বৃষ্টি না থাকলে ও আকাশের যথারীতি মন খারাপ, ছবিগুলা তাই সুবিধের আসছিলনা খুব একটা। তবু ও বোট থেকে চারিপাশের ছবি তুলে নিচ্ছিলাম যতখানি পারা যায়। বোটে জার্মান ভাষায় আশেপাশের কি কি আছে সব বর্ণনা করে যাচ্ছে সমানে, যদি ও আমরা দুজনে তার একবর্ণ ও বুঝছিলাম্না। আমাদের বেহাল দশা দেখে, এক সুইস মহিলা এগিয়ে আসলেন আমাদেরকে উদ্ধার করতে। ইংরেজিতে ট্রান্সলেট করে দিচ্ছিলেন মাইকে যা বলছে। লেকের উপর অনেকগুলা পালতোলা নৌকা দেখা যাচ্ছিল। কথায় কথায় জানতে চাইলাম এত নৌকা একসাথে কেন? উত্তরে বললেন এই সময়ে সেইলিং কম্পিটিশন হয় লেকে, আশেপাশের অনেকেই নিজস্ব নৌকা নিয়ে চলে আসে লেকে। অদ্ভুত ব্যাপার হল সবগুলা নৌকার পালই সাদা। একটু পরেই উনি হাত উঁচিয়ে দেখালেন আল্পসের চূড়া। হাল্কা ধোয়া-ধোয়া সাদাটে একটা পর্দার আড়ালে আল্পস ঢাকা পড়ে গেছে, সেই ছবি তোলা সম্ভব হোলনা। গতবছর আল্পসের যেই সৌন্দর্য দেখেছি, এইবার তার ছিটেফোঁটা ও দেখা গেলনা ঘোড়ার ডিমের মেঘলা আকাশের জন্য। সুইস আন্টী কথায় কথায় আমাদের আর ও জানালেন তিনি সুইস, জার্মান, ইংরেজি তিনটা ভাষাই জানেন। আমরা কোথা থেকে এসছি সেটা ও জেনে নিলেন মিশুক মানুষটা। যেচে পড়ে আমাদের দুজনের একটা ছবি ও তুলে দিলেন। সুইস আন্টির বর পাশেই দাঁড়িয়ে ছিলেন, একমনে চারদিক দেখে যাচ্ছেন কোন কথা খরচ না করেই।
আন্টি খানিক পরেই বললেন, বোটের একদিকে নাকি সুইজারল্যান্ড, অন্যদিকে অস্ট্রিয়া, আর একদিকে জার্মানি। আমি উনার কথা শুনতে শুনতে আর ও গাদা-খানিক পচু পচু ছবি তুলতে থাকি, যদি ও পরে ঠিক আলাদা করতে পারিনি কোনটা কোন দেশের সীমান্তের ছবি। এক-ফাঁকে উনার একটা ছবি ও নিয়ে নিলাম বলেকয়ে। ঠোঁটে কড়া লাল লিপস্টিক, চোখে কালো রোদচশমাপরা আন্টিকে ছবিতে বেশ মিষ্টি লাগছিল। পঁয়তাল্লিশ মিনিট শেষ হয়ে আসতেই বোট ও ফিরে এসে তীরে ভিড়ল। আন্টি বললেন, চাইলে আমরা বোটে থাকতে পারি, যেহেতু মেঘলা আকাশের জন্য আমাদেরকে কিছু দেখাতে পারেনি ওরা,পরের ট্যুরটায় আমরা বিনে-পয়সায় যেতে পারবো। কিন্তু আকাশের মুডের কোন ঠিক নেই বুঝে আমরা শহর ঘুরতে যাবো বলেই ঠিক করলাম। আসার আগে আন্টি আমাকে ছোট্ট একটা হাগ দিয়ে দিল, গালে ছোট্ট একটু চুমো। অবাক হয়ে গেলাম এত অল্প সময়ের পরিচয়ে একটা মানুষকে এত আপন করে নিতে পারে কেমন করে এরা। কেমন যেন অদ্ভুত ভালোলাগায় ভরে গেল মনটা, উনার গায়ের পারফিউমের মিষ্টি একটা গন্ধের আবেশ নিয়ে হাত নেড়ে মাটিতে নেমে এলাম।
১১
১২
মন্তব্য
নীল সমুদ্র সাদা ফেনা/ যতই করুক ধার-দেনা/সমুদ্রকে যাইনা চেন।-----
----------------------------------------------------------------
বন পাহাড় আর সমুদ্র আমাকে হাতছানি দেয়
নিস্তব্ধ-গভীর রাতে এতোদূর থেকেও শুনি ইছামতীর মায়াডাক
খুঁজে ফিরি জিপসি বেদুইন আর সাঁওতালদের যাযাবর জীবন...
www.facebook.com/abdulgaffar.rony
ধন্যবাদ রনি
মেঘলা দিনে বেড়াতে আমার দারুন লাগে। ১ আর ৩ নম্বর ছবিদুটো ভাল লাগল ভীষণ।
---------------------------------------------------------
ভাঙে কতক হারায় কতক যা আছে মোর দামী
এমনি করে একে একে সর্বস্বান্ত আমি।
মেঘলা দিন আমার ও ভালো লাগে, কিন্তু এমন ভয়ঙ্কর ছবি আসলে তখন এমন মন খারাপ লাগেরে ভাই সেটা আর না বলি। নেটে খুঁজে দেইখেন লেকটার অনেক সুন্দর সুন্দর ছবি আছে, আর আমি কি জিনিস তুলে আনছি দেখতেই তো পারছেন।
ছবি আর বর্ণনা দুটোই দারুন, বন্দনা।
ধন্যবাদ অমি ভাই।
লেকের তিন পাড়ে তিন দেশ?
এইটার একটা নাম দেওয়া দরকার... বারমুদা ট্রায়াঙ্গল টাইপ ভয়ঙ্কর নাম...
তারপর এইটা নিয়ে একটা রহস্য গল্প
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
আপনি একটা নাম দিয়ে দেন নজু ভাই।
দারুন লাগলো।
ধন্যবাদ নিরবতা।
------------
'আমার হবে না, আমি বুঝে গেছি, আমি সত্যি মূর্খ, আকাঠ !
এক নাম্বার ছবিটা সবচেয়ে বেশি ভালো লাগলো।
পুরো জার্নিতেই তো দেখি বৃষ্টি আর মেঘলা আকাশ আপনাকে খুব জ্বালাইসে।
কোথাও গেলে আমি সেখানকার ছবি তোলার চেয়ে দু'চোখ ভরে দেখতেই বেশি ভালোবাসি।
অবশ্য ফটগফুরদের কথা ভিন্ন।
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
আমি সময় পেলেই পুরানো ছবি খুলে দেখতে বসি, খুব ভালো লাগে আপু। কিন্তু এমন ছবি তুলে আনলে আসলেই মন খারাপ হয়।মেঘলা দিন আমার ও ভালো লাগে, কিন্তু ছবির পুরাই তেরটা বাজায়ে দিসে
(গুড়)
শেষটা ভালো লাগল। চলুক ঘোরাঘুরি
facebook
আমার ও অনেক ভালো লাগছে।
বেড়ানোর দিনে হঠাৎ মেঘ ..
সুন্দর পোস্ট। ছবিগুলোও ভালো লাগলো।
__________________________
বুক পকেটে খুচরো পয়সার মতো কিছু গোলাপের পাঁপড়ি;
ধন্যবাদ ক্রেসিডা, ছবিগুলা আসলে অনেক সুন্দর হত যদিনা আকাশ মেঘলা থাক্তো। নেটে খুঁজে দেখতে পারেন লেক্টা আসলেই মেলা সুন্দর।
হুম-
পানি যে পাত্রে রাখা হয় সে পাত্রের আকার ধারণ করে, আর
যে পরিবেশে থাকে সেই পরিবেশের স্বভাব অনুসরণ করে...
ব্যাপার না- রিঘুরাঘুতে গরুর গাড়ি চাক্কা...
ধন্যবাদ কাঠুরে ভাই। শেষের লাইন্টা ঠিক বুঝলাম না।
গরুর গাড়িতে হাওয়া-তেল লাগে না । সিরাম এক গাড়ি । দাদা বানিয়ে রেখে গেছে তো নাতি এখনো চালাচ্ছে । এবং রাজকীয় হালেই চলার কথা । শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষায় চলছে তো চলছেই । কোন থামথামি নাই । এই আর কি... চলুক...
আর রিঘুরাঘুতো "ঘুরাঘুরি"...
এক নম্বর ছবিটা জব্বর হৈসে আপু।
নেন পথিক ভাই।
সেইলিং বোটের ছবি গুলো বেশ ভাল লেগেছে আপু
উতপাখির হৃদয়
আন্টিকে পছন্দ হইছে!
আমার ও মেলা পছন্দ হয়েছে।
মেঘলা ছবিগুলোকে বিবর্ণ বলছেন কেন? ভাল ছবি হতে হলে রোদে ঝকঝক করতে হবে এমন কোন কথা নেই
আমার কিন্তু বেশ লেগেছে। আগামী সামারে বেড়াতে যাব ভাবছি
নেটে একটু খুঁজে দেইখেন ভাইয়া, এই ছবিরে পচা না বইলা উপায় নাই। যান যান ঘুরে আসেন, জায়গাটা কিন্তু বেশ সুন্দর।
ভাল লাগলো ছবি আর লেখা।
ধন্যবাদ প্রৌঢ় ভাবনা ।
নতুন মন্তব্য করুন