১.
ভবিষ্যত দেখার ইতিহাস
.................................
‘‘মানুষ সবসময় যা বলছে, তা নিজেরাই সব বলছে- তা কিন্তু নয়।
সময় তার কথাগুলো অনেক সময় আমাদেরকে দিয়ে বলিয়ে নেয়।
আমাদের অজান্তেই। “
ইতিহাসবীদ সালাহউদ্দীন আহমেদ বলে হাসলেন। কথা শেষ।
উঠে দাঁড়ালাম। তখনও জানা নেই, এই শেষ দেখা। আর দেখা হবে না।
তিনি বিদায় দিতে দরজা পর্যন্ত আসলেন।
“ ইতিহাস একটা প্রবাহের মতো। তুমি যদি ইতিহাসের সাথে থাকো তাহলে ভবিষ্যত দেখতে পাবে।“
এটাই আমাকে বলা তার শেষ কথা।
কাল নির্বাচন। কী হবে? বাংলাদেশের এই রাজনীতি কোথায় নিয়ে যাবে আমাদের? কোন ভবিষ্যতে?
আর সেই ভবিষ্যতের চোখে আজকের সময়টাকে কেমন দেখায়?
কথাটা ভাবতে গিয়ে সালাহউদ্দীন স্যারের কথা মনে পড়ে গেল।
২.
ইতিহাসের ইঙ্গিত: রাজনীতিতে বিএনপির মৃত্যুপর্ব
.............................................
বর্তমান সময়টা রাজনীতির একটি মৃত্যুপর্ব হিসেবে দেখা যাবে।
বাংলাদেশের রাজনীতি প্রায় চল্লিশ বছর ধরে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি এই দুই শক্তির যে খেলা হয়ে উঠেছিল
এই মৃত্যুর মধ্য দিয়ে তার অবসান হতে চলেছে।
শুরু হতে চলেছে আগামী দিনের নতুন রাজনীতির চেহারা।
এখন এই মৃত্যুপর্বের শুরু ১৪ বছর আগে। ২০০৪ সালের অগাস্ট মাসের ২১ তারিখ, বিকেলবেলায়।
সে সময় বিরোদীদলের নেত্রী শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্বকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে
যে গ্রেনেড হামলা পরিচালনা করা হলো ঠিক তখন।
সেই মুহূর্তে বিএনপি রাজনৈতিক দল হিসেবে আত্মহত্যা করলো।
(যদিও বিএনপি বলে, দল হিসেবে তারা এর সাথে জড়িত নয়,
কিন্তু সব প্রমাণ এবং সাধারণ বোধ বলে বিএনপি যাদের কথায় চলে- তারা জড়িত ছিলেন)।
গ্রেনেড হামলার ঘটণাটাই ঠিক করে দিলো
বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক কোন ব্যবস্থায়
আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি একসাথে থাকতে পারবে না। কোন একটি দলকে বিদায় নিতে হবে।
সাধারণ বোধ থেকে আমরা বুঝতে পারবো।
অনেকদিন আগে প্রবীণ সাংবাদিক কাজী সিরাজ একবার গ্রেনেড হামলার সময়কার একটা বর্ণনা দিয়েছিলেন।
সেদিন, তখন-
প্রেসক্লাবে এক সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির মহাসচিব আবদুল মান্নান ভুইয়া।
আলোচনা চলছে, হঠাৎ বোমার শব্দ। একটার পর একটা।
বক্তা থেমে গেলেন। কী বলবেন বুঝতে পারছেন না। সবাইও ঘটনার বোঝার চেষ্টা করছেন।
এমন সময় একটা ফোন এলো।
মান্নান ভূঁইয়ার সহকারী ফোনটা ধরে কথা বললেন, সাথে সাথেই তার হাতে ফোনটা দিলেন।
মান্নান ভূঁইয়া বসে ছিলেন। ফোনের কথা কানে যেতেই উত্তেজনায় দাঁড়িয়ে গেলেন। মুখটা হয়ে উঠলো গোলাপী লাল। বিড়বিড় করে চাপা ক্ষোভের মধ্যেও গভীর হতাশার মতো শোনালো
রাজনীতিটা আর থাকলো না। রাজনীতিটা আর থাকলো না।
সেনা শাসনে এমনটা হতে পারে।
রাজনৈতিক নেতৃত্বকে হত্যা করে ক্ষমতায় থাকার চেষ্টা, সেনা শাসনের বৈশিষ্ট্য।
অস্ত্রের শক্তিই তাদের ক্ষমতার উৎস। তারা সেভাবেই ক্ষমতায় থাকেন।
এটা ঠিক, বিএনপির জন্ম সেনাবাহিনীর ভেতরে।
১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যার পর
জিয়াউর রহমান সেনা শাসনের মাধ্যমেই ক্ষমতায় আসলেন। বিএনপি তৈরি করলেন।
তবু জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর আরেক সেনানায়ক স্বৈরাচারী এরশাদ শাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে করতে
খালেদা জিয়ার বিএনপি রাজনৈতিক দল হয়ে উঠেছিল।
বিএনপি আর সেনাবাহিনীর দল ছিল না।
বিএনপি সরকার এবং দলের যে অংশ এর সাথে জড়িত ছিলেন-
তারা কীভাবে ভেবেছিলেন তাদের উদ্দেশ্য সফল হলে, শেখ হাসিনা সেদিন মারা গেলে
বিএনপির ক্ষমতায় থাকা দীর্ঘায়িত হবে?
তাহলে এই গ্রেনেড হামলার পরিকল্পনা যারা করেছিলেন
তারা কি ভেবেছিলেন, তাদের দল সেনা শাসনের প্রতিনিধিত্ব করে?
সেনাবাহিনী কি এমন একটা দলকে তাদের প্রতিনিত্বিশীল হিসেবে মেনে নিতো?
মনে হয় না। কারণ সেনাবাহিনী যদি এই হামলার পেছনে থাকতো
তবে সত্যি কথা শেখ হাসিনা বেঁচে থাকতে পারতেন না।
তার ওপর আবার হামলা হতো, যতক্ষণ এটা সফল না হতো।
বেনজির ভুট্টোর মতো, তাকেও প্রাণ দিতে হতো।
কিন্তু তা হয় নি। সেনাবাহিনী এর সাথে ছিল না।
তাই ঠিক সেই মুহূর্তে, ওরা শেখ হাসিনার নয়- তারা নিজেদের মৃত্যুকে ডেকে আনলো।
সহজ হিসেব।
কিন্তু তাহলে এই সহজ বিষয়টি তারা বুঝতে পারে নি
এটা তাদের জন্য আত্মহত্যা হচ্ছে?
ওরা কি অন্ধ হয়ে গিয়েছিল?
কে ওদেরকে অন্ধ করে দিয়েছিল?
নাকি সময় তাদেরকে দিয়ে এই খেলাটা খেলিয়ে নিয়েছিল?
৩.
১৯৪৭, পাকিস্তান ও অমিমাংসিত মুক্তিযুদ্ধ
............................................
রাজনীতিতে বিএনপি ছিল শেষ না হওয়া মুক্তিযুদ্ধের ফল।
মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং মূল্যবোধের অস্পষ্টতার মধ্য দিয়ে এর জন্ম।
এর শেকড় ‘পাকিস্তান‘ আন্দোলনের মধ্যে।
এই দেশের মাটিতে মুসলিম লীগের জন্ম। বাঙালী মুসলমানরা ‘মুসলমান‘ পরিচয়কেই প্রধান পরিচয় হিসেবে গ্রহণ করে
পাকিস্তান সৃষ্টিতে প্রধানতম ভূমিকা রেখেছেন।
১৯৪৭ পাকিস্তান স্বাধীন হওয়ার পর ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে
এই অঞ্চলের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমান ‘মুসলমান‘ পরিচয়ের বদলে ‘বাঙালী‘ পরিচয়কেই নিজের প্রধান পরিচয় হিসেবে আবিষ্কার করলেন।‘মুসলমান‘ পরিচয় চাপা পড়ে গেল।
‘মুসলিম লীগ’ থেকে জন্ম নিলো ‘আওয়ামী মুসলিম লীগ‘। সেখান থেকে ‘মুসলিম‘ শব্দটি কেটে আওয়ামী লীগ।
এই অসাম্প্রদায়িক হয়ে ওঠা দলটিকে জাতীয়তাবাদী অসাম্প্রদায়িক একটি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে গ্রহণ করলেন প্রগতিশীল অসাম্প্রদায়িক মানুষ।
বঙ্গবন্ধু সময়ের ঘোড়ায় আসীন হলেন।
প্রতীক হয়ে উঠলেন বাংলার। বাঙালীর।
স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হলো।
বঙ্গবন্ধু বন্দী হয়ে পাকিস্তানের কারাগারে।
তাজউদ্দীন আহমেদ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা করলেন।
স্বাধীনতার ইশতেহার গ্রহণ করলেন। রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি হয়ে উঠলো পুরোপুরি অসাম্প্রদায়িক।
মুক্তিযুদ্ধের চেতনা হিসেবে যা প্রতিষ্ঠিত হলো
এই অঞ্চলের অধিবাসীরা অতখানি অসাম্প্রদায়িক ছিলেন না। তারা তখনও হৃদয়ে তখনও মুসলমান।
বঙ্গবন্ধু আসলেই এই জনপদের সবচেয়ে একাত্ম প্রতীক।
তিনিই জনগনের হৃদয়ই ছিলেন।
তিনি পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্তির পর ‘জাতির পিতা‘ হিসেবে মুক্ত বাংলাদেশে পা রেখেই ঘোষণা করেছিলেন
আমি বাঙালী, আমি মুসলমান। মুসলমানরা একবার মরে বারবার মরে না।
৪.
স্বাধীন বাংলাদেশের রাজনীতির অবাস্তব বাস্তবতা
..............................................
এটাই স্বাভাবিক ছিল যে
নতুন দেশের বাস্তবতায়
একটি রাজনৈতিক পক্ষ বিন্যাস জরুরি হয়ে উঠেছিল।
যে কোন রাজনৈতিক পক্ষ বিন্যাসকে চারভাগে ভাগ করা যায়।
একটি রক্ষণশীল দল, যারা সমাজের প্রচলিত মূল্যবোধগুলোকে অধিক গুরুত্ব দিয়ে রাজনীতি করে।
অন্যটি প্রগতিশীল দল, যারা প্রচলিত মূল্যবোধগুলো সংস্কার আনার মধ্য দিয়ে সমাজকে আগামীর দিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য কাজ করে।
আর এদের বিপরীতে থাকে দুটো পক্ষ
চরম রক্ষণশীল যারা সমাজকে পিছিয়ে নিয়ে যেতে চায় অতীতের দিকে
আর অন্যটি চরম প্রগতিশীল। কোন মূল্যবোধকেই তারা প্রশ্রয় দিতে রাজি নয়।
মূলত গণতান্ত্রিক সমাজে মাঝামাঝি- গ্রগতিশীল আর রক্ষণশীল এই দুই দলের একটা ভারসাম্যমূলক অবস্থানের ওপর নির্ভর করে।
কিন্তু সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশে
বঙ্গবন্ধু আওয়ামী লীগের মাধ্যমে দেশ পরিচালনা করতে গিয়ে একটি সমস্যায় পড়লেন।
সেটি হলো মুক্তিযুদ্ধের ফলে
দেশের মানুষ যে নতুন বাস্তবতার মুখোমুখি হয়েছিল, তা তিনি মুক্তিযুদ্ধের সময় অনুপস্থিত থাকার কারণে বুঝতে পারেন নি।
পাকিস্তান বিরোধী আন্দোলনের একটি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে আওয়ামী লীগ গড়ে ওঠার কারণে
নতুন বাংলাদেশে নিজেদের মতবিরোধও একটি বাস্তবতা হয়ে ওঠে।
এ সময় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা একটি অলীক ব্যাপার হয়ে যায়।
১৯৭৩ সালের ভোট আওয়ামী লীগের আমলে চরম ব্যর্থ একটি উদাহরণ হয়ে আসে।
এই অঞ্চলের মানুষ প্রথম ভোটের কারচুপির অভিজ্ঞতা লাভ করে।
এটি বঙ্গবন্ধু ঠেকাতে পারতেন প্রথমেই
বিদ্ধ্বস্ত দেশকে পুনর্গঠনের লক্ষ্যে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা কিছুদিনের জন্য স্থগিত রেখে
বাকশালের মতো জাতীয় সরকার গঠন করে রাষ্ট্র পরিচালনা করা।
মুক্তিযুদ্ধে শারীরিরকভাবে অনুপস্থিতির অনভিজ্ঞতায় বঙ্গবন্ধু ঠিক এ পথটি বুঝতে পারেন নি।
আর কোন কিছু সামাল দিতেও পারেন নি।
৫.
তাজউদ্দীন আহমেদ বনাব বঙ্গবন্ধু : প্রগতিশীলতার সাথে রক্ষনশীলতার না মেলা বন্ধুত্ব
..............................................
আওয়ামী লীগের প্রগতিশীল অংশটির সবচাইতে উজ্বল প্রতিনিধি ছিলেন তাজউদ্দীন আহমেদ।
মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধ হিসেবে সমাজতন্ত্র যুক্ত করার যে ধারা কাজ করেছিল তিনি তাদের প্রতিনিধি ছিলেন।
বঙ্গবন্ধু কিন্তু বামন্থী ছিলেন না। পাকিস্তান আমলে তিনি একবার বলেছিলেন, এই দেশে আমিই একমাত্র সমাজতন্ত্র ঠেকাতে পারবো।
ফলে স্বাধীনতার পর তাজউদ্দীন আহমেদের সাথে বঙ্গবন্ধুর দূরত্ব বেড়ে যেতে থাকলো।
ভূমি সংস্কার করলেন না বঙ্গবন্ধু, এটা ছিল তাজউদ্দীন আহমেদের কান্নার কারণ।
এর মধ্য দিয়ে বেড়ে ওঠা অসোন্তষ জমাট বাঁধে। ৭৫ আসে।
বঙ্গবন্ধু নিহত হলেন। অভিমান সত্ত্বেও বঙ্গবন্ধুর প্রতি পূর্ণ আনুগত্য প্রকাশ করে তাজউদ্দীন আহমেদ নিহত হলেন।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে আবার মুক্তিযুদ্ধের অসমাপ্ত কাহিনী ফিরে এলো।
৬.
সম্পত্তির লড়াই
..........................
সেটি আসলে লোকাল রাজ রাজড়ার কাহিনীর মতো।
বিএনপি আর আওয়ামী লীগের লড়াইয়ের একটি অন্য দিক আছে।
সেটি হলো সম্পদের অধিকারের লড়াই।
৪৭ থেকে ৭১ সাল, পাকিস্তান আমলের এই ২৫ বছরে
এলাকার মুসলমান মোড়লরা হিন্দুদের সম্পত্তি দখল করে বিপুল সম্পদ অর্জন করেছিল
তারা ভয় পেয়েছিল
আওয়ামী লীগ ও অন্যান্য প্রগতিশীল দলগুলো ক্ষমতায় থাকলে এই দখল করা সম্পদ কেড়ে নিতে পারে।
তাজউদ্দীন আহমেদ এবং অন্যান্য প্রগতিশীলরা যা চাইছিলেন।
কিন্তু বঙ্গবন্ধু ঐতিহাসিক রক্ষণশীল অবস্থানের কারণে এটা করতে পারলেন না।
কিন্তু ৭৫ সালে বাকশালের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু খানিকটা প্রগতিশীল একটা অবস্থান নেয়ার পর
এই ভীতি থেকে সমাজের এই গোষ্ঠীটি সেনাবাহিনীকে ব্যবহার করে
বঙ্গবন্ধুকে ব্যবহার করে।
এটি পাকিস্তানকেন্দ্রিক রাজনৈতিক ব্যবস্থার পরাম্পরা।সেখানেও এমনটাই ঘটে।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী পাকিস্তান সেনাবাহিনীরই একটি ছায়া হিসেবে গড়ে উঠেছিল।
৭.
সেই ভারসাম্য ছকে
...........................
ভারসাম্য ছকটা ছিল
চরম ডান ও মৌলবাদী সংগঠন।
আওয়ামী লীগ (রক্ষণশীল)
একটি প্রগতিশীল দল যা এখনও নাই
বাম ও চরম বাম।
তা না হয়ে ছকটা হলো এমন
ডান ও মৌলবাদী সংগঠন।
বিএনপি (রক্ষণশীলতার মোড়ক পাকিস্তানী ধারার)
আওয়ামী লীগ (রক্ষনশীল বাংলাদেশের কিন্তু বিএনপির কারণে প্রগতিশীলতায় ভারাক্রান্ত)
বাম ও চরম বাম
এর ফলে সুস্থ গণতান্ত্রিক ভারসাম্যমূলক ব্যবস্থা আর গড়ে উঠতে পারছিল না।
বিএনপি ধর্ম এবং ভারতবিরোধিতার কথা বলে মানুষকে বিভ্রান্ত করে একটি শ্রেণীর প্রতিনিধিত্ব করছিল
যারা ছিল সম্পদ লুণ্ঠনকারী।
২০০১ থেকে ২০০৬ এ বিএনপির ভূমিকা রাজনৈতিক দলের নয়, বরং এই চরিত্রকেই তুলে ধরে।
এটা কোন রাজনৈতিক ব্যবস্থা অনুমোদন করে না।
প্রয়োজন হয়ে পড়ে রাজনৈতিক ব্যবস্থার যে ভারসাম্য তাকে ফিরিয়ে আনার।
এখন বিএনপির রাজনৈতিক মৃত্যু সে নিয়তির দিকে নিয়ে যাচ্ছে।
আবুদল মান্নান ভূঁইয়া সেদিন সময়ের ইঙ্গিতটা ধরতে পেরেছিলেন।
রাজনীতির মৃত্যু সেদিনই হয়েছিল।
১৪ বছর পর এটি এখন পূর্ণতা পাচ্ছে। বাস্তবতা হয়ে সামনে আসছে।
বিএনপি নেতৃত্বহীন হয়ে পড়েছে।
খালেদা জিয়া কারাগারে অসুস্থ অবস্থায় জীবনের শেষ দিনগুলো অতিবাহিত করছেন।
তার রাজনৈতিক উত্তরাধিকার তারেক জিয়া গ্রেনেড হামলার পরিকল্পনাকারী হিসেবে পলাতক।
তাদের অবর্তমানে কোন নেতৃত্ব গড়ে খালেদা জিয়াই তৈরি করে যান নি
যারা দলকে নিয়ে এগিয়ে যেতে পারেন।
খালেদা জিয়ার পরে বিএনপির প্রতীকটিই নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে।
তৈরি হবে এক রাজনৈতিক শূন্যতার।
এই শূন্যতা আমরা দেখি, রাজপথে। মিছিল নেই।
এই শূন্যতা দেখি নেতৃত্বে। দেখি বিরোধী নেতার মুখ রাজনীতির মঞ্চে নেই।
প্রকৃতিতে শূন্যতা নেই। শূন্যতা বলে যা মনে হয়, তা আসলে আগামীর গর্ভ।
আওয়ামী লীগেরই একটি অংশ বিএনপির সাথে ঐক্য করে তাদের নেতা হিসেবে ভরসা হয়ে উঠছেন।
তবে সময়ই এই শূন্যতা তৈরি করেছে? আগামী আসবে বলে।
৮.
আগামীর আগে বর্তমান
..............................
বাংলাদেশের রাজনীতিতে যারা আওয়ামী লীগের সমর্থক, তারা বলেন
গত দশ বছরে যে উন্নয়ন হয়েছে, তা বাংলাদেশের ইতিহাসে কোন শাসনামলে হয় নি।
শেখ হাসিনা এই দেশকে অনেক কিছু দিয়েছেন।
অবকাঠামোগত উন্নয়ন হয়েছে। নারীর অবস্থানের উন্নতি হয়েছে।নিজেকে এগিয়ে নিয়ে যেতে তারা এখন অনেক আত্মবিশ্বাসী। খাদ্যে বাংলাদেশ
স্বয়ংসম্পূর্ণ। যেটা ভাবাই যেত না। শিক্ষার মান নিয়ে প্রশ্ন উঠলেও শিক্ষার হার বেড়েছে। বিশেষ করে প্রাইমেরী ও নারী শিক্ষায় সরকারের সাফল্যের শেষ নেই। এগিয়েছে স্বাস্থ্যে। খেলায়। সবকিছুতেই। সারা বিশ্বও সেটা স্বীকার করেছে।
কিন্তু আওয়ামী লীগকে পছন্দ করেন না যারা তারা বলছেন,
শেখ হাসিনা গণতন্ত্রকে হত্যা করেছেন। মানুষের স্বাধীনতাকে কেড়ে নিয়েছেন। তার বিরোধীদের কণ্ঠ চেপে ধরেছেন। মানুষের ভোটের অধিকারকে অস্বীকার করেছেন। তিনি সবকিছু নিজের করে পেতে চান। তিনি বলেন, এ উন্নয়ন আমি করেছি। তিনি কি এটা নিজের টাকায় করেছেন? উন্নয়ন হয়েছে আমাদের রক্তে ঘামে উপার্জিত টাকায়। তিনি আমাদের কৃতিত্বকে নিজের বলে ছিনতাই করেছেন।
আওয়ামী লীগের সমর্থকরা বলেন, বিএনপি স্বাধীনতা বিরোধীদের পক্ষের দল। পাকিস্তানের আত্মা। তাদেরকে প্রতিহত করাই স্বাধীনতার মূল্যবোধ।
বিএনপির সমর্থকরা বলেন, আওয়ামী লীগ দেশকে বিভাজন করছেন। জঙ্গিবাদকে শেখ হাসিনাই তৈরি করছেন। তিনি ভারতের শক্তিতে টিকে আছেন। তাকে সরিয়ে দিলেই এই দেশ মুক্ত হবে।
দুজনের প্রতি ঘৃণামাখানো বিদ্বেষ এই সময়ের নিষ্ঠুর গল্প। যুদ্ধের চেয়েও গভীর।
৯.
নিষ্ঠুরতার গল্প
..................
আওয়ামী লীগের আচরন গ্রামীণ মোড়লের মতো। কাওকে সহ্য করতে পারে না।
ছাত্রলীগের দিকে তাকালে বোঝা যায়।
এরা ছাত্র কিন্তু তাদের হাতে বই নেই। আছে চাপাতি, রামদা, বন্দুক। তার কাজ, শিক্ষার সাথে নয়।
তার চোখ প্রতিপক্ষের ওপর- কখন ঝাঁপিয়ে পড়বে। সে প্রতিপক্ষ নিজের দলের ভেতর হোক বা বাইরের দলের হোক।
ছাত্রদলও এমনই। তবে মাত্রাটা একটু কম।
ছাত্রদল যেখানে চড় মারে, ছাত্রলীগ সেখানে ছুরি মারে। ছাত্রদল যেখানে ছুরি মারে, ছাত্রলীগ সেখানে জানে মেরে দেয়। বে
শিরভাগ আওয়ামী লীগ নেতাদের আচরন, কথা শুনে মনে হয় না তারা কারও কথা শুনতে চান।
তারা যেন মনে করেন, এই দেশটা তাদের।
তাদের তুলনায় বিএনপি কর্মীদের আচরন একটু নমনীয়।
ইতিহাস বলে, আওয়ামী লীগের এরকম আচরণের কারণ আছে।
একটি কারণ সামন্ততান্ত্রিক সংস্কৃতি। সমাজেরও। সমাজেরও বলে, দলেরও।
ব্যক্তিই এখানে প্রধান।সকল প্রশংসার লক্ষ্য।
বিএনপি এবং আওয়ামী লীগ দুদলই সামন্ততান্ত্রিক মনোভাবে পরিচালিত।
বঙ্গবন্ধুর বিপরীতে একটি প্রতীকের দরকার ছিল।
জিয়াউর রহমান সেই প্রতীক।
স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবে তাকে বঙ্গবন্ধুর বিপরীতে দাঁড় করানো হলো।
কিন্তু বঙ্গবন্ধু প্রতীক হিসেবে যত শক্তিশালী তাকে অস্বীকার করার চেষ্টা
তার কর্মীদের মধ্যে যে অবদমিত যন্ত্রণার জন্ম দিল, তারই একটি সামন্ততান্ত্রিক প্রতিচ্ছবি আওয়ামী হিংস্রতা।
এটা সত্য
জন্মের ছয় দশক জুড়ে যত আক্রমনের স্বীকার হয়েছে এই দলটি, আর কোন দল এত নিপীড়নের স্বীকার হয় নি।
মুক্তিযুদ্ধের আগে পাকিস্তান পর্বে, মুক্তিযুদ্ধের সময়ে
আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীরাই ছিল পাক্স্তিানী শাসক গোষ্ঠীর আক্রমণের প্রধান লক্ষ্য।
এমনকী স্বাধীনতার পর আওয়ামী লীগ যখন যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশে ক্ষমতায় বসলো,
তখনও আওয়ামী লীগকে জাসদ, সর্বহারা দলের আক্রমণের স্বীকার হতে হয়েছে।
তাদের এমপিদের হত্যা করা হয়েছে।
৭৫ এ বঙ্গবন্ধুকে, আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্বকে হত্যা করা হয়েছে।
তারপর থেকে আরও দুই দশক দলটিকে নিপীড়নের মুখোমুখি হতে হয়েছে।
২১ বছর পর আওয়ামী লীগ ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসে।
তারা বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার শুরু করেছিল। কিন্তু শেষ করতে পারে নি। সে
২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর আওয়ামী লীগকে চরম নিষ্ঠুরতার মুখোমুখি হতে হয়। আওয়অমী লীগকে ভোট দেয়ার কারণে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা চলে।
সাবেক অর্থমন্ত্রী এস এম কিবরিয়া, আহসানউল্লাহ মাস্টারের মতো নেতৃত্বকে হত্যা করা হয়।
২১ অগাস্টের গ্রেনেড হামলায় শেখ হাসিনাকে হত্যা করার যে চেষ্টা সেটা ছিল
বাংলাদেশের রাজনীতিতে ১৫ অগাস্টের চেয়ে এক ভয়ংকর ঘটণা।
কারণ এটি পরিচালিত হয়েছিল সরকারের অংশগ্রহণে। পরিচালিত হয়েছিল বিরোধী দলের ওপর।
আওয়ামী আচরনে যে আগ্রাসী ভঙ্গি তার পেছনে তাদের ওপর এই দীর্ঘকাল ধরে চলা নিষ্ঠুরতার একটা প্রভাব থাকবে,
মনোবিজ্ঞান সেটাই বলবে।
১০.
ভোট কে দেবে তার নির্বাচন
.......................
আমরা এখন একটি ঢেউয়ের সামনে।
ঢেউটা আমাদের কাল রাতেই নিয়ে যাবে আগামীর রাস্তায়।
কাল ভোট। ভোটের ফলাফলটা জানা।
বিএনপি বলবে ফলাফলটা আগেই তৈরি। আওয়অমী লীগের তৈরি করা ফলাফল।
আসলেই তাই।
ফলাফল নির্ধারিত তারপরও
এ ভোটটা আসলে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভোট, বাংলাদেশের ইতিহাসে।
বিরোধী দলের কোন মিছিল নেই, পোস্টার নেই
যদি কোন পোস্টার কোন গলির কোনে দেখাও যায়
তাহলে মনে হয় যেন লাশ দেখা গেছে।
এবার হচ্ছে সেই ভোট যেখানে কে নির্বাচিত হবে তা ঠিক হবে না
নির্বাচন হবে কে ভোট দিতে পারবে।
ভোটার নির্বাচন। আওয়ামী লীগের নির্বাচিত ভোটাররাই ভোট দেবেন।
হতে পারে সেই অংশটা দেশের বেশিরভাগ জনগণ।
অথবা নয়।
তাতে কিছুই এসে যাবে না।
১১.
জিয়া পরিবারের বিদায়
.................................
এই নির্বাচন হচ্ছে
রাজনীতি থেকে বিএনপির
রাজনীতি থেকে জিয়া পরিবারের নির্বাসনের দরজা।
যে দরজার চাবি আগেই তৈরি করে রেখেছে সময়।
আত্মহত্যার মধ্য দিয়েও বিএনপির যে অস্তিত্ব এখনও টিকে আছে
বিরাট শরীর থাকলেও মাথা নেই।
তাই এই নির্বাচনে বিএনপি সবচেয়ে বড় দল হলেও
বিরোধী দলের নেতৃত্ব চলে গেছে ড. কামাল হোসেনের কাছে।
মান্না এখন বিরোধী দলের শক্তি। প্রেরণা।
তারেক জিয়া নন। তিনি পলাতক আসামী।
খালেদা জিয়াতো নিঃসঙ্গ যন্ত্রণার মধ্যে আবর্তিতা।
এখন ভোটে ধানে শীষ প্রতীকে ঐক্যফ্রন্টের পরাজয়ের মধ্য দিয়েও
কিছু নেতা জয়লাভ করবেন।
শুরু হবে ভাঙা গড়ার খেলা।
যারা জয়ী হবেন তারা খালেদা আর তারেকের প্রভাব বলয়ের বাইরে গিয়ে অবস্থান নেবেন।
যারা হারবেন তারা কোন্দল করবেন।
হারিয়ে যাবেন। কেউ ঠিকে থাকবেন।
কিন্তু এই খেলায় জিয়া পরিবারের কোন ভূমিকা থাকবে না।
থাকবে ধানের শীষ।
১২.
নতুন ধানের শীষ
.............................
ধানের শীষ প্রতীকটিও বিএনপি’র প্রথম নয়।
এই প্রতীকটি ছিল মাওলানা ভাসানীর।
ভাসানীর মৃত্যুর পর, তার অনুসারীরা যাদু মিঞার নেতৃত্বে প্রতীক শুদ্ধ যোগ দান করেন।
জিয়াউর রহমান একবার বলেছিলেন, আই উইল মেক পলিটিক্স ডিফিকাল্ট ফর পলিটিশিয়ান।
ধানের শীষের এই দোলাচল
যেন জিয়াউর রহমানের সেই খেলারই ফসল।
নতুন ধারার দলে আওয়ামী লীগে আশ্রয় নেয়া প্রগতিশীল অংশ যোগ দেবেন।
নেতৃত্ব ইতিমধ্যে তাদের হাতে।
নতুন দল গঠন করবেন তারা আগামী সময়কে ধারণ করে।
নেতৃত্ব কোন একক ব্যক্তি মানুষকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠবে না।
গড়ে উঠবে যৌথ নেতৃত্বকে কেন্দ্র করে।
নেতা হবেন সমন্বয়কের মতো।
যে ডিজিটাল বাংলাদেশ শেখ হাসিনার স্বপ্ন
সেই ডিজিটাল সময়ের তরুণ মনের প্রয়োগ ঘটিয়ে
নতুন দলের কাঠামো তৈরি হবে।
দেশ একটি প্রগতিশীল দল পাবে যার অনুপস্থিতি বাংলাদেশের রাজনীতিকে
একটি জায়গায় আটকে রেখেছিল।
একজন সাধারণ সদস্যর মতামত
এই নতুন দল পরিচালনার গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠবেন।
অতীতচারি বিষয় ফেলে জীবন উন্নয়নের কাজই হয়ে উঠবে রাজনৈতিক দলের প্রধান এজেন্ডা।
নেতৃত্ব সম্পূর্ণ নতুন বলে তারাও এই নতুন সংস্কৃতির সাথে খাপ খাইয়ে নিতে পারবেন।
দলটি হয়ে উঠবে আগামী সমৃদ্ধ।
যেখানে প্রতিটি মানুষই সমাজ কাঠামোয় সমান ভূমিকা রাখতে পারে।
এখানেই আওয়ামী লীগ পিছিয়ে যাবে।
বহু বছরে গড়ে তোলা কাঠামো নতুন দিনের মত করে ঢেলে সাজানো সহজ নয়।
শেখ হাসিনা দূর্নীতি দূর করে নতুনভাবে দল তৈরি করার চেষ্টা করবেন
কিন্তু বিশাল অবয়বের কারনেই দলকে ঢেলে সাজানোর কাজটি হবে মন্থর।
এছাড়া ব্যক্তিকে গুরুত্বপূর্ণ করে দেখানোর মানসিকতার কারণেও
দলটির মধ্যে সবার অংশগ্রহণের মুক্ত বাতাস বয়ে যেতে পারবে না।
আওয়ামী নেতাদের ভাড়ামোভরা অশোভন অঙ্গভঙ্গি দূর করা কঠিন হবে।
দলকে সামন্ততান্ত্রিক মোড়লপনা মানসিকতা থেকে মুক্ত করাও দূরূহ হবে।
এর ফলে আওয়ামী লীগ দ্রুত জন সমর্থন হারাবে
এবং পরের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নতুন ধানের শীষের কাছে পরাজিত হবে।
তারপর
আওয়ামী লীগ নিজের পুরনো সংস্কৃতি পাল্টে
নতুন করে গড়ে তোলার অবকাশ পাবে।
দেশ কিছুদিন একটি ভারসাম্যমূলক রাজনীতির সন্ধান পাবে।
শেখ হাসিনাকে ইতিহাসে সফল রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে দেখা হবে।
যার ক্ষমতার পালাবদলের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ নতুন দিনের রাজনীতিতে প্রবেশ করবে।
খালেদা জিয়া তখন অতীত ইতিহাস।
মানুষের মনে পড়বে, বিএনপি বলে একটা দল ছিল। ন্যাপের মতো। আছে। এবং নেই।
১৩
আবার বঙ্গবন্ধু এবং তাজউদ্দীন আহমেদ
.................................................
এই নতুন ধানের শীষ জিয়াউর রহমানকে পরিত্যাগ করার জন্য
এবং আওয়ামী লীগ বঙ্গবন্ধুকে ধরে রাখার কারণে
বঙ্গবন্ধু বিরোধী যে একটি বড় অংশ আছে
তাদের কাছে নতুন প্রতীকের প্রয়োজন হবে।
নইলে তারা স্বস্তি পাবেন না।
এই বাস্তবতা থেকে
বঙ্গবন্ধুকে মেনেই তাকে স্বীকার করে
তার বিপরীতে তাজউদ্দীন আহমেদকে তুলে ধরা হবে।
অতি রক্ষণশীল মনের মানুষেরা
শুধু বঙ্গবন্দুকে অপছন্দ করার কারণেও
মনের শান্তির জন্য প্রিগতিমীল বাম তাজউদ্দীন আহমেদকেও অতি মূল্যায়ন করা শুরু করবে।
যা নতুন ধানের শীষের প্রগতিশীল ভূমিকাকে সংহত করতে সাহায্য করবে।
ড. কামাল হোসেন আগামীর দিকে যাত্রার এই ক্রান্তিলগ্নে
রাজনীতিকে নিয়তির পথে আনার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করলেন।
মন্তব্য
"ড. কামাল হোসেন আগামীর দিকে যাত্রার এই ক্রান্তিলগ্নে
রাজনীতিকে নিয়তির পথে আনার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করলেন।"
- করলেন কি?
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
নতুন মন্তব্য করুন