আলোচনা আহ্বানঃ বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বামপন্থী প্রাবন্ধিকদের ভুমিকা

উৎস এর ছবি
লিখেছেন উৎস (তারিখ: মঙ্গল, ১৯/০৬/২০০৭ - ১২:৪৪পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

মুলত সাধক শঙ্কু, আরিফ জেবতিক, ভাস্কর, শোমচৌ এর কাছে থেকে বিশ্লেষন+অভিজ্ঞতা ভিত্তিক লেখা চাচ্ছি। বদরুদ্দিন উমর, ফরহাদ মজহার এরকম বাম ঘরানার থিংক ট্যাঙ্কের সদস্য যারা, তাদের নিয়ে আমার (হয়তো আরো অনেকের) জানাশোনা খুব সীমিত। আমি ওনাদের কলামের বাইরে কোন বই পড়িনি, বা লেকচার শোনার সুযোগ হয় নি। অনুমান করি আপনাদের অনেকে রাজনৈতিক পরিবর্তনের অন্তঃস্রোতকে আরেকটু ঘনিষ্ঠভাবে দেখার সুযোগ পেয়েছেন। ব্লগারদের উদ্দ্যেশ্যে কয়েকটি প্রশ্নঃ
১। বাংলাদেশের নীতিনির্ধারনীতে বদরুদ্দিন উমর বা ফরহাদ মজহারদের লেখার আদৌ কোন ভুমিকা আছে বলে মনে হয়?
২। ওনাদের লেখা কি মধ্যবিত্তের মাইন্ডসেটে কোন প্রভাব ফেলতে পেরেছে, গত ৩/৪ দশকে?
৩। বাম ঘরানার চিন্তাভাবনা গত ৩৬ বছরে আমাদের কতটুকু সাহায্য, এবং ক্ষতি করেছে বলে মনে হয়?
৪। চরম বাম এবং চরম ডান কে কি এক পাল্লায় মাপা যায় বা মাপা উচিত?
৫। বাম থিঙ্ক ট্যাংকের মতাদর্শকে কি বাস্তবতার নিরিখে মেনে নেয়া যায়, অথবা এগুলো কি কেবল বইয়ের পাতায়ই ঠিক।
৬। ছাত্র রাজনীতিতে বাম ঘরানার প্রভাবকে কিভাবে দেখেন (৯০ পরবর্তিতে)?


মন্তব্য

শোহেইল মতাহির চৌধুরী এর ছবি

আলোচনার জন্য আলাদা ফোরাম চালু হয়া বন্ধ হয়া গেছে। সেইটা চালু করার জোর দাবী তোলেন।

-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

এই আলোচনা গুলো আসলে ব্লগেই করা ভাল। পরবর্তী আমরা পড়তে পারব, রেফার করতে পারব। চ্যাটরুমে হলে সেটা আর ইউজফুল কিছু হবে না।

====
মানুষ চেনা দায়!

শোহেইল মতাহির চৌধুরী এর ছবি

চ্যাটরুমে আলোচনার কথা বলিনি। আসলে বলছিলাম, কোনো একটা বিষয়ে অনেকের পোস্ট দেয়া। আবার পোস্টগুলো একসাথে থাকবে এমন সুযোগ। যা ফোরামগুলোতে থাকে।

-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না

উৎস এর ছবি

সমর্থন করছি। নাহলে বারোয়ারী পোস্টের ভীড়ে খুজে পাওয়া মুস্কিল কোথায় কি আলোচনা হচ্ছে।

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

বই ফীচার আছে। একটা বই খুলে সবাই একে একে পৃষ্ঠা জুড়ে দিতে পারে।

====
মানুষ চেনা দায়!

উৎস এর ছবি

সাধক আমার সাথে সেদিন তর্ক করলো উমরকে সাপোর্ট দিয়ে। আমি উমর সমন্ধে ওনার কলামের বাইরে জানি না, এজন্য ভাবলাম তাহলে যারা জানে তাদের মন্তব্য শুনি।

শোহেইল মতাহির চৌধুরী এর ছবি

আসলে হরে-দরে বলা যাবে না।
উমর বা মজহারের সাম্প্রতিক ছাপা হওয়া একটা লেখা আলোচনায় আনা হোক। দেখা যাবে সেখানে তাদের বিশ্লেষণ কিরকম। আলোচনা করা যাবে তাদের পদ্ধতির ও যুক্তি-তর্কের কার্যক্ষমতা সম্পর্কে।

-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না

সুমন চৌধুরী এর ছবি

সেক্ষেত্রে একটা সমস্যা আছে বস। কোন লেখা নেওয়া হবে সেইটা নিয়া। বদরুদ্দিন উমর আমাদের রাজনৈতিক প্রবন্ধ সাহিত্যের অপরিহার্য ব্যক্তি। পূর্ব বাংলার রাজনীতি বিশেষ কইরা উনার আগে কেউ এতটা মেথডিক্যালি বিশ্লেষণের দিকে যায় নাই। সমস্যা হইল আওয়ামী-সিপিবি ঘরাণা(মূলত সিপিবি) বরাবর তালে থাকে দৈনিক পত্রিকায় লেখা ক্যাজুয়াল লেখা গুলিরে সামনে আইনা নিজেদের বিরুদ্ধে যেকোন অবস্থানরে প্রতিক্রিয়াশীল বইলা দেখানোর। এইটা কিন্তু ইন্টেলেকচুয়াল কর্পোরেটিজমের আওতায় পড়ে। আমি নিজে বছর দেড়েক উমর সাহেবের পার্টি করছি। রাজনীতিতে উনি ব্যর্থ সেই বিষয়ে পুরাপুরি ওয়াকিফহাল হইয়াই করছি। আকৃষ্ট হইছিলাম বই পইড়া। সাম্প্রদায়িকতা আর দ্বিজাতিতত্ত্বের উপর বাংলা ভাষায় আর কারো কোন অথেন্টিক কাজ নাই। কলাম সম্পর্কে বললে আমি জানিনা। আমি কলাম পড়ি না। আমারে তার প্রবন্ধ বাছতে দিলে আমি ''উন্নয়নশীল বিশ্বে সামরিক বাহিনির ভূমিকা'', ''চিরস্থায়ী বন্দোবস্তে বাংলাদেশের কৃষক'' কিংবা তিন খন্ডে লেখা ভাষা আন্দোলনের একমাত্র গবেষণামূলক ইতিহাস ''পূর্ববাংলার ভাষা আন্দোলন এবং তৎকালীন রাজনীতি''..এগুলির কথাই বলবো। কেন রাজনীতি করলাম না সেইটা ভিন্ন প্রশ্ন। তার সব কথার সাথে একমত কিনা এর জবাব পরিস্কার। হয়তো বেশীরভাগ বিষয়েই মতানৈক্য। তবে তিনি আমার রাজনৈতিক গুরু। একেবারেই বাইরের কেউ বাইছা বাইছা তার কোন আবোল তাবোল প্রবন্ধ কোট কইরা তারে ফরহাদ মাজহারের লগে তুলনা করবো এইটা আমার সহ্য হইবো না।

ফরহাদ মাজহাররের কোন গবেষণামূলক কাজের কথা শুনি নাই। চিন্তা পত্রিকার যেইসব লেখা মাঝে মধ্যে জনৈকা বামীনীর কাছে ছ্যাক খাইয়া মনের দু:খে হুজুর হওয়া এক বন্ধুর সৌজন্যে মাঝেমধ্যে দেখা হইছে। মজহারের লেখা এবং বক্তব্য নির্ভেজাল ফটকামী। সে হইলো ব্যবসায়ী। তার কাম হইলো বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা বিভিন্ন বাম ছাত্র সংগঠণে একটু কোণঠাসা অবস্থায় থাকার কারণে রিসিপ্রকাল অ্যাকশানে ডানদিকে ঝুকতেছে মানে ধর্মের দিকে আর কি, তাদের এই কোণঠাসা অবস্থানটারে ক্যাপিটালাইজ করা। একটা খুব মজার বিষয় হইলো , ধোলাই হওয়ার পরে ভদ্রলোক এক্কেবারে চুপ মাইরা যায়। নতুন পাঠের ২য় সংখ্যায় সাকী ভাই মজহাররে পুরা ল্যাংটা কইরা ছাইড়া দিল। মজহার তার কোন উত্তর দেয় নাই। কারণ দেওয়া সম্ভব না। সেইখানে তত্ত্বের গভীরে না গিয়া বাইরে থিকাই যেই কন্ট্রাডিকশান দেখা যায় সেইটা পয়েন্ট করা হইছিল। মজহার সোজাসাপটা কথায় সাম্রাজ্যবাদের দালাল। তবে তার টার্গেট সবাই না।
.......................................
ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

guest_writer এর ছবি

সুমন ভাই,

আমি পুরোপুরি আপনার সাথে একমত যে , সর্বজনাব বদরুদ্দীন উমর ও কবি -চিন্তক ফরহাদ মজহার কে এক কাতারে ফেলা ঠিক নয়।

আমাকে যদি বাংলাদেশের জীবিত বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে (যদিও উমর স্যারের মতে , ‘বুদ্ধিজীবি’ একটি ঘৃন্য শব্দ ) মাত্র একজনকে বেছে নিতে বলা হয়, তবে আমি উমর কেই বেছে নেব।

আপনার উল্লিখিত রচনা গুলি ছাড়াও উমর স্যারের ‘সভ্যতার সঙ্কট(১৯৬৭) ’ একটি উৎকৃষ্ট গ্রন্থ।

তবে, মুল ব্লগার যে প্রশ্নগুলি নিয়ে আলোচনার আহ্বান করেছেন সে ব্যাপারে অগ্রসর হওয়া যেতে পারতো ।

বিনীত,
নুরুজ্জামান মানিক

হিমু এর ছবি

আমার মনে হয় সঞ্চালকের ট্যাগ আরোপের ক্ষমতা থাকা প্রয়োজন। "এ প্রসঙ্গে আরো" গোছের লিঙ্কও যাতে সে যোগ করতে পারে। তখন আর হারিয়ে যাবার ভয় থাকে না।


হাঁটুপানির জলদস্যু

উৎস এর ছবি

সুমন, সময় করে পোস্টাও।

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

সুমন চৌধুরীর বিশ্লেষণের সঙ্গে একমত। আরো একটু যোগ করতে চাই। বদরউদ্দীন উমর এবং ফরহাদ মজহার দু'জনের কলাম অল্পস্বল্প পড়েছি।

উমরের কলামে সমস্যা হলো, তাঁর লেখা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই একটা ছকে বাঁধা থাকে, লেখার উপসংহার আগে থেকেই আন্দাজ করা চলে। প্রসঙ্গ যা-ই হোক না কেন, সাম্রাজ্যবাদ-পুঁজিবাদ ইত্যাদি নিয়ে ক্লিশে কিছু মন্তব্য অবশ্যম্ভাবী।

ফরহাদ মজহারের কলাম আকারে এতো দীর্ঘ হয় (এ বিষয়ে গাফফার চৌধুরী তাঁর খুব নিকট প্রতিদ্বন্দ্বী) যে পড়ার ধৈর্য থাকে না প্রায়ই। তার প্রধান কারণ, মোটামুটি মাঝামাঝি জায়গায় পৌঁছে নিজেকেই জিজ্ঞেস করতে হয়, শুরুটা যেন কী দিয়ে হয়েছিলো? লেখার বিষয়বস্তুটা যেন কী? এবং অপার ধৈর্য নিয়ে লেখার শেষ পর্যন্ত পড়া হলে মনে হয়, তিনি আসলে কী বলতে চাইলেন? সৈয়দ মুজতবা আলীকে উদ্ধৃত করে বলা যায় (হুবহু নয়): মালুম হলো যে কিছুই মালুম হলো না!

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

??? এর ছবি

সুমন চৌধুরীর ফরহাদ মজহার-ভাবনায় কিছুটা অযত্ন আছে বৈলা আমার ধারণা। যে অভিনিবেশ তার কাছ থিকা বদরউদ্দীন উমর পাইলেন তার কিছুমাত্র যদি মজহার পাইতেন তাইলে হয়ত উনার অনুধাবন অন্যরকম হৈত। এই অযত্নের ছোয়া উনার ফরহাদ মজহার নামের বানান পর্যন্ত গিয়া ঠেকছে (উনি লিখছেন "মাজহার")। ফরহাদ মজহারের কোনো গবেষণামূলক কাজের কথা উনি শুনেন নাই, এইটা দুর্ভাগ্যজনক। ২০০৬ সালেই "মোকাবিলা" নামে একটা বই বাইর হৈছে ফরহাদের, সেইটা পারলে একটু নাইড়াচাইড়া দেইখেন। প্রসঙ্গক্রমে বলি, ঐ বইটার একটা রিভিউ লিখছিলাম আমি, দৈনিক প্রথম আলোতে, সাত-আট মাস আগে। প্রসঙ্গক্রমে আরো বলি, আমি ফরহাদ মজহারের শিষ্য ছিলাম না, এমনকি চর্মচক্ষেও উনারে এখন পর্যন্ত দেখি নাই।

বদরউদ্দীন উমর আমাদের দেশের একজন বড় চিন্তক। তার সাম্প্রদায়িকতা, মুক্তিযুদ্ধ, দেশভাগ, ভাষা আন্দোলন বা কৃষকসমাজ লৈয়া চিন্তাভাবনার লিগ্যাসী আমাদের অনেকেই বহন করেন। তবে সুমন চৌধুরী যে কৈলেন "সাম্প্রদায়িকতা আর দ্বিজাতিতত্ত্বের উপর বাংলা ভাষায় আর কারো কোন অথেন্টিক কাজ নাই"...এই ধরনের বয়ান বিপজ্জনক। না দেয়াই ভাল। দুইটা দৃষ্টান্ত দেই, যেহেতু চোখের সামনেই আছে বইদুইটা। এক, মিহির সেনগুপ্ত-র "বিষাদবৃক্ষ", দুই. পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও গৌতম ভদ্র সম্পাদিত "নিম্নবর্গের ইতিহাস"। দেশভাগ বা দাঙ্গা লৈয়া যারা অন্যকোনো "অথেনটিক" কাজ দেখেন নাই, তাদের পিপাসা মিটবার জন্য যথেষ্ট।

তবে, ফরহাদ মজহার বা বদরউদ্দীন উমর এদের কারোর বিচারই সুবিচার হৈবেনা, যদি আমরা এদের কেবল কলামলেখক হিসাবে ভাবি। ফরহাদ মজহারের কত কলাম পড়ছি কাগজে, যা চিন্তা প্রমোট করার চেয়ে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলে বেশি নিবেদিত! এমন ঘটনা বদরউদ্দীন উমরেও কম নাই।

আরেকটা বিষয়, আমরা এদের তুলনামূলক ভালমন্দ বিচারে যাইতেছি কেন? কোন বিচারে এরা পরস্পর তুল্য? এদের কাজ নিয়া আলাদা আলাদা ভাবে বিচার করার পক্ষপাতী আমি।

অনাহুত হৈয়া মন্তব্য কৈরা ফেললাম, উদ্যোগীরা ইকটু ক্ষমাঘিন্না কৈরা দিয়েন।

সুমন চৌধুরী এর ছবি

ধন্যবাদ সুমন রহমান।
অভিযোগের জবাব দিয়া শুরু করি। গতকাল রাত্রে করা কমেন্টে বানান এবং বাক্য গঠণে যে অসাবধানতা ছিল তার জন্য ক্ষমাপ্রার্থী। সাম্প্রদায়িকতা এবং দ্বিজাতিতত্ত্ব বিষয়ে মন্তব্যটা ঢালাও ছিল এইটা খানিক সত্য। বিষদবৃক্ষ পড়ার সৌভাগ্য না হইলেও নিম্নবর্গের ইতিহাস পড়া হইছে। সেইখানে রাজনৈতিক নৃবিজ্ঞানের প্রয়োগ বইটার আলাদা গুরুত্ব তৈরী কর‌ছে। তবে সাম্প্রদায়িকতা বলতে গত দেড়শ বছরের রাজনীতিতে যেইটা প্রয়োগ করা হয় সেইটার প্রকৃত চেহারা পরিস্কার হয় রাজনৈতিক অর্থশাস্ত্রে। কারণ বিষয়টা চাপাইয়া দেওয়া। ১৯০৫ থিকা ১৯৪৭ যেই লেঙ্গুঠি খেলা হইছে তাতে অন্তজ জনের চৈতন্যের ভুমিকা মুখ্য ছিল বইলা আমার মনে হয় নাই। থাকলে মুসলমান কৃষকরা হিন্দু জমিদারগো বাড়িঘর লুঠ করতো। সংশপ্তকের রমজান কিন্তু সাবঅলতের্নোর প্রতিনিধিত্ব করে না। সে কি করে এইটা সরাসরি রাজনৈতিক ইতিহাসের টানাপোড়েন থিকা অনেক বেশী স্পষ্ট বোঝা যায়। সাম্প্রদায়িকতা সেইরকমই রাজনৈতিক ঘটনা। সেই দিক থিকা উমর সাহেবের মেথডলজি সঠিক মনে হইছে। যেমন রজনীপাম দত্তর ইন্ডিয়া টুডেতে দেশ বিভাগে ইংরেজের ভুমিকা স্পষ্ট হইছে।

এরপর ফরহাদ মজহার প্রসঙ্গে আসি। উনার অল্প কিছু লেখা পড়ছি চিন্তায় যেগুলা পইড়া মনে হইছে(আমি তখন টকেটিভ বামপন্থি কর্মী)উনি সূক্ষভাবে মার্কসবাদের ঘোমটা দিয়া সাম্প্রদায়িকতা প্রচারের চেষ্টা করতেছেন। একবার খুব কষ্ট কইরা থিসিস অন ফয়েরবাখ বিষয়ে একটা লেখা পড়লাম পুরাটা। অনেকগুলা বিচ্ছিন্ন বিষয় পাশাপাশি সাজাইয়া ছাইড়া দিছেন বইলা মনে হইল। প্রবন্ধের শেষে আইসা অপ্রাসঙ্গীক ভাবে সিপিবিরে আক্রমণ করা শুরু করলেন। কি বলতে চাইতেছেন এইটাই শেষ পর্যন্ত বোঝা গেল না। ১১ সেপ্টেম্বরের পরে ক্রুসেড-জেহাদ-শ্রেণী সংগ্রামের ব্যাপারেও একই সমস্যা। এগুলা কোন সমস্যাই ছিল না যদি তিনি নিজেরে মার্কসবাদী বইলা দাবী না করতেন। দাবী কইরা যেইটা করতেছেন সেইটা হইলো মার্কসীয় বস্তুবাদরে হেগেলিয়ান ডায়ালেকটিকস আর মরমীবাদের ধোঁয়া দিয়া আড়াল করার চেষ্টা কইরা। মোকাবিলা পড়া হয় নাই। কারণ ২০০৩ থিকা বৈদেশ। চিন্তার কোন ওয়েবসাইট খুইজা পাই নাই। অন লাইনে মান্যবর মজহার সাহেবের কোন লেখা থাকলে লিঙ্কাইয়া কৃতার্থ করবেন।

.......................................
ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

এই বিষয়টা নিয়ে একটা বই তৈরী করে ফেলা যায় এখানে!

====
মানুষ চেনা দায়!

আরিফ জেবতিক এর ছবি

২ থেকে ৬ পর্যন্ত পয়েন্টগুলোতে আলোচকদের ফোকাস প্রয়োজন।
শুরু হোক।
বাম নেতা হাসান মোরশেদ আর জামাল ভাষ্করের অংশগ্রহন প্রয়োজন এই পর্যায়ে।
অফিস গুছিয়ে আমিও দুই সেন্ট যোগ করব।

ভাস্কর এর ছবি

সহমত @ সুমন ভাই

তয় ফরহাদ মজহার সম্পর্কীত শহুইরা মধ্যবিত্তীয় ধারণা আসলেই খুব উপাদেয় না। কিছু চিন্তা আছে যেইসব আসলে তার রাজনৈতিক লাইনের জন্যই একটু অন্যরম হয়(?)।
আমার মনে হয় কি সুমন (চৌ) ফরহাদ মজহার আর বদরউদ্দিন উমর নিয়া কইতে গেলে রাষ্ট্রচরিত্র নিয়া অনেক্ষাণিই উৎসর্গ কইরা দিতে হইবো। আর সেই খানেই নিহিত থাকে ঐ বিতর্কের উপাদানগুলি। সুমন মনে হয় ঐসব জায়গায় আলোকপাত কইরা কিছু কইতে পারো।


বরফখচিত দেশ ক্যান এতোদূরে থাকো!


স্বপ্নের মতোন মিলেছি সংশয়ে...সংশয় কাটলেই যেনো মৃত্যু আলিঙ্গন...

উৎস এর ছবি

আপনারা চাইলে আলাদা পোস্ট দিতে পারেন। সচলায়তনে বিতর্ক-আলোচনা এখনো জমছে না, একটু চেষ্টা করছি। এই সাবজেক্ট টা নিয়ে একটু হাত মকশো করে নিন সবাই, এরপর আরো বিতর্কিত বিষয় নিয়ে আলোচনা করা যাবে।

সুমন রহমান, জেবতিক ভাই, ভাস্করদা আপনারা লিখুন না এ বিষয়ে আপনাদের যা মনে হয়। উমর, মজহার ছাড়া আরো বাম ঘরানার লেখক আছেন নিশ্চয়ই। এদের নাম আমি লিখেছি কারন ঐদিন সাধক শঙ্কুর সাথে এদের নিয়ে কথা হচ্ছিল।

সুমন চৌধুরী এর ছবি

উৎসর পোস্ট প্রসঙ্গে বক্তব্য হইল তুলনামূলক ব্যক্তি লেখকদের তুলনামূলক আলোচনা না করাই ভালো। কে কার তুলনার কতটা ভালো বা খারাপ এই আলাপে আসলে কালক্ষেপন হয়। তোমার পোস্টের বিষয় এইটা ছিল না। সেইখানে বলতে পারি যে ঠিক কলাম লেখক না, রাজনৈতিক প্রবন্ধের লেখকও না ...রাজনৈতিক প্রবন্ধগুলির সিগনিফিকেন্স বরাবরই পাঠকের কাছে। সেইখানে একাডেমিক রিজনিং কোন সুনির্দিষ্ট দল বা দলগুলির প্রাপ্ত ভোটের সমান্তরাল না। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জনসমাজে বারান-সুইজি-ফস্টার-ম্যাকডফদের প্রভাব দুরে থাক বেশীরভাগ লোকে তাগো নামই জানে না। তাতে কিন্তু প্রাবন্ধিক বা তাত্ত্বিক হিসাবে তাগো গুরুত্ব কমে নাই।
.......................................
ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

আরিফ জেবতিক এর ছবি

আমার ধারনা আলোচনার মোড় ঘুরে গেছে।
ব্যক্তি ফরহাদ মজহার বা বদরউদ্দিন উমরের অর্জন এখানে আলাদা করে দেখার সুযোগ নেই।যে কোন ধরনের ব্যক্তি বন্দনা শেষ পর্যন্ত কোন ভালো ফল বয়ে আনে না।

তবে এটা বলা অনুচিত হবে না যে বদরউদ্দিন উমর যে পরিমান প্রভাব সাধারনের মাঝে বিস্তার করতে পারেন,ফরহাদ মজহার সেটি আজ করতে পারছেন বলে মনে হয় না।ব্যক্তির পরিচিতির নির্নায়ক কিন্তু শেষ পর্যন্ত তার সর্বশেষ অবস্থান দিয়ে চিহ্নিত।
আর এখানে ফরহাদ মজহারের চিন্তা চেতনা একটি নতুন দিকে ইঙিত করলেও সেটি সঠিক দিক কি না,সেই প্রশ্ন রয়ে যায়।
অন্যদিকে বদর উদ্দিন উমর তার নিজের অবস্থান নিয়ে কোন কোন প্রশ্ন তোলার সুযোগ দেন নি বলেই দেখা যায়।
---------------------------------------

এবার আসি এই ধরনের লেখালেখি কিংবা প্রয়াস বা আন্দোলন শেষ পর্যন্ত আমাদের দেশ,সমাজ ও রাষ্ট্রে কোন প্রভাব আদৌ ফেলতে পারে কি না সেই কথায়।

অবশ্যই ফেলতে পারে।
মোটা দাগের একটা উদারহন দেই।
নব্বই'র শেষ পর্যায়ে এরশাদ সরকারের পতনের পেছনে বাম সংগঠনগুলোর ভুমিকা অস্বীকার করার কোন উপায় নেই,বরং সত্যিকার ইতিহাস লেখা হলে এটা স্বীকার না করে উপায় থাকবে না যে বাম নেতাদের অব্যাহত চেষ্টায় দুই নেত্রী আপোষ করা থেকে বিরত থাকতে বাধ্য হয়েছেন।

দূ:খজনক ব্যাপার হলো বাম নেতারা এই দেশে আন্দোলনের লাভ কখনো ঘরে তুলতে পারেন নি।সেটা ভিন্ন আলোচনার বিষয়,কিন্তু এটা মানতেই হবে যে এই দেশের এমন কোন আন্দোলন হয় নি,যেটার সুত্রপাতের সাথে বাম ঘরানার মানুষ যুক্ত ছিলেন না।

আমাদের এটি মনে রাখতে হবে যে,বাম ঘরানা এই দেশে বিকাশ লাভ করেছিল মধ্যবিত্ত শ্রেনীর মাঝে।মধ্যবিত্ত আপোষকামী এটা সত্য প্রায় সবসময়ই,তবু মধ্যবিত্তরাই এখন পর্যন্ত আমাদের দেশের রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার নিয়ামক।আর তাই মধ্যবিত্তের চিন্তাচেতনা গঠনে,তাদের কে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নিতে,তাদেরকে মাঝে মাঝে খোলসের বাইরে বের করতে বাম রাজনীতি আর তাদের লেখালেখি এক বিরাট ভুমিকা রাখে।

সুমন চৌধুরী এর ছবি

সহমত@আরিফ ভাই
.......................................
ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

আরিফ জেবতিক এর ছবি

আরেকটি প্রশ্ন এসেছে যে ৯০ পরবর্তী ছাত্র রাজনীতিতে বাম চিন্তা কতোটুকু প্রভাব ফেলেছে।

দূ:খজনক হলেও সত্যি এই প্রভাব খুব বেশি বলে আমার মনে হয় না।এর অনেকগুলো কারন আছে।

প্রথম কথা হচ্ছে ৯১ সালে ছাত্রদল এবং শিবির সরাসরি সরকারী পৃষ্ঠপোষকতা পেতে শুরু করে।এতে করে ক্যাম্পাসে তাদের যে হোল্ড সৃষ্টি হয়,সেটিতে আকৃষ্ঠ হয় সাধারন ছাত্র ছাত্রীরা।এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের মাঝ দিয়ে বিকশিত ছাত্রদলের জনপ্রিয়তা প্রতিস্থাপিত হয় সরকারী না না সুযোগ সুবিধা দিয়ে।আমাদের মধ্যবিত্ত শ্রেনী থেকে উঠে আসা সুযোগ সন্ধানী ছাত্র সমাজ (আমি সহ) এটিকে কাজে লাগায়।
সত্যি কথা বলতে কি, জীবনের সাথে সম্পর্কহীন মুখস্ত বিদ্যায় শিক্ষিত তথাকথিত ছাত্রদের মানসিক বিকাশ এ দেশের নিরক্ষর মানুষদের থেকে বেশি নয় (দুয়েকটি ব্যতিক্রম বাদে)।সুতরাং তাদের কাছ থেকে বেশি কিছু আশা করা উচিত না।ক্যাম্পাসে আমার নিরাপত্তা দেয়,আমাকে হলে সিট দেয়,আমার টিউটোরিয়ালের নম্বর দেয় ছাত্রদল,সুতরাং আমি ছাত্রদল করি।ছাত্র ইউনিয়ন বা ছাত্রফ্রন্ট করলে যে কেউ আমাকে হল থেকে বের করে দিতে পারবে ,ছাত্রদল বা ছাত্রলীগ করলে পারবে না..এটা হচ্ছে মধ্যবিত্তের সোজা হিসেব।

দ্বিতীয় কারন হচ্ছে গ্লাসনস্ত আর পেরোস্ত্রইকা এই সব ঘোড়ার ডিম দিয়ে সারা বিশ্বে সমাজতন্ত্রের আন্দোলনে এক বিশাল ধাক্কা দেয়া হয় তখন।সোভিয়েত পন্থী দলগুলো তখন একধরনের শূণ্যতায় ভোগে এই দেশে আর যদিও না ভুগে,তবু তারা এর একটি গ্রহনযোগ্য যুক্তি সাধারন ছাত্রদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে ব্যর্থ হয়।সাধারন ছাত্রদের মাঝে ধারনা জন্মে সমাজতন্ত্র একটি ব্যর্থ প্রজেক্ট।সাধারন মানুষ কখনোই হারা পার্টির সাথে থাকতে চায় না।
তাই বামপন্থার প্রতি ঝোকটা সাধারন ছাত্রদের মাঝে কমে যায়।

আরেকটি বড়ো কারন হলো ,বাম আন্দোলনের নেতাদের ঐক্যবদ্ধতা না থাকা। এক জাসদ ভেঙে আজ কতোগুলো জাসদ বাসদ হয়েছে,সেটা সাধারন মানুষের পক্ষে গুনে বের করা মুশকিল হয়তো। ব্র্যাকেট বন্দী এই দলগুলো বি্চ্ছিন্ন ভাবে কোন প্রভাব ফেলতে অক্ষম।একজন ছাত্রকে শুধু কমিউনিজম জানলে হবে না তাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে কোন দল করবে,সেকি ছাত্রফ্রন্ট করবে,ছাত্র ইউনিয়ন করবে,ছাত্রমৈত্রী করবে,জাসদ ছাত্রলীগ করবে?
সেই সংগঠনটিও শেষ পর্যন্ত টিকবে কি না,সেটাও প্রশ্ন হয়ে দাড়ায়।
এই সব কনফিউশন শেষ পর্যন্ত সাধারন ছাত্র ছাত্রীদের বিশাল অংশকে বামপন্থার খোজ খবর নিতে অনুৎসাহিত করে।

উৎস এর ছবি

ধন্যবাদ জেবতিক, সুমন-১, সুমন-২, ভাস্কর অংশগ্রহনের জন্য। এগুলোকে তাহলে একজায়গায় ব্লগের বই আকারে প্রকাশ করছি।

হিমু এর ছবি

ফরহাদ মজহারের লেখা পড়তে গেলে ক্লান্তি আসে। কারণ তার লেখার উদ্দেশ্যই সেটা। লোকজনকে থোড় বড়ি খাড়া খাড়া বড়ি থোড়, মাঝে মাঝে বাড়া থড়ি খোড় বলে ক্লান্ত করে চিপা দিয়ে আলগোছে নিজের ধান্ধার কথাটা বলা। হয়তো সে বিরাট জ্ঞানী, আমি বিশাল মূর্খ, কিন্তু দুঃখিত, তাকে ধান্ধাবাজ ছাড়া কিছুই মনে হয় নাই।


হাঁটুপানির জলদস্যু

??? এর ছবি

ধন্যবাদ সুমন চৌধুরী।

রাজনৈতিক অর্থশাস্ত্র বিষয়ে আপনের অগাধ আস্থা থাকায় আমি দোষের কিছু দেখি না। তবে সমস্ত ভর ঐখানেই আরোপ করার বিপদ আমি টের পাইছি সাবঅল্টার্ণ হিস্টরিয়ানদের কাছ থিকা। রাজনৈতিক অর্থশাস্ত্রমতে, যুদ্ধ বা দাঙ্গা চাপায়া দেওয়া জিনিস। কিন্তু, এখানে ওখানে, প্রকাশ্যে গোপনে, কোনরকম সাংগঠনিক তৎপরতা ছাড়াই যে ইংরেজশাসিত অবিভক্ত ভারতবাসী অজ অজ গ্রামে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সংগ্রামগুলো চালাইছে, তারে রাজনৈতিক অর্থশাস্ত্রে সন্তোষজনকভাবে ব্যাখ্যা করা যায় নাই। ভারতবর্ষের ইংরেজশাসন কিন্তু কার্ল মার্কসের "নোটস অন ইন্ডিয়ান হিস্টরি" ফলো করে নাই। কখনো কখনো উল্টারথ হৈয়া গেছে।

আপনে যে কৈলেন ১৯০৫ থিকা ১৯৪৭ পর্যন্ত লেঙ্গুঠি খেলায় অন্তজ জনের চৈতন্যের কোন মূখ্য ভূমিকা নাই, এইটা আপনের মূলধারার ইতিহাস-পড়া জ্ঞান থিকা বলা। বিস্তারিত আলোচনার সুযোগ এইখানে নাই, থাকলে রণজিৎ গুহ-র "Elementary Aspects of Peasant Insurgency in Colonial India" বইটার একটা রিভিউ করা যাইত। ভারতবর্ষের দাঙ্গা ও ইংরেজশাসনের যে ইতিহাস রমিলা থাপার থিকা বদরুদ্দীন উমর পর্যন্ত লেখার চেষ্টা করছেন (উমর সাহেবের মেথডলজির বিশিষ্টতা কি, একটু জানাইয়েন), তার মেথডলজি নিয়া প্রশ্ন তুলেছেন সাবঅল্টার্নরা। সংশপ্তক-এর রমজানও কিন্তু একই মেথডলজির প্রডাক্ট।

ফরহাদ মজহার প্রসঙ্গে আপনার কথার জবাব আমি আমার লেখার মন্তব্য অংশে দিয়েছি। একটা কথা এখানে মন্তব্য আকারে বলি: ফরহাদ মজহারের সমালোচনা যখন করা হয়, তখন সবচে বেশি প্রাধান্য পায় তার ব্যক্তি চরিত্র, ব্যক্তিগত অভিসন্ধি এসব। ফলে সমালোচনার বদলে কুৎসা রটনাই হয়। এতে তার তাত্ত্বিক সুপ্রিমেসী আরো প্রতিষ্ঠিত হয়। হিমুর মত অনেকেই দেখি তার যুক্তির মোকাবিলা না কৈরা তারে "ধান্ধাবাজ" বৈলা দায়িত্ব শেষ কৈরা দেন। ব্যাপারটা এরকম, একটা দৃষ্টান্ত দেই: ধরেন সুমন চৌধুরীর সাথে তর্কবিতর্কের এক পর্যায়ে আমি বললাম, সুমনের দাড়িতে দুর্গন্ধ! তাতে আমি যতই ভাবি যে সুমন চৌধুরীকে একহাত নেয়া হৈল, প্রকৃত প্রস্তাবে তার যুক্তির কাছে আমার পরাজয়ই প্রতিপাদিত হৈল। অথচ, ফরহাদ মজহারকে তাত্ত্বিকভাবে এরকম অপ্রতিরোধ্য ভাবার কোনই কারণ নাই।

সুমন চৌধুরী এর ছবি

ধন্যবাদ সুমন রহমান।

ব্যক্তিগত আক্রমণ আদপেই কোন ভালো কিছু না। ১৯০৫ থিকা ১৯৪৭ এর লেংগুঠি খেলার খেলোয়াড়রা কেউই অন্ত্যজজন ছিলেন না। তাহারা অন্ত্যজজনদের লইয়া খেলিয়াছেন। এইক্ষেত্রে যাহারা চাল দিয়াছেন এবং যাহাদের উপর দিয়াছেন এই দুইটার মধ্যে কাহারা কি উদ্দেশ্যে দিয়াছেন সেইটা বাদ দিলে কিন্তু বিষয়টার পনের আনা নাই হইয়া যায় গা। যারা চাল দিছেন তারা মোটামুটি এককেন্দ্রিক। যাদের উপরে দেওয়া হইছে তার আলোচনায় গ্রামসী আসে।যাউকগা কথা গ্রামসীতে যাক সেইটা আমার উদ্দেশ্য না।গ্রামসীর লগে আমার কোন সমস্যা নাই। মজহার সাহেবরে নিয়া আলোচনা হইতে ছিল। গ্রামসী আইসা কৃষক আন্দোলনের লগে আদিবাসীদের সংগ্রামরেও লগে নিয়া আসে। তাতে তীতুমীরের লগে বীরসা মুন্ডার ফাইট হয় না। সমস্যা দেখা দেয় দুদুমিয়া/তীতুমীরের লগে কায়দা কইরা মুসলীম লীগ-জামাতে ইসলামীর ফটকামীর ঘন্ট বানানোর চেষ্টা করলে। বদরুদ্দিন উমর দেশ ভাগ নিয়া ইন্সটিটিউশনাল পলিটিক্সের ফ্রেমে আলোচনা করছেন। কারণ দেশ বিভাগ একটা ইন্সটিটিউশনাল ঘটনা। সেইটা সাহেবরা বাস্তবায়ন করছেন দেশী কিছু সু্ট পরা লোক দিয়া। এইদেশে ভুমি ব্যবস্থার স্বরূপ,কৃষক আন্দোলনের সমস্যা এই বিষয়গুলিতে সাবঅলটার্ন ভিউ খুব জরুরি। অর্থাৎ যখন কৃষকদের সঙ্গে নিয়া কোন সংগঠিত পরিবর্তনের দিকে যাওয়ার প্রশ্ন আসে তখন। ১৯৪৭ সালের দেশ বিভাগ ঘটানো হইছে উপর থিকা। ১৯৪৬ এর দাঙ্গার কিলিং এ নেতৃত্ব দিছে একদিক থিকা মীনা পেশোয়ারী আরেক দিক থিকা গোপাল পাঠা। এরা দুইজনেই পেশাদার খুনী ছিলেন। কেউই মনু-মোহম্মদের ভক্ত ছিলেন না। উমর সাহেবের লেখায় সমস্যা তো আছেই। সেইটা নিয়া আমার কোন ডগমা নাই।
...................................
ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

??? এর ছবি


"আমার ধারনা আলোচনার মোড় ঘুরে গেছে।
ব্যক্তি ফরহাদ মজহার বা বদরউদ্দিন উমরের অর্জন এখানে আলাদা করে দেখার সুযোগ নেই।যে কোন ধরনের ব্যক্তি বন্দনা শেষ পর্যন্ত কোন ভালো ফল বয়ে আনে না।"

আরিফ জেবতিক এই উক্তি দিয়া কী বোঝাইলেন পরিষ্কার হৈল না। কেন ফরহাদ মজহার আর বদরুদ্দীন উমর এর অর্জনকে আলাদা কৈরা দেখনের সুযোগ নাই? আমি ব্যক্তিগতভাবে ফরহাদ মজহারকে বাংলাদেশের বামপন্থার ইতিহাসে সংমিশ্রিত মনে করি না, যদিও তিনি অনেকদিন ধৈরাই নিজেরে বামপন্থী বৈলা দাবি করেন। বাংলাদেশের বামপন্থার ইতিহাসে যতটুকু সাফল্য, ফরহাদ মজহার তার ভগ্নাংশের দাবিদারও হৈতে পারেন কিনা, আমার সন্দেহ আছে। আবার বামপন্থার পরাজয়কেও তিনি কখনই নিজের গায়ে মাইখ্যা নেন না। প্রত্যেকটা অর্জনকেই আলাদা কৈরা দেখা লাগবে আরিফ, না হয় শফি সামীদের ভিড়ে ভ্যালরী টেইলররা হারায়া যাইবেন! আর "ব্যক্তিবন্দনা" বা "ব্যক্তিকেন্দ্রিক" আলোচনা যে ভাল ফল বয়ে আনে, তার ফল কিন্তু আরিফ জেবতিক নিজেই। কী বলেন?

উমর এবং মজহার কেউই তেমন কোন প্রভাব সাধারণের মধ্যে বিস্তার করতে পারছেন বৈলা আমার মনে হয় না। চূড়ান্ত সঠিক দিক বৈলা ইতিহাসে কিছুই পাওয়া যায় নাই। আর বদরুদ্দীন উমর তার নিজের (তাত্ত্বিক?) অবস্থান লৈয়া কোন প্রশ্ন তোলার অবকাশ যদি না দিয়া থাকেন, তাইলে এইটা তার এবং তার অনুসারীদের জন্য দুর্ভাগ্যজনক।

আপনার বাদবাকি মন্তব্য বিষয়ে আমার বলার কিছু নাই।

সুমন চৌধুরী এর ছবি

আমি ব্যক্তিগতভাবে ফরহাদ মজহারকে বাংলাদেশের বামপন্থার ইতিহাসে সংমিশ্রিত মনে করি না

..পয়েন্টে একমত।
উমর সাহেবের সমর্থক হইলে সরাসরি তার দলের পক্ষেই কথা কইতাম।
.......................................
ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

ধুসর গোধূলি এর ছবি

ঘটনাটা কি?
আলোচনা জমছে নাকি রহমান বনাম চৌধুরী ঢিশুম ঢিশুম চলতাছে!
সচলায়তনের বাকি চৌধুরীরা গেলো কই, রহমানরা?

জাগো বাহে কুন্ঠে সবাই? হাততালি
_________________________________
<স্বাক্ষর দিমুনা, পরে জমিজমা সব লেইখা লইলে!>

??? এর ছবি

সমস্যা দেখা দেয় দুদুমিয়া/তীতুমীরের লগে কায়দা কইরা মুসলীম লীগ-জামাতে ইসলামীর ফটকামীর ঘন্ট বানানোর চেষ্টা করলে।

ঠিক কথা সুমন চৌধুরী। এই জায়গাটাতে এলার্ট থাকনের দরকার আছে। ফরহাদ মজহার লৈয়া এইরকম জায়গাতেই আমি সমস্যা দেখি। তিনি যখন ইতিহাসের বিশ্লেষণ করেন, চমৎকার! কিন্তু যখনই তার বর্তমান ভাষ্য হাজির করেন, গোলমালটা থাকে সেইখানেই। কিন্তু তাতে তার ব্যাখ্যা অভিনবত্ব খারিজ হৈয়া যায় না, বা করা উচিতও না। উত্তরসূরী হিসাবে আপনের আমার তো সিলেকটিভ হওনের সুযোগ আছে।

দেশবিভাগ একটা ইনস্টিটিউশনাল ইভেন্ট। আবার এইটা কিন্তু হিস্টরিক্যালি দ্য এন্ড অব দ্য কলোনিয়াল রুল! ফলে কলোনিয়াল শাসনের অবসান কী কারণে হৈল, কিভাবে হৈল, সেইটা দেশবিভাগের আলোচনায় আসে, পূর্বরাগ হিসাবে। কৃষকদের সঙ্গে নিয়া কোন সংগঠিত পরিবর্তনের দিকে যাওয়ার সঙ্গে সাবঅল্টার্ন ঘরানার সম্পর্ক নাই। সাবঅল্টার্ন চিন্তার মূলকথা হৈতেছে, কৃষকরা তাদের নিজেদের সংগ্রাম, রাজনৈতিক কোন প্রভাব ব্যতিরেকে, কীভাবে কৈরা গেছেন। বা এখনো করতেছেন। এই প্রসঙ্গে গ্রামশি তো অবশ্যই আসে। গ্রামশির ফ্রেমওয়ার্ক ভাঙ্গাইয়াই তো এত কিছু!

ধন্যবাদ আপনাকে।

সাধক শঙ্কু এর ছবি

ব্যোম মহাবীর
শঙ্কু হাজির !

যাউক এতো দিনে মজহারের একজন কোরেসপন্ডেন্ট পাওয়া গেল। ভাল হইছে। যেই পয়েন্টে রহমান ভাই চৌধুরীর লগে একমত হইলেন সেইটারেই কিন্তু এই ভদ্রলোক বামছাত্র সংগঠন থিকা উবিনিগে লোক ভাগানোর তড়িকা হিসাবে ব্যবহার করছে গত বছর দশেক যাবৎ। সেইটা দিয়াই কিন্তু তার ভন্ডামী টের পাওয়া যায়। সাদাসিদা ভোদাই পোলা হলে উইঠা বামপন্থী ছাত্রনেতার বাটে পইড়া কমরেড হইয়া যায়, তারপর মাইর ধইর খাইয়া হয় বিপ্লবী। তারপর বাইর হওয়ার আগে দেখে হায় হায় নেতারা তো উইড়া গেল আমি যাই কই? হেতম তাঈরূপে নাইমা আসে মজহার মামা। আমার কোলে আসো বাবু। নোকরি-ছোকরি-ইনকিলাব সবই পাইবা। নয়াকৃষিতে ঢুকে কৃশকায় বেতনে। লগে নুনের ছিটা হিসাবে অরূপ রাহীর লাইভ মিউজিক। আস্তে আস্তে মাথা খোলে। খুলার পরে হয় বড় সাগরেদ বানাইয়া রাইখা দেয়। নাইলে গাইলাইতে গাইলাইতে বাইর হইয়া আসে। অনেকে বাইর হইতেও পারে না। ততদিনে ক্যারিয়ারের সর্বনাশ যা হওয়ার হইয়া গেছে।

পুনশ্চ > রাহীর নিন্দা করা ঠিক হয় নাই। ছ্যামড়া কবিতা ভালো ল্যাখে। আর আমারে বার তিনেক নিজে হাতে কল্কি সাজাইয়া দিছে।


গড়ি দালানকোঠা ফেলে দিয়ে শ্মশাণে বৈঠকখানা

??? এর ছবি

হা হা হা হা!!! দারুণ কৈছেন শঙ্কু!! খুব মজা পাইলাম!!!

উৎস এর ছবি

একটু অফ টপিক, নয়াকৃষি কি এনজিও?

সাধক শঙ্কু এর ছবি

অফ টপিক না। পুরাই এনজিও।


গড়ি দালানকোঠা ফেলে দিয়ে শ্মশাণে বৈঠকখানা

সাধক শঙ্কু এর ছবি


গড়ি দালানকোঠা ফেলে দিয়ে শ্মশাণে বৈঠকখানা

??? এর ছবি

শঙ্কু কৈলেন "এতো দিনে মজহারের একজন কোরেসপন্ডেন্ট পাওয়া গেল"। তিনি কি আমারে বুঝাইলেন?

যদি আমারে বুঝান, তাইলে আমি তার অনুধাবনের দীনতার জন্য লজ্জিত। তিনি আমার পাটাতনখানি খেয়াল করেন নাই। আমাকে এত কথা কৈতে হৈতেছে, এর কারণ হৈল, আপনেরা ফরহাদ মজহার লৈয়া কথা কৈতে আসছেন তারে কিছুমাত্র পাঠ না কৈরাই। আমি যে আমার পাঠের অভিজ্ঞতা শেয়ার করলাম, চিন্তা শেয়ারের সাথে সাথে, এজন্য আমার একটা ধন্যবাদ পাওনা আছিল। এইসব উড়াধুরা মন্তব্য না কৈরা আরেকটু প্রস্তুতি রাখা ভাল, শঙ্কু। কনস্পিরেসি থিওরির বাইরে আইসা দ্যাখেন, জগত আরো বৈচিত্র্যময়!

সাধক শঙ্কু এর ছবি

ধন্যবাদ মিস করার জন্য দু:খিত। আমি চোট্টাপানি তত্ত্বের অনুসারি না। মোকাবিলা প্রসংগে আপনের উচ্ছাস দেইখা সমর্থক মনে হওয়া তেমন বিচিত্র ছিল কি? তবে মনে কষ্ট পাইয়া থাকলে অতীব দু:খিত। অল্পস্বল্প গ্রামসী আমারো পড়া আছে। মার্কস-এঙ্গেলস তার থিকা হয়তো আরেক্টু বেশী। তবে কোন জায়গাতেই সংখ্যাগরিষ্টের ধর্মমতের লগে খিচুড়ি পাকানোর কথা নাই। বরং লোক সমাজের মনস্তত্ত্ব বোঝার কথা আছে। সেইখানে তো ধর্ম একটা উছিলা। ধর্মতো সেইখানে গ্রন্থাকারে নাই। বরং ধর্মগ্রন্থের অথবা সেই গ্রন্থ সম্পর্কে কথিত বিভিন্ন বিষয় নৃবিজ্ঞানের অভিজ্ঞতার লগে মিশ খাওনের কথা আছে। সেইটা বোঝার জন্য আমার মজহারের বই না পড়লেও চলবো। হ্যার যেই কয়টা ল্যাখা পড়ছি পইড়া হয় দাপাইয়া হাসছি নাইলে প্ল্যান করছি হালারে একদিন বাঁশডলা দেওনের। ফটকারে ফটকাই কমু। এই জন্য মোটেও দু:খিত না।


গড়ি দালানকোঠা ফেলে দিয়ে শ্মশাণে বৈঠকখানা

??? এর ছবি

গ্রামশি পড়ছেন, কাজেই আপনে আমার থিকা ভাল জানেন "হেজেমনি" জিনিসটা কি। সমাজতন্ত্র এবং নাস্তিকতা দুইটা ভিন্ন ধরনের দার্শনিক মীমাংসা। কিন্তু আমাদের দেশে সেইটা একসাথে, এক দেহে নাজিল হৈছে। ফলে সমাজতন্ত্র কায়েম হৈলে মানুষের ধর্মকর্ম বিপন্ন হৈয়া যাইবে, এই ধরনের পুজিবাদী প্রচারণার জায়গা তৈয়ার হয়। এই জিনিসটা আমাদের দেশের বামপন্থী আন্দোলনের প্রভূত ক্ষতি করছে, এই কথা ফরহাদ বলছেন। কিন্তু আজ পর্যন্ত কোন বাম-তাত্ত্বিকের লেখায় এর সন্তোষজনক কোন ব্যাখ্যা আমার চোখে পড়ে নাই।

সমাজ থিকা ধর্মের বিদায় সমাজতন্ত্রের লক্ষ্য না, কিন্তু আমাদের দেশের অনেক মানুষ এইভাবে জিনিসটা বিশ্বাস করেন। কেন করেন, কোন হেজেমনির মধ্যে বাস করেন তারা? টকেটিভ বামপন্থীরা এই অহেতু লোকবিশ্বাসকে মোকাবিলা করতে পারেন নাই ক্যান?

শঙ্কু ফরহাদ মজহাররে বাশডলা দিতে চান, ফটকা কন, আমার তাতে মাথাব্যথা নাই। ব্যক্তি ফরহাদরে নিয়া আমার ভাবনা নাই, আমি উনারে চিনিও না। এইখানে আমরা ফরহাদ মজহারের চিন্তা নিয়া আলাপ করতেছি। সেইটারে আপনে গুরুত্বপূর্ণ মনে না করলে সেই রাস্তাটা আমাদের দেখায়া দেন। তার লেখা পৈড়া দাপায়া হাসছেন, বা বাশডলা দিবার প্ল্যান করছেন, এইসমস্ত এলিটিস্ট বিবৃতি এইখানে অবান্তর।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।