্স-ফ্রি বলে নাকি কিছু লোক জাহাজে আসে শুধুমাত্র শপিং করার জন্য। আমি মনোযোগ দিয়ে দেখতে লাগলাম কি কি কেনা যায়। যেটায় হাত দেইনা কেন আগুন গরম দাম, আমি তাই দেখেই চোখ জুড়ালাম। ইতোমধ্যে ওরা দুইটাই মিলে হাল্কা স্ন্যাক্স আর ড্রিঙ্কস কিনে ফেলসে। দাম চুকিয়ে আমরা কেবিনে ফেরত আসি।

ততক্ষণে সবারি খিদে পেয়ে গেছে দেখলাম। রঞ্জু বাসা থেকে রাইস, চিকেন, আর ব্রেড প্যাকেট করে নিয়ে এসছিল। আমি প্যাকেট খুলে নিয়ে ওদেরকে দিয়ে নিজে ও খাবার নিলাম। খেতে খেতে আড্ডা মারছিলাম তিনটায় মিলে, কে কাকে কত পচাতে পারে এইসবই চলছিল। কি করা যায় এরপর এটা নিয়ে আলোচনা চলছিল খেতে খেতেই। ঠিক হল মুভি দেখবো, রঞ্জু ল্যাপটপে আমেরিকান পাই রি-ইউনিয়ন নিয়ে এসেছিল, খেয়ে সেরে আমরা মুভি দেখতে বসে গেলাম। অর্ধেক মুভি দেখেই রঞ্জু বললো চল উপরে যাই মজা দেখে আসি। আমি আর সু্জীব ও এককথায় রাজী চল, কি দেখতে হবে। এইবার কেবিন থেকে বের হয়ে এপথ ওপথ ঘুরে রঞ্জু আমাদেরকে জাহাজের বারে নিয়ে এলো। সেখানে একদল মিউজিসিয়ান গান করে যাচ্ছে ক্রমাগত, সাথে সামনের জায়গাটুকুতে অনেক মানুষজন নাচানাচি করছে। এদের মাঝে বেশিরভাগই বুড়োবুড়ি এদের কিছু করার নাই, তাই উইকডেতে প্লেজারট্রিপ করছে। বেশ কিছু কাঁপলকে দেখলাম জড়াজড়ি করে নেচে যাচ্ছে। অল্প কিছু তরুণ তরুণী আছে এদের মাঝে। তিনচারটা মেয়েকে দেখলাম নিজেরা নিজেরাই নাচছে। একজন মাকে চোখে পড়লো আমার যিনি তার তার ছোট্ট ছেলেকে নিয়ে নাচছে। বসে বসে গান শুনলাম আর নাচ উপভোগ করলাম বেশ খানিকক্ষণ। এরপর রঞ্জু জানালো পিকচার আভি বাকি হে। আমরা বার থেকে বের হয়ে আবার চিপাচপা দিয়ে গিয়ে পৌঁছলাম কারায়কের জায়গায়। বুঝলাম রঞ্জু বেশ কবার এসে জাহাজের সব চিপা-চাপা ভেজে খেয়ে ফেলেছে। এখানে দেখলাম স্বল্পবসনা এক্কেবারে টিনেজ কিছু মেয়ে নেচে-কুদে কারায়কের সাথে গলা মেলাচ্ছে। এদের আশেপাশে ঘিরে দাঁড়িয়ে আর ও একপাল টিনেজ পোলাপান এদেরকে উৎসাহ দিয়ে চলেছে। রঞ্জু আমার সাথে কতক্ষণ ঘ্যানঘ্যান করলো, যা গিয়ে রবীন্দ্রসংগীত গেয়ে আয় ওখানে, ফাউলটার উপর মেলা চেতে গেলাম। একবার তো হাত ধরে হ্যচকা টান দিয়ে আমাকে স্টেজে পাঠানোর অপচেষ্টা চালালো, আমার চিকনি কণ্ঠের বেশ জোরালো একটা চিৎকারে আশপাশের লোকে ফিরে তাকালে বেচারা লজ্জা পেয়ে গেল। সাথে আমি ও, এমন গাধীর মত চিৎকার না করলে ও পারতাম।বাচ্চা-মেয়েগুলার এইসব পোলাপান-সুলভ কাজকামে ব্যাপক মজাই লাগছিল। আমার বন্ধু দুটার জন্য একটু খারাপই লাগছিল, আশেপাশে এত সুন্দর সুন্দর বালিকা, কিন্তু বেচারারা আমার যন্ত্রণাতে ঠিকমত লুল ফেলতে পারছিলনা।রঞ্জু তো একবার বলেই বসলো, এইটারে নিয়ে আসা এক্কেবারে ঠিক হয়নাই, আমি শুনে মিটিমিটি হাসি। রাত বাড়ছিল আমরা তাই নিচে কেবিনে ফিরে এলাম। মাঝে একবার জাহাজের ডোর খুলে বাইরে গেলাম অল্পক্ষণের জন্য। হাড়কাপানো বাতাসের তোড় সামলাতে না পেরে ফেরত আসতে বাধ্য হলাম। অন্ধকার হয়ে যায়নি পুরাপুরি, হাল্কা আলোতে এই মাঝ-রাত্রিতে ও সমুদ্রের নীলচে আভাস অল্প হলে ও পাওয়া যাচ্ছে। রুমে এসে সু্জীব আর রঞ্জু মিলে আবার রিইউনিয়ন নিয়ে পরলো। আমেরিকান পাই রিইউনিয়ন চুলায় যাক, স্লিপিং বার্থে উঠে পরে ঘুমানোর এন্তেজাম করে ফেললাম। এরপর দুটায় মিলে কি করেছে জানিনা, ঘুম ভাঙ্গলো সু এর ডাকে, আরে উঠ, আর কত ঘুমাবি, জাহাজতো নোঙ্গর করছে মারিয়া-হামে। তড়িঘড়ি উঠে পড়ে হাতমুখ ধুয়ে তৈরি হয়ে নিলাম মারিয়া হামের বুকে পা রাখবো বলে। জাহাজ থেকে বের হবার মুখে ছেড়ে যাবার সময়টা জেনে নিলাম। আমি আর রঞ্জু একটু তেনাভেনা করছিলাম নামলে যদি আর উঠতে না পারি তো পরদিন সকালে আমার ফ্লাইট মিস হয়ে যাবে। জাহাজ মারিয়া-হামে ঘণ্টা দুয়েকের মত থাকে, এর মাঝে যাত্রী নামানো উঠানো সেরে আবার সুইডেনের উদ্দেশে যাত্রা করে। আমাদের হাতে তখন ছিল পঁয়তাল্লিশ মিনিটের মত। নিচে নেমে এই সময়ের মাঝেই ফিরে আসতে হবে নইলে আমার কপালে খারাবি আছে। কিন্তু সু্জীব নামবেই, মারিয়া-হামের বুকে পা না রেখে সে নাকি ফেরত যাবেনা। অগত্যা কি করা, মারিয়া হামের বুকে পা রাখতে আমি আর রঞ্জু ওর পিছু নিলাম। অবশেষে নিচে নামলাম। মারিয়া হামের মাটিতে পা রেখে তাকে জয় করলাম আমরা তিনটায়, কিন্তু দেশের কোন পতাকা পুঁতে দিয়ে আসতে পারলামনা, এই দুঃখ কই রাখি। এরপর আর ও কিছু ফুটকাফাটকা ছবি তুলে পনের মিনিট বাকি থাকতে আবার জাহাজে উঠে স্বস্তির নিঃশ্বাস ছাড়লাম।
DSCF7509
DSCF7525
DSCF7543DSCF7559
DSCF7608
DSCF7660
DSCF7724
DSCF7742DSCF7749
DSCF7753

সবার পেটেই ততক্ষণে ছুঁচো দৌড়ান শুরু করে দিছে। আমরা ঝটপট চললাম ব্রেকফাস্টে করতে। গিয়ে দেখি এলাহি কাণ্ড, হাজার পদের খাবার শুধু ব্রেকফাস্টের জন্য, মনের সুখে বাফেটে খাও, পে করা লাগবেনা। এই ব্রেকফাস্ট জাহাজের কেবিন-ফেয়ারে ইনক্লুডেড। ব্রেড,কেক, বিস্কুট, ফলফলাদি, জুস, সালাদ,চা, মিক্সডফ্রুটস উইথ ইউগার্ট, স্যামন, মিটবল, বেকন ছাড়া ও আর ও অনেক কিছু ছিল যেগুলার নাম ও জানিনা, আবার অনেকগুলা খাবারের নাম এখন মনে ও পড়ছেনা।যাই হোক খাবারের একটা ছবি তুলেছিলাম খাওয়ার ফাঁকে সেটাই সবার সাথে শেয়ার করছি। খেয়ে উঠেই কেবিনে এসে সবাই আবার একটু ফ্রেশ হয়ে নিলাম। আবার ডেকে গিয়ে বসলাম। সেদিনের সকালটা ঝকঝকে ছিল, সূর্যি-মামার হাসিতে সবকিছু ঝলমল করছিল, অনেককে দেখলাম ডেকে বসে চেয়ার টেনে রোদ-পোহাতে বসে গেছে। আমরা বেশ দূরে বসেছিলাম মানুষজনের কাছ থেকে। কিন্তু রঞ্জুর প্যানপ্যানানিতে আর টেকা গেলনা, মানুষজনের বাজারের কাছে গিয়ে বসতে হল। কারণ বেশ কজন সুইডিশ বালিকা ওদিকটায় রোদ পোহাচ্ছিল ঐ পাশটায়। রোদের তেজ আর ও একটু বাড়তেই বালিকারা সোয়েটার খুলে ফেলতে শুরু করলো। আর ও কিছু মানুষজন এসে ডেকে চেয়ার টেনে বসতে শুরু করলো। একদিকে রোদ, অন্যদিকে বাতাসের ঝাঁপটা ও বেশ। আমি গরমের দেশের মানুষ বাতাসটা আমার গায়ে হুলের মত বিঁধছিল। বালিকারা জামাকাপড় খুলে বিকিনিতে পৌঁছানোর আগেই আমি আর সুজীব তাই কেবিনের দিকে হাঁটা ধরলাম। রঞ্জু ওখানেই গাঁট হয়ে বসে রোদ-চশমা পরে রোদ পোহাতে লাগলো( বাকিটা আপনারা বুঝে নেন)।, কেবিনে আসার পথে আমি আর সুজীব আবার ডিউটিফ্রী দোকান্টায় ঢু মেরে আসলাম। আমি নিজের জন্য একটা পারফিউম নিলাম, আর সুজীব একটা রিং নিল ওর খুব কাছের একজন প্রিয় মানুষের জন্য। কেবিনে ফিরে শাওয়ার নিয়ে আবার একটা ঘুম দিলাম। এইকদিনের অবিরাম ঘুরাঘুরিতে অসম্ভব ক্লান্ত আমি, তার উপর তার আগের রাতে ৩ ঘণ্টা ঘুমিয়েছি মাত্র। সুজীব কেবিনে ফিরে এসে আবার মুভি দেখতে বসে গেল। পরে কখন এসে রঞ্জু এসে ওর সাথে যোগ দিয়েছে ঘুমিয়ে থাকাতে আমি টের পাইনি। সিনড্রেরেলা আবার সুইডেনে ফিরে আসলো দুপুর তিনটায়। আমরা সব গুছিয়ে নিয়ে ধীরে ধীরে নেমে এলাম জাহাজ থেকে। জাহাজ থেকে নামার পর মাথা ঘুরিয়ে আর একবার দেখে নিলাম আমাদের বয়ে নিয়ে যাওয়া সিনড্রেরেলাকে।

(বেশিরভাগ ছবির জন্য কৃতজ্ঞতা আমার বন্ধু সুজীবের কাছে)


মন্তব্য

আউটসাইডার এর ছবি

হিংসে হচ্ছে। একা একা-ই ঘুরে বেড়ালেন বন্দনাপু। আমারো খুব ক্রুজে চড়ার শখ, আর হলো না এখনো।।।।ছবি ভাল হয়েছে তারচে ভাল হয়েছে আপনার বর্ণনা।

বন্দনা এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ আউটসাইডার। লোকজন্ররে নিয়ে ঘুরতে যাওয়ার প্লান করলে বেশিরভাগ সময় বেড়াছেড়া লেগে যায়, যতকম লোক তত বেড়াছেড়া কম লাগে। সুযোগ খুঁজতে থাকেন, হয়ে যাবে কোন একদিন হয়তো।

অতিথি লেখক এর ছবি

খুবই সুন্দর বর্ননা+ছবি জায়গা।

পাশেই থাকি । ব্যস্ততায় যাওয়া হয়নি। অফিস থেকে অবশ্য চেষ্টা করলে কয়েকবারই যাওয়া যেতো। আগামীতে ইচ্ছে আছে।

ফ্রুলিক্স

অমি_বন্যা এর ছবি

যেমন ছবি ঠিক তেমন বর্ণনা। একটানা পড়ে গেলাম। অনেক ভালো লিখেছেন তবে তার চেয়ে বেশী হিংসা হছছে যে এত সুন্দর জায়গায় ঘুরে এসেছেন বলে। ছবিগুলো দেখে খুব যেতে মন চাইছে ।

আপনার বাং মারা শব্দটা বেশ ভালো লেগেছে। এই কাজটি অনেক করেছি জীবনে । খাইছে

বন্দনা এর ছবি

হা হা হা বাং মারতে কার না ভালো লাগে অমি। অনেক ধন্যবাদ সাথে থাকার জন্য। আমারে হিংসে করে লাভ নাই, হিংসা করার জন্য তারেক অণু আছেনা খাইছে

বন্দনা এর ছবি

ধন্যবাদ ফ্রুলিক্স। দেরী না করে ঘুরে আসেন। আপনার নামটা বেশ অদ্ভুত হাসি

ধুসর জলছবি এর ছবি

চমৎকার। লেখা ছবি সবই। আপনাকে হিংসে হচ্ছে খুব। মন খারাপ

বন্দনা এর ছবি

হিংসার একক তারেক অণুর স্কেলে কতখানি হিংসা করলেন যদি কষ্ট করে বলে যেতেন আরকি দেঁতো হাসি

ধুসর জলছবি এর ছবি

বাচচা তারেক অণুর সমান হিংসা করলাম। চোখ টিপি আরও ঘুরাঘুরি করেন তাহলে বড় তারেক অণুর সমান হিংসা করব। হাসি আর তারেক অণুকে এখন আমি বুড়া তারেক অণুর সমান হিংসা করি। মন খারাপ

তারেক অণু এর ছবি
সাইদ এর ছবি

লেখা বর্ণনা বেশ ভাল হয়েছে। চলুক

খেজুর শুধু ইরান দেশের লোকদেরকে বলে না। মধ্যপ্রাচ্যীয় সবাইকে এই নামে সম্বোধন করা হয়। জানি না কেন গত ৭ বছর ধরে তাই শুনে আসছি। সম্ভবত খেজুরের আধিক্যের জন্য।

বন্দনা এর ছবি

অনেক ধন্যবার সাইদ। হাসি

তারেক অণু এর ছবি

পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ক্রুজ জাহাজ কিন্তু এখন চলছে ফিনল্যান্ড আর সুইডেনের মাঝে! আপনি তো আসি আসি বলেও ফাঁকি দিলেন, স্টকহোম থেকে হেলসিংকি অল্প সময়ে এবং খুব কম খরচে আসা যেত।

খেজুর হিসেবে সমস্ত আরবদের ধরা হয়, উত্তর আফ্রিকার আরবদেরকেও। ( গোপনসূত্রে জানা গেছে বাঙ্গালীদের বলা হয় কাঁঠাল রেগে টং )

বন্দনা এর ছবি

এই ট্রিপটা ও ঠিক কনফার্ম ছিলনা, আমি যেহেতু কনফারেন্সে হেল্প করব বলেছিলাম, বাং মারতে পারতাম কিনা আগেই শিউর ছিলামনা,তাই রঞ্জু বুকিং দিলে ও যাওয়া না যাওয়া অনেক কটা জিনিসের উপর নির্ভর করছিল। আর আপনাদের ফিন এয়ারলাইন্স তো টিকেটি দিলনা, বেহুদায় আমাকে বেশি দাম দিয়ে কাতার এয়ারওয়েজে টিকেট করতে হল, নইলে তো এইবার আপনাকে জ্বালানি দিতাম ব্যাপক।
আমারা কাঁঠাল জাতি এটা কি শুনাইলেন্রে ভাই অ্যাঁ

rubayat এর ছবি

ভাল লাগল।

বন্দনা এর ছবি

ধন্যবাদ রুবায়াত হাসি

কড়িকাঠুরে এর ছবি

সুন্দর- ছবি ও লেখা...

বন্দনা এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ কড়িকাঠুরে হাসি

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

সবলীল বর্ণন, আর ছবিগুলোও সুন্দর।

বন্দনা এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ প্রৌঢ় ভাবনা।

চরম উদাস এর ছবি

চলুক

বন্দনা এর ছবি

দেঁতো হাসি

তাপস শর্মা এর ছবি

এক কথায় দুরন্ত।

বন্দনা এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ তাপসদা।

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

লেখা, ছবি, গল্প, সবই ভালো হয়েছে বলা কি ঠিক হবে? খুব সঙ্গত কারণেই বড়সর দেখে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললাম। দাঁড়ান, আমি খাওয়াদাওয়া, বেড়ানোকুড়ানো, পড়ালেখা সবই ছেড়ে দেব এইবার। মন খারাপ

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

বন্দনা এর ছবি

আসলেই বড্ড বড় হয়ে গেছে যাযাদি, আমার ও লিখতে গিয়ে মনে হচ্ছিল শেষ হচ্ছেনা। কিন্তু আমার সাথে রাগ করে সব ছেড়ে দিচ্ছেন, এটা কোন কথা হল যাযাদি।

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

লেখা বড় হয়ে গেছে এমন কমপ্লেইন কখন করলাম! চিন্তিত
আমি তো দীর্ঘশ্বাস ফেললাম এগুলার কিছুই আমার করা হচ্ছে না ভেবে। তা এগুলাই যদি করতে না পারি তাহলে আর কী করছি! এইটাই ভাবছিলাম।

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

বন্দনা এর ছবি

আপনার নামটা দেখে তো ভাবছিলাম , আপনি মেলা ঘুরাঘুরি দেন ইয়ে, মানে... , কিন্তু এখন দেখি তারেক অণুরে রাইখা আমার লেখা দেইখা দীর্ঘশ্বাস ফেলেন। শুরু করে দেন যাযাদি, করলেই হয়ে যায় আসলে।

আব্দুর রহমান এর ছবি

চলুক

------------------------------------------------------------------
এই জীবনে ভুল না করাই সবচেয়ে বড় ভুল

বন্দনা এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

বাপ্পীহায়াত এর ছবি

ভাল লাগল আপনার বর্ণনা আর ছবিগুলো

বন্দনা এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ বাপ্পী। আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

লোকে কনফারেন্স শেষ করে ঘোরাঘুরি করে

কে কনফারেন্স শেষে ঘুরাঘুরি করে? আমি আমার লাইফে দুইটা কনফারন্সে অ্যাটেন করছি, একটাতেও আমার প্রেসেন্টেশান সেশান ছাড়া আর ডিনার ছাড়া, কনফারেন্সমুখোও হই নাই।

বর্ণনা আর ছবিতে চলুক

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

বন্দনা এর ছবি

আপ্নি দেখি আমার চেয়ে আর এক কাঠি সরস। আমার কাছে কনফারেন্স মানেই প্লেজারট্রিপ লইজ্জা লাগে

নোবেল এর ছবি

সুজিব রে দেশে আসলে পিডামু, আগেই ঠিক করে রাখসি, এখন দেখতেসি আরেকজনরে ও পিডাইতে অইব । রেগে টং হিংসায় মরে গেলাম রে রেগে টং রেগে টং

বন্দনা এর ছবি

কেডা রে তুই!!!!! এত হিংসা করিস্না দোস্ত পেটে পিলে হবে কয়া রাখলাম খাইছে

প্রদীপ্তময় সাহা এর ছবি

আহা রে ক্রুজ !!

লেখায় আর ছবিতে চলুক

বন্দনা এর ছবি

ধন্যবাদ প্রদীপ্তদা। আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

ব্যাঙের ছাতা এর ছবি

ছবি এবং লেখা, দুটোর জন্যই বলছি, আহা! কত সুন্দর!
এমন কনফারেন্স আরো আসুক, আপনিও এমন করে লিখে সবাইকে ভাগ দিন আনন্দের এই শুভকামনা রইল আপনার জন্য।

বন্দনা এর ছবি

আপ্নার দিল অনেক বড়, অনেকেই দেখেন কি হিংসাটাই না করতেছে আমারে। আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

তানভীর এর ছবি

লেখা আর ছবি দেখে ক্রুজে যাবার ইচ্ছেটা আবার জেগে উঠলো। একসময় আম্রিকায় ক্রুজ টার্মিনালের পাশেই থাকতাম। ঐ ক্রুজ যেত মেক্সিকো পর্যন্ত। তখন আবার ভিসা লাগানোর ব্যাপার-স্যাপার ছিলো। তাই আর ক্রুজে ওঠা হয় নি। দীর্ঘশ্বাস ফেলে জাহাজঘাটায় আপনার মতো টুরিস্টদের হাত নেড়ে বিদায় দিতাম। এইবার এর একটা হেস্তনেস্ত করা লাগবে হাসি

বন্দনা এর ছবি

ক্রুজগুলার ভাবই আলাদা ভাইয়া। আপনি ও একটা ক্রুজট্রিপ করে ফেলেন ভাইয়া, আমরা সেটার উপর তাহলে একটা লিখা পাবো, শোধবাদ হয়ে যাবে হাসি

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

ক্যারিবিয়ান ক্রুজ সম্পর্কে কেউ একটা লেখা দেন। খরচাপাতি, পরিবেশ, ইত্যাদি নিয়ে।

নীড় সন্ধানী এর ছবি

এরকম লেখাগুলো পড়লে ইচ্ছে করে লোভ করি, এক দৌড়ে প্লেনের টিকেট কাটি, উড়াল দেই।
কিন্তু করা হয় না। কেন জানেন?
লোভে পাপ, পাপে মিত্যু....... এত তাড়াতাড়ি কে মরতে চায় খাইছে

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

বন্দনা এর ছবি

নীড়দা, করে ফেললেই করে ফেলা হয়। করবো করবো করে জমিয়ে রাখলে জীবনে আফসোসের সংখ্যাই বাড়তে থাকে।

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

পড়েই ফেলাম। ভালো লেগেছে।

বন্দনা এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ পিপিদা কষ্ট কইরা এই হাতিসাইজ লেখা পড়বার জন্য। আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

সাবেকা এর ছবি

লেখা ছবি সবই ভাল লাগল ।

বন্দনা এর ছবি

ধন্যবাদ সাবেকা। আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

ওডিন এর ছবি

লেখা ছবি ভাল্লাগছে!

আমিও একটা কনফারেন্সের দাওয়াত আনাইছি নভেম্বর মাসের , চিনদেশ থেকে। এখন ভিসাটা হইলেই হক মাওলা বলে বের হয়ে যাবো! পপকর্ন লইয়া গ্যালারীতে বইলাম

বন্দনা এর ছবি

চীনাদেশের কাহিনি আসতেছে সামনে তাইলে। তবে আপনার ইতিহাস্পাতালটা কিন্তু নিয়মিত চাই ওডিনদা

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

মাইনষে খালি বিদেশ ঘুরে মন খারাপ
হিংসা

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

বন্দনা এর ছবি

আমারে হিংসা কইরা লাভ নাই নজু ভাই, এখন ও অনেক কিছু দেখা বাকী মন খারাপ

গৃহবাসী বাঊল এর ছবি

আপ্নারা যতই ঘুরাঘুরি করেন না কেন, আমার বুকে হিংসার আগুন পয়দা হয় না। জিজ্ঞেস করেন কেন!
উত্তর হইল, জানি না। তয় আমি সেই পাব্লিক, যে সাত বছর খুলনায় থাইকাও সুন্দরবন যাই নাই (এইটা গর্ব করার বিষয় কিনা এখনও ঠিক শিউর না, তয় আমি নির্দ্বিধায় করি চাল্লু )
এইবার জিগান, তারপর কি করছেন?
উত্তর হইল, তিন বছর কানাডা থাইকা এখনো রকি মাউন্টেন ঠিকমত দেখি নাই (আমার এইখান থেইকা মাত্র ৪০০ কিমি দূর, ৪ ঘন্টার ড্রাইভ), জ্যাস্পার, ব্যানফ দেখি নাই (নিন্দুকেরা কয়, এইগুলি না দেখলে বলে জীবন-যৌবন সব বৃথা), নায়াগ্রা ফলসের কানের কিনার দিয়া গোত্তা খাইয়া বাইর হইয়া গেছি না দেইখা। এখন লিস্ট করতাছি, আর কি কি না দেইখা থাকা যায়।

তারেক অণুরে কেমনে উলটা দিক দিয়া ডিফিট দেওন যায় ওইটা নিয়া বড়ই পেরেশানির মইধ্যে আছি, এর মাঝে আবার আপ্নেরা শুরু করছেন। রেগে টং
পাব্লিক হুদাই ঘুরাঘুরি করে। আফসুস, সময় আর টাকার কি পরিমাণ অপচয়। মন খারাপ

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

এরকম পাবলিক অনেক আছে-- আমার বন্ধু নায়াগ্রায় ১২০ কিমির মধ্যে থেকেও ছয় বছর লাগছে নায়াগ্রা দেখতে। এই ধরেন টরন্টোর এত কাছে থাকি তাও টরন্টোতে গিয়েছি হাতে গোনা ৩-৪ বার! এত দূরে কেন, আমি ঢাকায় থেকেছি প্রায় ২০ বছর, অথচ ওয়ারী কোনদিন দেখিনি! হা হা হা।

বন্দনা এর ছবি

ওয়ারী দেখেন নাই পিপিদা এটা কি শুনাইলেন অ্যাঁ

বন্দনা এর ছবি

টাকার অপচয় আর দেখছেন কি, পারলে ধার কইরা হইলে ও ঘুরতে যাই এমন অবস্থা আমার। উলটা দিক থেকে যে কাউকে ডিফিট দিতে পারবেন গৃহবাসী বাঊল যা কইলেন শুইনা মাথা ঘুরায়তেছে, এত কাছে থেকে কেউ নায়েগ্রা দেখেনাই আমার দুঃস্বপ্নে ও ভাবতে পারিনা অ্যাঁ

নিরবতা এর ছবি

দারুন লেখা।।।ছবি গুলো চমৎকার হয়েছে। চলুক

বন্দনা এর ছবি

ধন্যবাদ নিরবতা। আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

খাবারের ছবিটাও মারাত্মক!!!

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।