সুখে থাকতে ভূতে কিলায় - ৫

সাইফ তাহসিন এর ছবি
লিখেছেন সাইফ তাহসিন (তারিখ: বুধ, ০৯/১২/২০০৯ - ৬:১৯পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

বার্ড কলেজে এসে পৌছানোর পরে আবার যখন বের হই, আমার স্ত্রী তখন বলে, কি দরকার ছিল এসব ঝামেলা করার, ২ মাস অপেক্ষা করলে কি হত? আমি তাকে আস্বস্ত করার অপচেষ্টা করি কতক্ষন, তারপর তা বাদ দিয়ে তাকে বলি পিছনে শুয়ে ঘুম দিতে। আসলে ভয় আমার নিজের কি কম? আমেরিকা এসে এক মাস ধরে আছি, বামহাতি গাড়ি আগে চালাইনি, তার মধ্যে নেই লাইসেন্স। ধরলে লাল দালান বা শ্বশুড় বাড়ি যেটাই বলেন না কেন, তার ভাত খেতে হবে। তারমাঝে এখানে নাকি জেলে গেলে নয়া বান্দাকে লুফে নেয় কয়েদিরা, তাদের ভাষায় নয়া আমদানীকৃত আসামীরা কুমারী। নিজের ভয় লুকিয়ে বললাম, আরে ধুর, কিছু হবে না, ঘন্টা খানেক পর বাসায় বসে চা খেতে খেতে হাসবা।

তারপর রওনা হয়ে যাই, ৩টা স্টেট রুট ধরে গিয়ে একটা পার্ক ওয়েতে উঠতে হবে, সমানে দোয়া দুরুদ পড়তে পড়তে গাড়ি চালাতে থাকি। পাশে ন্যাভিগেটর হিসাবে আছে ম্যাগেলানের ছোট ভাই থুক্কু বোন উর্মি। এমন কাবিল যে একই রাস্তা দিয়ে ৩ বার গেলেও পার্থক্য ধরতে পারে না। তারপরেও সেই বেচারী আমার অন্ধের যষ্ঠি, আমাকে মাইলের হিসাব দিয়ে বলে যেতে থাকে, কতদুর পর পর ডানে বায়ে যেতে হবে। আমিও আস্তে আস্তে এগিয়ে যেতে থাকি। যারা ২০০৫ এর দিকে ম্যাপকোয়েস্ট ব্যবহার করেছেন তারা হয়ত লক্ষ করে থাকবেন, সে সময়ে ম্যাপকোয়েস্ট বা গুগুল আর্থ এতটা পদের ছিল না, ২.১ মাইল বললেও সেটা হয়ত বাঁক নিত গিয়ে ২.৫ মাইলের মাথায়। এদিকে আমার মাথায় মাল উঠে যায় যায় মার্কা অবস্থা। কাজেই দুরত্বের হিসাব বাদ দিয়ে কোন রাস্তায় ডানে, কোন রাস্তায় বামে সে হিসাব মোতাবেক গাড়ি চালাতে থাকি। যারা এখানে থাকেন বা থাকতেন তারা বুঝতে পারবেন, বাংলাদেশে রাস্তার সাইজ ছোট, তাও একটু বাড়তি জায়গা থাকলেই কিছু না কিছু দাঁড়িয়ে থাকে সেখানে, আর কোন নামধাম থাকে না। তাই এখানে প্রায় সব রাস্তায় নাম দেওয়া থাকলেও অনভ্যাসের কারনে তা ঠিকমত সদ্ব্যবহার করতে পারছিলাম না। আর রাস্তার সমান পরিমান জায়গা পাশে দিয়ে ছেড়ে দেওয়া, এখানে একে বলে শোল্ডার, কোন জরুরী অবস্থা দেখা দিলে যাতে সেখানে গিয়ে দাড়াবেন বা সামনের গাড়ি হুট করে ব্রেক করলে আপনে তাকে এখানে দিয়ে পাশ কাটাতে পারবেন দুর্ঘটনা এড়ানোর জন্যে। এক সপ্তাহ লেগেছিল এটা বুঝতে যে, যে রাস্তার সমান্তরালে যে প্লেটটা ঝুলছে, সেটা সেই রাস্তার নাম। তবে এখানে প্রায় সব রাস্তাতেই নাম থাকে, এটা ছিল আমার জন্যে বিশাল ভরসা।

অনেক কুতে কুতে গিয়ে ট্যাকনিক পাইকওয়ে নামে এক রাস্তায় গিয়ে উঠি, তখন প্রায় রাত ৯টা বেজে গেছে, সেখানে উঠে টের পাই সে রাতটা পূর্ণিমার রাত। হেড লাইট না জ্বালালেও গাড়ি চালানো যাবে, এমন ঝলমল করছে প্রকৃতি চাঁদের স্নিগ্ধ আলোয়। এর মাঝে দুরুদুরু বুকে আমি গাড়ির গতি বাড়িয়ে ৫০ মাইলে তুলি, গতিসীমা দেওয়া ৫৫, তাই কোন বেমক্কা বিপদ না আনার জন্যে এহেন কাজ করলাম। আর আরেকটা জিনিষ বুঝতাম না, সেটা হল, সাইনবোর্ডে যেটা লেখা আছে, সেটার মানে কি। যেমন, লেখা "ক্রস ব্রংক্স এক্সপ্রেসওয়ে নেক্সট রাইট", আমি মনে করতাম, সামনের পরেরটা, ফলে এক্সিট মিস করে পরের এক্সিট নিয়ে হয় উল্টা দিকে যেতাম, নাহলে অন্য কোন এক গিট্টু লাগিয়ে ফেলতাম। ট্যাকনিকে উঠার পরে প্রায় ৬৮ মাইলের মাঝে কোন এক্সিট না থাকায় বেশ নড়েচড়ে বসলাম, অন্তত এক ঘন্টার জন্যে কোন ভ্যাজাল নাই। এর মাঝে দেখি লেখা, সামনে রাস্তায় কাজ চলছে, ধীরে চলুন। আরেকটু সামনে লেখা, "বাম্প অর্থাৎ সামনে ঝাকি আছে"। হায়রে পাগলের দেশ, রাস্তায় চললে ঝাকি তো লাগবেই, সেটা আযান দিয়ে বলার কি আছে আমি বুঝে উঠতে পারলাম না।

ট্যাকনিক দিয়ে স্প্রেইনব্রুক পার্ক ওয়ে দিয়ে ক্রস ব্রংক্স এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে এসে পড়ি থ্রগস নেক ব্রিজের মাথায়, তারপর টোল বুথ পেরিয়ে এসে ঢুকে পড়ি কুইন্সে। মুখে বিজয়ের হাসি নিয়ে কুইন্সে এসে শুরু করি গ্যাঞ্জাম। রাস্তা তো একটাও পরিচিত না, কিন্তু যেহেতু বাসার কাছে আছি, তাই সাহস বেড়ে গেল, আমি থ্রগস নেক ব্রিজ পেরিয়ে ম্যাপকোয়েস্টের মুখে ছাই দিয়ে সাহস করে নিজেই রাস্তা চিনে বাসা যাবার চেষ্টা করলাম, ফলাফল যা হল, উত্তর দক্ষিনে পূর্ব পশ্চিমে অনভ্যস্ততার অভাবে আমি উল্টা পথে উঠে গেলাম, তারপর কতবার যে এক্সিট নিলাম আর কতবার কোন রাস্তায় ঢুকলাম, তার কোন ইয়ত্তা নেই। প্রায় এক ঘন্টা ঘুরপাক খেয়ে ইউনিয়ন টার্নপাইকের এক মাথা খুজে পাই, তারপর আর ক্যাদ্দারি না করে সেটা ধরে প্রায় ১০০ সিগনাল ঠেংগিয়ে বাসায় গিয়ে হাজির হই।এর পরের দিন আমি আর বাসা থেকেই বের হই না, ধকল সামলাই বাসায় বসে বসে। এর মাঝে উর্মি জানায়, আগামীকালকে তার বান্ধবি আসবে ঢাকা থেকে, আমি যেতে পারব কিনা জন এফ কেনেডি এয়ারপোর্ট। খুব আগ বাড়িয়ে বল্লাম, আপস্টেট থেকে ১২০ মাইল গারি চালিয়ে আসলাম, জে-এফ-কে তো দুধভাত। যদি খালি জানতাম, কত বড় লোটা নিয়ে বিধাতা বসে আছে আমার জন্যে। তাহলে আগামী আরো এক মাস গাড়ি নিয়ে বের হতাম না।

বাসা থেকে এবারে গুগুল আর্থ আর ম্যাপকোয়েস্ট দেখে বের হয়েছি, জান যাবে তো রাস্তা হারাবো না, শকুন যেভাবে ভাগাড়ে দৃষ্টি দেয়, সেভাবে রাস্তার নাম ধাম পড়তে পড়তে এয়ারপোর্ট যেতে লাগলাম। তারপরেও কিভাবে যেন এবার পৌঁছে গেলাম ঠিকঠাক, কোন ভুল না করেই। যাকে আন্তে গেলাম তাকে ফোন করে উর্মি বলল, আমরা ৪ নাম্বার টার্মিনালের যাত্রী উঠানোর স্থানে চক্কর দিচ্ছি, এক কেলো মামী আমাকে কয়েকবার খেদানি দিল, কিন্তু আমিও কি কম যাই? ঘুরে এসেআবার দাড়াই। এমন চোর-পুলিশ খেলা চলল কিছুক্ষন, তৃতীয় বারের মাথায় তাকে পেয়ে আমরা বের হয়ে আসলাম। এবার ফেরার পথে উঠে আমার সাহস একটু বেড়ে গেছে, বিমানবন্দর থেকে বের হয়ে উর্মি তার দোস্তের সাথে গেজাইতে ব্যস্ত, ফলাফল সহজ অনুমেয়। আমার ফেরার কথা ছিল জে-এফ-কে এক্সপ্রেসওয়ে থেকে বেল্ট পার্কওয়ে ধরে ক্রস আইল্যান্ড থেকে ইউনিয়ন টার্নপাইক নিয়ে বাসা।

কিন্তু নেড়ি কুত্তার লেজ কি কখনও সোজা হয়? আমি বেল্ট পার্কওয়েতে উঠে দিলাম টান, রাস্তা চিনিনা, অথচ গাড়ি রাস্তায় উঠলে আর হুঁশ থাকে না। একেবারে বিষ নেই তার কুলোপনা চক্কর। ফলে ৫ মিনিটের মাথায় ভুল করে সানরাইজ হাইওয়েতে ঢুকে গেলাম, এর মাঝে পাশে দিয়ে একটা ক্রাইসলার ক্রসফায়ারে এক স্বর্ণকেশী হুঁশ করে টান দিয়ে বের হয়ে গেল, দেখেই আমার কোন এক সুতায় টান পড়ল, আমিও তার পাশে পাশে টানতে লাগলাম। মাইল খানেক যাবার পর যখন দেখলাম হাতের ডানপাশে ওয়ালমার্ট এবং রাস্তায় লেখা নাসাউ কাউন্টি, আমার কিছুটা হুঁশ হল। স্বর্ণকেশী ফেলে গাড়ি ঘুরিয়ে উল্টা পথ ধরলাম, এসে আবার বেল্ট পার্কওয়েতে উঠে বাসার দিকে যাওয়া শুরু করলাম, কিন্তু মাইলখানেক যেতেই ডানের লেন হুট করে বের হয়ে গেল এক্সিট নিয়ে, আমিও কিছু বুঝে উঠার আগেই বের হয়ে গেছি। রাস্তার নাম ছিল ফ্রান্সিস লুইস বুলেভার্ড, এই রাস্তাটা ইউনিয়ন টার্নপাইককে কাটে, তাই ভাবলাম, আর ভেজাল না করে এটা ধরে যেতে থাকি, আধাঘন্টা চলার পরেও যখন পরিচিত কিছুর খোঁজ পেলাম না, তখন বুঝলাম, আবারো গ্যাঞ্জাম করে ফেলেছি। কিন্তু এর মাঝে এত বাঁক নিয়েছি যে আসলে এখন কোথায় আছি আমি নিজেও জানি না।

এভাবে ঘুরপাক খেতে খেতে যখন বাসায় পৌছালাম, তখন প্রায় ৩ ঘন্টা পার হয়ে গেছে, আমি বুঝলাম, এভাবে আর চলবে না। বাসা থেকে বের হয়ে গিয়ে মানচিত্র কিনে আনলাম শহরের। মানচিত্র খুলে ভালো করে খুটিয়ে দেখার পর বুঝলাম, আমার বাসা ঐখানে আটে নাই, অল্পের জন্যে বাইরে পড়েছে। পরের দিন আবার আমার ব্রুকলিনে দাওয়াত আছে, তাই মানচিত্র মুখস্ত করতে বসলাম। ঠিক করলাম, সব এক্সিট থাকে ডানপাশে, তাই আমি চরম বামপন্থি হব। পরদিন ব্রুকলিন যাবার পথে বাম পাশ ঘেষে যাচ্ছিলাম, সেখানেও একটা এক্সিট ছিল বাম পাশেই, উইলিয়ামসবার্গ ব্রিজের, ফলে একটানে চলে এলাম ম্যানহ্যাটন, তারপর এক ঘন্টা ঘুরপাক খেয়ে আবার ফিরে এলাম আগের রাস্তায়। ব্রুকলিনের আংকেল ছাড়লেন না, রাতে থেকে গেলাম, পরদিন সকালে এসে গাড়িতে উঠতে যাবার পথে দেখি কমলা রঙের খাম ওয়াইপারের নিচে গোঁজা। বুঝলাম টিকেট খেয়েছি, নাই ড্রাইভিং লাইসেন্স, এটা নিয়ে যদি কোর্টে যেতে হয়, আমার তো কেল্লা ফতে হয়ে যাবে। স্ত্রীর টেনশন বাড়বে তাই চুপচাপ সেটা পকেটস্থ করলাম তাড়াতাড়ি। বাসায় গিয়ে খুলে পড়লাম টিকেটটা বিস্তারিত। খালি লেখা, অমুখ তারিখে অমুক সময়ে এত নাম্বার বাড়ির সামনে গাড়ি পার্ক করা ছিল। আমি আইন মেনে অগ্ননির্বাপক থেকে দূরে রেখেছি, কারো ড্রাইভওয়েতে রাখিনি, পেভমেন্টের রঙও হলুদ ছিল না। ভয়ে হাত পা শরীরের ভেতরে সেধিয়ে যেতে চায়। কেমন শীত শীত লাগতে থাকে অগাস্ট মাসেও, পেটের মাঝে শূণ্যতার সৃষ্টি হয়। প্রায় মাসখানেক পরে জানতে পারি যে, এখানে রাস্তা ঝাড়ু দেবার দিনকাল ঠিক করা আছে, সপ্তাহের ঐদিনে ২ ঘন্টার জন্যে রাস্তার ঐপাশে গাড়ি রাখা নিষেধ। রাখলে প্রথমবার ৪০ ডলার, ২য় বার ৬০ ডলার বারে ৩য় বারে ১৫০ ডলার জরিমানা। এরপরে সরাসরি গাড়ি টো করবে তারা। পুরাই কস্কি মমিন মার্কা নিয়ম। মজার ব্যাপার হল এত কিছুর পরেও নিউ ইয়র্ক সিটির রাস্তা খাইষ্টা এবং নোংরা। কোথাও যেতে গেলে ১০ মিনিটের রাস্তা যেতে লাগে ১ঘন্টা, তাই এরপর থেকে আর কেউ আমার গাড়িতে উঠতে চাইত না কারণ কার ভালো লাগবে আজাইরা টেনশন করতে।

এদিকে আমার স্ত্রী ৩ মাসের প্রেগু, ডাক্তার দেখানো প্রয়োজন, শেষ বারের ৪০০ ডলারের কথা মনে পড়ায় সাহস করে কোথাও যেতে পারছি না। দ্বিধা কাটিয়ে উঠে উপরতলার আংকেল আন্টিকে জানালাম ব্যাপারটা। উনি আমাকে বললেন, বাসার কাছের বড় হাসপাতালটাতে যেতে, ঐখানে মেটার্নিটি ক্লিনিক আছে, নিউ ইয়র্ক স্টেটে নাকি যাবতীয় মেটার্নিটি সার্ভিস সরকারের পয়সায় হয়, কোন পয়সা লাগে না, ইন্সুরেন্স লাগে না। এসব শুনে একটু সাহস পেলাম, মেডিকেইড এর জন্যে আবেদন করে রেখেছি, সেটা এসে পড়বে এক মাসের মাথায়। তাই গেলাম এল-আই-জে হাসপাতালে, এটা নাকি এই এলাকার অন্যতম ভালো হাসপাতাল। মেটার্নিটি ক্লিনিক খুজে বের করে সেখানে গিয়ে নাম লেখালাম, তারপর গাট্টি গাট্টি ফর্ম দিল আমাকে, আমার এখনো মনে আছে কিছু কিছু জিনিষ। যেমন, বাচ্চার নাম কি? বাপ এর সাথে মা এর সম্পর্ক কি? বাপের কোন যৌন রোগ আছে কিনা? বাচ্চার বাপ মা কে পিটায় কিনা? অন্যকোন রকমের অত্যাচার করে কিনা? এমন অনেক অনেক প্রশ্ন।

আমেরিকা যাবার কিছুদিন আগে রিং দেখে এসেছি, সামারা নামটা মাথায় তখনো ঘুরছে, আর এর মাঝে মানে ঘেটে এই নামটা মোটামুটি পাকাপোক্ত হয়ে গেছে, তাই ফর্মে লিখে দিলাম সামারা, তবে কাউন্টারের কেরানীকে জানালাম, আমরা আসলে জানি না ছেলে হবে না মেয়ে। সে বলল, অসুবিধা নাই, পরে আবার ঠিক ঠাক করার সুযোগ পাবো। এর মাঝে এক কৃষ্ঞ ইন্সুরেন্স এজেন্টকে আমাদের আবেদন পত্র দএখালাম, সে বলল, সব ঠিক আছে। আমি বেশ ঠান্ডা মাথায় এসে বসলাম, বসতেই আরেক এজেন্ট এসে বলল, আমাদের মেডিকেইড লাগবে কিনা? আমি ভাবলাম, নিশ্চয় কোন দুই নম্বরি আছে, তাই তাকে বললাম, না, আমাদের তো মেডিকেইড আছে, সে বলে, এ হাসপাতালে ঐ মেডিকেইড নেয় না, আমি বললাম, এই মাত্রই তো কথা বলে এলাম হাসপাতালের এজেন্টের সাথে। সে আরেকটু বুঝানোর চেষ্টা করল, কিন্তু আমার মোটা মাথায় কিছুই ঢুকল না। আসলে মেডিকেইডের ও ভিন্ন জাত ধর্ম আছে সেটা বুঝলাম আরো ৬ মাস পরে যখন বাসায় বিল আসা শুরু হল। এল-আই-জে তে সস্তা মেডিকেইড (যেমন মেট্রোপ্লাস) নেয় না, তাদের নিম্নতম মেডিকেইড প্ল্যানের নাম হেল্থ ফার্স্ট।

প্রথম চেকাপ করিয়ে বাসায় ফিরতে সেদিন সন্ধ্যা হয়ে যায়, সস্তার তিন অবস্থা, মাগনার কয় অবস্থা হবে চিন্তা করে নেন। যাবতীয় ল্যাবরেটরী টেস্ট করতে দিল তারা, ল্যাব করার জন্যে এখানে আলাদা আলাদা টিউবে রক্ত নিল প্রতিটা পরীক্ষার জন্যে, সেই সাথে ভিটামিন ট্যাবলেট দিয়ে দিল। পরের সপ্তাহে সনোগ্রামের অ্যাপয়েন্টমেন্টও দিল। আমার স্ত্রী দুর্বল গলায় খালি বলল, রক্ততো সব এখানেই বের করে নিচ্ছে। সারাদিন সেখানে বসিয়ে রাখল, অথচ খাওয়ার কোন জায়গা নেই ভালো। গর্ভবতী অবস্থায় নাকি মায়েদের নানান খাবারের অভিলাষ হয়, আমি তখন না পারি রাঁধতে না চিনিও কোন দোকান যেখানে নিয়ে যাবো খাওয়াতে। আর খাবারের দাম দেখলেই সব ক্ষুদা নষ্ট হয়ে যায়। পরের সপ্তাহে গেলাম সনোগ্রাম করতে, প্রায় এক ঘন্টা ধরে এক টেকনোলজিস্ট গুতাগুতি করল, আর বলে গেল, তোমার বাচ্চা মহা পাজি, এত নড়াচড়া করছে যে ধরে ছবি নিতে পারছি না। আমি হালকা হাসি ঝুলিয়ে রাখলাম, অন্তত মেয়ে বা ছেলে যাই হোক আমার মত পাজী তো হবে!

সোশ্যাল সিকিউরিটি কার্ড এসে গেছে, তারপর থেকেই সবখানে চাকরির জন্যে দরখাস্ত ঠুকতে লাগলাম, দিন তো চালাতে হবে। প্রথমে ভেবেছিলাম, ডাক্তার মানুষ, হাসপাতালে টেকি চাকরি করতে চাইলেই নিয়ে নিবে। কিন্তু ১৫ দিনের মাথায়ও যখন কোন সাড়া পেলাম না, তখন হাবিজাবি সকল স্থানে দরখাস্ত করতে শুরু করলাম। প্রথম যেখানে কাজ পেলাম, তার নাম ডমিনোস পিজ্জা। এখন ডমিনোস দেখলেই একারনে বমি পায়, তবে তখন নিজে বানিয়ে নিজে অনেক পিজ্জা খেয়েছি। ডমিনোসের সবচেয়ে বাজে হল তাদের টমেটো সস, তবে কাজের কাজ হিসাবে পিজ্জা বানানো শিখেছিলাম। এখনো পারি হাতে ঘুরিয়ে ডো গোল করার ব্যাপারটা, অথচ রুটি বেলতে পারি না। ২ সপ্তাহ পরে পিজ্জা আর ভালো লাগে না, তাই বাধ্য হয়ে ক্রাস্ট বাদ দিয়ে শুধু টপিং খেতাম চিজ দিয়ে বেক করে। এখন কেউ যদি আমাকে ১০০ ডলারও দেয়, তাও ডমিনোসে পিজ্জা খাবো না। আমার ম্যানেজারের নাম ছিল শিকদার, বাংলাদেশি, তার ইংরেজি শুনে এমন হাসি পেত যে কি বলব! বেটা চরম অশিক্ষিত এবং ছোটলোক ছিল, ধরেন কোন খাবার মাটিতে পরে গেছে, সে উঠিয়ে আবার রেখে দিত। তারপরে চিজ পুরানো হয়ে গেছে, ফাংগাস পরে গেছে কোনা কান্চিদিয়ে, নিয়ম অনুযায়ী সেগুলো সব ফেলে দেবার কথা। কিন্তু সে করত কি, কোনার ফাংগাস ফেলে দিয়ে বাকি চিজ নতুন চিজের সাথে মিলিয়ে রেখে দিত। তারপরে টপিং গুনে দিত, যেন তার বাপের টাকায় টপিং দেওয়া হচ্ছে। আরেকটা মজার ব্যাপার হল এরকম, ধরেন একটা ১৬ ইঞ্চি পিজ্জার দাম ১২ টাকা, আর প্রতিটা টপিং ১.৯৯, যদি একটার জায়গায় ২ টা টপিং নেন, তাহলে কিন্তু আলাদা দিবেন ২টা টপিং এর টাকা, কিন্তু পাবেন কিন্তু পরিমানে সমান টপিং। অর্থাৎ ৫ টা টপিং নিলে প্রায় ১০ টাকা দিয়ে যতটুকু টপিং পাবার কথা ছিল, ১ টা টপিং নিয়ে আপনে সমান পরিমান টপিং পাবেন। এটা বুঝতে পেরে আমার খুব মেজাজ খারাপ হয়েছিল, লোক ঠকানোর কত যে ফর্মূলা এদেশে এসে শিখেছি, এ যেন দিন দুপুরে পুকুর চুরি, পুরাই কস্কী মমিন।

এভাবে ধুনফুন করতে করতে প্রায় ৩ মাস কেটে গেল আমেরিকায়, কিছুই আর ভালো লাগে না, আমার স্ত্রী বেচারী আধো বেজমেন্টে থাকার কারনে বছরে সর্দি লেগে থাকে। আমিও কাজ খুজে যাচ্ছি, কারন ডমিনসে ইংরেজি শেখার বদলে দিনে দিনে যেভাবে খ্যাত ভ্যাদাইম্যা কিছু একটা শুনছি, এখানে বেশিদিন থাকলে সবাই আমাকেও গাইয়্যা ভূত বলবে। এর মাঝে এসে গেল আমার রোড টেস্ট দেবার দিন, আমিও ১০টা বুক ডন দিয়ে হাজির হলাম ড্রাইভিং স্কুলে, সেখান থেকে রোড টেস্ট দিতে যাব। যাবার পর সেই উচ্চমাধ্যমিক সমস্যার ভদ্রলোক আমাকে বসতে বলে আমার অ্যাপয়েন্টমেন্ট চেক করতে লাগলেন। ১০ মিনিট পরে উদ্ভ্রান্ত দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে বললেন, আমার অ্যাপয়েন্টমেন্ট নাকি তিনি খুঁজে পাচ্ছেন না, তাই এখনি আবার করবেন ব্লে জানালেন। আরো এক মাস পরে আবার তারিখ পাওয়া গেছে। মনে হল, আমার পায়ের নিচে থেকে মাটি সরে গেছে। মনে মনে মিনিটে গড়প্রতি শ'খানেক খিস্তি করতে করতে বলতে চাইলাম, ব্যাটা লুল্পুং, ভাবীদের অন্তর্বাসের দিকে না তাকিয়ে কাজে মন দিলে এখন আমার মাথায় কাঁঠালটা পড়ত না। কিন্তু কিছু না বলে বের হয়ে আসলাম। তিনি কারন হিসাবে আমাকে বললেন, আসলে কম্পিউটারের ডাটাবেসে নাকি এমন হয়, আমি তো ভুদাই, যা বলবে, তাই যেন বিশ্বাস করব। ডি-এম-ভি হল এদের ফেডারেল সরকারী সংস্থা, সেখান থেকে ডাটা মুছে যাবে, এটা কি মগের মুল্লুক নাকি? ভেবেছিলাম লাইসেন্স পেলে ফায়ার সার্ভিসে যোগ দিব, তারপর সাইরেন বাজিয়ে নিউ ইয়র্কের বুক চিড়ে সাঁই সাঁই করে গাড়ি চালিয়ে জনসেবা করব। সে আশায় ছাই ঢেলে দিল এই বজ্জাতগুলো।

বিনা লাইসেন্সে গাড়ি চালাতে চালাতে থাকি, আমার কন্যা তার মায়ের গর্ভে বড় হতে থাকে, এর মাঝে এক ফার্মাসি থেকে ডাক পাই চাকরির জন্যে। সেটা পেয়ে মনের আনন্দে ডমিনোস ছেড়ে দেই। নতুন কাজটা শুরু হবার আগেই আগেরটা ছাড়ার ফল হল ভয়ানক, ফার্মাসি ওয়ালারা আমার ব্যাকগ্রাউন্ড চেক করে বলে তোমার তো কোন লম্বা রেকর্ড নেই, তাই তোমাকে আমরা নিতে পারছি না, অথচ এক সপ্তাহ আগেই ইন্টারভিউ করে এক মহিলা আমাকে বলেছে আমার চাকরি নিশ্চিত। কপালগুনে এর মাঝে একটা গ্রোসারিতে কাজ পেয়ে যাই ক্যাশিয়ারের, সেখানে কাজ শুরু করি। এর মাঝে আরো এক মাস সময় চলে যায়, আমার রোড টেস্টের দিন চলে আসে, এবার আমি আগে থেকেই ফোন করে নিশ্চিত করি যে আমাকে আবার লোটা ধরানো হবে না। গিয়ে হাজির হই ব্রুকলিনের স্ট্যারেট সিটিতে, এক্কেবারে কৃষ্ণ অধ্যুষিত এলাকা সেটা। যথাসময়ে আমার সুযোগ এলো, গাড়ি নিয়ে বের হলাম, সব ঠিক ঠাক চলছে, ডানে ঘুরাও বামে ঘুরাও হেন তেন এমন অনেক কিছু করে যাচ্ছি নির্দেশনা পেয়ে, এক জায়গায় গিয়ে ৩ ধাপে গাড়ি ঘুরালাম, আমার ইন্সট্রাক্টর খালি শুকরের মত ঘোঁত ঘোঁত করে। ফিরে আসার পথে এক কেল্লু মহিলা রাস্তা পার হবে, আমি তাকে দেখে আরো ধীরে আগাতে থাকি, তারপর কাছে এসে দাঁড়িয়ে পড়ি, এই কৃষ্ণ মহিলা আর রাস্তা পার হয় না, আমিও যেতে পারছি না। এভাবে ১০ সেকেন্ড উৎকন্ঠার মাঝে কেটে গেল, আমি আস্তে করে ব্রেকটা ছেড়ে দিলাম, আর মহিলাও হাঁটা শুরু করে দিল। ইন্সট্রাক্টর ব্যাটা পুরাই ঘোঁত ঘোঁত করে কি সব বলতে লাগল, আমি বুঝে গেলাম আজকে আমার বাড়া ভাতে ঐ বেটি ছাই দিয়ে গেছে। ৩ মাস পরে সুযোগ পেয়েও নিজের দোষে লাইসেন্স বানাতে পারলাম না।

দুঃখ ভারাক্রান্ত হয়ে নিজের মনে খিস্তি করতে করতে বাসার পথ ধরি, তখন প্রায় ৩ মাসের বেশি সময় ধরে নিউ ইয়র্কে গাড়ি চালাচ্ছি আমি, আমাকে ফেল করিয়ে দিল। নিজেকে কষে খান কতক চড় মারতে ইচ্ছা করছিল, কিন্তু পাশের মহিলা আমাকে পাগল ভাবতে পারে তাই সে কাজ থেকে বিরত রইলাম। যাক, এর মাঝে আমার শাশুড়ি এসে পড়েছে, তাকে ফোন করে জানালাম তার গুণধর জামাতা জীবনের প্রথম পরীক্ষায় ফেল করেছে। তাই মন ভালো করার জন্যে ফিরে এসে আমরা গাড়ি নিয়ে বাচ্চার কাপড় কিনতে গেলাম। তখন শপিং এ যেতাম ওয়েস্টবারি নামে লং আইল্যান্ডের একটা মলে। সেখানে গিয়ে একগাদা টাকা খরচা করে মেয়ের জন্যে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনা শুরু করে দিলাম। সে সময়ে বেচারা প্রজাপতি ফলোআপে যেত একা একা, অনেক ঠান্ডা বাইরে, তাই আমি গাড়ি নিয়ে হাসপাতালের দরজায় নামিয়ে দিয়ে গাড়ে নো পার্কিং এ পার্ক করে গাড়ির ভেতরে বসে থাকতাম, তখনো আমার এত আত্মা হয়নি যে ১০ টাকা ঘণ্টা দরে গাড়ি পার্ক করব। এভাবে বিদেশ বিভূয়ে এসে শত আদর যত্নে লালিত পালিত স্ত্রী যে কষ্টটা করেছে, তার জন্যে আমার আজীবন দুঃখ থেকে যাবে। আর সেটা আমাদের প্রথম শীত, ঠান্ডাও লাগত আমার অনেক বেশি। তাই ৪-৫ লেয়ারে জামা পড়তাম সব সময়। এর মাঝে প্রথম যেদিন বরফ পড়ল, কি যে অদ্ভুত অনুভূতি হল কি বলব!

আবারো এক মাস পরে তারিখ পাই রোড টেস্ট দেবার। কিছুই ভালো লাগে না, তাই খালি দোকানে ঘুরাফিরা করি, কিনি না কিছু, পকেটে মালপানি থাকলে না কিনব। সেমি বেজমেন্টে থাকি, মনে হত যেন কবরেই শুয়ে আছি, আর চারপাশের ঠান্ডা মাটি যেন দেয়াল ভেদ করে ঠান্ডার আবেশ দিয়ে হাড় কাপিয়ে দিত আমার। এর মাঝে এক সকালে ঢাকা থেকে টেলিফোন আসল, তাও ফোন করল আমার ভাবী, আমার শ্বশুর নাকি এপলো হাসপাতালে ভর্তি, তার নাকি ছোটখাটো স্ট্রোক করেছে। শুনে আমরা ২ জনেই ভিমরি খেলাম, তারপরে আর কি করা, আমার শ্বাশুড়ি গাঁইগুই করতে লাগলেন, আর বেশি দিন বাকি নেই বাচ্চা হতে, এর মাঝে উনি যাবেন কিভাবে? এদিকে তার মন পড়ে আছে ঢাকায়, হাজার হলেও তার স্বামী অসুস্থ হয়ে ঢাকায় তড়পাচ্ছেন, তার সাথে আছে শুধু তার ছোট মেয়ে। আমি আর আমার স্ত্রী ৮টা বাজতেই সব ট্রাভেল এজেন্সিতে ফোন করা শুরু করলাম, একটা এজেন্সিকে পরেরদিন সকালের টিকিট পেলাম, তাই টিকিট আনতে দৌড়ালাম ম্যানহ্যাটন। সকালে গিয়ে টাকা দিয়ে আসলাম, তারা বলল, বিকালে আবার যেতে হবে, তখন টিকেট দিবে। তখন এমন জরুরী অবস্থা, কি করব না করব কিছুই বুঝে উঠতে না পেরে কেমন একটা অবশ অনুভূতি নিয়ে দিনটা কাটিয়ে দিলাম। এর মাঝে অবশ্য আমার শ্বাশুড়ির যে রিটার্ন টিকেট কাটা ছিল, সেটা এমিরেটস্‌ এর, তাদের ও ফোন দিয়েছিলাম, তারা বলল, এক দিনের নোটিশে তারা পারবে না টিকেট পালটিয়ে দিতে, তাছাড়া তাদের নাকি প্লেনে সিটও নেই।কাজেই সেই রিটার্ন টিকিট টাও মার যায়।পরদিন সকালে শ্বাশুড়ি আম্মাকে প্লেনে উঠিয়ে দেই, এবারে আর পানি ফেলাফেলির কারবার নাই, নত মাথায় তিনি চলে যেতে বাধ্য হলেন আমাদের ফেলে।

এদিকে আমার স্ত্রীর ডিউ ডেট তখন আর ৪ সপ্তাহের কম। ২ জনেই চোখে অন্ধকার দেখতেছি, আমার আম্মা এর মাঝেই ১০ দিনের মাথায় আমেরিকার ভিসা ম্যানেজ করেন, কিভাবে সম্ভব করেছিলেন, আল্লাহ মাবুদ জানেন, কিন্তুর আম্মার আসার দিন ঠিক হয় ডেলিভারির এক সপ্তাহ আগে। এদিকে ২ সপ্তাহ বাকি থাকতে একদিন আমার স্ত্রীর প্রচন্ড বুক ধড়ফড় আর শ্বাসকষ্ট শুরু হয়, হাসপাতালে নিয়ে যেতে বাধ্য হই তাকে। সেখানে নিয়ে যেতেই তারা তাকে ভর্তি করে ফেলে, তারপর চলে একের পর এক টেস্ট। ইসিজি দিয়ে শুরু করে এক্কেবারে ভি-কিউ স্ক্যান পর্যন্ত করে। ২ দিন ধরে টানা টেস্ট চলে, আর আমাকে কোথাও ভেতরে ঢুকতে দেয় না, হাবিজাবি টেস্টগুলোতে তাও পাশে থাকতে দিয়েছিল। যাক, ২ দিন ধরে যন্ত্রনা দেবার পর তারা রায় দেয় যে সবই ঠিক আছে, তারা কিছু খুজে পায়নি। তাই তারা একটা ইনহেলার আর একটা স্টেরয়েড ট্যাবলেট দিয়ে আমাদের বিদায় করে দেয় হাসপাতাল থেকে। বাসায় এসেও আমি খুব ভয়ে ভয়ে থাকি, কি হতে আবার কি হয়ে যায়। এদিকে স্ত্রী-হবু কন্যা, ঐদিকে শ্বশুর, ২ জনেরই অবস্থা কাহিল। তখন ডিসেম্বর মাস, ১৭ তারিখে উর্মির সেমিস্টার শেষ হয়, তাই সেদিন সকালে আমি রওনা দেই আবার বার্ডের পথে। সেইদিন উর্মিকে নিয়ে ফেরার পথে ঘটে মামুর সাথে আমার প্রথম মোলাকাত। যথা সময়ে আম্মা এসে হাজির হন ঢাকা থেকে, তাঁকে আর এসব কিছু বলি না। এরপর যথা সময়ে আমরা হাত-পা ঝাড়া দিয়ে বসে থাকি, ৪০ সপ্তাহ পার হয়ে যায় কিন্তু আমার স্ত্রীর প্রসব বেদনা আর উঠে না।

(চলবে)
অনেক বেহুদা পকপক শুনলেন, তাই কানের পাশাপাশি চোখটারেও একটু যন্ত্রনা দিয়ে যাই

From jones beach e ek bikal
From jones beach e ek bikal


মন্তব্য

কিংকর্তব্যবিমূঢ় এর ছবি

পুরাটা পড়ছি ... চাপা না, সত্যি দেঁতো হাসি

চালায়ে যান, ভালো হচ্ছে ...
................................................................................................
খাদে নামতে আজ ভয় করে, নেই যে কেউ আর হাতটাকে ধরা ...

সাইফ তাহসিন এর ছবি

আহারে কিংকং, এই পর্ব লেখার পর ২ দিন শুধু ঝুলিয়ে রেখেছিলাম, দিব কি দিবনা সেইটা নিয়েই ভাবলাম। সাড়া পাই বলেই লেখি, নাহলে এই প্যাচাল জীবনেও লেখা হত না। অসংখ্য ধন্যবাদ বস।
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদ্বপি গরীয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

এইটায় মজা কম পাইছি মন খারাপ তবে সে কেবল আপনার আগের লেখাগুলোর তুলনায় হাসি
আহা! এই সিরিজ কখনো শেষ না হোক...
____________________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ !

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

সাইফ তাহসিন এর ছবি

মজা আর পাইবানা বস, আর কোন মজার কথা নাই, এখন থেকে শুধুই লেখার নামের সার্থকতা খুজে পেতে থাকবা। অর্থাৎ বাংলা সিনেমার প্রথম আধাঘণ্টার হাসি-ঠাট্টার পর্ব শেষ, এখন শুধুই ট্র্যাজেডি আর বালতি বালতি পানি ঢালাঢালি হবে। খালি ভূতের কিল পরতে থাকবে একটার পর একটা।

তোমার শেষ লাইন পড়ে ডরাইসি, মিয়া তুমি কি চাও যে আমি সারাজীবন ভূতের কিল খাই? তোমার দিলে কি একটু দয়া হয় না চোখ টিপি

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদ্বপি গরীয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

কে বলছে দয়া হয়না! দোয়া করি ভুতেরা দমাদম কিলের বদলে হালকা করে কিলিয়ে আপনের পিঠ ম্যাসাজ করে দিক। তাও ভুতের কিল পড়তেই থাকুক আপনের পিঠে। সুন্দরীমতো পেত্নিরাও হালকা পাতলা পোষাকে খাইছে কিলুৎসবে অংশ নিক চোখ টিপি
____________________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ !

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

মানব সন্তান এর ছবি

বানান ভুলঃ

পৌছানোর
আস্বস্ত
শ্বশুড়
ঘন্টা
কতদুর
বায়ে
লক্ষ ( দেখা বা খিয়াল অর্থে বানান হবে লক্ষ্য)
গুগুল (তাহলে বানান হতো googoole)
দুরত্বের
ঝাকি
আযান
ট্যাকনিক
দক্ষিনে
কিছুক্ষন
গেজাইতে
পৌছালাম
কৃষ্ঞ
দএখালাম(এটা মনে হয় টাইপো)
ক্ষুদা
একারনে
কান্চিদিয়ে(টাইপো)
কোনার
পরিমান
ব্লে (টাইপো)
কপালগুনে
উৎকন্ঠার
এপলো
ভিমরি

লেখা পড়তে খারাপ লাগেনি। দলছুটের মতো কিছু কিছু বাক্য আপনার লেখায়ও মাঝে মাঝে আসে। গালি না দিলে পরে কখনো মন্তব্যে লিখবো।

সাইফ তাহসিন এর ছবি

হা হা হা, অসংখ্য ধন্যবাদ বানান গুলো ধরিয়ে দেবার জন্যে। ঠিকগুলো বলে না দিলে শিখবো কিভাবে? তবে গঠনমূলক মন্তব্য আমি ব্যাপক ভালু পাই। আমি একজন নিতান্ত ছুডু ব্লগার, আমার লেখা পড়েছেন জেনেই ভালো লাগল, আর দলছূট হল একজন উচ্চমার্গীয় গল্প লেখক। আমার মত ভোদাইয়ের সাথে তুলনা করলেন, উনি তো রাগ করে সচল ছেড়ে চলে যাবেন।
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদ্বপি গরীয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

অতিথি লেখক এর ছবি

সাইফ ভাই আপনাকে ভদ্র, মার্জিত এং রুচিশীল সমালোচক ভেবে সব সময় শ্রদ্ধাই করি, কিন্তু আপনি যে পরিহাস করে, ফোড়ন কেটে অপমান করবেন সেটা কোন দিন ভাবি নাই। তবে এর জন্য আপনার প্রতি সম্মান প্রদর্শন একটুও কমবে না। আপনাদের সমালোচনা গ্রহণ করার মত জ্ঞান বা বোধ আমার এখনো তৈরি হয়নি বলেই হয়তো সুন্দর সুন্দর মতামত গুলো লেখায় প্রতিফলন ঘটাতে পারি নাই, এটা আমার অক্ষমতা বা বলতে পারেন নির্বুদ্ধিতা।

আপনার লেখা পড়ে ভালো লাগল কিন্তু কষ্ট লাগল যে আপনরা মত সচেতন আধা সচলের লেখায় এতো বেখেয়ালীপনা! হয়তো সময়ের অভাব। ভালো থাকবেন।

ডি,এম, কামরুজ্জামান (দলছুট)

সাইফ তাহসিন এর ছবি

গরীবের বাড়িতে হাতির পাড়া, ডরাইছি। বিশিষ্ট গল্প লেখক আপনে, আমার ফকিরা ব্লগে আপনাকে দেখে খুব ভালো লাগল। আপনাকে কষ্ট দিলাম জানতে পেরে বেশ খ্রাপ লাগল।

আমি নিজে খামখেয়ালী, সেটা আমি বেশ গর্ব ভরেই বলি, তারমানে তো এই না সবাইকে সেটা করতে হবে। তবে হ্যাঁ চেষ্টা করে যাচ্ছি, দেখি ভুলের হার কমাতে পারি কিনা হাসি. তবে যেটা পারি না, সেটা করারও চেষ্টা করি না, যেমন গল্প কবিতা উপন্যাস লেখা। এগুলা লেখতে মাজায় মাথায় হাতে জোর থাকতে হয়, যা আমার নাই, তবে এখানে অনেকেরই আছে, যেমন হিমুদা, লীলেনদা, অনিকেতদা, তাই তাদের লেখা খুব মনযোগ দিয়ে পড়ি।

কষ্ট করে লেখা পরার জন্যে ধন্যবাদ
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদ্বপি গরীয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

মানব সন্তান এর ছবি

উদ্ধৃতি

কষ্ট করে লেখা পরার জন্যে ধন্যবাদ

লেখা কিভাবে পরে?

একটা বাংলা-বানান অভিধান কিনেন। আবার পড়ে দেখলাম আরো অনেক বানান ভুল আছে। আর যে যে যে যে যে যে ......

সাইফ তাহসিন এর ছবি

হাতির পায়ের নিচে চাপা পরে চোখ টিপি

আর বাংলা অভিধান কই পাবো? যেখানে থাকি, সেখানে বাংলা বই পাওয়া যায় না, পিডিএফ দেন না দেঁতো হাসি
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদ্বপি গরীয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- পড়লাম। পুরাই শিউরে ওঠার মতো কাহিনীরে ভাই। খুব ছোটবেলায় বিঁভূইয়ে পাড়ি দিলেও এতো ভীতিকর অবস্থায় পড়তে হয়নি।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

সাইফ তাহসিন এর ছবি

সবই মানসিক কষ্ট বস, তবে সবার যেটা বেশি হয় অর্থাৎ খাবার কষ্ট, আর্থিক বা অন্যান্য সামাজিক কষ্ট, সেরকম কিছুর মধ্যে পড়িনাই। লেখা পড়ার লাইগা অনেক ধন্যবাদ।
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদ্বপি গরীয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

মামুন হক এর ছবি

রয়েসয়ে লিখো সাইফ, কোথাও কোথাও মনে হলো ফাস্ট ফরোয়ার্ডেড হয়ে গেছে। আমাদের জন্য লেখ, নিজের জন্যও। না লিখলে একদিন পেছন ফিরে দেখবে কত স্মৃতি হারিয়ে গেছে। লিখে রাখলে নাতি-পুঁতিরাও পড়ে মজা পাবে, শিহরিত হবে।

আমার আগ্রহ বেশি জীবন সংগ্রামের অংশগুলোয়। নিজে কষ্ট করে বুড়ো হলেও অন্যের সংগ্রামের কাহিনী আমি এখনও মুগ্ধ হয়ে পড়ি।

পরের পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম হাসি

সাইফ তাহসিন এর ছবি

কথা সত্যি, আসলেই ফাস্ট ফরোয়ার্ড করে গেছি অনেক জায়গায়। নিজের আবেগকে বেঁধে রাখতে বেশ কষ্ট হয় এই দিনগুলোর কথা মনে করে। জাহিদ আই বলেছিলেন, লিখে রাখা অনেক জরুরী, নাহলে আসলেই একদিন ভুলে যাবো এই দিনগুলোর কথা। আর এই কথাগুলোর বেশির ভাগই আমি আর আমার স্ত্রী ছাড়া আর কেউ জানে না। যারা জানলে কষ্ট পাবেন খুব, ভাগ্যিস তাদের কেউ সচলায়তনে পড়েন না। তার মানে আবার এই না যে আপনারা আমার আপন না, আপনারা ভালোবেসে আপন করে নিয়েছেন বলেই সাহস করে এই সিরিজ লেখায় হাত লাগিয়েছি।

আর কিছুদুর লেখার পর মনে হল, এক্কেবারে ডিটেইল ধরে লিখে গেলে অন্যান্য সংগ্রামী ভাই-বোনেরা মাইন্ড খাইতে পারেন চোখ টিপি, আর কিছুটা লজ্জায় লাগে এভাবে নিজের গল্প বলতে। দেখি, পরের পর্বে আরেকটু ধীরে সুস্থে লেখার চেষ্টা করব। অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে লেখা পড়ার জন্যে এবং লেখতে অনুপ্রেরণা দেবার জন্যে।
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদ্বপি গরীয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

তানভীর এর ছবি

সাইফ তাহসিন, এটাই আসল আমেরিকার গল্প। চলুক এমন পোস্ট দিতে দ্বিধা করার কিছু নেই; দ্বিধা তো করবে তারা, যারা লোক দেখানো মেকি সুখের গল্প ফাঁদে। আসল ঘটনা কী তা আপনি, আমি সবাই জানি।

আপনার মতো আমিও শুরুতে রাস্তার পাশে এক্সিট দেখলে ঢুকে পড়তাম। তবে ড্রাইভিং লাইসেন্স নিয়ে আমার অভিজ্ঞতা এতো খারাপ ছিলো না। তবে যেটা হয়েছিল তা আরো খারাপই বলা যায়। আমি দেশ থেকে ড্রাইভিং শিখে আসি নি (আসার আগে দু'একদিন শুধু ধানমন্ডির এক ড্রাইভিং স্কুলে গিয়েছিলাম), তাই ড্রাইভিং না শিখে এবং লাইসেন্স না নিয়ে গাড়ি কেনার ইচ্ছা ছিল না (শুরুতে অনেকদিন গাড়ি কেনার ক্ষমতাও আসলে ছিল না)। আমি যে শহরে থাকতাম, সেখানে বাঙালিরা ড্রাইভিং শেখানো তো দূরের কথা, তাদের গাড়িও ধরতে দিতো না। আর ড্রাইভিং স্কুলের যে খরচ তা পোষার সাধ্য আমার ছিল না। ফলে লার্নাস পারমিট নিয়েই অনেকদিন ছিলাম। তখন আমাদের ডিপার্টমেন্টে এক মঙ্গোলিয়ান ছাত্র ছিল। তারও গাড়ি, ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই। একদিন শুনলাম সে লাইসেন্স পেয়েছে, গাড়ি কিনবে। আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম সে রোড টেস্ট দিয়েছে কার গাড়িতে। সে তার অফিসমেট এক আমেরিকান স্টুডেন্টের কথা বলল যার সাথে আমার মোটামুটি খাতির ছিল। আমিও তখন তাকে বললাম রোড টেস্ট দেবার কথা। সে বলল, তুমি যদি আমার ট্রাক চালাতে পারো, আমার গাড়ি দিতে কোন অসুবিধা নাই। তারপর আমি সেই ফোর্ড এফ-২৫০ নিয়ে গেলাম রোড টেস্ট দিতে। প্যারালাল পার্কিং ছাড়া সব ঠিকঠাকমতনই করলাম, কিন্তু দেখা গেল ২ নাম্বার শর্ট। মামু কইলো, তোমারে আমি দুই নাম্বার গ্রেস দিয়া লাইসেন্স এখনই দিতে পারি, কিন্তু সেটা ঠিক হবে না, কারণ তুমি ৩৫-এর রাস্তাও পুরা ২০-এ চালাইসো, তার মানে তোমার হাত এখনো পাকে নাই। আরো কিছুদিন ড্রাইভিং প্রাকটিস করে আবার টেস্ট দাও। কী আর করা, ফেল্টুশ মন খারাপ । বারবার তো আর সেই বিদেশীর কাছে গাড়িও চাইতে পারি না। তাই আবার অনেকদিন গ্যাপ পড়লো। এর মাঝে এক দেশি বড় ভাইয়ের সাথে খাতির হলো। উনি মাঝে মাঝে তার গাড়ি ধরতে দিতেন। এখনো যা শিখসি তা সব ওনার কাছেই, যদিও লাইসেন্স পাওয়াতে ওনার রেকর্ড আছে, সাতবার বা নয়বার রোডটেস্টে গিয়ে তার লাইসেন্স হইসিলো! আমাকে উনি শর্ত দিলেন, রোডটেস্টের জন্য একবারই গাড়ি দিবেন, যদি পাইলাম তো পাইলাম, নাইলে আর নাই। আমিও রোড টেস্ট দিতে গেলাম আল্লার নাম নিয়া। শুরুতেই ধরা। প্যারালাল পার্কিং-এ গিয়ে পুরা ভজঘট পাকায়ে ফেললাম। মিররে দেখলাম পিছনে বড় ভাই পুরা মাথায় হাত দিয়ে মাটিতে বইসা পড়সে। আমি ভাবলাম এইবারো গেসি। কিন্তু চক্কর দেয়া শেষ হওয়ার পর এবার মামু কইলো, কংগ্রাটস! প্যারালাল পার্কিং-এর ২০ বাদ দিয়া পুরাই ৮০ পাইসি। দেঁতো হাসি

সাইফ তাহসিন এর ছবি

তানভীর ভাই, প্রথম কথা, আমাকে তুমি, তুই বলেন, কিন্তু আপনে করে বলেন না, খুব অস্বস্তি লাগে। আর হ্যাঁ, কোন সন্দেহ নাই, আপনে আমি এবং আমাদের মত অনেকেই করুন সত্য কথাগুলো এড়িয়ে যায়, দেশে বসে সবাই স্বপ্নালু চোখে তাকিয়ে ভাবে, আহা! আমেরিকা, পৃথিবীর সব সুখ যেন ঐখানে আছে। এর স্বপ্ন নিয়ে যারা এখানে পাড়ি জমান, তারপর তিলে তিলে গড়ে তুলেন নিজের পরিচিয়, সৌভাগ্য, বিত্ত, দেশে গিয়ে বেমালুম চেপে যান সেসব দিনের কথা। গিয়ে শুধু কি কি দেখেছেন আর কি কি মজা করেছেন, সে গল্পগুলোই ফলাও করে বলেন।

আপনে কোন স্টেটে এসেছিলেন প্রথম? আপনার অবস্থা আসলেই আমার চেয়েও খারাপ ছিল, সে ব্যাপারে বিন্দুমাত্র সন্দেহ নেই। আর ফোর্ড এফ-২৫০ তো ট্রাক না, একটা ছোটখাট যুদ্ধ জাহাজ, প্রথম বারে আপনে যে চালানোর সাহস করতে পেরেছেন, সেজন্যে আপনাকে বাহবা দিতে হবেই। আর সে গাড়ি দিয়ে প্যারালাল পার্কিং করা আর বন্দরে জাহাজ ভেড়ানো প্রায় একই কথা। এর পরেও যদি পাশ করে যেতেন, আমি সত্যিই এখন রওয়ানা দিতাম আপনার পায়ের ধুলো নেবার জন্যে। আপনার ঐ বড় ভাইয়ের মত এমন মক্কেল আমিও দেখেছি ২-৩ টা। একজনকে চিনি, তিনি প্রায় ১৬ বছর যাবত আমেরিকায় থাকেন, এখনও লারনারস্‌ পারমিট নিয়েই পথ চলেন। আবার ইগোর কারনে স্ত্রীকে পরীক্ষা দিতে দেন না, কারন দিলে হয়ত তার স্ত্রী একবারেই পাশ করে যাবে।

তানভীর ভাই, আপনার মন্তব্য পড়ে আমার মুখটা ১০০ ওয়াটের ফিলিপ্স না হ্যালোজেন বাতির মত জ্বলে উঠল, যদিও জানি, আমার মত ভুক্তভোগী অনেক আছেন, তারপরেও তাদের কেউ যখন পাশে এসে বসেন বা একটা স্বান্তনার কথা বলেন, তখন হাজার কষ্টের মাঝেও নিজের কষ্ট কিছুটা লাঘব হয়। তবে, আমার পাশে সবসময়ই আমার স্ত্রী ছিল, সে সবসময়ই আমার কষ্ট মাথা পেতে নিয়েছে, অন্যদের এতটা ভাগ্য এতটা ভালো ছিল বলে মনে হয় না। আপনাদের দেওয়া এই ভালোবাসার ঋণ দিনে দিনে বেড়েই চলেছে। সবসময় ভালো থাকবেন, আর কষ্টগুলো আমাদের দিকে ছুড়ে দিবেন।

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদ্বপি গরীয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

আর কষ্টগুলো আমাদের দিকে ছুড়ে দিবেন।

হ। কষ্টগুলো নিয়া ভাইয়ে ভাইয়ে "ফ্রিসবি" খেলার মজাই আলাদা। হাসি
____________________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ !

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

সাইফ তাহসিন এর ছবি

আবার জিগায় বস! তুমি কইলাম লেখতাছ না অনেকদিন। তোমার সিন ডা কি চোখ টিপি চিন্তিত
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদ্বপি গরীয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

আর কইয়েননা। কী বিপদে যে আছি সেইডা কওয়ারও টাইম পাইতেছিনা মন খারাপ । আতকা-উতকা সচলে আইসা নিঃশ্বাস ছাইড়া যাই। তাড়াতাড়িই বিপদের কবল থেকে নিস্তার পাব। তখন সচলায়তন আর আমার হাত থেকে নিস্তার পাবেনা...মুহুহুহুহাহাহাহা.... দেঁতো হাসি
____________________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ !

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

তানভীর এর ছবি

টেক্সাসে প্রথম। ফোর্ড এফ-২৫০ চালাইতে খারাপ না। বসলে 'রাস্তার রাজা' টাইপ ভাব হয়, আশেপাশে সবকিছু ছুডু ছুডু লাগে। একে অন্যের গাড়ি, কী হয় না হয় সেজন্য খুব সাবধানে আস্তে আস্তে চালাচ্ছিলাম, আর অনভ্যাসের দরুণ মনে হচ্ছিল এক্সিলেটরে পা দিলেই গাড়ি দৌড় দিবে। আর তখন বেশি আস্তে চালালেও যে দোষ হয়- এটাও জানতাম না মন খারাপ

সাইফ তাহসিন এর ছবি

বসলে 'রাস্তার রাজা' টাইপ ভাব হয়, আশেপাশে সবকিছু ছুডু ছুডু লাগে।

হো হো হো হো হো হো আমার অনুভূতিটাও একই রকম, বিশাল গাড়ি, খালি অন্যদের ধাক্কা দিতে ইচ্ছা করে চোখ টিপি আর টানও সেরকম। তেল কম খাইলে কিনে ফেলতাম।
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদ্বপি গরীয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

সচল জাহিদ এর ছবি

ড্রাইভিং টেষ্টে এরা কিভাবে ইচ্ছে করে ফেল করায় তা আমার থেকে কেউ ভাল জানেনা।

মন দিয়ে পড়ছি সাইফ। তোমার অভিজ্ঞতা অনেকের কাজে লাগবে।

----------------------------------------------------------------------------
zahidripon এট gmail ডট কম


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

সাইফ তাহসিন এর ছবি

হা হা হা, কতবার দিসিলেন জাহিদ ভাই? আমি ২য় বারেই উৎরায় গেসিলাম। আমার কন্যা জন্মের সাথে সাথে কিছু ভালো জিনিসের আমদানি হয়েছে আমার জীবনে। আপনার লাইসেন্স কাহিনী শুনার জন্যে বুকিং দিলাম কিন্তু। না লেখলে কইলাম কানাডা আইসা আপনার দরজায় এসে বিছানা পেতে বসে থাকব দেঁতো হাসি
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদ্বপি গরীয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

সচল জাহিদ এর ছবি

উতরাইছি দুই বারেই কিন্তু প্রথম বার সব ঠিক কইরাও শেষে আইসা পাশের দেশের পরীক্ষকের কোপানলে পড়ছি।

আমারে এক আবাসিক এলাকায় নিয়া কয় ঐ গাড়ীটার পেছনে প্যারালাল পার্কিং কর। ত আমি প্রথমে গাড়ীটারে ঐটার পাশে নিছি তারপরে ব্যাক গিয়ার দিয়া স্টিয়ারিং ঘোরাইতেছিলাম কয় তুমি ফেইল। আমিত আকাশ থিকা পড়লাম , কইলাম কেন? কয় ঐ গাড়ীর সাথে তোমার গাড়ির পাশাপাশি দূরত্ত্ব ১ মিটারে কম, ব্যাকে যাইয়া গাড়ী ঘোরাইলে নাকি ঐডাতে লাগব এইটা 'আনসেইফ একশন' সুতরাং ডাইরেক্ট ফেইল। আমারে পার্কিং করতেই দিলনা ভাইবা দেখ।

আসলে কাহিনী কিছুই না, নাম্বার কিছুই কাটতে পারেনাই এখন ফেইল করাইতে হবে, ফেল করলে আমার ইন্সট্রাক্টররে দিতে হইব এক ঘন্টার পয়সা কারন এক ঘন্টার লেসন না নিলে হেতে গাড়ী দিবনা আর আমারো তখন নিজের গাড়ী ছিলনা। আর সেই সাথে আবার পরীক্ষা দিলে ঐ এক্সামিনার আরো ৫০ ডলার পাইব। এইডা এইখানে যৌথ ব্যাবসা ইন্সট্রাক্টর আর এক্সামিনারদের মধ্যে। এর কোপানলে পইড়া সবারই দুই বারে পাশ করতে হয়।

----------------------------------------------------------------------------
zahidripon এট gmail ডট কম


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

সাইফ তাহসিন এর ছবি

মহা বজ্জাত দেখি ব্যাটা। কত্ত বড় টাউট, চিন্তা করেন, আপনার জন্যে ২ বার রোড টেস্ট দিতে যাওয়া মানে অন্তত এক সপ্তাহের কাজের শিডিউল ভজঘট হওয়া, তারপরে পয়সার ব্যাপারতো আছেই। অথচ আমাদের উপমহাদেশ থেকে এসে যারা গাড়ি চালাই এদের অ্যাক্সিডেন্টের পরিমাণ অপেক্ষাকৃত কম, গাড়িও চালাই যথেষ্ট দক্ষতার সাথে। বেহুদা ত্যানা প্যাচায় আমাদের সাথে। আসলেও তাদের কাছে একটা লিস্ট থাকে, সেখানে তারা টিক দেয়, কোন একটা জিনিস এদিক সেদিক করেছেন তো মরেছেন। হেরে কইলে পারতেন, ভাই আমি তো মাইপাই গাড়ি দাড় করাইতাম, কিন্তু আপনে গজ ফিতা আনেন নাই চোখ টিপি

আমার স্ত্রীর লাইসেন্স করিয়েছি ডেলাওয়ার থেকে। নিয়ে গেলাম, বসল, ১০ মিনিট গাড়ি চালালো, ব্যস, দিয়ে দিল লাইসেন্স। করে দেখাতে হয় সবই, তবে ইনস্ট্রাকটরগুলো বেশ উদাসীন।
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদ্বপি গরীয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

অনিকেত এর ছবি

বস তোমার এই লেখাটার আমি মহা ভক্ত হয়ে উঠছি।
কোন গল্প-উপন্যাসের কাহিনী নয়---অথচ সেইরকমই রোমাঞ্চকর। আসলেই আমাদের বাস্তব জীবনটার গল্প কখনো পুরোনো হবার নয়।

হায়রে পাগলের দেশ, রাস্তায় চললে ঝাকি তো লাগবেই, সেটা আযান দিয়ে বলার কি আছে

বাসা থেকে এবারে গুগুল আর্থ আর ম্যাপকোয়েস্ট দেখে বের হয়েছি, জান যাবে তো রাস্তা হারাবো না, শকুন যেভাবে ভাগাড়ে দৃষ্টি দেয়, সেভাবে রাস্তার নাম ধাম পড়তে পড়তে এয়ারপোর্ট যেতে লাগলাম।

---- হা হা হা , অনবদ্য বর্ণনা।

আর 'এক্সিট' নেবার গল্প শুনে মনে হল আমার বন্ধু 'ফক্কুল' এর কথা। প্রথম দিকে সে যখন গাড়ি চালাত, সেটা ছিল বাগদাদের সুইসাইড স্কোয়াডের কোন ড্রাইভারের মত।
তার উপরে ছিল এইসব এক্সিটের ঝামেলা। দরকার থাকুক বা না থাকুক---এক্সিট দেখলেই ফক্কুল সেটা নিয়ে নেবে। কী যে এক অমোঘ টান! ডানে-বামে যেখানেই এক্সিট থাকুক---ফক্কুল ছুটতে ছুটতে গিয়ে সেই এক্সিট ধরে ফেলবে। তার পরেই অবধারিত মাথা চাপড়ানো।

তখন আমি এক্সিট-গুলোর নাম দিয়েছিলাম শয়তানের 'ওয়াস-ওয়াসা'!!

সাইফ তাহসিন এর ছবি

অনিকেতদা, আপনাকে আবারো আজেক ফলাও করে ধন্যবাদ দেই, আপনার জন্যেই এই লেখাটা আজকে সম্ভব হয়েছে। আর একটা পুরানো ডায়লগ আছে না? ট্রুথ ইজ স্ট্রেন্জার দ্যান ফিকশন, তাই প্রতিবারই ধরা খাবার পর এই কথা বলে নিজেকে প্রবোধ দেবার অপচেষ্টা করি।

সেটা ছিল বাগদাদের সুইসাইড স্কোয়াডের কোন ড্রাইভারের মত

গড়াগড়ি দিয়া হাসি গড়াগড়ি দিয়া হাসি গড়াগড়ি দিয়া হাসি
আহারে ফক্কুল ভাই, আজকে ফোনে কথা বলার সময় আপনাকে গাইলায় ভূত করবেনে উনার 'সিক্রেট' ফাঁস করে দেবার জন্যে ;)। আমি অবশ্য উনার মত আত্মঘাতী ছিলাম না, তবে তাতে মাঠা চাপড়ানো কমে নাই। এখনো ডিসি গেলে আমি জিপিএস সহকারে হারিয়ে যাই, কাজেই কয়লা ধুইলে যে আসলে ময়লা যায় না, সেটার আমি একটা অন্যতম উদাহরণ :D।

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদ্বপি গরীয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

হাসিব এর ছবি

এতো ইংরেজী জায়গাপাতির নামনুম দেইখা কয়েকবার আছার খায়া পুরাটা পড়তে পারি নাই । পরে পড়বানি ।

সাফি এর ছবি

হ আমারও একটু কষ্ট হইসে, পরে জায়গার নাম আর বুঝার চেষ্টা করিনাই। তবে যায়গা গুলান চিনলে মনে হয় আরও মজা পাইতাম।

সাইফ ভাই, আপনেরতো সাহস কমনা, লাইচেন ছাড়া ৩ মাস গাড়োয়ানগিরি করসেন! লাইচেন নাই মানে তো লাইয়াবিলিটি ইনসুরেন্স ও ছিলনা! ধরা খাইলে পুরাই মার্ডার কেসে ফাঁসতেন!

সাইফ তাহসিন এর ছবি

ইন্সুরেন্স ছিল, ইন্সুরেন্স যে রাতে এক্সপায়ার করে সে রাতেই ডি-এম-ভি চিঠি পাঠায়, এক সপ্তাহ পরে রাস্তায় গাড়ি দাড় করায়, তারপর টিকেট দিয়ে দেয়। মজার কথা হল যে, লারনারস্ পারমিটে ইন্সুরেন্স দেয়। ইন্সুরেন্স কোম্পানি হইল টাকার ভুখা, মরা মানুষের কাছেও তারা ইন্সুরেন্স বেচবে। আর ধরা খাইসিলাম বিনা ইন্সুরেন্সেই, তাও পাক্কা তিন তিনবার। ২টা পার্কিং টিকেট আর ২ বার মামুর হাতে (একজন অবশ্য মামী আছিল, মামার সাথে মামদোবাজী - ১ এ আছে সেই কাহিনী)। কাজেই ডরায়ো না বস। এই দেশে অনেক পরস্পরবিরোধী ঘটনা দেখা যায়, যেমন গাড়ি ছাড়া লাইসেন্স হয় না, আবার লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি কেনা যায় না। তাই, এই গিট্টু খোলার জন্যে তারা লারনারস্ পারমিটে ইন্সুরেন্স দেয়, সেটা দিয়ে আমি গাড়ি রেজিষ্টার করেছিলাম চোখ টিপি

একবার ভেবেছিলাম ম্যাপ এমবেড করে দিব জায়গায় জায়গায়, পরে আর দেই নাই, গুগুল ম্যাপে বসলেই সবাই বুঝতে পারবে ব্যাপারটা, তবে কষ্ট করতে হবে এই যা।


View Larger Map


View Larger Map

দেখ বস, এবারে কিছুটা বুঝতে পারো কিনা হাসি
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদ্বপি গরীয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

মামুন হক এর ছবি

আচার না হাসিব, আছাড় হবে হাসি

সাইফ তাহসিন এর ছবি

হা হা হা, মামুন ভাই, আপনার লেখা কই? কয়দিন পরে সবাই আমাকে বলবে, লেখা যোগাড়ের ঠিকাদার, যেভাবে লেখা চেয়ে ডাকাডাকি করতেছি
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদ্বপি গরীয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

সাইফ তাহসিন এর ছবি

দু:খিত হাসিব ভাই, আরেকটু বিস্তারিত লিখলে হয়ত ইংরেজি নাম দেখে এতটা আছাড় খাইতেন না। পরের বারে এ ধরনের নামের ব্যাপারটা মাথায় থাকবে
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদ্বপি গরীয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

নন্দিতা এর ছবি

সাইফ
পুরো লেখাটা পড়েছি,পড়ের অংশের অপেক্ষায় রইলাম।
তোমার কিছু অভিজ্ঞতার সাথে আমিও পরিচিত। দেশ-কাল-পাত্র ভিন্ন হলেও অভিজ্ঞতার চিত্র এক :)।
লেখা চালিয়ে যাও, আরও অভিজ্ঞ হও ও সেই অভিজ্ঞতার আলোয় অভিজ্ঞ হয়ে উঠি আমি/আমরাও।
শুভ কামনা।

সাইফ তাহসিন এর ছবি

ধন্যবাদ নন্দিতাপু, আপনার অভিজ্ঞতাগুলো থেকে ছিটে ফোঁটা ধার দেন, তাতে যদি আপত্তি না থাকে আরকি। অন্যের অভিজ্ঞতা কে আমি বইয়ের মতই মনে করি। সৈয়দ মুজতবা আলীর 'বইকেনা' মনে আছে আপনার? সেভাবে এক একটা অভিজ্ঞতা পড়ে আমি নতুন নতুন জগৎ আবিষ্কার করি।

ভালো থাকুন, সচল হয়ে উঠুন।
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদ্বপি গরীয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

রাহিন হায়দার এর ছবি

চলুক চলুক
________________________________
তবু ধুলোর সাথে মিশে যাওয়া মানা

সাইফ তাহসিন এর ছবি

ধন্যবাদ বস।
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদ্বপি গরীয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

নিবিড় এর ছবি

অভিজ্ঞতার গল্প চলুক চলুক


মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।

সাইফ তাহসিন এর ছবি

ঠিকাছে বস!
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদ্বপি গরীয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

বস, কালকে থেকে ব্যাপক রান্ধারান্ধি করে আর সারাদিন জন্মদিন দূর্যোগ কামায়ে সচলে এসে আপনার এত্তোবড় লেখা দেখে কাইন্দা দিছি। কালকা পড়ুমনে। আজকা শক্তি নাই, ছুডো ছুডো লেখা পড়ি আজকে।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

সাইফ তাহসিন এর ছবি

শুভ জন্মদিন নজরুল ভাই, আজকের দিন আনন্দ করেন, যখন মন খারাপ থাকবে তখনকার জন্যে তুলে রাখেন আমার এই বকবক :)। ঢাকায় থাকলে রান্না খাইতে পারতাম, যাহ! শালা! মিস হইয়া গেল! মন খারাপ
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদ্বপি গরীয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

তানবীরা এর ছবি

আমরা যারা গরীব দেশ থেকে বড়লোকের দেশে আসি তাদের সবার গল্পই কম বেশি একই রকম। আমিও আমার এমন একটা কাহিনী লিখছিলাম বছর দুই আগে, যদিও কোথাও দেই নি, অনেক হাবিজাবির সাথে এটাও ডেস্কটপে কোথাও আছে পরে। মেয়েদের সংগ্রাম ছেলেদের থেকে একটু আলাদা হয় বটে তবে সংগ্রামতো সংগ্রামই। মামুন ভাই এর কথা পড়ে মনে হচ্ছে, আবার লিখে রাখি নইলে স্মৃতি হারিয়ে যাবে। কারো জন্য না হয়তো শুধু নিজের জন্যই।

তোমার লেখাটা পড়তে ভালো লাগে কারন যতোদূর সম্ভব সত্যটাই লিখছো।

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

সাইফ তাহসিন এর ছবি

তনু আপা, আপনার লেখাটা পোস্ট করেন, আর বাকিটা লিখে ফেলেন। অনেক ধন্যবাদ লেখা পড়ার জন্যে। এখানে কোন ভেজাল বা বানোয়াট কিছু নেই, আপনে নিশ্চিন্তে বিশ্বাস করতে পারেন হাসি. আপনার লেখার অপেক্ষায় থাকব।
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদ্বপি গরীয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

পড়তে ভালো লাগছে। বানানের দিকে খেয়াল রেখো। তুমি মনে হয় ফোনেটিক নাকি কিসব দিয়ে লেখ বোধহয়.. সেজন্যও এমনটা হতে পারে (তবে আমার মনে হয় তুমি বেখেয়ালী)

এই লিংকটা মজার। গুগলের : http://www.google.com/transliterate/ যারা ফোনেটিক লেখে তারা মজা পাবে হয়তো।

লেখা কিন্তু পুরাই পড়েছি। লিখতে থাকো। এসব পড়তে ভালো লাগে।

সাইফ তাহসিন এর ছবি

খামখেয়ালিপনা আছে, অলসতাও আছে। তবে সমস্যা হয় অফিসে লেখি সচলের ফোনেটিক দিয়া, আর বাড়িতে আইসা লেখি অভ্র দিয়ে, তাই গিট্টু কাটায় ঊঠতে কষ্ট হইতেছে। আপনেও কইলেন, কিংকং ও কইল, লেখা খুব বেশি বড় হয়ে যাচ্ছে মনে হয়, আরো ছোট করে লেখব?

লিংকটা মজার, তবে ফোনেটিকের মত হলেও লে-আউটটা বুঝতে পারলাম না। বানান সংক্রান্ত সমস্যায় প্রথম থেকেই ভুগতেছি। আবার আলমগীর ভাইয়ের শরনাপন্ন হইতে হবে।
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদ্বপি গরীয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

ছোট করার দরকার নেই। যারা পড়ার তারা এমনিতেই পড়বে। অনেকের এসব পড়তে ভালো লাগে, যেমন আমার; আবার অনেকের এসব পড়তে ভালো লাগেনা-- তারা এড়িয়ে যাবে।

অনুপম ত্রিবেদি এর ছবি

আরে ডাগতর সাব, আপনারে তো একটা দ্বিচক্রযান কিন্না দেওন লাগে ! তয় এই দেশে আসলে আপনার ভবিষ্যত পুরাই চাকা বল সাবান দিয়া ধুয়া কাপুরের মতো ঝক-ঝকা। আপনারে মিরপুর-১২ টু গুলিস্তানের একটা বাসের ডেরাইভার বানায়া আমি লগে কন্টেক্টার হয়া যামু। খেলা কিন্তু পুরাই জম্বো।

লেখা লয়া কিছু কইতাম চাইনা। খালি ভালু ভালু কতা কইতে হইবো, আমার আবার খ্রাপ কতা কইতে বিয়াপক ভালু লাগে।

============================================
সকলই চলিয়া যায়,
সকলের যেতে হয় বলে।

==========================================================
ফ্লিকারফেসবুক500 PX

সাইফ তাহসিন এর ছবি

খ্রাপ কতা কইতে আমারো কেনু জানি বিয়াফক ভালু লাগে। মিয়া আপনার মন্তব্য দেখলেই একটা লম্বা দম লইয়া লই, নাহলে হাসতে হাসতে দম ফুরায়া যায়। হ মিরপুর - গুলিস্তান রুটে মউজ মাস্তি খ্রাপ হইব না, তয় ঢাকা - চট্টগ্রাম - কক্সবাজার হইলে মজা আরো বেশি জমব। এক সময়ের ঢাকা-চিটাগাং রুটের স্ট্রীট-হক এস. আলম ও ডরায়া রাস্তা ছাইড়া দিব জানে বাচনের লাইগা দেঁতো হাসি

ঐ মিয়া, আলুকচিত্র নিয়া পুস্ট দেন তাড়াতাড়ি, ফ্লিকারে গিয়া দেখি, মাগার ছবির পিছেন গফ শুনতে মঞ্চায়
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদ্বপি গরীয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

িবনোত এর ছবি

সাইফভাই, আপনিতো মাএ তিন মাস লাইসেন্স ছাড়া গাড়ী চালাইছেন, আর আমি এথনো পাইনি। দেঢ়-বছরাধিক চালাইতেছি লাইসেন্স ছাড়া।আপনার জীবনী থেকে অনেক কিছু শেখার আছে।

সাইফ তাহসিন এর ছবি

কস্কি মমিন!, চার মাস চালাইতেই আমার জান হালুয়া হয়ে গিয়েছিল, সারাক্ষন ভয়ে ভয়ে থাকতাম কখন ইন্সুরেন্স কোম্পানি হাতে লোটা ধরায়া দেয়, কখন পুলিশ ধরে লারনার্স পারমিটে গাড়ি চালানোর জন্যে। আপনে এতদিন ধরে সিস্টেম করতেছেন কেমনে? জানতে মঞ্চায়!! তাড়াতাড়ি লিখে ফেলেন!

লেখা পড়ার জন্যে আওনেক ধন্যবাদ
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদ্বপি গরীয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

লুৎফুল আরেফীন এর ছবি

পরেরটার অপেক্ষায়, দুঃখিত যে সবগুলাতে কমেন্ট করা হয় না। তবে পড়া হয় প্রায় সবই। সিরিজটা ধীরে ধীরে এমন দিকে মোড় নিচ্ছে যে, সামনে আদৌ পড়তে পারবো কি না সন্দিহান!

ভালো থাকুন।

সাইফ তাহসিন এর ছবি

জানি বস! আনন্দ ফুর্তির সময় শেষ, এখন সামনে শুধু কঠোর করুণ বাস্তবতা। অনেক ধন্যবাদ বস লেখাটা পড়ার জন্যে।
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদ্বপি গরীয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

স্বপ্নহারা এর ছবি

ভাইয়া, আজকের লেখা পড়ে ব্যাপক জোশ পাইলাম...আমি সংগ্রামী-খেটে খাওয়া মানুষ, আপনাদের এই কাহিনী অনেক সাহস দিল...অনেক কষ্ট করেছেন! প্রজাপতি ভাবী জিন্দাবাদ...দেঁতো হাসি
-------------------------------------------------------------
স্বপ্ন দিয়ে জীবন গড়া, কেড়ে নিলে যাব মারা!

-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...

সাইফ তাহসিন এর ছবি

আমি একা না চলার পথে, আমি তুমি এবং আমার সাথে আরো অনেকেই এই ঘোড়ার ডিম দিয়ে ভর্তা বানায় ভাত খাইতেছি। কাজেই লেইখা ফেল, দেখবা ভালো লাগবে।
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদ্বপি গরীয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।