কালকে দ্রোহীদা আর কিংকু চৌধারির সাথে খোমাখাতায় বকবক করতে গিয়ে মনে পড়ে গেল সেই মধুর স্মৃতিগুলো, নানুর চোখ ফাঁকি দিয়ে সেবার বই পড়া আর নানা ফন্দিতে মাসুদ রানার বই সংগ্রহ করা, এখন পিছন ফিরে দেখতে গিয়ে দ্বীর্ঘশ্বাস বের হয়ে এল। সেবার সাথে আমার প্রথম পরিচয় হয় সেবা রোমান্টিক সিরিজের মাধ্যমে। বইয়ে নাম ছিল সম্ভবত ‘নিষিদ্ধ প্রেম’, গল্পের চরিত্র ছিল বাদল, যে কিনা তার চাচীর সাথে থাকে, আর তার প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছে। প্রথম পড়ি মনে হয় সপ্তম শ্রেণীতে থাকতে। সে রকম ছিল বইয়ের কাভার। তখন আমি রাজশাহীতে থাকি, বইটা হাতে আসে আমার বড় ভাইয়ের মাধ্যমে, এর পরে পড়ি “ব্রাম স্টোকার এর ড্রাকুলা”, এক পর্যায়ে গিয়ে এতটাই ভায় পেয়েছিলাম যে, ভাইয়ার পাশে বসে পড়েছি বাকিটা। কি অসাধারন সেই অনুবাদ গুলো, ভাবলে মন উদাস হয়।
তার সামনে তো আর এই বই পড়তে পারি না, বইয়ের উপরে বড় বড় করে লেখা, প্রাপ্ত বয়ষ্কদের জন্যে। মহা বিপদ, বইয়ের মাঝে রেখে রেখে পড়ি, নানুকে দেখলেই লুকাই, এভাবে পড়ে যেন শান্তি পাচ্ছিলাম না, হঠাৎ করে মাথায় বুদ্ধি এল, বাথ্রুমে ঢুকে পড়লাম, আধাঘন্টা পরে নানু যখন এসে বলল, কিরে, এখনো ভিতরে? আমি বললাম, “পেট খারাপ”। কিন্তু একই বুদ্ধিতো আর রোজ খাটে না। রোজ রোজ নানান ফন্দি ফিকির করতে থাকি, অপেক্ষা করি, কখন নানু ভাত খেয়ে ঘুমাবে, তখন খোলা ময়দানে আরাম করে পড়ব বই। ভুং ভাং করতে করতে চলে আসে বার্ষিক পরীক্ষা, তার লেজ ধরে ভর্তি পরীক্ষা, পরীক্ষায় উতরে যাই, ভর্তি হয়ে যাই নবম শ্রেনীতে। এখানে এসে বন্ধুত্ব হয় রনি নামে ২ জনের সাথে। একজন ভাঙ্গা রনি, অন্যজন বিড়ি রনি। বিড়ি রনি একদিন হঠাৎ করেই একখানা মাসুদ রানা এর বই নিয়ে হাজির, শেষের বেঞ্চে বসে রনি পড়তে থাকে, আমার ও খুব আগ্রহ হয়, নিয়ে আমি পড়ার চেষ্টা করি, কিন্তু ঠিক ধরতে পারি না, কোথা থেকে কোন দিকে যাচ্ছে ঘটনা। সেদিন ধর্ম ক্লাসে আমাদের হেড মওলানা স্যার সেই বইটা হস্তগত করেন, তারপর নিজে পড়তে পড়তে নিজের রুমে ফেরত যান।
কি কারনে জানি না, কিন্তু আমার খুব ইচ্ছা হল, কি এমন বই যে, স্যার মেরে নিয়ে নিজেই পড়তে লাগল। বাসায় ফেরার পথ ফার্মগেটে একটা বুক্সটল থেকে কিনে ফেললাম “হ্যালো সোহানা”, আমার পড়া প্রথম মাসুদ রানা। সেই যে শুরু হল, পড়তে গিয়ে বারবার হোচট খেতে লাগলাম, অনেক ঘটনার উল্লেখ আছে, যার কোন হাতামাথা নাই। যাক, পরেরদিন স্কুল থেকে ফেরার পথে গেলাম ফার্মগেট, গিয়ে কিনলাম ১-২০, ধ্বংস পাহাড় থেকে জাল। ধ্বংস পাহাড় পড়েই তো আমি পুরা কাইত। আহা! কি বই! তখন থেকে আমি কবীর চৌধুরির বিশাল ফ্যান হয়ে গেলাম। ১-২০ পড়তে খুব বেশি সময় লাগেনি, তখন তো স্কুলে সারাদিন মাসুদ রানা, বাসায় ফিরেও সেই একই কথা। আর হায় হায় করতে থাকি, এতদিন কি করেছি, কত বই বের হয়ে গেছে। তখন মনে “আমি সোহানা বের হওয়া শেষ বই। কিন্তু আমি তো পুরাই নেশাগ্রস্তের মত পড়ে যাচ্ছি। তারপর আবার গিয়ে হাজির হই ফার্মগেট, তেজগাও কলেজের গেটে একটা বুক্সটল আছে, সেখান থেকেই কিনতাম সব বই। ততদিনে আমার চেহারা চিনে ঐ দোকানি, গেলে আমাকে সেবার একটা লিস্ট দেন, যত বই বের হয়েছে, তার, সেটা থেকে আমি বলি ২১-৫০ পর্যন্ত যেটা যেটা আছে, সেই বই গুলা দেন। সে মাথা চুলকে বলে, আসলে এখানে অনেক বই নাই, মানে হয়ত ২৯-৩০-৩১ একসাথে, কিন্তু, ৩০ নাই, ছাপায় নাই সেবা প্রকাশনী বহুত দিন।
আমার মাথায় হাত দেওয়া ছাড়া আর কিছু কতার থাকল না, ভেবেছিলাম, সিরিজ ধরেই পড়ব, কিন্তু কি করা, বললাম, যেগুলা সেট আছে, সেগুলা দেন। এইভাবে প্রথম ৭০ টা বই কিনি ৩ ধাপে। হাতে খুব বেশি টাকা থাকে না, এজন্যে একবারে বেশি বই কিনতে পারতেছি না। এই ৭০ টার মধ্যে কম করেও ২০ টা বই এর ফাঁক ছিল। কিন্তু, আমি নিরুপায়, এর মাঝে ফেব্রুয়ারী মাস আসল, আমি গেলাম সেবা প্রকাশনীর স্টলে, এরা অনেক ডিস্কাউন্ট দেয় দেখে এখান থেকো কিছু বই কিনি, আর ঐ ২০টার মধ্যে থেকে, বেটারা বলে, তাদের কাছেও নাই ঐ বইগুলা। মনে মনে গাল পাড়তে পাড়তে বাসায় চলে আসি, আর মাসে ১ বার করে যেতে থাকি ফার্মগেটের ঐ স্টলে, এভাবে গড়ে উঠতে থাকে আমার কলিম রানা থুক্কু মাসুদ রানার সংগ্রহ। কিন্তু এর ফাক ফোকর দিয়েও কত বই বাদ পড়ে যেতে থাকে, সেবা ছাপে না, দোকানদারের কি দোষ? আমিও প্রতিবার গিয়ে লিস্ট আনি, এনে আগের লিস্টের সাঠে মিলাই, কাটাকাটি করি।
ফুফাতো ভাই আমার মোট ১৫ জন, একজন আমার ১ বছরের ছোট, সে বুদ্ধি দিল, নিলক্ষেত গিয়ে খোজাখুজি করার, তাকে নিয়েই গেলাম, ভাগ্যক্রমে খুজে ৮টা বই পেয়ে গেলাম ফুটপাতের বিভিন্ন দোকান থেকে, সে সময় আর নতুন পুরান, পরিষ্কার ময়লা বুঝি না, সিরিজ শেষ না করে শান্তি পাচ্ছি না। তারপর প্রায় আরো ২ বছর লেগে যায় আমার ২৫০ বই কিনতে। কিছু ফাঁক তখন ও আছে, কিন্তু, যা কিনেছি, সব বই পড়ে ফেলেছি, কাজেই আবার শুরু থেকে শুরু করার ইচ্ছা হল, কিন্তু, এর মাঝে মেট্রিক পরীক্ষার প্রিটেস্ট এসে হাজির। কাজেই পাজী আনোয়ার হোসেন কু-ডাক উপেক্ষা করে মাসুদ রানার মুখে বোরখা পড়িয়ে ধুমসে পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে থাকি। প্রিটেস্ট শেষ হয়, কিন্তু তখন পরীক্ষায় ভয় ঢুকে গেছে মনে। কাজেই টেস্টের আগ পর্যন্ত সকল মাসুদ রানা বাক্সবন্দি করে রাখি, যাতে করে নেশার বশে আবার শুরু না করি।
টেস্ট শেষ হবার পরেই ফার্মগেট গেট হাজির হই, আর লিস্ট মিলিয়ে যা পাই, কিনে ফেলি, তখন আমার এমন অবস্থা, দোকান্দারকে বলি, সেট হওয়া লাগবে না, ২ খন্ডের ১ টা থাকলে সেটাই দিন। এভাবে আমি প্রায় ২৫০ এর মধ্যে থেকে ২৪০ টার মত বই সংগ্রহ করতে সমর্থ হই। আর অপেক্ষা করতে থাকি, কবে বইমেলা শুরু হবে, সেবা নতুন করে পুরান বই ছাপবে, হয়ত সেখানে আমার না থাকা বইগুলাও পাওয়া যাবে। সেখানে গিয়েও আধাখেচরা করে বই কিনতে থাকি, আর অসম্পুর্ন ভাবে গল্পের ১ পর্ব পড়ে নিজেকে গালি দিয়ে ভুত তাড়ানোর অপচেষ্টা করতে থাকি। আর নিলক্ষেতের আশে পাশে গেলেই ফুটপাতে চোখ রাখতে থাকি, ততদিনে আমার মানিব্যাগে একটা লিস্ট এসে গেছে, যে ১০ টা বই নেই, তার নাম নিয়ে নিয়ে ঘুরি, কোথাও যদি পাওয়া যায়। বইয়ের পিছনে যখনই চিঠিপত্রে আগের বইয়ের উল্লেখ থাকত, তখনই মেজাজ খারাপ হয়ে যেত, যে এই বইটাতো পড়ি নাই এখনো।
মাসুদ রানার বাজারে পাওয়া সব বই শেষ, এখন কি করি, এর মাঝে চোখে পরে কুয়শা, আর কিছু না, খালি কাজীদার নাম দেখেই কিনে ফেলি ৫টা সমগ্র। কুয়াশার সমগ্র ১-২-৩, ৪-৫-৬ এভাবে ছাপানো। প্রথম গল্পটা পড়েই আমি বুঝে যাই, এ তো আমাদের কবির চৌধুরির “যদি সফল হত” আর “পরোপকারী” হত, তাহলে কেমন হত! কুয়াশার ৭৬ টা বই মনে হয় এক নিঃশ্বাসে পড়েছি, এতই ভালো লেগে গেল যে, শেষ করেই আবার শুরু থেকে শুরু করি। প্রথম পড়ায় যদি মজার কিছু বাদ পড়ে গিয়ে থাকে। মজার কথা হল, কুয়াশা সিরিজ কিন্তু মাসুদ রানার ও আগে শুরু করা। পাকি আমলে কাজীদা ১৯৬৬ সালে লেখেন প্রথম কুয়াশা, তারপর মাসুদ রানার প্রথম বই ধ্বংস পাহাড় লেখেন সম্ভবত ১৯৬৭ সালে। নতুন রানা আসছে না, এ দিকে কুয়াশা লেখা বন্ধ করেছেন কাজীদা ১৯৮৪ সালে। মনে মনে বলতে থাকি, এই ব্যাটার থামার আর সময় জুটলো না। আর বছর পাঁচেক লিখলে কি অসুবিধা ছিল?
এর পরে ধরে ৩ গোয়েন্দা, রকিব হাসান মিয়া আসলে দুধভাত, কুয়াশা আর রানা পড়ার পরে কেমন পান্সে পান্সে লাগত। কিন্তু সেবার টানেই বার বার ফিরে ফিরে আসতাম আর আবাল ৩ গোয়েন্দা পড়তাম। তবে প্রথম ৬০টার মত ৩ গোয়েন্দা বেশ ভালোই ছিল, তবে তারপর কেমন যেন পেট খারাপ হয়ে গিয়েছিল রকিব হাসানের। কোন ভাবে জোড়াতালি দিয়ে কোন মতে বই দাড় করাতে পারলে যেন বর্তে যাবেন তিনি। ১০০ এর পরে আর সম্ভব হয়নি ৩ গোয়েন্দা হজম করা। কাজেই সেটা বাদ দিয়ে আবার মাসুদ রানা শুরু করি, পরের বারের বই মেলায় গিয়ে দেখি, সেবা সব বই আবার ছাপানো শুরু করেছে। কি মনে করে রানা ১-২-৩ তুলে নেই, পরতে থাকি স্টলে দাড়িয়েই, ১ পাতা পড়তেই কেমন যেন লাগতে থাকে। বুঝতে পারি, রানা তে প্যারেন্টাল গাইডেন্স বসানো হয়েছে। কার উর্বর মস্তিষ্কের থেকে এই বুদ্ধি আসল, কে জানে? এই বই মেলায় আর কোন ফাঁক থাকে না, সব বই পেয়ে যাই।
একটা জিনিষ আমাকে খুব বিরক্ত করেছিল, সেটা হল, মাসুদ রানার বয়স যদি স্থির থাকে, তাহলে তার বন্ধু সোহেল, তার বস রাহাত খান কেন বুড়ো হয়ে যাচ্ছেন, আর আরেকটা জিনিষ হল যে, অমুক সময়ে সে কেউকে সাহায্য করেছে, তার ছোট বোন ছিল, ঘটনা চক্রে আমাদের রানা সেই মেয়ের সাথে প্রণয়ক্রিয়াতে লিপ্ত হচ্ছে, আগে ছোট ছিল, এখন বড় হইসে, আমি তো বড় হই নাই, এমন একটা ভাব। কতটা জরুরী ছিল এই ভাবে লেখার? আর স্পাই মানুষ, বনে জঙ্গলে তার ঘুরে বেড়ানো মানায় না, কিন্তু অনেকবারই সে ফিরে গেছে আফ্রিকার জঙ্গলে, সম্ভবত, কাজীদা তখন কোন গল্প খুজে পাচ্ছিলেন না, কিন্তু বই বেরুলেই মানুষ কিনবে, তাই শিকার কাহিনী অনুবাদ করে বইয়ের সংখ্যা বাড়িয়েছেন।
বইয়ের পাশাপাশি যে জিনিষটা টানত, সেটা হল, চিঠিগুলো, কতবার ভেবেছি, চিঠি লেখব, যদি ছাপা হ্য়, কিন্তু আসলে কখন ও লেখা হয়ে উঠেনি। তবে একটা চিঠির কথা মনে আছে, তখন মনে হয় রানা এর ৩২০ এর দিকের বই বের হচ্ছে, একজন চিঠিতে লিখলেন, “শুনলাম, সেবাতে নাকি এখন মাসুদ রানা কাজীদা লিখেন না, লিখে সেবার দারোয়ান”। কথাটা যে সত্যি, তাতে কোন সন্দেহ নাই, তবে, সম্ভবত তার খুব গায়ে লেগেছিল, ফলে তিনি জবাব দিয়েছিলেন, “সেবাকে এতদুর চালিয়ে আনার জন্যে সেবার দারোয়ানের অবদান কোন অংশে কারো চেয়ে কম নয়”। চোরের মায়ের বড় গলার মতন শুনালেও কথাটা কিন্তু ২ দিক থেকেই সত্যি। আমার মত যারা একনিষ্ঠ ভুদাইচরিত পাঠক, তারা ভুয়া বই পড়ে বিরক্ত হচ্ছেন, কিন্তু আমাদের কাজীদার ও বোঝা উচিত, গত ৪৩ বছর ধরে মাসুদ রানা ২৯ বছ বয়সে আটকে আছে, এবার বেচারা এক্সিডেন্ট বা হার্ট এট্যাক বা কবির চৌধুরির গুলি খেয়ে মরার হয়ে গেছে।
মন্তব্য
লেখা না পড়েই মন্তব্য করতে এলাম, হু আ -এর চেয়ে কাজী আনোয়ার আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে পড়তে। রোমানা আফাজের লেখা দস্যু বনহুর সিরিজতো আমি গিলেই খেয়েছি।
বুড়া নায়ক মানুষ পছন্দ করবে??
গরীব
সাউথ কোরিয়া
বুড়া নায়ক যে পছন্দ করবে না কেউ, তা বলার অপেক্ষা রাখে না, কিন্তু বয়স উল্লেখ না করলেই কিন্তু চলে। আর সে বেটা মেয়ের বয়সি কেউ যখন "কচি থেকে পরিপক্ক" হয় তখন ঘাড়ে চেপে বসে, এ ধারনাটা ভালো লাগে নাই। তারচেয়ে সবার বয়স স্থির থাকুক, সেটা কি ভালো হবে না, অথবা, এমন করে লেখুক, যাতে বয়সের উল্লেখ করতেই না হয়।
দস্যু বনহুর ও পড়েছি, তবে ৩ তার মাঝে কুয়াশাই আমাকে সবচেয়ে বেশি টেনেছে।
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
রানার বাছাই দুই-তিনটা বাদ দিলে কুয়াশাই আমারে বেশী টানে। কুয়াশার পুরা থিমটাই আমার চরম লাগসিলো...
আর তিন গোয়েন্দা দিয়াই আমার সেবা শুরু- তাই এর বদনাম করা যায় না। তিন গোয়েন্দা,রুপালী মাকড়সা, ঘড়ির গোলমাল, কাকাতুয়া রহস্য, বুদ্ধির ঝিলিক, জলদস্যুর দ্বীপ- এইরকম কিসু বস বস বই ছিলো সে সিরিজে... তবে ১৫০ এর পর অনেক কষ্ট কইরাও পড়তারিনাই...
---------------------------------------------------------------------------
মধ্যরাতের কী-বোর্ড চালক
ধন্যবাদ বস লেখা পড়ার জন্য, কুয়াশার উপরে বই নাই, আর সত্য মিথা জানি না, কিন্তু গল্পগুলো বেশ মৌলিক লাগত আমার কাছে। কেউ কি জানাবেন আসলে কার অনুসরনে লেখা কুয়াশা?
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
মাসুদ রানা ভাইয়ারা পড়তো আর আমরা চুরি চামারি করতাম। দস্যু বনহুর মেয়েদের পড়তে দিতে বিশেষ বাধা ছিল না। একবার পরীক্ষার রেজাল্ট খারাপ করলাম ক্লাশ সেভেনে এই বনহুর শালার জন্যে।
তবে সেবার রোমান্টিক সিরিজগুলো স্কুলের ওপরের ক্লাশে পড়ার সময় পড়তাম। একটা কি বইতো খুব নামও করেছিল তখন, মুমু নামের একটা মেয়ে বোধ হয় গুন্ডা টাইপ এক ছেলের সাথে মারুফ নাম সম্ভবত প্রেম করেছিল, পরে অন্য ছেলের সাথে বিয়ে দেয় বাবা মা জোর করে ইত্যাদি ইত্যাদি।
**************************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়
*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়
হা হা হা, একাহনে ঘটনা উল্টা, আমি পড়তাম, তারপর আমার বড় ভাই পড়ত, তারপর কিঞ্চিত কপট রাগ দেখানোর পর আমার নানুও পড়ত ।
আর বনহুরের টান ছিল অন্যরকম, মজা লাগত খুব কোন সন্দেহ নাই। তবে নামটা কেন যেন সবসময় একটু খ্যাত লাগত , আমি আর আমার কাজিন সবসময় বনহুরের নাম নিয়ে হাসাহাসি করতাম।
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
আপনি যে বইটার কথা বলছেন সেটার নাম ছিলো মাই লাভ, মানিক চৌধুরীর লেখা। কিন্তু সেবা থেকে প্রকাশ হয়নি, অন্য কোনও একটা প্রকাশনীর।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
সেবার সাথে আমার যে কি সম্পর্ক ছিলো তা বলে বোঝানোর মতো না। মাশুক নানা, কুয়াশা, তিন গোয়েন্দা, রহস্য পত্রিকা, ওয়েস্টার্ন, কোনওটাতেই আমার অরুচি ছিলো না।
স্কুলে পড়তাম যখন তখন বিদ্যুৎ মিত্রের 'যৌনসংগম' বইটা 'যৌন বিষয়ে সাধারণ জ্ঞ্যান' নাম দিয়ে পুনঃপ্রকাশিত হয়েছিলো। আমরা গেলে দোকানদার বেচবে না তাই পাড়ার এক ইয়াং নানাকে দিয়ে বইটা কিনিয়েছিলাম। কোথায় যে গেলো সেইসব দিন! রসময় গুপ্তে মাথাটা খাইছে।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
আহা, বস---পুরোনো দিনের সব কথা মনে পড়িয়ে দিলে।
সবচেয়ে চমৎকার যে জিনিসটা জানা গেলো--তুমি যে পরিমান কষ্ট স্বীকার করেছ বইগুলো জোগাড় করতে, সেইটা আসলেই বিস্ময়কর। খুব নিবেদিত-প্রাণ পাঠক না হলে কেউ এত কাঠ-খড় পোড়াতে যায় না।
আমি মাসুদ-রানার খুব একটা ভক্ত ছিলাম না কোন কালেই--কেন জানি না।
তবে কুয়াশা সিরিজের বিশাল ভক্ত। আর ভক্ত ছিলাম কিশোর ক্ল্যাসিকস সিরিজের। সেবার বদৌলতে কত যে চমৎকার অনুবাদ পড়ার সৌভাগ্য হয়েছে সেটা বলার বাইরে। আমার মতে অনুবাদশৈলীটাকে তারা নতুন একটা মাত্রা দিয়েছে। সেবার মত এমন ঝরঝরে তরতরে অনুবাদ আমি তেমন আর কোথাও পড়িনি। কলকাতার কিছু অনুবাদের কাজ দেখেছি।
পড়ে খুবই বিরক্তিকর ঠেকেছে। নিষ্প্রাণ, কাঠ-কাঠ।
আমার খুব আফসোস হয় এই ভেবে যে, এই সব দূর্দান্ত লেখকদের আসলে তেমন করে মূল স্রোতে নিয়ে আসা গেল না। তাদের ক্ষমতা মোটের উপর ছাই-চাপাই রয়ে গেল।
আফসোস----
কিশোর ক্লাসিক সিরিজের অনুবাদগুলো আসলেই ক্লাসিক ছিল, এই জিনিস আর কোথাও পাইনি (তবে প্রগতির অনুবাদও অসাধারণ, ননী ভৌমিক )
অনুবাদের ক্ষেত্রে আসলেই সেবা অদ্বিতীয়। সেবার কারনে কত বই যে পড়ার সুযোগ পেয়েছি নিজের ভাষায়, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। আর কুয়াশা সিরিজ নিয়ে আসব ঢাকা থেকে আগামীতে গেলে।
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
রানার বয়স তিরিশ এইটাও কম কম লাগতো আমার ... বেশিরভাগ বইয়ে আমার মনে হইসিলো ওর পয়ত্রিশ থেকে চল্লিশের মধ্যে হইলে মানায় ...
কচি থেকে পরিপক্ক হয়ে ঘাড়ে চেপে বসার যে ঘটনাটা বল্লেন ঐটা সম্ভবত বেনামী বন্দর ... রানা কলেজ ছাত্র থাকা অবস্থায় এক প্রফেসরের বউয়ের সাথে ব্যাপক খাতির ছিল, সেই রানা বিশ বছর পরে গিয়া তার মেয়ের সাথে প্রেম করে, চিন্তা করেন অবস্থা
তবে বেনামী বন্দর আমার খুব প্রিয় একটা বই ছিল, ইউরেনিয়াম ডাকাতির প্লটটার কারণে ...
................................................................................................
খাদে নামতে আজ ভয় করে, নেই যে কেউ আর হাতটাকে ধরা ...
ঠিক ধরেছ কিংকং, তবে ২০-৩০ এর মাঝে আরেকটা বই ছিল, নামটা মনে নেই, সেখানে কলকাতায় যায় রানা, একজন ইনফরমারের মৃত্যুর তদন্ত করতে, সেখানে গিয়েও তার ছোট বোনের সাথে ....
তবে বেনামী বন্দর কিন্তু চরম জটিল ছিল। কারো পক্ষে আগে থেকে বলা সম্ভব ছিল না, ১০ পাতা পরে কি হবে। আসলে ১০০ পর্যন্ত প্রতিটা বই ই এরকম
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
ইনফরমারের বউয়ের নাম ছিলো শিবানী, সে রানার হাত নিয়ে নিজের বুকে চেপে ধরসিলো পরিষ্কার খ্যাল আছে! আর একটা বদ ক্যারেক্টার ছিলো সার্জেন্ট চোপরা ... বইয়ের নামটা ভুইলা গেসি আমিও ... খ্রান মনে করি ... বিদেশী গুপ্তচর কি?
সম্ভবত, তবে শিবানীর অঙ্গসৌষ্ঠবের যে বর্ননা ছিল, তা মনে পড়লে এখনো কান দিয়ে কিঞ্চিত ধোয়া বের হয় ;)। নাম মনে নাই বস।
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
রানার মেয়েগুলিরে ভুলতে পারি না! বিশেষ করে রাত্রি অন্ধকারের ফায়জা আর বিদায় রানার রেবেকা সাউল! বাস্তব মেয়েগুলি ঐরাম মিষ্টি হয় না কখনো ।
হা হা হা ---
শুধু এই মন্তব্যেই পঞ্চাশ লক্ষ তারা---!!!
উঁহু বিদেশী গুপ্তচরে শিবানী না জুলি মাযিনী। ভিলেইন থাকে ইতালিয়ান এক গ্লাস ফ্যাক্টরীর মালিক.....
ঠিক, ঠিক! শিবানী মনে হয় তাহলে রানা ৩৭,৩৮ এ ছিলো। নামটা কিছুতেই মনে পড়ছে না। একবার মনে হলো "পাশের কামরা" কি না, পড়ে মনে হলো অন্য কিছু।
পাশের কামরা তে ভিলেন ছিল জামান, ভুদাইচরিত মানুষ, আর রানা এর ছদ্মনাম ছিল ডিউক, কাহিনী ছিল হংকং এ। শিবানী ছিল অন্যবইতে, বইয়ের নাম মনে নেই, শিবানী খুব রাফ গাড়ী চালাতো, তাদের আস্তানা ছিল টঙ্গীতে। না, আসলেই বুড়া হয়ে যাচ্ছি। ঢাকার আলোকে যে কয়টা রানা লেখা হয়েছে, সেগুলার কোন তুলনা নাই।
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
৩৭-৩৮ হলো 'গুপ্তহত্যা' ও 'তিন শত্রু'। 'তিন শত্রু' বইয়ে সার্জেন্ট চোপরা আছে। তবে মেয়ে চরিত্র দুটো হলো 'সেলিনা' ও 'দীপালি'। এক নজরে 'শিবানী' তো চোখে পড়ল না।
কাহিনী একটু বলি (বই থেকেই তুলে দেই), যদি মনে পড়ে...
"আড়াই টন সোনা নিয়ে বঙ্গোপসাগরে ডুবে গিয়েছিল একটা পাকিস্তানী জাহাজ একাত্তরের অক্টোবরে। ন্যাভাল লেফটেন্যান্ট আহসানের সাহায্যে একটা নকসা তৈরি করিয়েছিল মেজর বাশার আগরতলায় প্রত্যক্ষদর্শী শিল্পী রাশেদের সহযোগিতায়। সেই রাতেই আততায়ীর গুলিতে মারা গেল আহসান। মেজর বাশারের তাঁবুতে আগুন লেগে পুড়ে গেল ম্যাপের অর্ধেকটা। সাতদিন পর মারা গেল রাশেদ। গভীর সাগরে ডুবে রয়েছে আড়াই টন সোনা।
কেউ জানে না কোথায়।"
তাহলে দেবাশিস-শিবানীর সাথে সার্জেন্ট চোপরাকে গুলিয়ে ফেলসি মনে হয় । বুইড়া হৈয়া গ্লাম ( ।
ধন্যবাদ প্রহরী, আরো পরের গল্প, যেটাতে শিবানী ছিল, নাম মনে নেই। তোমার কাছে কি লিস্ট আছে? তাহলে দেখে নাম বের করতে পারব।
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
মাসুদ রানার ভলিউমগুলার নাম দিলাম:
১-২-৩ ধ্বংস পাহাড়+ভারতনাট্যম+স্বর্ণমৃগ
৪-৫-৬ দুঃসাহসিক+মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা+দুর্গম দুর্গ
৮-৯ সাগর সঙ্গম-১,২
১০-১১ রানা! সাবধান!!+বিস্মরণ
১২-৫৫ রত্নদ্বীপ+কুউউ!
১৩-১৪ নীল আতঙ্ক-১,২
১৫-১৬ কায়রো+মৃত্যু প্রহর
১৭-১৮ গুপ্তচক্র+মূল্য এক কোটি টাকা মাত্র
১৯-২০ রাত্রি অন্ধকার+জাল
২১-২২ অটল সিংহাসন+মৃত্যুর ঠিকানা
২৩-২৪ ক্ষ্যাপা নর্তক+শয়তানের দূত
২৫-২৬ এখনও ষড়যন্ত্র+প্রমাণ কই?
২৭-২৮ বিপদজনক-১,২
২৯-৩০ রক্তের রঙ-১,২
৩১-৩২ অদৃশ্য শত্রু+পিশাচ দ্বীপ
৩৩-৩৪ বিদেশী গুপ্তচর-১,২
৩৫-৩৬ ব্ল্যাক স্পাইডার-১,২
৩৭-৩৮ গুপ্তহত্যা+তিন শত্রু
৩৯-৪০ অকস্মাৎ সীমান্ত-১,২
৪১-৪৬ সতর্ক শয়তান+পাগল বৈজ্ঞানিক
৪২-৪৩ নীল ছবি-১,২
৪৪-৪৫ প্রবেশ নিষেধ-১,২
৪৭-৪৮ এসপিওনাজ-১,২
৪৯-৫০ লাল পাহাড়+হৃৎকম্পন
৫১-৫২ প্রতিহিংসা-১,২
৫৩-৫৪ হংকং সম্রাট-১,২
৫৬-৫৭-৫৮ বিদায় রানা-১,২,৩
৫৯-৬০ প্রতিদ্বন্দ্বী-১,২
৬১-৬২ আক্রমণ (একত্রে)
৬৩-৬৪ গ্রাস-১,২
৬৫-৬৬ স্বর্ণতরী-১,২
৬৭-১৬১ পপি+বুমেরাং
৬৮-৬৯ জিপসী-১,২
৭০-৭১ আমিই রানা-১,২
৭২-৭৩ সেই উ সেন-১,২
৭৪-৭৫ হ্যালো, সোহানা (একত্রে)
৭৬-৭৭ হাইজ্যাক-১,২
৭৮-৭৯-৮০ আই লাই ইউ, ম্যান (তিনখণ্ড একত্রে)
৮১-৮২ সাগর কন্যা-১,২
৮৩-৮৪ পালাবে কোথায়-১,২
৮৫-৮৬ টার্গেট নাইন-১,২
৮৭-৮৮ বিষ নিঃশ্বাস-১,২
৮৯-৯০ প্রেতাত্মা-১,২
৯১-৯২ বন্দী গগল+জিম্মি
৯৩-৯৪ তুষার যাত্রা-১,২
৯৫-৯৬ স্বর্ণ সংকট-১,২
৯৭-৯৮ সন্ন্যাসিনী+পাশের কামরা
৯৯-১০০ নিরাপদ কারাগার-১,২
হিমু ভাইয়ের কথায় মনে হলো বইটা প্রথম দিককার হবে। তাই প্রথম একশটার নাম দিলাম। যদি এর মধ্যে না থাকে, তাহলে বলবেন, বাকিগুলো দিয়ে দিব। আর, ৭ নং বইটার নাম 'শত্রু ভয়ঙ্কর'।
ধন্যবাদ বস, অসংখ্য ধন্যবাদ!!
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
ঝামেলায় ফালায়া দিলেন... শিবানীর বইটার নাম তো আমারও মনে আইতেছে না। কতো বছর আগের পড়া... কিন্তু এখন কুড়কুড় করতেছে।
সঞ্জীবদা বাঁইচা থাকলে জানা যাইতো, এই লোক একটা মাসুদ রানা ডিরেক্টরি ছিলো
আমি আরো ভাবতেছিলাম মাসুদ রানার ভলিউমগুলা কিনে রাখবো। কিন্তু এই মুসলমানি মাসুদ রানা তো পড়তে রাজী না
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
<সাইব্বাই>
আরে ভাই, নাম বলেন, ধন্যবাদ চাই নাই তো
যাই হোক, দেখেন তো এই বইটা নাকি (হিমু ভাই, আপনিও দেখেন):
"বন্ধ করে দেয়া হয়েছে রানা এজেন্সী, সরকারী আদেশ। ঢাকার বিভিন্ন এলাকার গুণ্ডা মহলে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে নতুন এক মস্তান - ডিউক। কে সে?
কোত্থেকে জুটল এসে?
তারই সাহায্য চাইছেন কেন এন. এস. আই-চীফ কর্ণেল (অব.) শফিকুর রহমান? বাংলাদেশের সর্বনাশ চায় একদল রাজনৈতিক সন্ত্রাসী, ভেঙে গুঁড়িয়ে দিতে চায় অর্থনৈতিক মেরুদণ্ড, পরিণত করতে চায় দেউলিয়া রাষ্ট্রে। বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে ওদের বিষ নিঃশ্বাসে। ওদিকে খুনের দায়ে জড়িয়ে গেছে রানা। হন্যে হয়ে খুঁজছে ওকে পুলিস।
শত্রুশিবিরে আশ্রয় নিল ও। কর্ণেল শফিককে মারার ভার চাপানো হলো ওর উপর। পরিচয় হলো আশ্চর্য এক নির্লজ্জ সিঙ্গাপুরী যুবতীর সঙ্গে। শিবানী ওর নাম।
যেমন সুন্দরী, তেমনি ভয়ঙ্কর।
দেখা যাক কি হয়।"
অ. প্র. ঠিক বের করেছ , বিষ নি:শ্বাসই ছিল।
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
অদৃশ্য শত্রু...
সেবার কাছে আমাদের সবারই কৈশোর এবং যৌবনের প্রথম পর্যায় ভয়াবহভাবে ঋণী! এখন আর পড়া হয়না...তবু কাজীদা বলতে পাগল ছিলাম। শুরু করেছি তিনগোয়েন্দা দিয়ে...পরে অন্যসব সিরিজ শুরু করার পর তিনগোয়েন্দা ভাল লাগত না....তবে জিনার সাথে কিশোর পাশার কিছু একটা হয়না কেন তাও বিরক্ত লাগত..গোয়েন্দা রাজু লাগত বাচ্চাদের গল্প! কে কয়টা রানা বা ওয়েস্টার্ন পড়ল তা ছিল প্রেস্টিজের ব্যাপার...কুয়াশা অনেক পরে ধরেছি...
আহা খালি মাসুদ রানা হইতে ইচ্ছা করতো...কত নারী...কাছে টানাটানি কিন্তু বাঁধনে না জড়ানোর ব্যাপারটা...অবশ্য দুইশ' এর পর মনে হয় লেখার মান নেমে গিয়েছিল! তবু কাজীদাকে ধন্যবাদ...এমনভাবে সেই সময় ভাতও গিলতাম না! দুঃখ লাগে আজকালকার ছেলেমেয়েদের জন্য...এখন তাদের কৈশোর যায় টিভি আর গেমস নিয়ে; যে দুইএকজন পড়ে তাদের কাছে বই মানে হুমায়ূন বা জাফর ইকবাল!
আপনাদের মাওলানা স্যার খুব ভাল লোক ছিলেন...আমগো ক্লাস এইটে মাসুদ রানা সহ ধরা পড়ায় টি.সি. দিয়া দিছিল একজনরে...তবে কোনকোন স্যার-ম্যাডাম ভাল ছিলেন...পিটন দিয়া বই বাজেয়াপ্ত কইরা ছাইড়া দিতেন। তবু এগুলার পরিচয় ছিল 'আউট বই' নামে...নাইন-টেনে অবশ্য গুপ্ত স্যারের নোটও ভাল চলত...
-------------------------------------------------------------
স্বপ্ন দিয়ে জীবন গড়া, কেড়ে নিলে যাব মারা!
-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...
নবম শ্রেণীতে রানা শুরু করার পর খুব স্টাইল করে পাউরুটি টোস্ট, অরেন্জ মারমালেড, কফি খাওয়া ধরেছিলাম, কয়দিন পরে বুঝতে পারলাম, রানা হওয়ার স্বপ্ন বাদ দিতে হবে, ব্ল্যাক কফি যে গলা দিয়ে নামে না । আর এখনকার পুলাপাইনের জন্যে খারাপই লাগে।
গুপ্ত সাহেবের কথা আর কি বলব, আমার আরেক বন্ধু ব্যাক বেন্চে বসে বেশ জোরেই পড়ত, আর আমরা হি হি করে হাসতাম। বাংলা ভাষায় আমাদের গুপ্তজি কিছু অসাধারণ শব্দের এবং তার ব্যবহারের জন্ম দিয়েছেন, তার ঋণ মনে হয় না কেউ শোধ দিতে পারবে।
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
আমি কিন্তু রানা হইতে চাই নাই, হইতে চাইসিলাম কুয়াশা...
তবে রানার তুষার যাত্রা, মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা, সে উ সেন, আই লাভ ইউ ম্যান আর অগ্নিপুরুষ- আমার বার্বার পড়া বগুলার মাঝে আছে...
---------------------------------------------------------------------------
মধ্যরাতের কী-বোর্ড চালক
কুয়াশা হতে চাইলে তো আরো মজা, একি সাথে মিস গাইডেড কিন্তু ফোকাসড হওয়া বেশ কঠিন একটা কাজ। বাস্তবে সম্ভব কিনা জানি না, তবে কাজীদা এই অসম্ভব কে সম্ভব করেছিলেন তার লেখনির জাদুতে।
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
মাসুদ রানা তেমন একটা পড়ি নাই দেখে এ বিষয়ে কমেন্ট করতে পারলাম না।
সিরিজ ধরে তিন গোয়েন্দা পড়েছিলাম,পরের দিকে অবশ্য ভাল লাগতো না ।
----------------------------------------------------------
ছিন্ন পাতার সাজাই তরণী, একা একা করি খেলা ...
ছিন্ন পাতার সাজাই তরণী, একা একা করি খেলা ...
এরে কয় মক্কার মানুষ হজ্জ পায় না। আর আমাদের প্রজাপতি ভারতী্য লেখকদের বই পড়তে এত ব্যস্ত ছিলেন যে, দেশী লেখকদের বই পড়বেন কখন ;)। নাহলে বাসায় রানা, বনহুর, কুয়াশার সিরিজ ঘুনে খাচ্ছে, কিন্তু আপনে পড়ার সময় বা সুযোগ পেলেন না
তাও ভালু যে, ৩ গোয়েন্দা পড়সেন ম্যাডাম। দেশে ফিরে গেলে পড়ে আইসেন এম আর - নাইন এর সেই রোমহর্ষক গল্পগুলো।
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
এই লেখাটা অনেক পুরনো স্মৃতি মনে করে দিল।
সেবা প্রকাশনীর কাছে সারা জীবন কৃতজ্ঞ থাকবো।
শুরু করেছিলাম তিন গোয়েন্দা দিয়ে, তারপর ওয়েষ্টার্ন। আহ...... এরফান জেসাপ, বিল হিকক, সাবাডিয়া......
তারপর পড়লাম কুয়াসা আর এরপরই মাসুদ রানা। আর সাথে সব সময়ই ক্লাসিকগুলো ছিল।
এখন আমি রানা পড়ি, তবে নিয়মিত না। ৩/৪ মাস পর পর একসাথে কিছু বই কিনে আস্তে আস্তে পড়ি।
এই রকম একটা বিষয় নিয়ে লেখার জন্য ধন্যবাদ
শান্ত
আপনাকেও ধন্যবাদ, আমার এই লেখা পড়ার জন্যে। সেবা প্রকাশনীর ঋণ কমবেশি সবারই আছে, আর রহস্য পত্রিকার কথা এখানে উল্লেখ করি নাই, কারন সেটার জন্যে আলাদা লেখা দিতে হবে।
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
এবার প্রথম আলো ঈদ সংখ্যায় মাসুদ রানা এর একটা উপন্যাস ছাপা হয়েছে। খুব সাধারণ মনে হয়েছে। আমার মনে হয় মাসুদ রানা না পড়ে জ়েমস বন্ড এর অনুবাদ পড়া ভাল।
** আমার মনে হয় মাসুদ রানা না পড়ে জ়েমস বন্ড এর অনুবাদ পড়া ভাল।
দ্বিমত পোষন করছি।
যদিও জেমস বণ্ড বা বিদেশী কাহিনীর ছায়া অবলম্বনে রানা'র কাহিনীগুলো লেখা হয়, তারপরও রানা রানাই।
একমত বস, কোন তুলনা নাই।
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
জেমস বন্ডের আগের বইগুলার অনুবাদ জেমস বন্ডের থেেক ভালো ছিল, কিন্তু রানা এর ২০০ এর পরে যে কয়টা অনুবাদ হয়েছে, সেগুলা সব লাইন বাই লাইন অনুবাদ, উদাহরন দেই একটা, নিল বজ্র হল, গোল্ডেন আই এর অনুবাদ। পুরাই যা তা, রানা এর ফ্লেভার পেতে হলে পুরানো রানা পড়তে হবে
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
"রানা এর ফ্লেভার পেতে হলে পুরানো রানা পড়তে হবে"-আপনাদের আলোচনা শুনে তো মনে হচ্ছে পুরানো রানা তে PG ব্যবহার করে রিপ্রিন্ট করা হয়েছে।আগের ভার্সন গুলো কি পাওয়া সম্ভব?
আমার মত যাদের কাছে পুরানো বই আছে, তাদের উদ্দোগে পেতে পারেন, তার জন্যে অবশ্য আমাদের স্ক্যান করে আপলোডাতে হবে সেই বইগুলা। আমার একতা স্পুলার থাকলে আমি করে দিতাম এ কাজ। রানা এর ১ থেকে ২০০ আর কুয়াশার বইগুলো।
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
লেখাটার জন্য অনেক ধন্যবাদ সাইব্বাই।
সেবা প্রকাশনী না থাকলে আমি কোনদিন আমি হতে পারতাম না।
আপনে মিয়া জাত লেখক, সেবা কেন কারো লেখা না পড়লেও আপনে আগুন ধরায় দিবেন লিখলে। কাজেই ধানাই পানাই বাদ ডিয়া লেখা দেন। আর ঢাকার ছবি দেন আরো।
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
আরে বোকা লেখালেখির কথা বলি নাই, জাত লেখক তো দূরের কথা কানা লেখকের তকমাও আমার গায়ে আটেনা। বলতে চাইছিলাম যে সেবা পড়েই ঘর ছাড়ার নেশা জাগছিল মনে, সেবা না পড়লে পৃথিবী সম্পর্কে ভুগোল বইয়ের বাইরে আর কোন ধারণা থাকতনা। আমার ঘর পালানোর রোগের উৎপত্তি সেবার বই থেকে, এবং বইগুলো আসলেই আমার জীবনকে পালটে দিয়েছে
একখান কথার মতো কথা কইছেন রে ভাই । আমি নিশ্চিত , আমাগো দেশের যেই পোলাপান গুলা বইয়ের পোকা হইসে তাদের বেশিরভাগ শুরু করসিলো সেবা দিয়া ।
কু্য়াশার কথা বহুদিন পরে মনে করিয়ে দিলেন। আমার কাছে কু্য়াশা একটা অতৃপ্তির নাম। যে কিনা ঝুপ করেই মিলিয়ে গেছে নিজের বোনা রহস্যের মাঝে প্রিয় সরোদখানা নিয়ে। আসলেই কি কুয়াশা বিদেশী কারও ছায়া অবলম্বনে করা?
আমার বয়সী আর সবার মতনই আমার শুরু হ্ য়েছিল তিন গোয়েন্দা দিয়েই, সেখান থেকে কিশোর ক্লাসিক আর ওয়েস্টার্ন গিলেছি গোগ্রাসে। কিন্তু আমিই মনে হ্য় একমাত্র বই পড়ুয়া যে মাসুদ রানাকে পছন্দ করেনি। হয়ত্ পরিপক্ক্বতা আসার আগেই পড়ার চেষ্টা করার কারণে
কুয়াশার প্রথম বই পড়তে গিয়ে মহুয়ার সরোদ বাজানো শুনে বেশ অবাক হয়েছিলাম, তারপর দেখলাম, প্রকাশ কাল ১৯৬৬, তখন বুঝলাম, এইটা জেনুইন লেখা। তবে কুয়াশা প্রতি বইতেই আমাকে চমতকৃত করেছে, আর মান কখনই নিম্নগামী হয়নি। শহীদ, কামাল মহুয়া, রাজকুমারী চরিত্রগুলাও অনন্য।
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
সেবা না থাকলে আমার কী যে হতো!!!!!!!!!
গুপ্ত স্যারের ক্লাসে পি এইচ ডি করতেন
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
কাইল নেটে আসিনাই, আজ দেখি অনেক ভালো ভালো লেখা!! সাইফ আমি শুধু সেবার অনুবাদের ফ্যান ছিলাম।
য়ামার বাসায় মামার কল্যানে প্রায় সব সেবার বই ছিলো, আমার কেনো যেনো ভাল লাগেনাই। কুয়াশা সবগুলোই পড়া হয়েছে। এনটানে ( এস,এস,সি র পর)
'কাজেই পাজী আনোয়ার হোসেন কু-ডাক উপেক্ষা করে মাসুদ রানার মুখে বোরখা পড়িয়ে ধুমসে পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে থাকি। '-ভালো লেখা এবং সংযমের উদাহরন। বইগুলা এখন কই? ২৪০টা ভালো মতো রেখ।
এবার আসি ফাজলামোতে,
১। তোমার পিছে লেগে থাকার ধৈর্য দেখে আমি মুগ্ধ। আমি ' বউ কেমনে পটাইলাম' এইটা পড়তে চাই নেক্সট।
২। তোমার টাকার সোর্স কি ছিলো? কোথাও বলা নাই কেম্নে তুমি টাকা পাইতা?
********************************************************
আমার লেখায় বানান এবং বিরাম চিহ্নের সন্নিবেশনের ভুল থাকলে দয়া করে ধরিয়ে দিন।
********************************************************
আমার লেখায় বানান এবং বিরাম চিহ্নের সন্নিবেশনের ভুল থাকলে দয়া করে ধরিয়ে দিন।
প্রিয় বর্ষা, টাকার সোর্সটা বলতে গেলে তো বিপদে পড়ে যাবো না, মাসুদ রানা কিনেছি প্রায় ৩৪০ পর্যন্ত, ২০০৫ পর্যন্ত তাই বের হয়েছিল, একবারে খুব বেশি বই কিনতাম না, হাতখরচ, স্যারদের কাছে পড়তে যাবার টাকা, নানুকে ভুজুং ভাজুং দেওয়া টাকা, নেশাখোরদের মতই টাকা যোগাড় করতাম, আর এই সংগ্রহ চলেছে ১৯৯৩ থেকে ২০০৫ পর্যন্ত, ফলে একবারে খুব বেশি টাকার দরকার পড়েনি। আর যেহেতু ২ ভাই ঢাকায় থাকতাম, টাকা কিছু বেশিই থাকত হাতে। বইগুলা আমার ঢাকার বাসায় আছে, সযন্তে লোকচক্ষুর আড়ালে তালা মারা অবস্থায়, ঐ বইগুলা হারাইলে আমি হার্ট অ্যাটাকে মারা যাবো।
বউ কেমনে পটাইছি, এইটা নিয়া একটা সিনেমা আছে, দেখতে পারো, সিনেমার নাম you have got mail. , হুবহু একই গল্প, তবে বিস্তারিত কাউকে বললে মাইর খাবার ভয় আছে, তাই সেই কথা কাউকে বলি না।
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
ধন্যবাদ সাইফ তাহসিন উচ্চ মাধ্যমিক এবং কলেজের সেই সুন্দর দিনগুলো মনে করিয়ে দেয়ার জন্য।
আমার ধারনা বেশ কয়েকটা জেনারেশনের বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তোলার কৃতিত্ব সেবা প্রকাশনীর, বিশেষ করে মাসুদ রানা সিরিজের। কয়েকটা মন্তব্যঃ
১। গত বছরের প্রথম দিকে একটা জিপে করে আমি সহ চার জনকে বগুড়া থেকে ৫ ঘন্টার একটা জার্নিতে ঢাকা আসতে হয়েছিল। প্রায় সমবয়েসী, কিন্তু চার জন চার রকম পরিবেশে বড় হয়েছে, পড়াশুনাও করেছে বিভিন্ন জায়গায়, বিভিন্ন ডিসিপ্লিনে, স্পেশালাইজেশনও ভিন্ন এবং নিজেদের পছন্দেরও পার্থক্য আছে। প্রথম ঘন্টায় প্রফেশনালীজমের কাঁচের দেয়াল, কিভাবে যেন সেবা প্রকাশনীর কথা চলে আসল। কীযে সেতু বন্ধন, বলার না। এক জায়গায় সবার মিল। ঢাকায় আসার পর দেখা গেল সবাই যেন বন্ধু - ধন্য সেবে প্রকাশনী।
২। মাস খানেক আগে ধানমন্ডীর চার নম্বরের জ্ঞানকোষে (বইয়ের দোকান) দাঁড়িয়ে বই দেখছি, ষাটোর্ধ এক ভদ্রলোক দামি গাড়ি থেকে নেমে এসে প্রায় 'প্রাপ্ত বয়স্ক' বই খোঁজার মত নীচু স্বরে বিক্রেতা ছেলেটার কাছে জানতে চাইল, 'মাসুদ রানার নতুন বইটা কালকে এসছে না? দাও'। তারপর দ্রুত স্থান ত্যাগ - যেন স্কুলের ছেলে প্রাপ্ত বয়স্ক বই কিনছে। ভদ্রলোক ছাড়তে পারেনি।
৩। ছোটবেলায় প্রায় মিলিটারী শাসনে বড় হয়েছি। উচ্চ মাধ্যমিকে পড়ি, মাসুদ রানা এডিক্টেড (এবং অন্যান্য সেবা প্রকাশনীর বই), কিন্তু অফিসিয়ালী ‘অ্যালাউড না’। রাতে মা আমার ঘরের বাতি নিভিয়ে চলে যাওয়ার পর পাশের বাতির আলো যতটুকু জানলা দিয়ে আসে তাতেই পড়া হত (ভয় পেতে পারি এজন্য পাশের পড়ার ঘরের বাতি জ্বলত)। একবার জ্বর আসায় মা যখন জানতে চাইল - 'কী লাগবে বাবা?' (যা চাইব পাওয়া যাবে টাইপের)। চারটা মাসুদ রানা বইয়ের নাম বললাম যেগুলো পড়া হয়নি, এবং পাওয়া যাচ্ছিল না। ৩০ কিঃমিঃ দূর থেকে যোগাড় করা হল। সেটা ছিল আমার আনন্দময় দিনগুলোর একটা।
৪। কোন একটা কারনে আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ সাহেবের মত মানুষ মাসুদ রানার সমালোচনা করেছিল, খুব দুঃখ পেয়েছিলাম তখন।
অনেকদিন সেবা প্রকাশনীর বই পড়া হয়না।
একমত। যাক, এত কষ্ট করতে হয়নি মাসুদ রানা পড়তে গিয়ে। আর সেই ভদ্রলোকের কথা জেনে অনেক মজা লাগল। আর আশা করি এমন জ্বর আরো আসুক আপনার জীবনে
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
তিন গোয়েন্দার, বিশেষ করে কিশোর পাশার বিরাট ভক্ত ছিলাম ! কিন্তু একটা সময়ে এসে আর ভালো লাগে নাই। এইটা কি আমি বড় হয়ে গেছে ব’লে নাকি তিন গোয়েন্দা সিরিজের মানই খারাপ হয়ে গেছে ব’লে , বুঝিনা।
নিয়মিত পড়তাম কিশোর ক্লাসিক আর ওয়েস্টার্ন। তবে মাসুদ রানা কেন জানি ভালো লাগে নাই !
যাক, রানা ভালো না লাগলেও সেবাতে কোন আপত্তি নাই, সেটা জানতে পেরে খুব ভালো লাগল। আর পরবর্তীতে মান খারাপ হয়ে গেছে বলেই পড়তে পারেন নি, আমার কিন্তু এখনও ভালো লাগে রানা পড়তে, সেই সাথে ৩ গোয়েন্দার প্রাথমিক বইগুলাও ভালো লাগবে, কোন সন্দেহ নাই
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
সেবা আর মাসুদ্রানা নিয়া কথা বলতে গেলে বিরাট হবে, তাই বাদ্দিলাম... আপনের লেখা ভালো লাগছে
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
ধন্যবাদ বস, সময় কইরা একদিন দেন আপনেও, আপনার লেখা অনেক ভালো হবে, সুন্দর করে লেখতে পারি না, ভাবের প্রকাশও সেজন্যে ঠিকমত হয় না। একটা বড় সময় কাটাইসি রানা - কুয়াশা - ৩ গোয়েন্দা পড়ে।
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
কুয়াশার পিডিয়েফ কেউ পাঠাতে পারেন আমাকে? কতদিন পড়িনা! আমার সেবাপাঠ শুরু হয়েছে কুয়াশা দিয়ে।
তিন গোয়েন্দা অনেক পড়েছি, কিন্তু রানা হাতে গোনা কয়েকটা। সেগুলো দুর্দান্ত লেগেছিল অবশ্য। একটার নাম মনে পড়ে "অন্ধকারে চিতা" (এটা কি রানা সিরিজের?) এটা তেমন ভালো লাগেনি।
আহারে, আপনে আগুনের গোলার পাশের বইটা পড়সেন। অন্ধকারের চিতা মাসুদ রানা সিরিজের। এর পরের বইটা অসাধারন, অগ্নিপুরুষ, ম্যান অন ফায়ার এর অনুবাদ, ইংরেজী বইটা পড়েছি, কিন্তু সেটা অগ্নিপুরুষের মত ফাটাফাটি হয়নি।
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
সেবার বই এখনও পড়ি। গতকাইলও মাসুদ রানা পড়ছি। এখন টেবিলে আছে এক্টা রানা
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
আহারে, আপনার সৌভাগ্যে কিছুটা হইলেও ঈর্ষান্বিত হইলাম বস। মাঝে তো বাংলা পড়ার জন্যে বসে থাকতে হইত, ঢাকা থেকে বই আসবে, সেটা পড়ব, সচলের সন্ধান পেয়ে বাংলা না পড়তে পারার কষ্ট বিদায় হয়েছে।
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
মামুন ভাইতো ঘর ছাড়ার কথা বলে অন্য ডাইমেনশন মাথায় ঢুকায় দিলেন। ঘটনা সত্যি, মাসুদ্রানা আর সেবার অন্য বইগুলো (ওয়েস্টার্ন, ক্ল্যাসিক) পড়ে আমার মাথাটাই গেছে ;-)। গত বেশ কয়েক বছর ধরে লক্ষ্য করছি যে - কয়দিন পর্পর ঘুরতে না গেলে আমার খাবার হজম হইতেসে না। যাকগে, আমি মনে হয় একেবারেই আরেকদিকে চলে গেলাম , সকলের ক্ষমাপ্রার্থী
সাইব্বাই, নস্টালজিয়া ধরায় দিলেন মিয়া
"অকুতোভয় বিপ্লবী"
সেবা প্রকাশনীর ঋণ কারো পক্ষেই শোধ করা সম্ভব না, আর আমাদের দেশে পাঠক সমাজ তৈরিতে সেবার ভূমিকা অদ্বিতীয়। আর সেবা সম্পর্কে প্রায় সবার অনুভূতিই তোমার মত বস। মাঝে মাঝে নস্টালজিয়ায় ভুগতে আমার ভালোই লাগে।
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদ্বপি গরীয়সী
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
পুরাটা পড়ে পুরান দিনের কথা মনে পড়ে গেল; আমি তিন গোয়েন্দা পড়ার আগে আমার বোনের কাছে গল্প শুনতাম। রুপালী মাকড়শা - পড়ে প্রথম আটকে যাওয়া; যদিও ধরে রাখতে পারিনি শুধুমাত্র মান পড়ে যাওয়ার কারনে। খুব মেজাজ খারাপ লাগতো কিশোরের দিনদিন বোকা বোকা চরিত্রের কারনে। তবে প্রথম দিকের ভাল লাগাটা সারা জীবন রয়েই যাবে। মাসুদ রানা সিরিজটা যখন যা পেতাম তাই পড়তাম। একবার কক্সবাজারে অনাকাংখিতভাবে ১৪ দিন থাকতে হয়েছিল, আমার বোনজামাই প্রতিদিন ৫০০টাকা করে দিত; আর আমি সামনের বুকশপ থেকে মাসুদ রানা কিনতাম; এর মাঝেই আবিষ্কার করলাম ছোট বই-এর দোকানটির মাসুদ রানা সিরিজের আর কোন বই অবশিষ্ট নেই।
//ঈশান
আপনার মাসুদ রানা আসক্তি দেখি আমার মতই, আর পেছনে অর্থ ব্যয় হলেও তা গায়ে লাগে না। ভালো লাগল ঈশান আপনার ঘটনাটা জেনে। একটা প্রশ্ন করি, যদি মাইন্ড না করেন, আপনে কি ভাইয়া নাকি আপা?
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদ্বপি গরীয়সী
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
ভাইয়া, ২৯ বছর, ঢাকায় থাকি ...
--ঈশান
যাক, তাহলে বেফাঁস কিছু বলে মার খেতে হবে না
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদ্বপি গরীয়সী
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
সেবা পইরা এমন হইছিলো একবার কলেজে মারামারি করতে যাইয়া তিন তলা থাইক্যা লাফ দিয়া একটারে ধরসিলাম, ভাগ্যিস হাত পা ভাঙ্গে নাই, তবে মারামারিতে ঐটা একটা মাইলফলক ছিলো, আশি সালের ঘটনা।
.........................................
I think what I think because that's how I am. You think what you think because that's how you are.
...........................
Every Picture Tells a Story
মুস্তাফিজ ভাই, আপনে তো দেখি সিক্স মিলিয়ন ডলার ম্যান। সব কিছুতেই এক্কেবারে টপ অফ দ্যা লাইন। আপনে ১৯৯৫ এ সার্টিফায়েড ফটোশপ এক্সপার্ট, ঢাকায় আর কেউ ছিল বলে তো মনে হয় না। আপনে নমস্য মানুষ।
তিন তলা থেকে লাফ দিসেন, ঐ লাইনটা পড়েই একটা লম্বা দম নিয়ে পরের লাইন পড়লাম, দু:সংবাদ শোনার ভয়ে দম আটকে রেখেছিলাম, ভাগ্যিস আপনার কিছু হয়নি। আর মনে হয় না, আপনার এই মাইলফলক কেউ পেরুতে পারবে, যদি পারে, তাকে হাসপাতালে এবং এরপরে হুইল চেয়ারে বাকি জীবন কাটাতে হবে।
লেখা পড়ার জন্যে অসংখ্য ধন্যবাদ মুস্তাফিজ ভাই।
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদ্বপি গরীয়সী
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
আপনার এই লেখটা অনেক আগে পড়েছিলাম, সময়াভাবে মন্তব্য করিনি। আপনার গল্প বলার/ লেখার এই ভঙ্গীটা আমার ভালো লাগে। বোঝাতে পারলাম?
দারুন লাগল এই পুরান লেখাটা পড়ে। সেই সঙ্গে মন্তব্যে নানাজনের সেবার বই সংক্রান্ত স্মৃতিচারণগুলিও। উপরে একজন মন্তব্য করেছেন,
এই পোস্ট আর তার মন্তব্যগুলিও প্রায় একই রকম মিলের স্বাক্ষর বহন করছে। ৭০-৮০-আর ৯০-এর দশকের প্রথমার্ধ পর্যন্ত বোধহয় (স্যাট টিভি আসার আগ পর্যন্ত) একাধিক প্রজন্মের শৈশব-কৈশোরকে কাজী আনোয়ার হোসেন এক আশ্চর্য মায়াবী অভিজ্ঞতার বিনিসুতায় বুনে দিয়েছেন। এর জন্যে তার কাছে নিঃসন্দেহে কয়েকটি প্রজন্ম কৃতজ্ঞ থাকবে।
মাসুদ রানা আর কুয়াশার এখনও যারা ভক্ত, এখনও যাদের সেই মনটা আছে - তাদের জন্য একটা সুখবর। 'কুয়াশা' আবার আসিতেছে ! তবে একা না। প্রথম প্রকাশের প্রায় ৪৫ বছর পর আর বহু সহস্র অনুরোধ পাড়ি দিয়ে, কাজী আনোয়ার হোসেনের কিংবদন্তীর দুই নায়ক - কুয়াশা আর মাসুদ রানা - এই প্রথম, একসাথে, একই বইয়ে, একই মিশনে - আসিতেছে।
স্টে টিউন্ড।
****************************************
ভাই মন মাঝি, আপনি যদি নৌকাটা এই ঘাটে না ভেড়াতেন তাহলে আর আমার এই পোষ্টটা পড়া হতোনা। আহা, শৈশব, কৈশোর আর সেবা প্রকাশনী!!
সাইফ এর জন্য একটা কথা যোগ করতে চাই, আফ্রিকার কাহিনীগুলো বেশীরভাগই উইলবার §িথ এর বই এর ছায়ানুবাদ। আমি পরে ইংরেজী বইগুলো হাতে পেয়েছি কিন্তু আবার পড়েছি; এখন পর্যন্তমুক্ত বিহঙ্গ বই এর মাইকেল সেভারস আমার কাছে এক অদ্ভুত চরিত্র অন্য সব চরিত্রগুলোর কথা নাইবা বললাম। মুক্ত বিহঙ্গ পড়েছেন নাকি, পড়লে আবার পড়েন, ইংরেজী বইটাও আবার পড়েন, কাজী আনোয়ার হোসেনের হাত কত শক্তিশালি টের পাবেন।
সাইফ ভাইকে ধন্যবাদ, সরকারী চাকুরীজীবি সৎ বাবার সন্তান, প্রতিবছর বাবার সাথে বইমেলা যেতাম প্রতিদিন। তিনি সারা বছর টাকা জমাতেন বই কেনার জন্য আর সে টাকা থেকে আমাকে দিতেন, আমি, আর আমার ছোটবোনটা সবার আগে যেতাম সেবায়, কিশোর ক্লাসিক নতুন কি এসেছে, তিন গোয়েন্দার নতুন কি এসেছে!
সেবা না থাকলে আমাদের মত মধ্যবিত্ত কিন্তু রক্তে বই পড়ার নেশা নিয়ে জন্ম হওয়া মানুষগুলো এতদূর আসতে পারতামনা। জাহাঙ্গীরনগর এ আমাদের ব্যাচ এ র্যাগের সময় খুব চেষ্টা করেছিলাম কাজী আনোয়ার হোসেন কে এনে সংবর্ধনা দেয়ার জন্য, ভিসি’র কারনে পারিনি, সেই আফসোস এখনও রয়ে গেছে!
জয়তু সেবা প্রকাশনী, জয়তু কাজী আনোয়ার হোসেন ওরফে শামসুদ্দীন নওয়াব!!
আহ্ সেবা ... আহ্ মাসুদ রানা, সোহানা, রূপা ... আহ অগ্নিপুরুষ !
"শুনলাম সেবাতে নাকি এখন মাসুদ রানা কাজীদা লিখেন না..." - রানার সব বইতে লেখক হিসাবে কাজী আনোয়ার হোসেন নামটা থাকলেও প্রথম থেকেই এর অনেক বই লিখেছেন অন্যেরা। লেখকদের একটা প্যানেলই ছিল, যেখানে ছিলেন শেখ আবদুল হাকিম, প্রয়াত শাহাদাত চৌধুরী (সাপ্তাহিক ২০০০ এর প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক), রকিব হাসান প্রমুখ। হীরক সম্রাট-এর লেখক ছিলেন সিলেট মেডিকেল কলেজের একজন ছাত্র ... নামটা মনে পরছে না। প্রত্যেকেরই আলাদা আলাদা স্টাইল ছিল। তবে সমস্ত বই-ই কাজী আনোয়ার হোসেনের সম্পাদনার পর ছাপা হতো, এখনও তাই।
ধন্যবাদ তানিম এহসান, আপনার মন্তব্যের সূত্র ধরে পুরোন কিন্তু চমৎকার এই পোষ্টের খোঁজ পেলাম।
উনার নাম হীরক চৌধুরী। মারা গেছেন।
লেখাটার পড়তে গিয়ে একটা মজার ঘটনা মনে পড়লো। তখন আমরা মিলিটারি একাডেমিতে ফার্স্ট টার্ম ক্যাডেট। খালি পাঙ্গা খাইতে খাইতে দিন যায়। একদিন আমার এক কোর্সমেটের বাবা আসছে দেখা করতে। ঐ ছেলে একসাথে ফিজিক্স কেমেস্ট্রি ম্যাথ সবগুলা সাবজেক্টে ডাব্বা খাইছে। ওর বাবা সুপারসিটেড মেজর, অর্থাৎ প্রমোশন হয়না। অনেকক্ষন পড়াশুনার গুরুত্ব বুঝাইতে গিয়ে বললো, পড়াশুনায় ভালো না করলে কোনদিন প্রমোশন পাবানা। পৃথিবীতে দুইজন লোকের কোন দিন প্রমোশন হবেনা। একটা আমি আরেকটা মাসুদ রানা। আমি যখন ক্লাস টেনে পড়ি, তখনও মাসুদ রানার র্যাঙ্ক মেজর, এর পরে আমি নিজে মেজর হইলাম, মাসুদ রানা এখনও মেজর। আমার রিটায়ার্মেন্টের টাইম হয়ে গেছে। কিছুদিন পর আমার ছেলে মেজর হবে, মাসুদ রানা এখনো সেই মেজর হিসাবেই আটকে আছে। ঐ ছেলে কিছুদিন আগে পিএসসিতে টিকছে। হয়তো বছর খানেক পড়ে মেজর এর ফাড়া কাটাবে। কিন্তু মাসুদ রানার বয়স বাড়েনা, প্রমোশনও হয়না।
নতুন মন্তব্য করুন